জুলাই সনদের সুপারিশ অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনশ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭ আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন, যেখানে ১২ আসনে ১০ জন নারী প্রার্থীর নাম রয়েছে।
তাদের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য ঘোষণা করা হয়েছে তিনটি আসনে—দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১।
বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে একজন প্রার্থী সর্বাধিক পাঁচটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। অতীতে একাধিক নির্বাচনে খালেদা জিয়া পাঁচটি আসন থেকেও লড়েছেন এবং কখনো পরাজিত হননি।
তার পৈত্রিক নিবাস ফেনীতে, আর স্বামী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পৈত্রিক বাড়ি বগুড়ায়। দিনাজপুরে জন্ম ও শৈশব কাটলেও খালেদা জিয়া এর আগে কখনো দিনাজপুর থেকে প্রার্থী হননি।
ঘোষিত নারী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—
সানজিদা ইসলাম তুলি (ঢাকা-১৪): গুম হওয়া পরিবারগুলোর প্ল্যাটফর্ম ‘মায়ের ডাক’-এর সমন্বয়ক। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে তার ভাই সাজেদুল ইসলাম নয়ন নিখোঁজ হওয়ার পর সংগঠনটি গড়ে ওঠে।
আফরোজা খানম রিতা (মানিকগঞ্জ-৩): জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও মুন্নু গ্রুপের চেয়ারওম্যান। তার বাবা হারুনার রশীদ খান মুন্নু ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা।
তাহসিনা রুশদীর লুনা (সিলেট-২): গুম হওয়া সাবেক সাংসদ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী, যিনি ২০১২ সালের পর থেকে রাজনীতিতে সক্রিয়।
শামা ওবায়েদ (ফরিদপুর-২): বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বাবা প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমান ছিলেন দলের সাবেক মহাসচিব ও মন্ত্রী।
চৌধুরী নায়াব ইউসুফ (ফরিদপুর-৩): মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি প্রয়াত চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের কন্যা, যিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী ছিলেন।
ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো (ঝালকাঠি-২): নিহত সাংসদ জুলফিকার আলী ভুট্টোর স্ত্রী। তিনি ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন।
ফারজানা শারমিন পুতুল (নাটোর-১): বিএনপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির বিশেষ সহকারী ও মিডিয়া সেলের সদস্য। তার বাবা প্রয়াত ফজলুর রহমান পটল ছিলেন চারবারের এমপি।
সাবিরা সুলতানা মুন্নী (যশোর-২): ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। তার স্বামী নাজমুল ইসলাম ২০১১ সালে অপহরণের পর নিহত হন।
সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা (শেরপুর-১): জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর কন্যা। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ছিলেন বিএনপির সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী।
সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির ১৪ নারী প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। জুলাই সনদে ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সুপারিশ ছিল, যা বিএনপিসহ ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোট সমর্থন দিয়েছে। তিনটি দল ও জোট এই প্রস্তাবে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে এ লক্ষ্য অর্জনের সময়সীমা নির্ধারিত থাকলেও তা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
পূর্ববর্তী নির্বাচনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৯১ সালে ৩৯ নারী প্রার্থীর মধ্যে ৫ জন, ১৯৯৬ সালে ৩৬ জনের মধ্যে ৮ জন, ২০০১ সালে ৩৮ জনের মধ্যে ৬ জন, ২০০৮ সালে ৫৯ জনের মধ্যে ১৯ জন, ২০১৪ সালে ২৯ জনের মধ্যে ১৮ জন নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৬৯ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ২২ জন, আর ২০২৪ সালের দ্বাদশ নির্বাচনে ৯৪ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ১৯ জন নির্বাচিত হয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নারীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে সরাসরি ভোটে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
জুলাই সনদে সংরক্ষিত ৫০ আসন বহাল রাখার পাশাপাশি সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদে প্রয়োজনীয় সংশোধনের কথাও বলা হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
জুলাই সনদের সুপারিশ অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনশ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭ আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন, যেখানে ১২ আসনে ১০ জন নারী প্রার্থীর নাম রয়েছে।
তাদের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য ঘোষণা করা হয়েছে তিনটি আসনে—দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১।
বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে একজন প্রার্থী সর্বাধিক পাঁচটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। অতীতে একাধিক নির্বাচনে খালেদা জিয়া পাঁচটি আসন থেকেও লড়েছেন এবং কখনো পরাজিত হননি।
তার পৈত্রিক নিবাস ফেনীতে, আর স্বামী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পৈত্রিক বাড়ি বগুড়ায়। দিনাজপুরে জন্ম ও শৈশব কাটলেও খালেদা জিয়া এর আগে কখনো দিনাজপুর থেকে প্রার্থী হননি।
ঘোষিত নারী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—
সানজিদা ইসলাম তুলি (ঢাকা-১৪): গুম হওয়া পরিবারগুলোর প্ল্যাটফর্ম ‘মায়ের ডাক’-এর সমন্বয়ক। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে তার ভাই সাজেদুল ইসলাম নয়ন নিখোঁজ হওয়ার পর সংগঠনটি গড়ে ওঠে।
আফরোজা খানম রিতা (মানিকগঞ্জ-৩): জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও মুন্নু গ্রুপের চেয়ারওম্যান। তার বাবা হারুনার রশীদ খান মুন্নু ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা।
তাহসিনা রুশদীর লুনা (সিলেট-২): গুম হওয়া সাবেক সাংসদ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী, যিনি ২০১২ সালের পর থেকে রাজনীতিতে সক্রিয়।
শামা ওবায়েদ (ফরিদপুর-২): বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বাবা প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমান ছিলেন দলের সাবেক মহাসচিব ও মন্ত্রী।
চৌধুরী নায়াব ইউসুফ (ফরিদপুর-৩): মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি প্রয়াত চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের কন্যা, যিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী ছিলেন।
ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো (ঝালকাঠি-২): নিহত সাংসদ জুলফিকার আলী ভুট্টোর স্ত্রী। তিনি ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন।
ফারজানা শারমিন পুতুল (নাটোর-১): বিএনপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির বিশেষ সহকারী ও মিডিয়া সেলের সদস্য। তার বাবা প্রয়াত ফজলুর রহমান পটল ছিলেন চারবারের এমপি।
সাবিরা সুলতানা মুন্নী (যশোর-২): ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। তার স্বামী নাজমুল ইসলাম ২০১১ সালে অপহরণের পর নিহত হন।
সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা (শেরপুর-১): জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর কন্যা। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ছিলেন বিএনপির সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী।
সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির ১৪ নারী প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। জুলাই সনদে ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সুপারিশ ছিল, যা বিএনপিসহ ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোট সমর্থন দিয়েছে। তিনটি দল ও জোট এই প্রস্তাবে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে এ লক্ষ্য অর্জনের সময়সীমা নির্ধারিত থাকলেও তা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
পূর্ববর্তী নির্বাচনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৯১ সালে ৩৯ নারী প্রার্থীর মধ্যে ৫ জন, ১৯৯৬ সালে ৩৬ জনের মধ্যে ৮ জন, ২০০১ সালে ৩৮ জনের মধ্যে ৬ জন, ২০০৮ সালে ৫৯ জনের মধ্যে ১৯ জন, ২০১৪ সালে ২৯ জনের মধ্যে ১৮ জন নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৬৯ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ২২ জন, আর ২০২৪ সালের দ্বাদশ নির্বাচনে ৯৪ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ১৯ জন নির্বাচিত হয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নারীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে সরাসরি ভোটে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
জুলাই সনদে সংরক্ষিত ৫০ আসন বহাল রাখার পাশাপাশি সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদে প্রয়োজনীয় সংশোধনের কথাও বলা হয়েছে।