alt

মতামত » সম্পাদকীয়

চশমা পরা ও মুখপোড়া হনুমান রক্ষায় উদ্যোগ চাই

: মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪

সিলেট বিভাগের বনাঞ্চলে দুটি মহাবিপন্ন হনুমান প্রজাতি হচ্ছেÑ চশমা পরা হনুমান ও মুখপোড়া হনুমান। সংকরায়নের কারণে তাদের অস্তিত্ব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংকরায়ন একটি বিরল প্রাকৃতিক ঘটনা হলেও মানবসৃষ্ট নানা কারণে এর ঝুঁকি এখন আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষত, এই দুই প্রজাতির মধ্যে মিশ্র প্রজাতির উদ্ভব তাদের জেনেটিক বৈশিষ্ট্যে প্রভাব ফেলতে পারে, যা ভবিষ্যতে প্রজাতি দুটি হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে। এ নিয়ে গত রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

সিলেট বিভাগের রেমা-কালেঙ্গা, সাতছড়ি, এবং লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, চশমা পরা এবং মুখপোড়া হনুমানের দলগুলো মাঝে মাঝে মিশ্র প্রজাতি তৈরি করছে। ১৯৯৭-৯৮ সালে রেমা-কালেঙ্গা বনে মিশ্র প্রজাতির দল দেখা গেলেও, ২০১৭ সালের আগে কোনো সংকর হনুমান দেখা যায়নি। ২০১৭ সালে সাতছড়ি উদ্যানে প্রথম সংকর হনুমান শনাক্ত করা হয়। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, চশমা পরা হনুমানের ৪১টি দল, মুখপোড়া হনুমানের ৪৯টি দল এবং ৮টি মিশ্র প্রজাতির হনুমানের দল সিলেট বিভাগের বিভিন্ন বনাঞ্চলে বিচরণ করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংকরায়নের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো বনাঞ্চলের ধ্বংস এবং অবনতি। বনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় এবং বনগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় প্রাণীদের আবাসস্থল সংকুচিত হচ্ছে। এর ফলে প্রাণীগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং আগ্রাসী আচরণ বাড়ছে, যা তাদের মিশ্র প্রজাতি তৈরি করতে বাধ্য করছে।

আবাসন প্রকল্প, গাছ চুরি, পাহাড় কাটা, এবং বনভূমি ধ্বংসের কারণে হনুমানদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসস্থল নেই। বনকে ছোট ছোট বিচ্ছিন্ন অংশে ভাগ করা, সড়ক ও বৈদ্যুতিক খুঁটি নির্মাণ এবং পর্যটন বাণিজ্যের কারণে বনাঞ্চলের মান কমছে। লাউয়াছড়া, সাতছড়ি, এবং রেমা-কালেঙ্গা জাতীয় উদ্যানে হনুমানদের ঘনত্ব বেশি, যেখানে রাজকান্দি, পাথারিয়া এবং অতোরা সংরক্ষিত বনগুলো ছোট ও বিচ্ছিন্ন। এর ফলে প্রাণীরা নির্দিষ্ট অঞ্চলে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে, যা সংকরায়নের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

সংকরায়নের ঝুঁকি মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বন সংরক্ষণ নীতি একটি জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে গড়ে তোলা উচিত। বনাঞ্চলগুলোকে আরও সম্প্রসারণ করা এবং এগুলোকে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে সড়ক বা বৈদ্যুতিক খুঁটি নির্মাণ বন্ধ করতে হবে এবং বনাঞ্চলের মান বজায় রাখতে মানবসৃষ্ট তৎপরতাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

চশমা পরা এবং মুখপোড়া হনুমানের সংকরায়ন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে, আমরা শুধু দুটি প্রজাতিই হারাব না, বরং আমাদের দেশের অমূল্য জীববৈচিত্র্যের একটি অংশও হারিয়ে যাবে।

ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দায়িত্বহীনতা আর নয়

সার সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন

প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা যেন অবহেলার শিকার না হয়

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল : একটি ভুল বার্তা

ঘিওর ভেটেরিনারি হাসপাতালের সংকট দূর করুন

ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ

একটি পাকা সেতুর জন্য অপেক্ষা

নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করুন

ইছামতী নদীকে রক্ষা করুন

সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ে দুর্ভোগের অবসান হোক

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন থামছে না?

সারের সংকট আর কত

সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করুন

কক্সবাজার সৈকত রক্ষা করুন

ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য কী?

সড়ক দখলমুক্ত করা জরুরি

কৃষকদের পাশে থাকুন

প্রাথমিক শিক্ষায় সংকট

অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে ধীরগতি: ঝুঁকিতে মানুষ ও গবাদিপশু

রাজধানীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে সিগন্যাল বাতি: বাস্তবায়ন জরুরি

দুস্থদের জন্য নিম্নমানের চাল: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

নিরাপদ সড়কের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতা

কটিয়াদীতে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগ আমলে নিন

ধানখেতে পোকার আক্রমণ: কৃষকের পাশে দাঁড়ান

কৃষিজমির পাশে ইউক্যালিপটাস: লাভ সাময়িক, ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদী

খুলনা বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল চালু হতে আর কত অপেক্ষা

সদরপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ব্যবস্থা নিন

সরকারি জমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

চশমা পরা ও মুখপোড়া হনুমান রক্ষায় উদ্যোগ চাই

মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪

সিলেট বিভাগের বনাঞ্চলে দুটি মহাবিপন্ন হনুমান প্রজাতি হচ্ছেÑ চশমা পরা হনুমান ও মুখপোড়া হনুমান। সংকরায়নের কারণে তাদের অস্তিত্ব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংকরায়ন একটি বিরল প্রাকৃতিক ঘটনা হলেও মানবসৃষ্ট নানা কারণে এর ঝুঁকি এখন আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষত, এই দুই প্রজাতির মধ্যে মিশ্র প্রজাতির উদ্ভব তাদের জেনেটিক বৈশিষ্ট্যে প্রভাব ফেলতে পারে, যা ভবিষ্যতে প্রজাতি দুটি হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে। এ নিয়ে গত রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

সিলেট বিভাগের রেমা-কালেঙ্গা, সাতছড়ি, এবং লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, চশমা পরা এবং মুখপোড়া হনুমানের দলগুলো মাঝে মাঝে মিশ্র প্রজাতি তৈরি করছে। ১৯৯৭-৯৮ সালে রেমা-কালেঙ্গা বনে মিশ্র প্রজাতির দল দেখা গেলেও, ২০১৭ সালের আগে কোনো সংকর হনুমান দেখা যায়নি। ২০১৭ সালে সাতছড়ি উদ্যানে প্রথম সংকর হনুমান শনাক্ত করা হয়। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, চশমা পরা হনুমানের ৪১টি দল, মুখপোড়া হনুমানের ৪৯টি দল এবং ৮টি মিশ্র প্রজাতির হনুমানের দল সিলেট বিভাগের বিভিন্ন বনাঞ্চলে বিচরণ করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংকরায়নের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো বনাঞ্চলের ধ্বংস এবং অবনতি। বনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় এবং বনগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় প্রাণীদের আবাসস্থল সংকুচিত হচ্ছে। এর ফলে প্রাণীগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং আগ্রাসী আচরণ বাড়ছে, যা তাদের মিশ্র প্রজাতি তৈরি করতে বাধ্য করছে।

আবাসন প্রকল্প, গাছ চুরি, পাহাড় কাটা, এবং বনভূমি ধ্বংসের কারণে হনুমানদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসস্থল নেই। বনকে ছোট ছোট বিচ্ছিন্ন অংশে ভাগ করা, সড়ক ও বৈদ্যুতিক খুঁটি নির্মাণ এবং পর্যটন বাণিজ্যের কারণে বনাঞ্চলের মান কমছে। লাউয়াছড়া, সাতছড়ি, এবং রেমা-কালেঙ্গা জাতীয় উদ্যানে হনুমানদের ঘনত্ব বেশি, যেখানে রাজকান্দি, পাথারিয়া এবং অতোরা সংরক্ষিত বনগুলো ছোট ও বিচ্ছিন্ন। এর ফলে প্রাণীরা নির্দিষ্ট অঞ্চলে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে, যা সংকরায়নের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

সংকরায়নের ঝুঁকি মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বন সংরক্ষণ নীতি একটি জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে গড়ে তোলা উচিত। বনাঞ্চলগুলোকে আরও সম্প্রসারণ করা এবং এগুলোকে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে সড়ক বা বৈদ্যুতিক খুঁটি নির্মাণ বন্ধ করতে হবে এবং বনাঞ্চলের মান বজায় রাখতে মানবসৃষ্ট তৎপরতাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

চশমা পরা এবং মুখপোড়া হনুমানের সংকরায়ন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে, আমরা শুধু দুটি প্রজাতিই হারাব না, বরং আমাদের দেশের অমূল্য জীববৈচিত্র্যের একটি অংশও হারিয়ে যাবে।

back to top