alt

জাতীয়

গাজীপুরে মরে যাচ্ছে মুরগি, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খামার

আতিকুর রহমান আমিন, গাজীপুর : শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

গাজীপুরে তাপদাহের প্রচন্ড গরমে মারা যাচ্ছে খামারের মুরগি। এ কারণে এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে একাধিক খামার। মুরগি বাঁচিয়ে রাখার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করেও টিকিয়ে রাখতে না পারায় বাধ্য হয়ে কম দামে মুরগি বেঁচে দিচ্ছেন অনেকে। পাশাপাশি ডিম উৎপাদনও কমে গেছে। ওষুধ ও কাজে দিচ্ছে না। আবার বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কারণেও সমস্যা বাড়ছে। সব মিলে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারিরা।

গাজীপুরের এসব খামার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে বেশি সংখ্যক। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্রয়লার মুরগিও কমদামে বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। কেউ কেউ খামারে মারা যাওয়ার আগ মুহূর্তে জবাই করে দিচ্ছেন। খামারিরা বলছেন, আগে যেখানে একটা মুরগি কমপক্ষে ১২০ গ্রাম খাবার খেতে, গরমের কারণে এখন সেখানে ১০০ গ্রাম খেতে পারছে না। ওষুধে, ফ্যানের বাতাসেও কোন কাজ হচ্ছে না। তাদের এই ক্ষতির মুখে সরকারের প্রণোদনা আশা করছেন খামারিরা।

মহান নগরের লাগালিয়া এলাকার প্রান্তিক খামারি ওবায়দুল হকের খামারের দুটি সেডের প্রায় সব মুরগি মারা যাওয়ায় ওই সেড দুটি এখন খা খা করছে। তিনি জানান, প্রচন্ড গরমের কারণে গত কয়েকদিনে খামারের দুটি সেডে থাকা তিন হাজার ছোট বয়লার মুরগির মধ্যে আড়াই হাজারের বেশি মুরগী মারা গেছে। দু-তিনশ মুরগি কম দামে মাদ্রাসায় এতিমখানায় দিয়েছে। আর কিছু নিজেরা খেয়ে ফেলেছেন। এই অবস্থায় ৫-৬ লাখ টাকা পুঁজি হারিয়ে তিনি এখন ফতুর হয়ে গেছেন। তার মতোই আরো অনেক খামারীর এমন দুরবস্থা গাজীপুরে।

সদর উপজেলার দড়ি বলদা এলাকার সোহাগ পোল্ট্রি ফার্মের ফরিদ হোসেন জানান, প্রতিদিনই মরছে তাদের খামারের মুরগি। মুরগি মারা যাওয়ার পাশাপাশি ডিমের উৎপাদনও কমেছে। মারা যাওয়া মুরগি মাটি চাপা দেয়া হচ্ছে। আর কিছু কিছু মুরগি মারা যাওয়ার আগে জবাই করতে হচ্ছে। এভাবেই আস্তে আস্তে খামার ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।

তাপদাহের মধ্যে প্রায়ই থাকছে না বিদ্যুৎ। ঘন ঘন লোডশেডিং এর মধ্যে জেনারেটর চালিয়ে তাপদাহ থেকে রক্ষার জন্য ঘন ঘন স্প্রে করে পানি দিয়ে, ফ্যান চালিয়ে কিংবা ওষুধ দিয়েও রক্ষা করতে পারছেন না খামারের মুরগি। বলধা এলাকার সাবেক ব্যাংকার খামারি আলী হোসেন জানান, প্রতিদিনই কয়েকটি করে মারা যাচ্ছে। ডিমের উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। প্রতি হাজার মুরগিতে এখন প্রতিদিনে কমপক্ষে দেড়শো ডিম উৎপাদন কম হচ্ছে। নগরের রাখালিয়াচালা এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বুলবুল জানান, খামারের ওষুধের দাম অনেক বেশি পড়ছে। আবার অনেক ওষুধে সব সময় কাজও করছে না। পোল্ট্রিতে ব্যবহৃত অনেক ওষুধই আনতে হচ্ছে দেশের বাইরে থেকে। আর ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষিতে সেখানেও ডলার সংকটে বিরূপ প্রভাব রয়েছে। এই অবস্থায় সরকার খামারিদের পাশে এগিয়ে না আসলে ভর্তুকি কিংবা প্রণোদনা না দিলে, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা যাবে না বলেও জানান তিনি।

প্রচন্ড তাপদাহ পরিস্থিতিতে কিভাবে খামারের মুরগি রক্ষা করা যায় সেজন্য চিকিৎসকদের দিক নির্দেশনা নিচ্ছেন খামারিরা। প্রাণি চিকিৎসক আল আমিন জানান, খামারিদের আহবানে সাড়া দিয়ে চিকিৎসকরা ও খামার ঘুরে ঘুরে দিচ্ছেন নানা পরামর্শ।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারগিস খানম সংবাদকে জানান, মুরগি মারা যাওয়ার বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে থেকে এখনো তারা সুনিদৃষ্ট কোন তথ্য পাননি।

তবে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা এই গরমে হিট স্ট্রোক থেকে খামার রক্ষার জন্য খামারিদের সাথে যোগাযোগ রেখে নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে ও মাইকিং করা সহ নানা ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের খামার পরিদর্শন এবং নজরদারি সহ সচেতনামূলক নানা ধরনের কর্মসূচি ও রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ছবি

সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, প্রধানমন্ত্রীর সন্তোষ

ছবি

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় সহযোগিতার জন্য ওআইসি সদস্যদের প্রতি আহবান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ছবি

লাইসেন্সবিহীন টিভি-চ্যানেল বন্ধে কার্যক্রম শুরু, ১০ সিদ্ধান্ত

ছবি

সিরিয়াল অনুযায়ী মামলার শুনানি হবে: প্রধান বিচারপতি

ছবি

সম্পদ অর্জনে এমপিদের পেছনে ফেলেছেন চেয়ারম্যানরা

ছবি

সারা দেশে কালবৈশাখী ঝড়ের সতর্কতা

ছবি

অভিবাসন সংক্রান্ত অপতথ্য রোধে বাংলাদেশ-ইতালি একসঙ্গে কাজ করবে : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

ছবি

নবায়ণযোগ্য জ্বালানি: নসরুল হামিদের সঙ্গে সুইডেনের রাষ্ট্রদূতের আলোচনা

ছবি

ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ও সেনাপ্রাঙ্গণ ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

জলবায়ু পরিবর্তন : দেখা যায়নি পর্যাপ্ত মুকুল, পড়ে যাচ্ছে গুটি; দুশ্চিন্তায় আম চাষিরা

ছবি

জলবায়ু পরিবর্তন : দেখা যায়নি পর্যাপ্ত মুকুল, পড়ে যাচ্ছে গুটি; দুশ্চিন্তায় আম চাষিরা

ছবি

বাংলাদেশের সাথে গাম্বিয়ার বাণিজ্য ও কৃষিতে সহযোগিতা বৃদ্ধির আশাবাদ

ছবি

মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রীকে ডিবিতে ডাকা হয়েছে : হারুন

ছবি

সরকার পরিচালনাকারী সবাই ফেরেশতা নয় : তথ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

শিক্ষকদের মর্যাদা-বেতনের বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি : শিক্ষামন্ত্রী

ছবি

১০ টাকার টিকিট কেটে জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

শনিবার ২৫ জেলায় স্কুল-কলেজ-মাদরাসা বন্ধ

দেশের গণমাধ্যমে কতটা গুরুত্ব পায় পরিবেশ, জলবায়ু : কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

ছবি

বিচার বিভাগের সম্মান রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের : প্রধান বিচারপতি

ছবি

চাল ছাঁটাই ও পলিশ বন্ধে আইন করা হয়েছে:খাদ্যমন্ত্রী

ছবি

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি : ঢাকায় পৌঁছেছে ৮ বাংলাদেশীর লাশ

ছবি

ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুতে সংসদে শোক

ছবি

এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয় প্রার্থী থাকতে পারেন তবে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না : ইসি

ছবি

১২ কেজি এলপিজির দাম কমলো ৪৯ টাকা

ছবি

থাইল্যান্ড চাইলে আমাদের সমুদ্র সৈকতে জায়গা দেবো : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা করবে থাইল্যান্ড : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

বিকেলে বসছে দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন

আজ দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ

আগামী বছর হজ ব্যবস্থাপনায় অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে- ধর্মমন্ত্রী

ছবি

শ্রমিকের পুঞ্জীভূত শ্রমের প্রতিফলনই উন্নয়ন : ধর্মমন্ত্রী

ছবি

শ্রমিকদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করলে ছাড় নয়: প্রধানমন্ত্রী

ছবি

শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক রেখে উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ছবি

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে আসছেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

শ্রমজীবীর অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন আজ

জাটকা রক্ষায় অভিযানে ২৪,৫৮জন গ্রেপ্তার, ৭৫ হাজার কেজি জাটকা জব্দ

পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

tab

জাতীয়

গাজীপুরে মরে যাচ্ছে মুরগি, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খামার

আতিকুর রহমান আমিন, গাজীপুর

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

গাজীপুরে তাপদাহের প্রচন্ড গরমে মারা যাচ্ছে খামারের মুরগি। এ কারণে এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে একাধিক খামার। মুরগি বাঁচিয়ে রাখার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করেও টিকিয়ে রাখতে না পারায় বাধ্য হয়ে কম দামে মুরগি বেঁচে দিচ্ছেন অনেকে। পাশাপাশি ডিম উৎপাদনও কমে গেছে। ওষুধ ও কাজে দিচ্ছে না। আবার বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কারণেও সমস্যা বাড়ছে। সব মিলে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারিরা।

গাজীপুরের এসব খামার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে বেশি সংখ্যক। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্রয়লার মুরগিও কমদামে বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। কেউ কেউ খামারে মারা যাওয়ার আগ মুহূর্তে জবাই করে দিচ্ছেন। খামারিরা বলছেন, আগে যেখানে একটা মুরগি কমপক্ষে ১২০ গ্রাম খাবার খেতে, গরমের কারণে এখন সেখানে ১০০ গ্রাম খেতে পারছে না। ওষুধে, ফ্যানের বাতাসেও কোন কাজ হচ্ছে না। তাদের এই ক্ষতির মুখে সরকারের প্রণোদনা আশা করছেন খামারিরা।

মহান নগরের লাগালিয়া এলাকার প্রান্তিক খামারি ওবায়দুল হকের খামারের দুটি সেডের প্রায় সব মুরগি মারা যাওয়ায় ওই সেড দুটি এখন খা খা করছে। তিনি জানান, প্রচন্ড গরমের কারণে গত কয়েকদিনে খামারের দুটি সেডে থাকা তিন হাজার ছোট বয়লার মুরগির মধ্যে আড়াই হাজারের বেশি মুরগী মারা গেছে। দু-তিনশ মুরগি কম দামে মাদ্রাসায় এতিমখানায় দিয়েছে। আর কিছু নিজেরা খেয়ে ফেলেছেন। এই অবস্থায় ৫-৬ লাখ টাকা পুঁজি হারিয়ে তিনি এখন ফতুর হয়ে গেছেন। তার মতোই আরো অনেক খামারীর এমন দুরবস্থা গাজীপুরে।

সদর উপজেলার দড়ি বলদা এলাকার সোহাগ পোল্ট্রি ফার্মের ফরিদ হোসেন জানান, প্রতিদিনই মরছে তাদের খামারের মুরগি। মুরগি মারা যাওয়ার পাশাপাশি ডিমের উৎপাদনও কমেছে। মারা যাওয়া মুরগি মাটি চাপা দেয়া হচ্ছে। আর কিছু কিছু মুরগি মারা যাওয়ার আগে জবাই করতে হচ্ছে। এভাবেই আস্তে আস্তে খামার ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।

তাপদাহের মধ্যে প্রায়ই থাকছে না বিদ্যুৎ। ঘন ঘন লোডশেডিং এর মধ্যে জেনারেটর চালিয়ে তাপদাহ থেকে রক্ষার জন্য ঘন ঘন স্প্রে করে পানি দিয়ে, ফ্যান চালিয়ে কিংবা ওষুধ দিয়েও রক্ষা করতে পারছেন না খামারের মুরগি। বলধা এলাকার সাবেক ব্যাংকার খামারি আলী হোসেন জানান, প্রতিদিনই কয়েকটি করে মারা যাচ্ছে। ডিমের উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। প্রতি হাজার মুরগিতে এখন প্রতিদিনে কমপক্ষে দেড়শো ডিম উৎপাদন কম হচ্ছে। নগরের রাখালিয়াচালা এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বুলবুল জানান, খামারের ওষুধের দাম অনেক বেশি পড়ছে। আবার অনেক ওষুধে সব সময় কাজও করছে না। পোল্ট্রিতে ব্যবহৃত অনেক ওষুধই আনতে হচ্ছে দেশের বাইরে থেকে। আর ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষিতে সেখানেও ডলার সংকটে বিরূপ প্রভাব রয়েছে। এই অবস্থায় সরকার খামারিদের পাশে এগিয়ে না আসলে ভর্তুকি কিংবা প্রণোদনা না দিলে, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা যাবে না বলেও জানান তিনি।

প্রচন্ড তাপদাহ পরিস্থিতিতে কিভাবে খামারের মুরগি রক্ষা করা যায় সেজন্য চিকিৎসকদের দিক নির্দেশনা নিচ্ছেন খামারিরা। প্রাণি চিকিৎসক আল আমিন জানান, খামারিদের আহবানে সাড়া দিয়ে চিকিৎসকরা ও খামার ঘুরে ঘুরে দিচ্ছেন নানা পরামর্শ।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারগিস খানম সংবাদকে জানান, মুরগি মারা যাওয়ার বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে থেকে এখনো তারা সুনিদৃষ্ট কোন তথ্য পাননি।

তবে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা এই গরমে হিট স্ট্রোক থেকে খামার রক্ষার জন্য খামারিদের সাথে যোগাযোগ রেখে নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে ও মাইকিং করা সহ নানা ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের খামার পরিদর্শন এবং নজরদারি সহ সচেতনামূলক নানা ধরনের কর্মসূচি ও রয়েছে বলেও জানান তিনি।

back to top