ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স
১৯ হাজার মাস্ক সরবরাহের প্রমাণ মিলেছে
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গেল বছর করোনা মহামারীতে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে সোয়া দুই লাখ মাস্ক কেনা হয়েছে। কাগজে-কলমে মাস্ক কেনার এ হিসাব দেখানো হলেও তদন্তে ১৯ হাজার মাস্ক সরবরাহের প্রমাণ মিলেছে।
প্রতিটি মাস্ক ৫০ টাকা হিসাবে মূল্য দেখানো হলেও তার স্বপক্ষে কোন তথ্য-প্রমাণ মেলেনি। কোম্পানির নিয়ম অনুয়ায়ী ৮ লাখ টাকার বেশি কোনকিছু কিনতে হলে কমপক্ষে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হয়। অথচ এক কোটি সাত লাখ ৫০ হাজার টাকার মাস্ক কেনার তথ্য কাগজে-কলমে দেখানো হলেও তা বিনা টেন্ডারে কেনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ডিএডি মঞ্জুরে মাওলাসহ অন্য অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে এ ‘অনিয়ম ও দুর্নীতি’ করেছেন বলে তদন্তে বেরিয়েছে।
এ নিয়ে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অনুসন্ধান করে সম্প্রতি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেছে।
মামলার বাদী ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক জেয়াদ রহমান গত ১ মার্চ ডেল্টা লাইফের প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদনে মাস্ক কেনা সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্তদের কোম্পানির চাকরি হতে বরাখাস্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। দুর্নীতি ও ঘুষ কেলেঙ্কারিসহ নানা কারণে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির মধ্যে এখন প্রশাসকবিরোধী চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
পিবিআইয়ের অর্গানাইজড ক্রাইম-দক্ষিণের পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন সম্প্রতি আদালতে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে বলেছেন, ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সে গেল বছর সুলতান-উল-আবেদীন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় অভিযুক্ত কর্মকর্তা কামরুল হক দেশের বিভিন্ন জেলা ইউনিটে কোভিড-১৯ কারণে মাস্কের চাহিদার আলোকে ২০২১ সালের ৪ মে ২ লাখ ১৫ হাজার মাস্ক কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। এ বাবদ খরচ এক কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়। এসব মাস্ক মাঠপর্যায়ে বিতরণ করা হবে বলে নোট তৈরি করেন। পরে তা ডেল্টা লাইফের ডিএমডি ৩ নম্বর অভিযুক্ত আসামি মঞ্জুরে মাওলার কাছে উপস্থাপন করেন। অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে একটি মাত্র কোম্পানির কাছ থেকে কোটেশন নিয়ে প্রতিটি মাস্ক ৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে কার্যাদেশ দেয়।
তদন্তে পাওয়া গেছে, কম মূল্যের মাস্ক বেশি দামে অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে মূল্য নির্ধারণ করেছেন।
গেল বছর মাস্ক সরবরাহ করার জন্য অগ্রিম ৫০ লাখ টাকা চেক সরবরাহকারীকে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে লাজিম মিডিয়া নামের ওই প্রতিষ্ঠানকে আরও ৪৫ লাখ টাকার চেক দেয়া হয়।
আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২ লাখ ১৫ হাজারটি মাস্কের মধ্যে এ বীমা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন জেলা ইউনিটে ১৯ হাজার মাস্ক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। বাকি মাস্ক ডেল্টা লাইফ কোম্পানির গুলশান প্রধান কার্যালয়ে (হেড অফিসে) বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলে একটি প্রাপ্তি স্বীকার গ্রহণ করলেও প্রকৃতপক্ষে দুই লাখ ১৫ হাজার মাস্ক দেয়া হয়নি বলে সাক্ষীরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
যেসব জায়গা থেকে মাস্কগুলো সরবরাহ করেছে, ওই কারখানা থেকে কিভাবে বা কত টাকা পরিশোধ করেছেন তারও কোন সাক্ষ্যপ্রমাণ তদন্তে পাওয়া যায়নি। এমনকি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযুক্তরা তার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।
কোম্পানির ডিএমডি মঞ্জুরে মাওলা, কোম্পানির উন্নয়ন শাখার কর্মকর্তা কামরুল হক, কোম্পানির সংস্থাপন বিভাগের কর্মকর্তা এম হাফিজুর রহমান খান ও অন্য অভিযুক্তরা নিয়ম বহিঃর্ভূতভাবে অসৎ উদ্দেশে নিয়ে বিনা টেন্ডারে এই কাজ করেছেন বলে তদন্ত কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন। আবার কোন কোন অভিযুক্ত বিষয়টি জেনেও অভিযুক্তদের কাজে সহায়তা করেছেন। যা তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
২০২১ সালে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির পরিচালক জেয়াদ রহমান আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন।
পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন মুঠোফোনে সংবাদকে জানান, মাস্ক কেনায় টেন্ডারসহ কোন নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। তদন্তে তার প্রমাণ মিলেছে। এর ভিত্তিতে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে।
আমাদের আদালত বার্তা পরিবেশক জানান, গতকাল আদালত থেকে সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দেয়ার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে সমন ইস্যু করা হয়েছে।
ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স
১৯ হাজার মাস্ক সরবরাহের প্রমাণ মিলেছে
শুক্রবার, ০৪ মার্চ ২০২২
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গেল বছর করোনা মহামারীতে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে সোয়া দুই লাখ মাস্ক কেনা হয়েছে। কাগজে-কলমে মাস্ক কেনার এ হিসাব দেখানো হলেও তদন্তে ১৯ হাজার মাস্ক সরবরাহের প্রমাণ মিলেছে।
প্রতিটি মাস্ক ৫০ টাকা হিসাবে মূল্য দেখানো হলেও তার স্বপক্ষে কোন তথ্য-প্রমাণ মেলেনি। কোম্পানির নিয়ম অনুয়ায়ী ৮ লাখ টাকার বেশি কোনকিছু কিনতে হলে কমপক্ষে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হয়। অথচ এক কোটি সাত লাখ ৫০ হাজার টাকার মাস্ক কেনার তথ্য কাগজে-কলমে দেখানো হলেও তা বিনা টেন্ডারে কেনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ডিএডি মঞ্জুরে মাওলাসহ অন্য অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে এ ‘অনিয়ম ও দুর্নীতি’ করেছেন বলে তদন্তে বেরিয়েছে।
এ নিয়ে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অনুসন্ধান করে সম্প্রতি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেছে।
মামলার বাদী ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক জেয়াদ রহমান গত ১ মার্চ ডেল্টা লাইফের প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদনে মাস্ক কেনা সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্তদের কোম্পানির চাকরি হতে বরাখাস্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। দুর্নীতি ও ঘুষ কেলেঙ্কারিসহ নানা কারণে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির মধ্যে এখন প্রশাসকবিরোধী চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
পিবিআইয়ের অর্গানাইজড ক্রাইম-দক্ষিণের পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন সম্প্রতি আদালতে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে বলেছেন, ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সে গেল বছর সুলতান-উল-আবেদীন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় অভিযুক্ত কর্মকর্তা কামরুল হক দেশের বিভিন্ন জেলা ইউনিটে কোভিড-১৯ কারণে মাস্কের চাহিদার আলোকে ২০২১ সালের ৪ মে ২ লাখ ১৫ হাজার মাস্ক কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। এ বাবদ খরচ এক কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়। এসব মাস্ক মাঠপর্যায়ে বিতরণ করা হবে বলে নোট তৈরি করেন। পরে তা ডেল্টা লাইফের ডিএমডি ৩ নম্বর অভিযুক্ত আসামি মঞ্জুরে মাওলার কাছে উপস্থাপন করেন। অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে একটি মাত্র কোম্পানির কাছ থেকে কোটেশন নিয়ে প্রতিটি মাস্ক ৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে কার্যাদেশ দেয়।
তদন্তে পাওয়া গেছে, কম মূল্যের মাস্ক বেশি দামে অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে মূল্য নির্ধারণ করেছেন।
গেল বছর মাস্ক সরবরাহ করার জন্য অগ্রিম ৫০ লাখ টাকা চেক সরবরাহকারীকে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে লাজিম মিডিয়া নামের ওই প্রতিষ্ঠানকে আরও ৪৫ লাখ টাকার চেক দেয়া হয়।
আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২ লাখ ১৫ হাজারটি মাস্কের মধ্যে এ বীমা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন জেলা ইউনিটে ১৯ হাজার মাস্ক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। বাকি মাস্ক ডেল্টা লাইফ কোম্পানির গুলশান প্রধান কার্যালয়ে (হেড অফিসে) বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলে একটি প্রাপ্তি স্বীকার গ্রহণ করলেও প্রকৃতপক্ষে দুই লাখ ১৫ হাজার মাস্ক দেয়া হয়নি বলে সাক্ষীরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
যেসব জায়গা থেকে মাস্কগুলো সরবরাহ করেছে, ওই কারখানা থেকে কিভাবে বা কত টাকা পরিশোধ করেছেন তারও কোন সাক্ষ্যপ্রমাণ তদন্তে পাওয়া যায়নি। এমনকি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযুক্তরা তার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।
কোম্পানির ডিএমডি মঞ্জুরে মাওলা, কোম্পানির উন্নয়ন শাখার কর্মকর্তা কামরুল হক, কোম্পানির সংস্থাপন বিভাগের কর্মকর্তা এম হাফিজুর রহমান খান ও অন্য অভিযুক্তরা নিয়ম বহিঃর্ভূতভাবে অসৎ উদ্দেশে নিয়ে বিনা টেন্ডারে এই কাজ করেছেন বলে তদন্ত কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন। আবার কোন কোন অভিযুক্ত বিষয়টি জেনেও অভিযুক্তদের কাজে সহায়তা করেছেন। যা তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
২০২১ সালে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির পরিচালক জেয়াদ রহমান আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন।
পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন মুঠোফোনে সংবাদকে জানান, মাস্ক কেনায় টেন্ডারসহ কোন নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। তদন্তে তার প্রমাণ মিলেছে। এর ভিত্তিতে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে।
আমাদের আদালত বার্তা পরিবেশক জানান, গতকাল আদালত থেকে সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দেয়ার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে সমন ইস্যু করা হয়েছে।