ঝালকাঠিতে সমবায় সমিতির নামে প্রতারণার ঘটনা ক্রমশ উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নিয়ে এসব সমিতি ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা সমবায় আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করে এখন একের পর এক সমিতি গা-ঢাকা দিচ্ছে। ফলে হাজার হাজার গ্রাহক সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি শুধু আর্থিক ক্ষতির গল্প নয়, বরং সামাজিক বিশ্বাস ও নিরাপত্তার ভিত্তি নড়ে যাওয়ার এক করুণ চিত্র। এ নিয়ে গতকাল সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার ডুমুরিয়া বাজারের শিকড় সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি ২৫ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে। একইভাবে সারথী, স্বদেশ, রূপসী বাংলাসহ আরও কয়েকটি সমিতি অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ৪৯১টি সমবায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিকাংশই আইন মানছে না। তারা ডিপিএস, স্থায়ী আমানত এবং দৈনিক-মাসিক সঞ্চয়ের নামে টাকা সংগ্রহ করছে, কিন্তু আমানত ফেরতের কোনো নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। এরই মধ্যে ১৫টি সমিতি উধাও হয়ে গেছে, এবং তাদের অফিসে ঝুলছে তালা।
এই প্রতারণার দায় কার? জেলা সমবায় কর্মকর্তারা বলছেন, এসব কার্যক্রমে তাদের পরামর্শ নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, নিবন্ধন দেয়ার পর এসব সমিতির কার্যক্রমের ওপর নজরদারি কেন ছিল না? সমবায় আইন মেনে চলা হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব কি তাদের নয়? গ্রাহকদের শেষ সম্বল হাতিয়ে নেয়ার আগে কেন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি? এই নীরবতা ও উদাসীনতা প্রতারকদের আরও উৎসাহিত করেছে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি। প্রথমত, সমবায় সমিতিগুলোর কার্যক্রমের ওপর নিয়মিত তদারকি ও অডিট বাধ্যতামূলক করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যেসব সমিতি প্রতারণার সঙ্গে জড়িত, তাদের কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ঝিনাইদহের সমবায় কর্মকর্তারা যেমন ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ সমিতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার কথা বলেছেন, ঝালকাঠিতেও তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয়ত, গ্রাহকদের সচেতন করতে হবে, যাতে তারা অতিরিক্ত মুনাফার লোভে প্রতারণার শিকার না হন।
সমবায় সমিতি গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষের আর্থিক কল্যাণ। কিন্তু ঝালকাঠির ঘটনা প্রমাণ করে, এটি এখন অনেক ক্ষেত্রে প্রতারণার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই অরাজকতা বন্ধে কঠোর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। নইলে সাধারণ মানুষের আস্থা ও সঞ্চয় শুধু লুটপাটের শিকারই হবে না, সমাজে অস্থিরতাও বাড়বে। সময় এসেছে দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলার।
রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫
ঝালকাঠিতে সমবায় সমিতির নামে প্রতারণার ঘটনা ক্রমশ উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নিয়ে এসব সমিতি ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা সমবায় আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করে এখন একের পর এক সমিতি গা-ঢাকা দিচ্ছে। ফলে হাজার হাজার গ্রাহক সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি শুধু আর্থিক ক্ষতির গল্প নয়, বরং সামাজিক বিশ্বাস ও নিরাপত্তার ভিত্তি নড়ে যাওয়ার এক করুণ চিত্র। এ নিয়ে গতকাল সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার ডুমুরিয়া বাজারের শিকড় সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি ২৫ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে। একইভাবে সারথী, স্বদেশ, রূপসী বাংলাসহ আরও কয়েকটি সমিতি অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ৪৯১টি সমবায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিকাংশই আইন মানছে না। তারা ডিপিএস, স্থায়ী আমানত এবং দৈনিক-মাসিক সঞ্চয়ের নামে টাকা সংগ্রহ করছে, কিন্তু আমানত ফেরতের কোনো নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। এরই মধ্যে ১৫টি সমিতি উধাও হয়ে গেছে, এবং তাদের অফিসে ঝুলছে তালা।
এই প্রতারণার দায় কার? জেলা সমবায় কর্মকর্তারা বলছেন, এসব কার্যক্রমে তাদের পরামর্শ নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, নিবন্ধন দেয়ার পর এসব সমিতির কার্যক্রমের ওপর নজরদারি কেন ছিল না? সমবায় আইন মেনে চলা হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব কি তাদের নয়? গ্রাহকদের শেষ সম্বল হাতিয়ে নেয়ার আগে কেন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি? এই নীরবতা ও উদাসীনতা প্রতারকদের আরও উৎসাহিত করেছে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি। প্রথমত, সমবায় সমিতিগুলোর কার্যক্রমের ওপর নিয়মিত তদারকি ও অডিট বাধ্যতামূলক করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যেসব সমিতি প্রতারণার সঙ্গে জড়িত, তাদের কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ঝিনাইদহের সমবায় কর্মকর্তারা যেমন ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ সমিতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার কথা বলেছেন, ঝালকাঠিতেও তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয়ত, গ্রাহকদের সচেতন করতে হবে, যাতে তারা অতিরিক্ত মুনাফার লোভে প্রতারণার শিকার না হন।
সমবায় সমিতি গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষের আর্থিক কল্যাণ। কিন্তু ঝালকাঠির ঘটনা প্রমাণ করে, এটি এখন অনেক ক্ষেত্রে প্রতারণার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই অরাজকতা বন্ধে কঠোর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। নইলে সাধারণ মানুষের আস্থা ও সঞ্চয় শুধু লুটপাটের শিকারই হবে না, সমাজে অস্থিরতাও বাড়বে। সময় এসেছে দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলার।