হত্যা, ধর্ষণ এবং নিপীড়নের বিচারসহ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে গণমিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে বামপন্থি আটটি সংগঠন সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমেই কর্মসূচি শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সমাবেশ শুরু হলেও প্রায় আধা ঘণ্টা পর পূর্বঘোষিত গণমিছিল স্থগিতের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা। তিনি জানান, এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দেয় এবং গোয়েন্দা সংস্থা থেকে কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করার অনুরোধ আসে। তবে হামলার ভয় দেখিয়ে তাদের দমিয়ে রাখা যাবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
গণমিছিলের ডাক দেওয়া সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ উদিচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি এবং বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)।
এই গণমিছিলকে ঘিরে রাত থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিশেষ করে লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য ঢাকার পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কার্যালয়কে ‘ছাত্র-জনতার কার্যালয়’ বানানোর আহ্বান জানানোর পর থেকেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় ছিল।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রেজা জুলাই-অগাস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন এবং জানান, এই অন্তর্বর্তী সরকারের সময় যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তার বিচার হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালীভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকার পতনের পরও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি অপরাধীদের উৎসাহিত করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা চালানো হয়েছে, শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছে এবং রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে।
রায়হান উদ্দিন সাত দফা দাবির মধ্যে উল্লেখ করেন—আছিয়াসহ সকল হত্যা, ধর্ষণ এবং নিপীড়নের বিচার করতে হবে; ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ করতে হবে; জুলাই-অগাস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে; ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলাকারীদের বিচার করতে হবে; চট্টগ্রাম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবী হত্যা ও যৌথ বাহিনী দ্বারা শ্রমিক হত্যার বিচার করতে হবে; সাগর-রুনি, তনু, আফসানা, মুনিয়াসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে; এবং হিন্দু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলার বিচার করতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে নারীদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ, অথচ এখন নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিচার হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল সভাপতি গৌতম চন্দ্র শীল সমাবেশে বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করলেও দেশে এখনও হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুটপাট চলছে। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার মব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং ফ্যাসিস্ট আমলে যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল, তারা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি।
তিনি আরও বলেন, গত সাত মাসে বর্তমান সরকারের কার্যক্রমে কোনো সফলতা দেখা যায়নি এবং অযোগ্য উপদেষ্টাদের অপসারণের দাবি জানান। পাশাপাশি তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় নেওয়ার আহ্বান জানান, অন্যথায় তাদের পরিণতি আরও ভয়াবহ হবে বলে সতর্ক করেন।
শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
হত্যা, ধর্ষণ এবং নিপীড়নের বিচারসহ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে গণমিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে বামপন্থি আটটি সংগঠন সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমেই কর্মসূচি শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সমাবেশ শুরু হলেও প্রায় আধা ঘণ্টা পর পূর্বঘোষিত গণমিছিল স্থগিতের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা। তিনি জানান, এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দেয় এবং গোয়েন্দা সংস্থা থেকে কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করার অনুরোধ আসে। তবে হামলার ভয় দেখিয়ে তাদের দমিয়ে রাখা যাবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
গণমিছিলের ডাক দেওয়া সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ উদিচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি এবং বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)।
এই গণমিছিলকে ঘিরে রাত থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিশেষ করে লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য ঢাকার পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কার্যালয়কে ‘ছাত্র-জনতার কার্যালয়’ বানানোর আহ্বান জানানোর পর থেকেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় ছিল।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রেজা জুলাই-অগাস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন এবং জানান, এই অন্তর্বর্তী সরকারের সময় যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তার বিচার হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালীভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকার পতনের পরও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি অপরাধীদের উৎসাহিত করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা চালানো হয়েছে, শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছে এবং রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে।
রায়হান উদ্দিন সাত দফা দাবির মধ্যে উল্লেখ করেন—আছিয়াসহ সকল হত্যা, ধর্ষণ এবং নিপীড়নের বিচার করতে হবে; ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ করতে হবে; জুলাই-অগাস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে; ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলাকারীদের বিচার করতে হবে; চট্টগ্রাম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবী হত্যা ও যৌথ বাহিনী দ্বারা শ্রমিক হত্যার বিচার করতে হবে; সাগর-রুনি, তনু, আফসানা, মুনিয়াসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে; এবং হিন্দু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলার বিচার করতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে নারীদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ, অথচ এখন নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিচার হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল সভাপতি গৌতম চন্দ্র শীল সমাবেশে বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করলেও দেশে এখনও হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুটপাট চলছে। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার মব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং ফ্যাসিস্ট আমলে যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল, তারা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি।
তিনি আরও বলেন, গত সাত মাসে বর্তমান সরকারের কার্যক্রমে কোনো সফলতা দেখা যায়নি এবং অযোগ্য উপদেষ্টাদের অপসারণের দাবি জানান। পাশাপাশি তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় নেওয়ার আহ্বান জানান, অন্যথায় তাদের পরিণতি আরও ভয়াবহ হবে বলে সতর্ক করেন।