ভারতের বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পেছনে ‘ঢাকার কিছু ঘটনারও’ প্রভাব থাকার কথা বলেছে নয়াদিল্লি। গতকাল বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমাদের বন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে যে যানজট, সেটার কারণে আমরা ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার আগে বাংলাদেশে কী কী ঘটেছে, সেগুলোর দিকেও আমি আপনাদের নজর দেয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক খবরে বলা হয়, এক সাংবাদিক দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে জানতে চাইলে জয়সওয়াল এসব কথা বলেন। কিন্তু বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট কোনো ঘটনা বা সিদ্ধান্তের কথা তিনি বলেননি।
এর আগে গত সপ্তাহে ইনডিয়ান এক্সপ্রেসের এক খবরে বলা হয়, ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ অঞ্চল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব সম্প্রসারণে বাংলাদেশের সমর্থনের অভিপ্রায়’ প্রকাশের প্রেক্ষিতে ভারত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ২৮ মার্চ বাংলাদেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বেইজিংয়ে চীনা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভারতের সাত রাজ্য, ভারতের পূর্বাঞ্চলে, যেগুলোকে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়ে থাকে ভারতের ভূবেষ্টিত অঞ্চল। সমুদ্রে যাওয়ার কোনো উপায় তাদের নেই। এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক আমরা।’
এর পর গত ৮ এপ্রিল ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) এক সার্র্কুলারে দেশটির বন্দর বা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করার কথা জানায়। ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অন্য বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক অন্য দেশে রপ্তানির বিষয়টিও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে পরের দিন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশকে দেয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে উল্লেখযোগ্য পণ্যজট সৃষ্টি হচ্ছিল। এই কারণে আমাদের নিজস্ব রপ্তানিতে বিলম্ব, খরচ বৃদ্ধি এবং ব্যাকলগ তৈরি হচ্ছিল। ফলে এই সুবিধা গত ৮ এপ্রিল ২০২৫ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
তবে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল সিদ্ধান্ত নেপাল বা ভুটানগামী বাংলাদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলেও জানায় ভারত।
এমন প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় ।
দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার এ সিদ্ধান্তের বিষয়েও নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়া জানতে চান ওই সাংবাদিক। তবে জয়সওয়াল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
ভারতের আরেক সংবাদপত্র হিন্দু’র এক খবরে বলা হয়, ‘নয়াদিল্লি মনে করে পাকিস্তান থেকে আমদানির বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করতেই ঢাকা স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়া এবং অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে এক ধরনের টানাপোড়ন চলছে। বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার পাশাপাশি দিল্লিতে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রচেষ্টার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে এনেছে ইউনূস সরকার।
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
ভারতের বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পেছনে ‘ঢাকার কিছু ঘটনারও’ প্রভাব থাকার কথা বলেছে নয়াদিল্লি। গতকাল বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমাদের বন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে যে যানজট, সেটার কারণে আমরা ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার আগে বাংলাদেশে কী কী ঘটেছে, সেগুলোর দিকেও আমি আপনাদের নজর দেয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক খবরে বলা হয়, এক সাংবাদিক দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে জানতে চাইলে জয়সওয়াল এসব কথা বলেন। কিন্তু বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট কোনো ঘটনা বা সিদ্ধান্তের কথা তিনি বলেননি।
এর আগে গত সপ্তাহে ইনডিয়ান এক্সপ্রেসের এক খবরে বলা হয়, ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ অঞ্চল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব সম্প্রসারণে বাংলাদেশের সমর্থনের অভিপ্রায়’ প্রকাশের প্রেক্ষিতে ভারত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ২৮ মার্চ বাংলাদেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বেইজিংয়ে চীনা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভারতের সাত রাজ্য, ভারতের পূর্বাঞ্চলে, যেগুলোকে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়ে থাকে ভারতের ভূবেষ্টিত অঞ্চল। সমুদ্রে যাওয়ার কোনো উপায় তাদের নেই। এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক আমরা।’
এর পর গত ৮ এপ্রিল ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) এক সার্র্কুলারে দেশটির বন্দর বা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করার কথা জানায়। ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অন্য বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক অন্য দেশে রপ্তানির বিষয়টিও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে পরের দিন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশকে দেয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে উল্লেখযোগ্য পণ্যজট সৃষ্টি হচ্ছিল। এই কারণে আমাদের নিজস্ব রপ্তানিতে বিলম্ব, খরচ বৃদ্ধি এবং ব্যাকলগ তৈরি হচ্ছিল। ফলে এই সুবিধা গত ৮ এপ্রিল ২০২৫ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
তবে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল সিদ্ধান্ত নেপাল বা ভুটানগামী বাংলাদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলেও জানায় ভারত।
এমন প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় ।
দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার এ সিদ্ধান্তের বিষয়েও নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়া জানতে চান ওই সাংবাদিক। তবে জয়সওয়াল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
ভারতের আরেক সংবাদপত্র হিন্দু’র এক খবরে বলা হয়, ‘নয়াদিল্লি মনে করে পাকিস্তান থেকে আমদানির বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করতেই ঢাকা স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়া এবং অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে এক ধরনের টানাপোড়ন চলছে। বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার পাশাপাশি দিল্লিতে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রচেষ্টার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে এনেছে ইউনূস সরকার।