বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রতিবেদন এক কঠিন বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশকে। চার বছর ধরে দেশে দারিদ্র্যের হার বাড়ছে। ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ এখন দারিদ্র্যেসীমার নিচে। চলতি বছর দারিদ্র্যে ২১ শতাংশ ছাড়াতে পারে।
দেশে দীর্ঘ তিন দশক ধরে দারিদ্র্যে কমছিল। এটাকে অগ্রগতির প্রধান সাফল্য হিসেবেই দেখা হতো। দেশের এই উল্টোপথ চলা উদ্বেগজনক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের আয় বাড়েনি। অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ২০ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও স্থবির মজুরি অনেক পরিবারকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। যারা দারিদ্র্যেসীমার সামান্য ওপরে ছিল, তারাই সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ে গেছে।
সমস্যা শুধু কর্মসংস্থান নয়। সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রেও বড় ধরনের বৈষম্য আছে বলে মনে করেন কেউ কেউ। রাষ্ট্রের সহায়তা দরিদ্রদের সবার কাছে সমানভাবে পৌঁছায় না। এসব সহায়তা অনেক ক্ষেত্রে তুলনামূলক সচ্ছল পরিবারও পায়। ফলে সামাজিক নিরাপত্তার জাল লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করতে পারছে না।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি দারিদ্র্যের চিত্রকে আরও জটিল করে তুলছে। ২০৫০ সালে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে। এর প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতেও। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষিখাত, যার সঙ্গে দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল।
দারিদ্র্যে বাড়ার এই উল্টো পথে চলা থামুক সেটাই আমাদের চাওয়া। চাইলে দারিদ্র্যে কমানো সম্ভব। অতীতে সেটা দেখা গেছে। আগামীতেও দারিদ্র্য কমানোর কাজে সফলতা মিলবে সেই প্রত্যাশা করা যায়। তবে সেজন্য প্রয়োজন বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা।
বিশ্বব্যাংক চারটি সমাধান প্রস্তাব করেছে। উৎপাদনমূলক খাতে কর্মসংস্থান তৈরি, শোভন কাজের সুযোগ বাড়ানো, গ্রামের বাজারব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং দক্ষ রাজস্বনীতির কথা বলছে তারা। এসব সুপারিশ নিয়ে নীতিনির্ধারকরা ভেবে দেখতে পারেন। তবে অন্তর্বর্তী সরকার আর কতদিন ক্ষমতায় থাকবে আর তাদের পক্ষে কী করা সম্ভব হবে সেটা একটা প্রশ্ন। গত দেড় বছরে তারা কী করেছে- সেই প্রশ্নও তোলা যেতে পারে। এখন অনেক কিছুই নির্ভর করছে আগামী নির্বাচন ও ভাবী সরকারের ওপর।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রতিবেদন এক কঠিন বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশকে। চার বছর ধরে দেশে দারিদ্র্যের হার বাড়ছে। ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ এখন দারিদ্র্যেসীমার নিচে। চলতি বছর দারিদ্র্যে ২১ শতাংশ ছাড়াতে পারে।
দেশে দীর্ঘ তিন দশক ধরে দারিদ্র্যে কমছিল। এটাকে অগ্রগতির প্রধান সাফল্য হিসেবেই দেখা হতো। দেশের এই উল্টোপথ চলা উদ্বেগজনক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের আয় বাড়েনি। অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ২০ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও স্থবির মজুরি অনেক পরিবারকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। যারা দারিদ্র্যেসীমার সামান্য ওপরে ছিল, তারাই সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ে গেছে।
সমস্যা শুধু কর্মসংস্থান নয়। সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রেও বড় ধরনের বৈষম্য আছে বলে মনে করেন কেউ কেউ। রাষ্ট্রের সহায়তা দরিদ্রদের সবার কাছে সমানভাবে পৌঁছায় না। এসব সহায়তা অনেক ক্ষেত্রে তুলনামূলক সচ্ছল পরিবারও পায়। ফলে সামাজিক নিরাপত্তার জাল লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করতে পারছে না।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি দারিদ্র্যের চিত্রকে আরও জটিল করে তুলছে। ২০৫০ সালে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে। এর প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতেও। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষিখাত, যার সঙ্গে দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল।
দারিদ্র্যে বাড়ার এই উল্টো পথে চলা থামুক সেটাই আমাদের চাওয়া। চাইলে দারিদ্র্যে কমানো সম্ভব। অতীতে সেটা দেখা গেছে। আগামীতেও দারিদ্র্য কমানোর কাজে সফলতা মিলবে সেই প্রত্যাশা করা যায়। তবে সেজন্য প্রয়োজন বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা।
বিশ্বব্যাংক চারটি সমাধান প্রস্তাব করেছে। উৎপাদনমূলক খাতে কর্মসংস্থান তৈরি, শোভন কাজের সুযোগ বাড়ানো, গ্রামের বাজারব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং দক্ষ রাজস্বনীতির কথা বলছে তারা। এসব সুপারিশ নিয়ে নীতিনির্ধারকরা ভেবে দেখতে পারেন। তবে অন্তর্বর্তী সরকার আর কতদিন ক্ষমতায় থাকবে আর তাদের পক্ষে কী করা সম্ভব হবে সেটা একটা প্রশ্ন। গত দেড় বছরে তারা কী করেছে- সেই প্রশ্নও তোলা যেতে পারে। এখন অনেক কিছুই নির্ভর করছে আগামী নির্বাচন ও ভাবী সরকারের ওপর।