নয়া দিল্লিতে বিক্ষোভ
প্রতি বছর শীতের সময়ে নয়া দিল্লি ও এর আশপাশের এলাকাগুলোকে বিষাক্ত বাতাসের কবল থেকে মুক্তি দিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো এক বিক্ষোভ থেকে ডজনের বেশি আন্দোলনকারীকে আটক করেছে ভারতের পুলিশ। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে বিখ্যাত ইন্ডিয়া গেইট স্মৃতিস্তম্ভে বিরল এ বিক্ষোভে প্রায় সব বয়সীদেরই দেখা মেলে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
“আমাদের কেবল একটাই সমস্যা, আর তা হচ্ছে বিশুদ্ধ বাতাসের অভাব। অনেক বছর ধরে এই সমস্যা চলছে কিন্তু কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি,” বার্তা সংস্থ এএনআইকে বলেছেন মাস্ক পরিহিত বিক্ষোভকারী নেহা।
গণমাধ্যমে আসা ভিডিও ফুটেজে পুলিশকে বিক্ষোভকারীদের টেনেহিঁচড়ে বাসে তুলতে দেখা গেছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের কারও হাতে ছিল ‘নিঃশ্বাসে বিষ’ লেখা ব্যানার; কেউ আবার ‘বিশুদ্ধ বাতাস আমাদের অধিকার’ বলে স্লোগানও দিয়েছেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বায়ু মান সূচকে দিল্লির অবস্থান ছিল ‘খুবই খারাপের’ তালিকায়। তাদের হিসাবে বায়ু মান স্কোর ০ থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বাতাস ‘নিরাপদ’, আর ৪০১ থেকে ৫০০-র মধ্যে থাকলে ‘অত্যধিক বিপজ্জনক’। সোমবার সকালে নয়া দিল্লির স্কোর ছিল ৩৪৫।
বিক্ষোভের সময় পুলিশ বারবার আন্দোলনকারীদের ইন্ডিয়া গেইট থেকে সরে বিক্ষোভের জন্য নির্ধারিত স্থান যন্তরমন্তরে সরে যেতে অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি।
পরে পুলিশ জানায়, যারা সড়কে যান চলাচল বিঘিœত করার চেষ্টা করেছিল তাদেরই আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভে অনেকে তাদের শিশু সন্তানদেরও নিয়ে যান। আটকদের মধ্যে কয়েকটি শিশু আছে বলে প্রথমে অনেকে অভিযোগ করলেও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। আটক বিক্ষোভকারীদের পরে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভারতের বিরোধ দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী।
“বিশুদ্ধ বাতাস পাওয়ার অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার তো সংবিধানেই দেওয়া হয়েছে। তাহলে বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানানো নাগরিকদের সঙ্গে কেন অপরাধীদের মতো আচরণ করা লাগবে?,” বলেছেন তিনি।
দিল্লি সরকারের পরিবেশমন্ত্রী মানজিনদার সিং সিরসা বলেছেন, তাদের সরকার দূষণ মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
“দূষণমুক্তি নিশ্চিতে সম্ভাব্য সব চেষ্টা অব্যাহত রাখবো আমরা। এটা আমাদের সরকারের অঙ্গীকার,” এক্সে বিজেপি দিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন তিনি।
দিল্লিতে এখন বিজেপির সরকার। নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন দলটি কেন্দ্রেও এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতাসীন।
শীতের সময় দিল্লি ও এর আশপাশের এলাকায় ঘন ধোঁয়াশার দেখা মেলে। ঠাণ্ডা, ভারি বাতাসে জমাট বাঁধে নির্মাণযজ্ঞের ধুলা, যানবাহনের দূষণ ও অন্যান্য ধোঁয়া। যার ফলে অনেকেরই শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়।
দূষণের মাত্রা কমাতে গত মাসে কর্তৃপক্ষ ‘ক্লাউড সিডিংয়ের’ মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামাতে চেষ্টা করেছিলেন। যদিও তা ফল দেয়নি, বৃষ্টি হয়নি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
নয়া দিল্লিতে বিক্ষোভ
সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
প্রতি বছর শীতের সময়ে নয়া দিল্লি ও এর আশপাশের এলাকাগুলোকে বিষাক্ত বাতাসের কবল থেকে মুক্তি দিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো এক বিক্ষোভ থেকে ডজনের বেশি আন্দোলনকারীকে আটক করেছে ভারতের পুলিশ। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে বিখ্যাত ইন্ডিয়া গেইট স্মৃতিস্তম্ভে বিরল এ বিক্ষোভে প্রায় সব বয়সীদেরই দেখা মেলে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
“আমাদের কেবল একটাই সমস্যা, আর তা হচ্ছে বিশুদ্ধ বাতাসের অভাব। অনেক বছর ধরে এই সমস্যা চলছে কিন্তু কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি,” বার্তা সংস্থ এএনআইকে বলেছেন মাস্ক পরিহিত বিক্ষোভকারী নেহা।
গণমাধ্যমে আসা ভিডিও ফুটেজে পুলিশকে বিক্ষোভকারীদের টেনেহিঁচড়ে বাসে তুলতে দেখা গেছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের কারও হাতে ছিল ‘নিঃশ্বাসে বিষ’ লেখা ব্যানার; কেউ আবার ‘বিশুদ্ধ বাতাস আমাদের অধিকার’ বলে স্লোগানও দিয়েছেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বায়ু মান সূচকে দিল্লির অবস্থান ছিল ‘খুবই খারাপের’ তালিকায়। তাদের হিসাবে বায়ু মান স্কোর ০ থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বাতাস ‘নিরাপদ’, আর ৪০১ থেকে ৫০০-র মধ্যে থাকলে ‘অত্যধিক বিপজ্জনক’। সোমবার সকালে নয়া দিল্লির স্কোর ছিল ৩৪৫।
বিক্ষোভের সময় পুলিশ বারবার আন্দোলনকারীদের ইন্ডিয়া গেইট থেকে সরে বিক্ষোভের জন্য নির্ধারিত স্থান যন্তরমন্তরে সরে যেতে অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি।
পরে পুলিশ জানায়, যারা সড়কে যান চলাচল বিঘিœত করার চেষ্টা করেছিল তাদেরই আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভে অনেকে তাদের শিশু সন্তানদেরও নিয়ে যান। আটকদের মধ্যে কয়েকটি শিশু আছে বলে প্রথমে অনেকে অভিযোগ করলেও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। আটক বিক্ষোভকারীদের পরে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভারতের বিরোধ দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী।
“বিশুদ্ধ বাতাস পাওয়ার অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার তো সংবিধানেই দেওয়া হয়েছে। তাহলে বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানানো নাগরিকদের সঙ্গে কেন অপরাধীদের মতো আচরণ করা লাগবে?,” বলেছেন তিনি।
দিল্লি সরকারের পরিবেশমন্ত্রী মানজিনদার সিং সিরসা বলেছেন, তাদের সরকার দূষণ মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
“দূষণমুক্তি নিশ্চিতে সম্ভাব্য সব চেষ্টা অব্যাহত রাখবো আমরা। এটা আমাদের সরকারের অঙ্গীকার,” এক্সে বিজেপি দিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন তিনি।
দিল্লিতে এখন বিজেপির সরকার। নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন দলটি কেন্দ্রেও এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতাসীন।
শীতের সময় দিল্লি ও এর আশপাশের এলাকায় ঘন ধোঁয়াশার দেখা মেলে। ঠাণ্ডা, ভারি বাতাসে জমাট বাঁধে নির্মাণযজ্ঞের ধুলা, যানবাহনের দূষণ ও অন্যান্য ধোঁয়া। যার ফলে অনেকেরই শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়।
দূষণের মাত্রা কমাতে গত মাসে কর্তৃপক্ষ ‘ক্লাউড সিডিংয়ের’ মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামাতে চেষ্টা করেছিলেন। যদিও তা ফল দেয়নি, বৃষ্টি হয়নি।