পাকিস্তান সরকার গতকাল শনিবার বিতর্কিত ২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল সিনেটে উপস্থাপন করেছে। বিরোধীদলগুলো অভিযোগ করেছে, সরকার বিলটি দ্রুত পাস করাতে চাইছে এবং প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলোর ব্যাপ্তি নিয়ে তারা তীব্র আপত্তি জানিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার ২৬ পৃষ্ঠার এই বিলটি উপস্থাপন করেন। পাস হলে এর নাম হবে ‘সংবিধান (২৭তম সংশোধনী) আইন, ২০২৫’। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিলটি সিনেটে তোলা হয়। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে মন্ত্রিসভার বৈঠক পরিচালনা করেন। সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে সঙ্গে নিয়ে তিনি আজারবাইজানের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে অবস্থান করছেন।
সিনেটের চেয়ারম্যান ইউসুফ রাজা গিলানি বিলটিকে উচ্চকক্ষের আইন ও বিচারবিষয়ক কমিটির কাছে পাঠান, যাতে তারা জাতীয় পরিষদের সংশ্লিষ্ট কমিটির সঙ্গে যৌথভাবে এটি নিয়ে আলোচনা করতে পারে।
প্রস্তাবিত সংশোধনীতে একটি কেন্দ্রীয় সাংবিধানিক আদালত গঠন, উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন, প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি, এবং সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব কাঠামোয় পরিবর্তন আনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
অস্বাভাবিকভাবে গতকাল সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে সিনেটের অধিবেশন ডাকা হয়, যদিও মন্ত্রিসভার অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত তা প্রায় আধা ঘণ্টা বিলম্বিত হয়।
সিনেট অধিবেশন চলাকালেই জাতীয় পরিষদের উভয় কক্ষের আইন ও বিচারবিষয়ক কমিটি যৌথভাবে এক গোপন বৈঠকে বিলটি পর্যালোচনা করে। জেইউআই–এফ ও পিটিআই–এর সদস্যরা ওই বৈঠক বর্জন করেন।
অন্যদিকে আজ রোববার বিকেলেও বিরলভাবে সিনেট অধিবেশন বসছে। একমাত্র আলোচ্য বিষয় হচ্ছে এই সংশোধনী বিল, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে—সরকার বিলটি দ্রুত পাস করাতে বদ্ধপরিকর।
পিটিআইয়ের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নেতা আলী জাফর বলেন, বিরোধীদলীয় নেতার অনুপস্থিতিতে এ বিল নিয়ে আলোচনা অনুচিত। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার ও তার মিত্ররা সংশোধনীটি তড়িঘড়ি করে পাস করাতে চাইছে এবং প্রস্তাব দেন, বিলের খসড়াটি আলোচনার জন্য সর্বসাধারণের সামনে উন্মুক্ত করা হোক।
বিলের মূল বৈশিষ্ট্য
বিলের প্রধান বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার জানান, ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত (এফসিসি) গঠনের ধারণাটি প্রথম উঠে আসে ২০০৬ সালের গণতন্ত্র সনদে, যা যৌথভাবে স্বাক্ষর করেছিল পিপিপি ও পিএমএল–এন। প্রস্তাবিত আদালতে দেশের সব প্রদেশের বিচারপতি থাকবেন, এবং এটি কেবল সাংবিধানিক বিষয় নিয়ে রায় দেবে; অন্যদিকে বর্তমান উচ্চ আদালতগুলো অন্যান্য মামলার দায়িত্বে থাকবে।
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী আলোচনার সময় কিছু সদস্য সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তা মামলার জট কমাতে ব্যর্থ হয় কারণ বিচারপতিরা নিয়মিত মামলায় ব্যস্ত ছিলেন। তিনি বলেন, “বাস্তবে দেখা যায়, আদালতের মোট সময়ের প্রায় ৪০ শতাংশ ব্যয় হয় মাত্র ৫ থেকে ৬ শতাংশ মামলায়।”
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, সংবিধানের ২৪৩ অনুচ্ছেদে সশস্ত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ও নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে—এ বিষয়টি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে কিছু নতুন ধারা যোগ করা হচ্ছে। তিনি নিশ্চিত করেন, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল উপাধি দেওয়া হয়েছে, যা কেবল একটি সম্মানসূচক পদবি, নতুন কোনো পদ বা নিয়োগ নয়।
তার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সেনাপ্রধানের পদ পাঁচ বছরের জন্য নির্ধারিত থাকবে। বর্তমান চেয়ারম্যান অবসর নেওয়ার পর, আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ‘চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি (সিজেসিএসসি)’ পদটি বিলুপ্ত হবে। এরপর নতুন কোনো চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হবে না; সেনাপ্রধানই প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
বিল অনুযায়ী, সেনাপ্রধানের সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের প্রধান নিয়োগ করবেন।
আজম নাজির তারার বিল থেকে পড়ে শোনান, “যদি কেন্দ্রীয় সরকার কোনো সামরিক কর্মকর্তাকে ফিল্ড মার্শাল, এয়ার মার্শাল অব দ্য এয়ার ফোর্স বা অ্যাডমিরাল অব দ্য ফ্লিট (পাঁচ তারকা পদ) পদে উন্নীত করে, তবে তিনি আজীবন এ পদ ও সুবিধা পাবেন এবং ইউনিফর্ম পরিধান করবেন।”
মেয়াদ শেষে রাষ্ট্রের স্বার্থে এমন কর্মকর্তাদের ভবিষ্যৎ দায়িত্ব সরকার নির্ধারণ করবে।
আরও প্রস্তাব করা হয়েছে, ২৪৮ অনুচ্ছেদে সংশোধন এনে প্রেসিডেন্টকে আজীবন ফৌজদারি মামলা ও গ্রেপ্তার থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। তবে গভর্নরদের ক্ষেত্রে এ সুরক্ষা থাকবে শুধু দায়িত্ব পালনের সময়। বর্তমানে প্রেসিডেন্ট ও গভর্নর দুজনই কেবল মেয়াদকালে এ সুরক্ষা পেয়ে থাকেন।
এ ছাড়া প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যার সাংবিধানিক সীমা সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক পরিষদের মোট সদস্যসংখ্যার ১১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৩ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া: ‘সংবিধানের ওপর আক্রমণ’
মজলিস-ই-ওয়াহদাত–ই–মুসলিমিনের সিনেটর ও পিটিআই–মনোনীত বিরোধীদলীয় নেতা আল্লামা রাজা নাসির আব্বাস প্রশ্ন তোলেন, জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া এত বড় সংশোধনী এত তাড়াহুড়া করে কেন আনা হচ্ছে। তিনি বিলটিকে ‘সংবিধানের ওপর আক্রমণ’ বলে আখ্যা দেন এবং দাবি করেন, বর্তমান আইনসভা জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি নয়, বরং “ফর্ম ৪৭–এর ফসল”—অর্থাৎ ২০২৪ সালের নির্বাচনে কারচুপির ইঙ্গিত দেন তিনি।
আব্বাস আরও বলেন, “ক্ষমতাবানদের ইচ্ছায় করা এ সংশোধনীর নাটক আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। কিন্তু যারা চরম দারিদ্র্যে ভুগছেন, তাঁদের জীবনের উন্নতির জন্য কোনো সংশোধনী আনা হয়েছে কি?”
জেইউআই–এফ নেতা সিনেটর কামরান মুরতাজা মন্তব্য করেন, “মাত্র ১৩ মাস আগে পাস হওয়া ২৬তম সংশোধনী কার্যত এখন বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে।”
পিপিপি নেতা সিনেটর শেরি রেহমান বলেন, “যদি কেন্দ্র এখন ব্যয়ভার সামলাতে না পারে, তবে আমাদের সবাইকে বসে দেখতে হবে কোথায় অপচয় হচ্ছে, কিন্তু প্রদেশগুলোর বাজেট কেটে নয়।”
অন্যদিকে আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির প্রধান সিনেটর আইমাল ওয়ালি খান জানান, তাঁর দল জনগণের স্বার্থে নেওয়া যেকোনো উদ্যোগে সমর্থন জানাবে। তিনি বলেন, আইন প্রণয়ন করা সরকারের এখতিয়ার, তবে বিরোধীদলগুলোকে সংসদীয় কমিটিতে অংশ নিয়ে বিল বিষয়ে গঠনমূলক মতামত দেওয়ার আহ্বান জানান।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
পাকিস্তান সরকার গতকাল শনিবার বিতর্কিত ২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল সিনেটে উপস্থাপন করেছে। বিরোধীদলগুলো অভিযোগ করেছে, সরকার বিলটি দ্রুত পাস করাতে চাইছে এবং প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলোর ব্যাপ্তি নিয়ে তারা তীব্র আপত্তি জানিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার ২৬ পৃষ্ঠার এই বিলটি উপস্থাপন করেন। পাস হলে এর নাম হবে ‘সংবিধান (২৭তম সংশোধনী) আইন, ২০২৫’। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিলটি সিনেটে তোলা হয়। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে মন্ত্রিসভার বৈঠক পরিচালনা করেন। সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে সঙ্গে নিয়ে তিনি আজারবাইজানের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে অবস্থান করছেন।
সিনেটের চেয়ারম্যান ইউসুফ রাজা গিলানি বিলটিকে উচ্চকক্ষের আইন ও বিচারবিষয়ক কমিটির কাছে পাঠান, যাতে তারা জাতীয় পরিষদের সংশ্লিষ্ট কমিটির সঙ্গে যৌথভাবে এটি নিয়ে আলোচনা করতে পারে।
প্রস্তাবিত সংশোধনীতে একটি কেন্দ্রীয় সাংবিধানিক আদালত গঠন, উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন, প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি, এবং সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব কাঠামোয় পরিবর্তন আনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
অস্বাভাবিকভাবে গতকাল সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে সিনেটের অধিবেশন ডাকা হয়, যদিও মন্ত্রিসভার অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত তা প্রায় আধা ঘণ্টা বিলম্বিত হয়।
সিনেট অধিবেশন চলাকালেই জাতীয় পরিষদের উভয় কক্ষের আইন ও বিচারবিষয়ক কমিটি যৌথভাবে এক গোপন বৈঠকে বিলটি পর্যালোচনা করে। জেইউআই–এফ ও পিটিআই–এর সদস্যরা ওই বৈঠক বর্জন করেন।
অন্যদিকে আজ রোববার বিকেলেও বিরলভাবে সিনেট অধিবেশন বসছে। একমাত্র আলোচ্য বিষয় হচ্ছে এই সংশোধনী বিল, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে—সরকার বিলটি দ্রুত পাস করাতে বদ্ধপরিকর।
পিটিআইয়ের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নেতা আলী জাফর বলেন, বিরোধীদলীয় নেতার অনুপস্থিতিতে এ বিল নিয়ে আলোচনা অনুচিত। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার ও তার মিত্ররা সংশোধনীটি তড়িঘড়ি করে পাস করাতে চাইছে এবং প্রস্তাব দেন, বিলের খসড়াটি আলোচনার জন্য সর্বসাধারণের সামনে উন্মুক্ত করা হোক।
বিলের মূল বৈশিষ্ট্য
বিলের প্রধান বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার জানান, ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত (এফসিসি) গঠনের ধারণাটি প্রথম উঠে আসে ২০০৬ সালের গণতন্ত্র সনদে, যা যৌথভাবে স্বাক্ষর করেছিল পিপিপি ও পিএমএল–এন। প্রস্তাবিত আদালতে দেশের সব প্রদেশের বিচারপতি থাকবেন, এবং এটি কেবল সাংবিধানিক বিষয় নিয়ে রায় দেবে; অন্যদিকে বর্তমান উচ্চ আদালতগুলো অন্যান্য মামলার দায়িত্বে থাকবে।
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী আলোচনার সময় কিছু সদস্য সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তা মামলার জট কমাতে ব্যর্থ হয় কারণ বিচারপতিরা নিয়মিত মামলায় ব্যস্ত ছিলেন। তিনি বলেন, “বাস্তবে দেখা যায়, আদালতের মোট সময়ের প্রায় ৪০ শতাংশ ব্যয় হয় মাত্র ৫ থেকে ৬ শতাংশ মামলায়।”
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, সংবিধানের ২৪৩ অনুচ্ছেদে সশস্ত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ও নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে—এ বিষয়টি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে কিছু নতুন ধারা যোগ করা হচ্ছে। তিনি নিশ্চিত করেন, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল উপাধি দেওয়া হয়েছে, যা কেবল একটি সম্মানসূচক পদবি, নতুন কোনো পদ বা নিয়োগ নয়।
তার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সেনাপ্রধানের পদ পাঁচ বছরের জন্য নির্ধারিত থাকবে। বর্তমান চেয়ারম্যান অবসর নেওয়ার পর, আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ‘চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি (সিজেসিএসসি)’ পদটি বিলুপ্ত হবে। এরপর নতুন কোনো চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হবে না; সেনাপ্রধানই প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
বিল অনুযায়ী, সেনাপ্রধানের সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের প্রধান নিয়োগ করবেন।
আজম নাজির তারার বিল থেকে পড়ে শোনান, “যদি কেন্দ্রীয় সরকার কোনো সামরিক কর্মকর্তাকে ফিল্ড মার্শাল, এয়ার মার্শাল অব দ্য এয়ার ফোর্স বা অ্যাডমিরাল অব দ্য ফ্লিট (পাঁচ তারকা পদ) পদে উন্নীত করে, তবে তিনি আজীবন এ পদ ও সুবিধা পাবেন এবং ইউনিফর্ম পরিধান করবেন।”
মেয়াদ শেষে রাষ্ট্রের স্বার্থে এমন কর্মকর্তাদের ভবিষ্যৎ দায়িত্ব সরকার নির্ধারণ করবে।
আরও প্রস্তাব করা হয়েছে, ২৪৮ অনুচ্ছেদে সংশোধন এনে প্রেসিডেন্টকে আজীবন ফৌজদারি মামলা ও গ্রেপ্তার থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। তবে গভর্নরদের ক্ষেত্রে এ সুরক্ষা থাকবে শুধু দায়িত্ব পালনের সময়। বর্তমানে প্রেসিডেন্ট ও গভর্নর দুজনই কেবল মেয়াদকালে এ সুরক্ষা পেয়ে থাকেন।
এ ছাড়া প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যার সাংবিধানিক সীমা সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক পরিষদের মোট সদস্যসংখ্যার ১১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৩ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া: ‘সংবিধানের ওপর আক্রমণ’
মজলিস-ই-ওয়াহদাত–ই–মুসলিমিনের সিনেটর ও পিটিআই–মনোনীত বিরোধীদলীয় নেতা আল্লামা রাজা নাসির আব্বাস প্রশ্ন তোলেন, জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া এত বড় সংশোধনী এত তাড়াহুড়া করে কেন আনা হচ্ছে। তিনি বিলটিকে ‘সংবিধানের ওপর আক্রমণ’ বলে আখ্যা দেন এবং দাবি করেন, বর্তমান আইনসভা জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি নয়, বরং “ফর্ম ৪৭–এর ফসল”—অর্থাৎ ২০২৪ সালের নির্বাচনে কারচুপির ইঙ্গিত দেন তিনি।
আব্বাস আরও বলেন, “ক্ষমতাবানদের ইচ্ছায় করা এ সংশোধনীর নাটক আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। কিন্তু যারা চরম দারিদ্র্যে ভুগছেন, তাঁদের জীবনের উন্নতির জন্য কোনো সংশোধনী আনা হয়েছে কি?”
জেইউআই–এফ নেতা সিনেটর কামরান মুরতাজা মন্তব্য করেন, “মাত্র ১৩ মাস আগে পাস হওয়া ২৬তম সংশোধনী কার্যত এখন বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে।”
পিপিপি নেতা সিনেটর শেরি রেহমান বলেন, “যদি কেন্দ্র এখন ব্যয়ভার সামলাতে না পারে, তবে আমাদের সবাইকে বসে দেখতে হবে কোথায় অপচয় হচ্ছে, কিন্তু প্রদেশগুলোর বাজেট কেটে নয়।”
অন্যদিকে আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির প্রধান সিনেটর আইমাল ওয়ালি খান জানান, তাঁর দল জনগণের স্বার্থে নেওয়া যেকোনো উদ্যোগে সমর্থন জানাবে। তিনি বলেন, আইন প্রণয়ন করা সরকারের এখতিয়ার, তবে বিরোধীদলগুলোকে সংসদীয় কমিটিতে অংশ নিয়ে বিল বিষয়ে গঠনমূলক মতামত দেওয়ার আহ্বান জানান।