alt

যুদ্ধবিরতির পরও শান্তি ফিরছে না গাজায়

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে একটি ত্রাণকেন্দ্রে খাবারের আশায় ফিলিস্তিনিদের ভিড় -এএফপি

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির পর থেমেছে ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ। তবে শান্তি ফেরেনি। একে তো ফিলিস্তিনিরা নিজ ঠিকানায় ফিরে ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই পাচ্ছেন না, এরপর আবার চুক্তি অনুযায়ী এখনো গাজায় নির্ধারিত পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটিতে খাবারের সংকট কাটছে না। বুধবার ছিল যুদ্ধবিরতির ষষ্ঠ দিন। আগের পাঁচ দিনে চুক্তি অনুযায়ী বন্দিবিনিময় করেছে হামাস ও ইসরায়েল। তবে হামাস মৃত জিম্মিদের ফেরত পাঠাতে দেরি করছে এমন অজুহাত তুলে ইসরায়েল জানায়, বৃহস্পতিবার, (১৬ অক্টোবর ২০২৫) থেকে নির্ধারিত পরিমাণের অর্ধেক অর্থাৎ প্রতিদিন ৩০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করতে দেবে তারা। দক্ষিণ গাজার রাফা সীমান্ত ক্রসিংও আপাতত চালু না করার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। তবে পরে ক্রসিংটি খুলে দেওয়া হয়।

যদিও যুদ্ধবিরতির পর থেকেই দিনে নির্ধারিত ৬০০ ট্রাকের অনেক কম ত্রাণ গাজায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। বুধবার বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, এদিন তাদের মাধ্যমে মাত্র ১৩৭ ট্রাক ত্রাণ উপত্যকাটিতে সরবরাহ করা হয়েছে। এসব ট্রাকে ময়দা ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিল। তবে পানির পরিমাণ ছিল কম। জ্বালানি তো ছিলই না।

যুদ্ধবিরতির পর বাস্তুচ্যুত যেসব মানুষ গাজা নগরীতে ফিরেছেন, তাঁরা পানি নিয়ে সবচেয়ে বড় দুর্ভোগের মুখে পড়ছেন। নগরীর বাসিন্দা গাদা আল কুর্দ বলেন, প্রায় সব এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। কোনো পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই। আর দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের বাসিন্দা মাহমুদ এমাদ রোস্তম বলেন, কিছু ত্রাণ প্রবেশ করায় খাবারের সরবরাহ বেড়েছে। তবে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া।

এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী গাজার ৫৩ শতাংশ এলাকা এখনো ইসরায়েলি সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে নিজ ভিটেমাটিতে ফিরতে পারছেন না বাসিন্দারা। এসব এলাকায় ফিরতে যাওয়া ৬ জনসহ মোট ৯ ফিলিস্তিনিকে মঙ্গলবার হত্যা করেছেন ইসরায়েলি সেনারা। বুধবারও সুজাইয়া এলাকায় দুই ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই বছরের বেশি সময়ে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ৯৩৮।

নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে হামাস: ২০০৭ সালে ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে ছয় দিনের সংঘর্ষের পর থেকে গাজা নিয়ন্ত্রণ করছিল হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে সে নিয়ন্ত্রণ হারায় তারা। এখন কিছু এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনারা সরে যাওয়ার পর আবার নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে হামাস। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শহর এলাকাগুলোর রাস্তাঘাটে হামাসের সশস্ত্র সদস্যদের উপস্থিতি বেড়েছে।

গাজার এসব এলাকায় এখন আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলের হামলা না থাকলেও বিগত কয়েক দিনে হামাসের সঙ্গে বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সবশেষ মঙ্গলবার সকালে হামাস নিরাপত্তা বাহিনীর এবং হিল্লেস পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে।

এরই মধ্যে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, পিছমোড়া করে হাত বাঁধা সাতজনকে টেনেহিঁচড়ে গাজা নগরীর একটি চত্বরে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁদের বসিয়ে পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে হামাসের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, ভিডিওটি গত সোমবার ধারণ করা। আর সাতজনকে হামাসের সদস্যরাই গুলি করে হত্যা করেন।

পরিকল্পনার একটি শর্ত হলো, হামাসের অস্ত্রসমর্পণ। এ শর্ত নিয়ে এখনো হামাস-ইসরায়েল সমঝোতা হয়নি। তবে সম্প্রতি ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য হামাসকে স্বল্প সময়ের জন্য অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন তিনি। পরে গত মঙ্গলবার আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘হামাস অস্ত্র না ছাড়লে আমরা তাদের অস্ত্রমুক্ত করব। আর তা দ্রুত ও সহিংসভাবে করা হবে।’

ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পর তাঁর শান্তি পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ আরও অন্ধকারাচ্ছন্ন হলো বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

আরও চার জিম্মির মরদেহ ফেরত: যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী সোমবার জীবিত ২০ জিম্মিকে ইসরায়েলে ফেরত দিয়েছিল হামাস। এ ছাড়া ২৮ মৃত জিম্মির মধ্যে ৪ জনের মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছিল। যদিও তাঁদের মধ্যে একজনের মরদেহ ইসরায়েলি জিম্মির নয় বলে দাবি করেছে দেশটির সরকার। পরে মঙ্গলবার আরও চার জিম্মির মরদেহ ইসরায়েলের হাতে তুলে দিয়েছে হামাস।

মৃত জিম্মিদের ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে হামাসের বিলম্ব নিয়ে ইসরায়েল যে অভিযোগ করেছে, তার একটি জবাব দিয়েছেন জিম্মিদের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী গেরসন বাসকিন। সংবাদমাধ্যম সিবিএসকে তিনি বলেন, মরদেহগুলো কবর দেওয়া হামাস নেতাদের অনেকে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলের হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে মরদেহগুলো দ্রুত ফেরত দিতে জটিলতা বেড়েছে।

এদিকে চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল যেসব ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দিয়েছে, তাঁদের অনেকের চোখ বাঁধা ও হাতকড়া পরানো অবস্থায় ছিল। এ ছাড়া অনেক ফিলিস্তিনির শরীর ট্যাংকের নিচে পিষ্ট হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। চিকিৎসা-সংক্রান্ত বিভিন্ন সূত্র আল-জাজিরাকে জানিয়েছে, তাদের ধারণা, ওই ফিলিস্তিনিদের বিচার ছাড়াই হত্যা করা হয়েছে।

ছবি

মারা গেছেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী

ছবি

রাশিয়ার থেকে তেল কিনবে না ভারত: দাবি ট্রাম্পের

ছবি

সমুদ্রে পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত বন্দর ফি আদায় শুরু

ছবি

গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী পাঠানোর পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

পাকিস্তানের সঙ্গে আফগান তালেবানের সম্পর্ক কোন দিকে যাচ্ছে

ছবি

সীমান্তে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মধ্যে ফের সংঘাত শুরু

ছবি

তাইওয়ানকে ‘ভুলভাবে’ চিহ্নিত করায় চীনে ৬০ হাজার মানচিত্র জব্দ

ছবি

বল প্রয়োগ করে হলেও হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ করব: ট্রাম্প

ছবি

গাজায় ত্রাণ প্রবেশে ফের ইসরায়েলের বিধিনিষেধ, হুমকির মুখে যুদ্ধবিরতি

ছবি

গাজা নগরীর নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে হামাস, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তীব্র লড়াই

ছবি

তালেবানের সাথে এত ঘনিষ্ঠতার কারণ কি, তবে কি স্বীকৃতি দিচ্ছে ভারত

ছবি

আরও চার জিম্মির মরদেহ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করল হামাস

ছবি

জেন-জি বিক্ষোভের মুখে পালিয়েছেন মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট

ছবি

থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া ‘শান্তিচুক্তি’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ট্রাম্প

ছবি

ট্রাম্পের শান্তিচুক্তির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করলো ইরান

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে ‘শেষ পর্যন্ত লড়বে’ চীন

ছবি

পাকিস্তান-আফগান লড়াইয়ে তৈরি হচ্ছে বৃহত্তর সংঘাতের হুমকি

ছবি

প্যালেস্টাইনি-ইসরায়েল বন্দিবিনিময়ের পর চুক্তি সই

ছবি

গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ট্রাম্পসহ চার নেতার স্বাক্ষর

ছবি

ইসরায়েলের পার্লামেন্টে ট্রাম্পের ভাষণে বাধা, প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতির আহ্বান

ছবি

জাতিসংঘের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি স্থগিত করল ইরান

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতিক্রমেই ফের সশস্ত্র হয়েছে হামাস: ট্রাম্প

ছবি

গাজার নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব হামাসের: ট্রাম্প

ছবি

জীবিত ২০ জিম্মিকে মুক্তি দিলো হামাস

ছবি

পশ্চিমা শক্তিকে দুর্বল করতে একাট্টা চীন-রাশিয়া

ছবি

গাজায় ধ্বংসস্তূপে মিলছে একের পর এক লাশ

ছবি

পাকিস্তান-আফগানিস্তান লড়াই, কোন দিকে মোড় নেবে পরিস্থিতি

ছবি

ট্রাম্পের শুল্ক হুমকিতে ক্ষুব্ধ বেইজিং, ‘দ্বিমুখী নীতি’র অভিযোগ চীনের

ছবি

প্রথম ৭ ইসরায়েলি জিম্মিকে রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করেছে হামাস

ছবি

ট্রাম্পের দাবি, গাজা যুদ্ধ ‘শেষ’

ছবি

গাজা: ঢুকছে ত্রাণবাহী ট্রাক, সোমবার মুক্তি পাচ্ছে জিম্মিরা

ছবি

সীমান্তে সংঘর্ষ: পাকিস্তানের ৫৮ সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের

ছবি

গাজায় ত্রাণ প্রবেশ শুরু, বন্দি মুক্তি প্রক্রিয়া সোমবার থেকে

ছবি

শান্তি প্রস্তাব মানলেও অস্ত্র জমা দেবে না হামাস

ছবি

ভারতে বিদেশিদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যায় শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ

ছবি

পাকিস্তানে তালেবানের হামলা নিয়ে মুখ খুলল ‘বন্ধু’ সৌদি!

tab

যুদ্ধবিরতির পরও শান্তি ফিরছে না গাজায়

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে একটি ত্রাণকেন্দ্রে খাবারের আশায় ফিলিস্তিনিদের ভিড় -এএফপি

বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির পর থেমেছে ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ। তবে শান্তি ফেরেনি। একে তো ফিলিস্তিনিরা নিজ ঠিকানায় ফিরে ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই পাচ্ছেন না, এরপর আবার চুক্তি অনুযায়ী এখনো গাজায় নির্ধারিত পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটিতে খাবারের সংকট কাটছে না। বুধবার ছিল যুদ্ধবিরতির ষষ্ঠ দিন। আগের পাঁচ দিনে চুক্তি অনুযায়ী বন্দিবিনিময় করেছে হামাস ও ইসরায়েল। তবে হামাস মৃত জিম্মিদের ফেরত পাঠাতে দেরি করছে এমন অজুহাত তুলে ইসরায়েল জানায়, বৃহস্পতিবার, (১৬ অক্টোবর ২০২৫) থেকে নির্ধারিত পরিমাণের অর্ধেক অর্থাৎ প্রতিদিন ৩০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করতে দেবে তারা। দক্ষিণ গাজার রাফা সীমান্ত ক্রসিংও আপাতত চালু না করার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। তবে পরে ক্রসিংটি খুলে দেওয়া হয়।

যদিও যুদ্ধবিরতির পর থেকেই দিনে নির্ধারিত ৬০০ ট্রাকের অনেক কম ত্রাণ গাজায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। বুধবার বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, এদিন তাদের মাধ্যমে মাত্র ১৩৭ ট্রাক ত্রাণ উপত্যকাটিতে সরবরাহ করা হয়েছে। এসব ট্রাকে ময়দা ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিল। তবে পানির পরিমাণ ছিল কম। জ্বালানি তো ছিলই না।

যুদ্ধবিরতির পর বাস্তুচ্যুত যেসব মানুষ গাজা নগরীতে ফিরেছেন, তাঁরা পানি নিয়ে সবচেয়ে বড় দুর্ভোগের মুখে পড়ছেন। নগরীর বাসিন্দা গাদা আল কুর্দ বলেন, প্রায় সব এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। কোনো পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই। আর দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের বাসিন্দা মাহমুদ এমাদ রোস্তম বলেন, কিছু ত্রাণ প্রবেশ করায় খাবারের সরবরাহ বেড়েছে। তবে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া।

এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী গাজার ৫৩ শতাংশ এলাকা এখনো ইসরায়েলি সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে নিজ ভিটেমাটিতে ফিরতে পারছেন না বাসিন্দারা। এসব এলাকায় ফিরতে যাওয়া ৬ জনসহ মোট ৯ ফিলিস্তিনিকে মঙ্গলবার হত্যা করেছেন ইসরায়েলি সেনারা। বুধবারও সুজাইয়া এলাকায় দুই ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই বছরের বেশি সময়ে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ৯৩৮।

নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে হামাস: ২০০৭ সালে ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে ছয় দিনের সংঘর্ষের পর থেকে গাজা নিয়ন্ত্রণ করছিল হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে সে নিয়ন্ত্রণ হারায় তারা। এখন কিছু এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনারা সরে যাওয়ার পর আবার নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে হামাস। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শহর এলাকাগুলোর রাস্তাঘাটে হামাসের সশস্ত্র সদস্যদের উপস্থিতি বেড়েছে।

গাজার এসব এলাকায় এখন আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলের হামলা না থাকলেও বিগত কয়েক দিনে হামাসের সঙ্গে বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সবশেষ মঙ্গলবার সকালে হামাস নিরাপত্তা বাহিনীর এবং হিল্লেস পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে।

এরই মধ্যে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, পিছমোড়া করে হাত বাঁধা সাতজনকে টেনেহিঁচড়ে গাজা নগরীর একটি চত্বরে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁদের বসিয়ে পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে হামাসের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, ভিডিওটি গত সোমবার ধারণ করা। আর সাতজনকে হামাসের সদস্যরাই গুলি করে হত্যা করেন।

পরিকল্পনার একটি শর্ত হলো, হামাসের অস্ত্রসমর্পণ। এ শর্ত নিয়ে এখনো হামাস-ইসরায়েল সমঝোতা হয়নি। তবে সম্প্রতি ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য হামাসকে স্বল্প সময়ের জন্য অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন তিনি। পরে গত মঙ্গলবার আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘হামাস অস্ত্র না ছাড়লে আমরা তাদের অস্ত্রমুক্ত করব। আর তা দ্রুত ও সহিংসভাবে করা হবে।’

ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পর তাঁর শান্তি পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ আরও অন্ধকারাচ্ছন্ন হলো বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

আরও চার জিম্মির মরদেহ ফেরত: যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী সোমবার জীবিত ২০ জিম্মিকে ইসরায়েলে ফেরত দিয়েছিল হামাস। এ ছাড়া ২৮ মৃত জিম্মির মধ্যে ৪ জনের মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছিল। যদিও তাঁদের মধ্যে একজনের মরদেহ ইসরায়েলি জিম্মির নয় বলে দাবি করেছে দেশটির সরকার। পরে মঙ্গলবার আরও চার জিম্মির মরদেহ ইসরায়েলের হাতে তুলে দিয়েছে হামাস।

মৃত জিম্মিদের ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে হামাসের বিলম্ব নিয়ে ইসরায়েল যে অভিযোগ করেছে, তার একটি জবাব দিয়েছেন জিম্মিদের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী গেরসন বাসকিন। সংবাদমাধ্যম সিবিএসকে তিনি বলেন, মরদেহগুলো কবর দেওয়া হামাস নেতাদের অনেকে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলের হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে মরদেহগুলো দ্রুত ফেরত দিতে জটিলতা বেড়েছে।

এদিকে চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল যেসব ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দিয়েছে, তাঁদের অনেকের চোখ বাঁধা ও হাতকড়া পরানো অবস্থায় ছিল। এ ছাড়া অনেক ফিলিস্তিনির শরীর ট্যাংকের নিচে পিষ্ট হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। চিকিৎসা-সংক্রান্ত বিভিন্ন সূত্র আল-জাজিরাকে জানিয়েছে, তাদের ধারণা, ওই ফিলিস্তিনিদের বিচার ছাড়াই হত্যা করা হয়েছে।

back to top