১১৩ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগের আরেক মামলায় সালমানসহ ৯ জনকে আসামি
সালমান এফ রহমান, ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমান
কাগুজে কোম্পানি খুলে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে টাকা পাচার এবং ঋণের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তার ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে ৭৬ কোটি টাকা পাচার এবং ব্যাংক ঋণের ৩৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। যাতে মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মকর্তা ৭ জন।
এছাড়া কাগুজে কোম্পানির নামে ঋণ নিয়ে আরও ১১৩ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সালমান রহমানসহ আরও ৯ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছে দুদক। এ মামলার আসামিদের মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মকর্তা ৬ জন। দুটি মামলাতেই ইনডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাকিয়া তাজিনকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সালমানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের তথ্য সাংবাদিকদের জানান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান রহমান বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও আইএসআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনকালে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কারাগারে আছেন।
এসব মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ঋণে অনিয়ম ও জালিয়াতি, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি ও দুদক। এর আগে দুদকের আবেদনে আদালত গত ১০ মার্চ সালমান ও তার ছেলে শায়ানের নামে লন্ডনে থাকা দুটি বাড়ি জব্দের আদেশ দেয়।
একই আদালত তার ভাতিজা শাহরিয়ার রহমানের নামে দুবাইয়ের দুটি ব্যাংক হিসাব এবং আরআর ট্রেডিং কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশও দিয়েছে। সেদিন কারাগারে আটক সালমান ও তার স্ত্রী সৈয়দা রুবাবা রহমান, ভাই সোহেল এফ রহমান, ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
সালমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের প্রথম মামলাটি করেছেন কমিশনের উপ-পরিচালক কমলেশ ম-ল। সংস্থার সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের করেছেন তিনি। এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানি ইনডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি লিমিটেডের নামে ঋণ অনুমোদন করান। এরপর ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত একটি নামসর্বস্ব কাগুজে কোম্পানির কাছ থেকে ৯৮ লাখ ৮২ হাজার মার্কিন ডলারের (প্রায় ৭৬ কোটি ৩৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা) বিনিময়ে ইনডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জির (ইউনিট-২) জন্য ড্রইং ও ডিজাইন আনার জন্য নামে এলসি খোলেন। এক্ষেত্রে মঞ্জুরিপত্রে থাকা এলসির (লেটার অব ক্রেডিট) শর্ত ভাঙা হয়। তবে প্রকৃতপক্ষে কোনো ড্রইং ও ডিজাইন না এনে শুধু কাগজপত্র দেখিয়ে এই অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়, যা অর্থপাচার আইনের আওতায় পড়ে বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়। এছাড়া এলসির টাকায় ‘ফোর্স’ ঋণ তৈরি করা হলেও আট বছর পরও ব্যাংকের ৩৩ কোটি ৬৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়নি। এ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে এজাহারে বলা হয়েছে।
আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে সালমান রহমান, বেক্সিমকো এলজিপি লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে তার ছেলে শায়ান ফজলুর রহমান এবং এসকর্প হোল্ডিংস লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে সালমানের বড় ভাই সোহেল এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ইনডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাকিয়া তাজিন, ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এক্সিকিউটিভ দীপংকর বড়ুয়া, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরুল ইসলাম চৌধুরী, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনসী ছরোয়ার জান, দিলীপ কুমার দাস ও চন্দন কুমার দাস, এসভিপি মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও ম্যানেজার মো. ফরিদ উদ্দিন আহাম্মদ।
বৃহস্পতিবার সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ দ্বিতীয় মামলাটিও করেছেন উপ-পরিচালক কমলেশ ম-ল। এতে সালমান রহমানসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন- আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ শাহ আলম সারওয়ার, সাবেক এসইভিপি সৈয়দ ফজলে আহমেদ ও মো. বদর কামাল, এফএভিপি মোহাম্মদ সামশুল আলম, ইভিপি মো. রফিকুল ইসলাম, মো. ফখরুল আবেদীন, ডিএমডি মোহাম্মদ মোস্তাফা হাইকেল হাশমী ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি জাকিয়া তাজিন টেলিভিশনের পরিচিত মুখ, যার ইলিশ প্রক্রিয়াজাত ব্যবসার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে তিনি বেক্সিমকো গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। কারণ ইনডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি ইউনিট-২ লিমিটেডের ৮০% শেয়ারের মালিক আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও আহমেদ শাহরিয়ার রহমান, যাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
জাকিয়া তাজিন তার প্রতিষ্ঠান এগ্রো ইনডেক্স লিমিটেডের নামে আইএফআইসি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা ও মতিঝিল শাখা থেকে বিভিন্ন সময়ে মোট ১৪৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার ঋণ নেয়ার জন্য আবেদন করেন। ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই ঋণের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধান কার্যালয়ে পাঠান। অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংকের ওই সময়ের চেয়ারম্যান সালমান রহমান তার প্রভাব খাটিয়ে জাকিয়া তাজিনের নামে এই ঋণ অনুমোদন করান, যদিও তিনি কোনো মর্টগেজ (জামানত) প্রদান করেননি। এজাহারে বলা হয়, ঋণের শর্ত অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জামানত জমা দেয়ার কথা থাকলেও জাকিয়া তাজিন বারবার সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেন। ব্যাংকের কর্মকর্তারা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে এই সময় বাড়িয়ে দেন।
এগ্রো ইনডেক্স লিমিটেডের ইলিশ প্রক্রিয়াজাত কারখানা যে জমির ওপর নির্মিত, সেই জমির মালিকানা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বিরোধ ছিল। ফলে কারখানাটি এখনও উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। কিন্তু উৎপাদন শুরু হওয়ার আগেই ব্যাংক থেকে প্রভাব খাটিয়ে ‘ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল’ ঋণ ছাড় করিয়ে নেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, এগ্রো ইনডেক্সের নামে নেয়া ১৪৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার ঋণের মধ্যে ১১৩ কোটি ৪১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৬ টাকা অবৈধভাবে স্থানান্তর ও রূপান্তর করা হয়েছে, যা অর্থপাচারের শামিল। ঋণের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না করে অন্যত্র সরিয়ে মানি লন্ডারিং করা হয়েছে।
১১৩ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগের আরেক মামলায় সালমানসহ ৯ জনকে আসামি
সালমান এফ রহমান, ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমান
শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
কাগুজে কোম্পানি খুলে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে টাকা পাচার এবং ঋণের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তার ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে ৭৬ কোটি টাকা পাচার এবং ব্যাংক ঋণের ৩৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। যাতে মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মকর্তা ৭ জন।
এছাড়া কাগুজে কোম্পানির নামে ঋণ নিয়ে আরও ১১৩ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সালমান রহমানসহ আরও ৯ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছে দুদক। এ মামলার আসামিদের মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মকর্তা ৬ জন। দুটি মামলাতেই ইনডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাকিয়া তাজিনকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সালমানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের তথ্য সাংবাদিকদের জানান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান রহমান বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও আইএসআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনকালে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কারাগারে আছেন।
এসব মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ঋণে অনিয়ম ও জালিয়াতি, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি ও দুদক। এর আগে দুদকের আবেদনে আদালত গত ১০ মার্চ সালমান ও তার ছেলে শায়ানের নামে লন্ডনে থাকা দুটি বাড়ি জব্দের আদেশ দেয়।
একই আদালত তার ভাতিজা শাহরিয়ার রহমানের নামে দুবাইয়ের দুটি ব্যাংক হিসাব এবং আরআর ট্রেডিং কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশও দিয়েছে। সেদিন কারাগারে আটক সালমান ও তার স্ত্রী সৈয়দা রুবাবা রহমান, ভাই সোহেল এফ রহমান, ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
সালমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের প্রথম মামলাটি করেছেন কমিশনের উপ-পরিচালক কমলেশ ম-ল। সংস্থার সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের করেছেন তিনি। এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানি ইনডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি লিমিটেডের নামে ঋণ অনুমোদন করান। এরপর ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত একটি নামসর্বস্ব কাগুজে কোম্পানির কাছ থেকে ৯৮ লাখ ৮২ হাজার মার্কিন ডলারের (প্রায় ৭৬ কোটি ৩৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা) বিনিময়ে ইনডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জির (ইউনিট-২) জন্য ড্রইং ও ডিজাইন আনার জন্য নামে এলসি খোলেন। এক্ষেত্রে মঞ্জুরিপত্রে থাকা এলসির (লেটার অব ক্রেডিট) শর্ত ভাঙা হয়। তবে প্রকৃতপক্ষে কোনো ড্রইং ও ডিজাইন না এনে শুধু কাগজপত্র দেখিয়ে এই অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়, যা অর্থপাচার আইনের আওতায় পড়ে বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়। এছাড়া এলসির টাকায় ‘ফোর্স’ ঋণ তৈরি করা হলেও আট বছর পরও ব্যাংকের ৩৩ কোটি ৬৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়নি। এ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে এজাহারে বলা হয়েছে।
আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে সালমান রহমান, বেক্সিমকো এলজিপি লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে তার ছেলে শায়ান ফজলুর রহমান এবং এসকর্প হোল্ডিংস লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে সালমানের বড় ভাই সোহেল এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ইনডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাকিয়া তাজিন, ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এক্সিকিউটিভ দীপংকর বড়ুয়া, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরুল ইসলাম চৌধুরী, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনসী ছরোয়ার জান, দিলীপ কুমার দাস ও চন্দন কুমার দাস, এসভিপি মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও ম্যানেজার মো. ফরিদ উদ্দিন আহাম্মদ।
বৃহস্পতিবার সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ দ্বিতীয় মামলাটিও করেছেন উপ-পরিচালক কমলেশ ম-ল। এতে সালমান রহমানসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন- আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ শাহ আলম সারওয়ার, সাবেক এসইভিপি সৈয়দ ফজলে আহমেদ ও মো. বদর কামাল, এফএভিপি মোহাম্মদ সামশুল আলম, ইভিপি মো. রফিকুল ইসলাম, মো. ফখরুল আবেদীন, ডিএমডি মোহাম্মদ মোস্তাফা হাইকেল হাশমী ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি জাকিয়া তাজিন টেলিভিশনের পরিচিত মুখ, যার ইলিশ প্রক্রিয়াজাত ব্যবসার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে তিনি বেক্সিমকো গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। কারণ ইনডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি ইউনিট-২ লিমিটেডের ৮০% শেয়ারের মালিক আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও আহমেদ শাহরিয়ার রহমান, যাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
জাকিয়া তাজিন তার প্রতিষ্ঠান এগ্রো ইনডেক্স লিমিটেডের নামে আইএফআইসি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা ও মতিঝিল শাখা থেকে বিভিন্ন সময়ে মোট ১৪৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার ঋণ নেয়ার জন্য আবেদন করেন। ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই ঋণের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধান কার্যালয়ে পাঠান। অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংকের ওই সময়ের চেয়ারম্যান সালমান রহমান তার প্রভাব খাটিয়ে জাকিয়া তাজিনের নামে এই ঋণ অনুমোদন করান, যদিও তিনি কোনো মর্টগেজ (জামানত) প্রদান করেননি। এজাহারে বলা হয়, ঋণের শর্ত অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জামানত জমা দেয়ার কথা থাকলেও জাকিয়া তাজিন বারবার সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেন। ব্যাংকের কর্মকর্তারা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে এই সময় বাড়িয়ে দেন।
এগ্রো ইনডেক্স লিমিটেডের ইলিশ প্রক্রিয়াজাত কারখানা যে জমির ওপর নির্মিত, সেই জমির মালিকানা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বিরোধ ছিল। ফলে কারখানাটি এখনও উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। কিন্তু উৎপাদন শুরু হওয়ার আগেই ব্যাংক থেকে প্রভাব খাটিয়ে ‘ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল’ ঋণ ছাড় করিয়ে নেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, এগ্রো ইনডেক্সের নামে নেয়া ১৪৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার ঋণের মধ্যে ১১৩ কোটি ৪১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৬ টাকা অবৈধভাবে স্থানান্তর ও রূপান্তর করা হয়েছে, যা অর্থপাচারের শামিল। ঋণের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না করে অন্যত্র সরিয়ে মানি লন্ডারিং করা হয়েছে।