পাকিস্তানি সেনাদের ওপর আফগানিস্তানের উত্তরে সীমান্তের একাধিক পার্বত্য এলাকায় হামলা চালািয়েছে তালেবান বাহিনী। এ কথা জানিয়েছে তালেবান সরকার।
আফগান সরকার জানায়, পাকিস্তান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বৃহস্পতিবার আফগান সীমান্তের ভেতরে একটি বাজারে বোমা ফেলেছিল, এরপর প্রতিশোধ নিতে সীমান্তে অভিযান চালানো হয়।
শনিবার গভীর রাতের এ অভিযানে হতাহতের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি অভিযোগ করেছেন,তালেবান ‘বিনা উসকানিতে’ এ হামলা চালায়। তারা বেসামরিকদের লক্ষ্য করেও গুলি চালায়।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পাকিস্তান প্রতিটি ইটের জবাব দেবে এক একটি পাথর ছুড়ে।
ইসলামাবাদের অভিযোগ, কাবুলের মাটি ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে আসছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করছে তালেবান।
প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে এমন এক সময়ে এ উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, যখন আফগান তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ভারত সফরে রয়েছেন।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, কুনার-কুররম অঞ্চলে সংঘর্ষে উভয় পক্ষই ছোট অস্ত্র এবং কামান ব্যবহার করেছে।
নকভি এক পোস্টে বলেন, “এই তালেবান হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমি। বেসামরিক জনগণের ওপর আফগান বাহিনীর গুলি চালানো আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ।
তিনি বলেন, “আফগানিস্তান আগুন ও রক্তের খেলা খেলছে।”
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, পাকিস্তানিদের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় তারা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেবেন।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে একটি নিরাপত্তা সূত্র বিবিসিকে বলেছে, পাকিস্তান-আফগান সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে গোলাগুলি হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে— আঙ্গুর আড্ডা, বাজাউর, কুররম, দির, চিত্রাল ও বারামচা।
কুররম জেলার জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে আফগানের দিক থেকে ভারী অস্ত্রের গুলি ছোড়া শুরু হয়। সীমান্তের একাধিক স্থান থেকে তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে কাবুলে দুটি উচ্চ শব্দের বিস্ফোরণ শোনা যায়। এরপর আফগানিস্তানের তালেবান সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘আফগান সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের’ অভিযোগ তোলে।
তালেবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানায়, দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে একটি বেসামরিক বাজারে বোমাবর্ষণ করে পাকিস্তান। স্থানীয়রা বিবিসির আফগান সার্ভিসকে বলেছেন, বোমা হামলায় অনেক দোকান ধ্বংস হয়েছে।
পাকিস্তানের একজন শীর্ষ জেনারেল অভিযোগ করেছেন, “পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ চালানোর ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে আফগানিস্তান।”
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, আফগান তালেবান তাদের ভূখণ্ডকে টিটিপি হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানি তালেবানকে ব্যবহার করতে দিচ্ছে। ওই গোষ্ঠী ইসলামাবাদ সরকারের পতন ঘটাতে লড়াই করছে এবং কঠোর ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
আফগানিস্তানের তালেবান সরকার বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এদিকে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির ভারত সফরে ভারত ও আফগানিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলার বার্তা এসেছে। দিল্লি ঘোষণা দিয়েছে, কাবুলে তারা আবার দূতাবাস চালু করবে।
চার বছর আগে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার সময় সেখানে দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছিল ভারত।
নকভি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “ভারতের মত আফগানিস্তানকেও উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে, যাতে তারা পাকিস্তানের দিকে বাঁকা চোখে তাকানোর সাহস না করে।”
সৌদি আরব এক বিবৃতিতে ইসলামাবাদ ও কাবুলের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে। উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানানো রিয়াদ ও ইসলামাবাদ গত মাসে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে সই করেছে।
পাকিস্তান-আফগান সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কাতার বলেছে, উভয় পক্ষকে সংলাপ, কূটনীতি ও সংযমকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে তারা।
রোববার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
পাকিস্তানি সেনাদের ওপর আফগানিস্তানের উত্তরে সীমান্তের একাধিক পার্বত্য এলাকায় হামলা চালািয়েছে তালেবান বাহিনী। এ কথা জানিয়েছে তালেবান সরকার।
আফগান সরকার জানায়, পাকিস্তান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বৃহস্পতিবার আফগান সীমান্তের ভেতরে একটি বাজারে বোমা ফেলেছিল, এরপর প্রতিশোধ নিতে সীমান্তে অভিযান চালানো হয়।
শনিবার গভীর রাতের এ অভিযানে হতাহতের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি অভিযোগ করেছেন,তালেবান ‘বিনা উসকানিতে’ এ হামলা চালায়। তারা বেসামরিকদের লক্ষ্য করেও গুলি চালায়।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পাকিস্তান প্রতিটি ইটের জবাব দেবে এক একটি পাথর ছুড়ে।
ইসলামাবাদের অভিযোগ, কাবুলের মাটি ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে আসছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করছে তালেবান।
প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে এমন এক সময়ে এ উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, যখন আফগান তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ভারত সফরে রয়েছেন।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, কুনার-কুররম অঞ্চলে সংঘর্ষে উভয় পক্ষই ছোট অস্ত্র এবং কামান ব্যবহার করেছে।
নকভি এক পোস্টে বলেন, “এই তালেবান হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমি। বেসামরিক জনগণের ওপর আফগান বাহিনীর গুলি চালানো আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ।
তিনি বলেন, “আফগানিস্তান আগুন ও রক্তের খেলা খেলছে।”
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, পাকিস্তানিদের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় তারা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেবেন।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে একটি নিরাপত্তা সূত্র বিবিসিকে বলেছে, পাকিস্তান-আফগান সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে গোলাগুলি হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে— আঙ্গুর আড্ডা, বাজাউর, কুররম, দির, চিত্রাল ও বারামচা।
কুররম জেলার জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে আফগানের দিক থেকে ভারী অস্ত্রের গুলি ছোড়া শুরু হয়। সীমান্তের একাধিক স্থান থেকে তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে কাবুলে দুটি উচ্চ শব্দের বিস্ফোরণ শোনা যায়। এরপর আফগানিস্তানের তালেবান সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘আফগান সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের’ অভিযোগ তোলে।
তালেবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানায়, দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে একটি বেসামরিক বাজারে বোমাবর্ষণ করে পাকিস্তান। স্থানীয়রা বিবিসির আফগান সার্ভিসকে বলেছেন, বোমা হামলায় অনেক দোকান ধ্বংস হয়েছে।
পাকিস্তানের একজন শীর্ষ জেনারেল অভিযোগ করেছেন, “পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ চালানোর ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে আফগানিস্তান।”
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, আফগান তালেবান তাদের ভূখণ্ডকে টিটিপি হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানি তালেবানকে ব্যবহার করতে দিচ্ছে। ওই গোষ্ঠী ইসলামাবাদ সরকারের পতন ঘটাতে লড়াই করছে এবং কঠোর ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
আফগানিস্তানের তালেবান সরকার বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এদিকে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির ভারত সফরে ভারত ও আফগানিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলার বার্তা এসেছে। দিল্লি ঘোষণা দিয়েছে, কাবুলে তারা আবার দূতাবাস চালু করবে।
চার বছর আগে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার সময় সেখানে দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছিল ভারত।
নকভি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “ভারতের মত আফগানিস্তানকেও উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে, যাতে তারা পাকিস্তানের দিকে বাঁকা চোখে তাকানোর সাহস না করে।”
সৌদি আরব এক বিবৃতিতে ইসলামাবাদ ও কাবুলের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে। উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানানো রিয়াদ ও ইসলামাবাদ গত মাসে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে সই করেছে।
পাকিস্তান-আফগান সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কাতার বলেছে, উভয় পক্ষকে সংলাপ, কূটনীতি ও সংযমকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে তারা।