ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এপ্রিলে যখন আফগানিস্তান সফরে গিয়ে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তখন রাজনীতি বিশ্লেষকেরা বলেছিলেন, শত্রুতে পরিণত হওয়া দুই পুরোনো মিত্রদেশ হয়তো নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্গঠন করতে চাইছে। চীনের মধ্যস্থতায় মে ও আগস্ট মাসে আরও দুই দফা বৈঠক পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক পুনর্গঠনের সম্ভাবনাকে আরও জোরালো করেছিল।
কিন্তু গত সপ্তাহে বিরোধপূর্ণ সীমান্তগুলোতে দুই দেশের তীব্র সংঘর্ষ কূটনৈতিক ওই প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণ উল্টে দিয়েছে। ইসলামাবাদ বলেছে, তারা দুই শতাধিক তালেবান যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে তালেবান সরকার বলেছে, তারা ৫৮ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে। উভয় পক্ষে হতাহতদের এই সংখ্যা স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিচ্ছে, বছরের শুরুতে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, তা কতটা ভঙ্গুর ছিল।
তালেবানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অভিযোগ, তালেবান সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর যোদ্ধারা সীমান্ত পেরিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে। সম্প্রতি সেখানে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার তীব্রতা বেড়েছে এবং হামলায় ডজনখানেক পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। তালেবান পাকিস্তানের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুল, গুলিও চলে।তালেবান সরকার বলেছে, কাবুলে ওই হামলা এবং আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের একটি প্রদেশে হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত আছে। তালেবান সরকার এর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। কাবুলে ওই হামলায় পাকিস্তান নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি।
বৃহস্পতিবারের ওই হামলা নিয়ে দুই দেশের উত্তেজনার মধ্যে শনিবার রাতে সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়। পাকিস্তান স্বীকার করেছে, সংঘর্ষে তাদের অন্তত ২৩ সেনা নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। দেশটি আরও বলেছে, তারা আফগান ভূখণ্ডে ২১টির বেশি সেনা চৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাত ও বুধবার ভোরেও কান্দাহারে হামলার ঘটনা ঘটে। সেখানে ১৫ জন আফগান নিহত হন।
ইসলামাবাদ বলেছে, তারা দুই শতাধিক তালেবান যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে তালেবান সরকার বলেছে, তারা ৫৮ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে।
যে কারণে সীমান্তে সংঘর্ষ পাকিস্তান যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আফগানিস্তান থেকে আক্রমণ চালানোর অভিযোগ করছে, তাদের মধ্যে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) ইসলামাবাদ সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে [আফগানিস্তানে] কথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের’ সময় টিটিপি গড়ে ওঠে এবং বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে।
টিটিপি কঠোর শরিয়াহ আইন চালু করতে এবং নিজেদের কারাবন্দী সদস্যদের মুক্তি চায়। পাকিস্তানের যেসব উপজাতীয় অঞ্চল খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, টিটিপি তার বাতিল দাবি করেছে।
আফগানিস্তানের তালেবানের সঙ্গে টিটিপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে উভয় দলের মতাদর্শ অভিন্ন। ইসলামাবাদ কাবুলের বিরুদ্ধে টিটিপি ছাড়াও বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রদেশের (আইএসকেপি) মতো অন্যান্য গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করে থাকে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এপ্রিলে যখন আফগানিস্তান সফরে গিয়ে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তখন রাজনীতি বিশ্লেষকেরা বলেছিলেন, শত্রুতে পরিণত হওয়া দুই পুরোনো মিত্রদেশ হয়তো নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্গঠন করতে চাইছে। চীনের মধ্যস্থতায় মে ও আগস্ট মাসে আরও দুই দফা বৈঠক পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক পুনর্গঠনের সম্ভাবনাকে আরও জোরালো করেছিল।
কিন্তু গত সপ্তাহে বিরোধপূর্ণ সীমান্তগুলোতে দুই দেশের তীব্র সংঘর্ষ কূটনৈতিক ওই প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণ উল্টে দিয়েছে। ইসলামাবাদ বলেছে, তারা দুই শতাধিক তালেবান যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে তালেবান সরকার বলেছে, তারা ৫৮ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে। উভয় পক্ষে হতাহতদের এই সংখ্যা স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিচ্ছে, বছরের শুরুতে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, তা কতটা ভঙ্গুর ছিল।
তালেবানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অভিযোগ, তালেবান সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর যোদ্ধারা সীমান্ত পেরিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে। সম্প্রতি সেখানে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার তীব্রতা বেড়েছে এবং হামলায় ডজনখানেক পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। তালেবান পাকিস্তানের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুল, গুলিও চলে।তালেবান সরকার বলেছে, কাবুলে ওই হামলা এবং আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের একটি প্রদেশে হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত আছে। তালেবান সরকার এর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। কাবুলে ওই হামলায় পাকিস্তান নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি।
বৃহস্পতিবারের ওই হামলা নিয়ে দুই দেশের উত্তেজনার মধ্যে শনিবার রাতে সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়। পাকিস্তান স্বীকার করেছে, সংঘর্ষে তাদের অন্তত ২৩ সেনা নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। দেশটি আরও বলেছে, তারা আফগান ভূখণ্ডে ২১টির বেশি সেনা চৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাত ও বুধবার ভোরেও কান্দাহারে হামলার ঘটনা ঘটে। সেখানে ১৫ জন আফগান নিহত হন।
ইসলামাবাদ বলেছে, তারা দুই শতাধিক তালেবান যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে তালেবান সরকার বলেছে, তারা ৫৮ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে।
যে কারণে সীমান্তে সংঘর্ষ পাকিস্তান যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আফগানিস্তান থেকে আক্রমণ চালানোর অভিযোগ করছে, তাদের মধ্যে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) ইসলামাবাদ সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে [আফগানিস্তানে] কথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের’ সময় টিটিপি গড়ে ওঠে এবং বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে।
টিটিপি কঠোর শরিয়াহ আইন চালু করতে এবং নিজেদের কারাবন্দী সদস্যদের মুক্তি চায়। পাকিস্তানের যেসব উপজাতীয় অঞ্চল খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, টিটিপি তার বাতিল দাবি করেছে।
আফগানিস্তানের তালেবানের সঙ্গে টিটিপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে উভয় দলের মতাদর্শ অভিন্ন। ইসলামাবাদ কাবুলের বিরুদ্ধে টিটিপি ছাড়াও বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রদেশের (আইএসকেপি) মতো অন্যান্য গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করে থাকে।