ত্রিদেশীয় নারী ফুটবল
মালয়েশিয়া ম্যাচের পর যে রুদ্রমূর্তিতে ধরা দিয়েছিলেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ইংলিশ কোচ পিটার জেমস বাটলার। আজারবাইজানের বিপক্ষে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে তেমনটা দেখা গেল না। এদিন তিনি বেশ শান্ত। হারের হতাশা থাকলেও ঋতুপর্ণা-মনিকাদের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করলেন। তবে, ‘মার্কস’ দেয়ার প্রশ্নে প্রচেষ্টার জন্য অবশ্য ফুটবলারদের দশে দশ-ই দিলেন বাটলার।
ঢাকা স্টেডিয়ামে গতকাল মঙ্গলবার ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে ২-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। আজারবাইজানের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়া দলকে দৃষ্টিনন্দন গোলে সমতায় ফিরিয়েছিলেন মারিয়া মান্দা, কিন্তু পরে আরেক গোল হজম করে হেরে যায় দল।
মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচের তুলনায় আজারবাইজানের বিপক্ষে গোছালো ছিল আফঈদা-নবীরনদের খেলা। ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৩০ ধাপ এগিয়ে থাকা আজারবাইজানের বিপক্ষে মেয়েদের নিবেদনের তাই তারিফ করলেন বাটলার।
‘মার্কস দেয়ার ক্ষেত্রে আমি আসলেই খুব খারাপ। এক্ষেত্রে আমি কখনই উদার নই। কেননা, আমি সবসময় আরও বেশি চাই। তবে আমি মনে করি, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মেয়েদের যে প্রচেষ্টা ছিল তা দশে দশ।’
‘আমরা যে দলটার বিপক্ষে খেললাম, পেশাদার পর্যায়ে তারা প্রতি দিন, প্রতি সপ্তাহে খেলে। তাদের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে অনেক ইতিবাচক দিক নেয়ার আছে আমাদের। যদি আপনারা প্রচেষ্টার কথা বলেন, আমি মেয়েদের দশে দশ দেবো। যদি আপনারা মানের কথা বলেন, তাহলে সম্ভবত পাঁচ, ছয় দেবো, খুব উদার হলে সাত দেবো।’
এ নিয়ে টানা চার ম্যাচ হারলো বাংলাদেশ। তবে ম্যাচের ফলের চেয়ে আগামী মার্চের নারী এশিয়ান কাপ সামনে রেখে শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে নিজেদের আরও ঝালিয়ে নেয়াকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বাটলার। শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলার গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে সাফের টুর্নামেন্টগুলোরও সমালোচনা করেন তিনি।
‘যদি সম্ভব হয়, উইমেনস এশিয়ান কাপ শুরুর আগ পর্যন্ত আমি শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে চাইবো। যদি আমরা হারিও, তবু সেখান থেকে আমরা কিছু শিখবো। এ মেয়েরা সাফের টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, সাফের মান ভয়ানক বাজে। এটি উঁচু মানের নয়। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে এএফসি পর্যায়ে।’
আজারবাইজানের র্যাংকিং ৭৪। বাংলাদেশের (১০৪) চেয়ে তারা ৩০ ধাপ এগিয়ে থাকলেও মাঠের লড়াইয়ে বাংলাদেশ খুব বেশি পিছিয়ে ছিল না। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে ভালোই লড়েছে বাটলারের বাংলাদেশ। বিগত ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও হাই-লাইন ডিফেন্স করেছেন আফিদারা। কয়েকবার আজারবাইজান বাংলাদেশের রক্ষণভেদ করলেও ডিফেন্ডাররা কাভারের চেষ্টা করেছেন। আবার কখনো অফসাইডের ফাঁদেও পড়েছে আজারবাইজান।
হামজা-জামালদের ম্যাচে স্টেডিয়ামে উপচে পড়া দর্শক থাকে। নারী দলের ম্যাচেও উল্লেখযোগ্য দর্শক উপস্থিত হন। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া ম্যাচে সব গ্যালারি খোলা ছিল। এ ম্যাচে শুধু পূর্ব গ্যালারি উন্মুক্ত রেখেছিল বাফুফে। প্রায় হাজার সাতেক দর্শক উপস্থিত ছিল সবমিলিয়ে। দর্শকরা বাদ্যযন্ত্র স্টেডিয়াম মাতিয়ে রাখেন।
২০ মিনিটে আজারবাইজান লিড নেয় অধিনায়ক জাফরজাদার গোলে। ৩৪ মিনিটে মারিয়া মান্দার দুর্দান্ত গোলে বাংলাদেশ সমতা আনে। ৮৪ মিনিটে মনিয়া এসরার গোলে আবারও এগিয়ে যায় আজরবাইজান। শেষে এ ব্যবধানে হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের দুটিতে জিতে শীর্ষেই থাকলো আজারবাইজান। মালয়েশিয়া জিতেছে একটিতে স্বাগতিকদের সঙ্গে। বাংলাদেশ দুই ম্যাচের দুটিতেই হেরেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ত্রিদেশীয় নারী ফুটবল
বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
মালয়েশিয়া ম্যাচের পর যে রুদ্রমূর্তিতে ধরা দিয়েছিলেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ইংলিশ কোচ পিটার জেমস বাটলার। আজারবাইজানের বিপক্ষে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে তেমনটা দেখা গেল না। এদিন তিনি বেশ শান্ত। হারের হতাশা থাকলেও ঋতুপর্ণা-মনিকাদের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করলেন। তবে, ‘মার্কস’ দেয়ার প্রশ্নে প্রচেষ্টার জন্য অবশ্য ফুটবলারদের দশে দশ-ই দিলেন বাটলার।
ঢাকা স্টেডিয়ামে গতকাল মঙ্গলবার ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে ২-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। আজারবাইজানের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়া দলকে দৃষ্টিনন্দন গোলে সমতায় ফিরিয়েছিলেন মারিয়া মান্দা, কিন্তু পরে আরেক গোল হজম করে হেরে যায় দল।
মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচের তুলনায় আজারবাইজানের বিপক্ষে গোছালো ছিল আফঈদা-নবীরনদের খেলা। ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৩০ ধাপ এগিয়ে থাকা আজারবাইজানের বিপক্ষে মেয়েদের নিবেদনের তাই তারিফ করলেন বাটলার।
‘মার্কস দেয়ার ক্ষেত্রে আমি আসলেই খুব খারাপ। এক্ষেত্রে আমি কখনই উদার নই। কেননা, আমি সবসময় আরও বেশি চাই। তবে আমি মনে করি, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মেয়েদের যে প্রচেষ্টা ছিল তা দশে দশ।’
‘আমরা যে দলটার বিপক্ষে খেললাম, পেশাদার পর্যায়ে তারা প্রতি দিন, প্রতি সপ্তাহে খেলে। তাদের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে অনেক ইতিবাচক দিক নেয়ার আছে আমাদের। যদি আপনারা প্রচেষ্টার কথা বলেন, আমি মেয়েদের দশে দশ দেবো। যদি আপনারা মানের কথা বলেন, তাহলে সম্ভবত পাঁচ, ছয় দেবো, খুব উদার হলে সাত দেবো।’
এ নিয়ে টানা চার ম্যাচ হারলো বাংলাদেশ। তবে ম্যাচের ফলের চেয়ে আগামী মার্চের নারী এশিয়ান কাপ সামনে রেখে শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে নিজেদের আরও ঝালিয়ে নেয়াকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বাটলার। শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলার গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে সাফের টুর্নামেন্টগুলোরও সমালোচনা করেন তিনি।
‘যদি সম্ভব হয়, উইমেনস এশিয়ান কাপ শুরুর আগ পর্যন্ত আমি শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে চাইবো। যদি আমরা হারিও, তবু সেখান থেকে আমরা কিছু শিখবো। এ মেয়েরা সাফের টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, সাফের মান ভয়ানক বাজে। এটি উঁচু মানের নয়। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে এএফসি পর্যায়ে।’
আজারবাইজানের র্যাংকিং ৭৪। বাংলাদেশের (১০৪) চেয়ে তারা ৩০ ধাপ এগিয়ে থাকলেও মাঠের লড়াইয়ে বাংলাদেশ খুব বেশি পিছিয়ে ছিল না। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে ভালোই লড়েছে বাটলারের বাংলাদেশ। বিগত ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও হাই-লাইন ডিফেন্স করেছেন আফিদারা। কয়েকবার আজারবাইজান বাংলাদেশের রক্ষণভেদ করলেও ডিফেন্ডাররা কাভারের চেষ্টা করেছেন। আবার কখনো অফসাইডের ফাঁদেও পড়েছে আজারবাইজান।
হামজা-জামালদের ম্যাচে স্টেডিয়ামে উপচে পড়া দর্শক থাকে। নারী দলের ম্যাচেও উল্লেখযোগ্য দর্শক উপস্থিত হন। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া ম্যাচে সব গ্যালারি খোলা ছিল। এ ম্যাচে শুধু পূর্ব গ্যালারি উন্মুক্ত রেখেছিল বাফুফে। প্রায় হাজার সাতেক দর্শক উপস্থিত ছিল সবমিলিয়ে। দর্শকরা বাদ্যযন্ত্র স্টেডিয়াম মাতিয়ে রাখেন।
২০ মিনিটে আজারবাইজান লিড নেয় অধিনায়ক জাফরজাদার গোলে। ৩৪ মিনিটে মারিয়া মান্দার দুর্দান্ত গোলে বাংলাদেশ সমতা আনে। ৮৪ মিনিটে মনিয়া এসরার গোলে আবারও এগিয়ে যায় আজরবাইজান। শেষে এ ব্যবধানে হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের দুটিতে জিতে শীর্ষেই থাকলো আজারবাইজান। মালয়েশিয়া জিতেছে একটিতে স্বাগতিকদের সঙ্গে। বাংলাদেশ দুই ম্যাচের দুটিতেই হেরেছে।