alt

চিঠিপত্র

চিঠি : ভিক্ষুক মুক্ত দেশ চাই

: রোববার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলাকে ভিক্ষুক মুক্ত হিসেবে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয় ৩০ এপ্রিল ২০১৭ সালে। পৌরসভার বিভিন্ন দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন ২০ থেকে ৫০ জন পর্যন্ত ভিক্ষুক এখন তাদের দোকানে এসে থাকেন। এ সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু কেশবপুর পৌরসভাকে ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে ২০১৭ সালে।

দেশে দারিদ্র্য নিরসনে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এবং ভিক্ষাবৃত্তির মতো অমর্যাদাকর পেশা থেকে মানুষকে নিবৃত্ত করার লক্ষ্যে ভিক্ষা বৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্টির পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্যে সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ‘ভিক্ষা বৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান’ শীর্ষক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। ২০১০ সাল থেকে এ কর্মসূচির কার্য্যক্রম শুরু হলেও তা তেমন ব্যাপকতা পায়নি।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো দেশের ৫৮টি জেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের নিমিত্তে অর্থপ্রেরণ করা হয়। এ বছর ২ লাখ ৩ হাজার ৫০৮ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসনের জন্যে বরাদ্দ করা হয় ৪২২ কোটি ২২ লাখ টাকা। অনুরূপ ভাবে ১৮-১৯ অর্থ বছরের বরাদ্দ করা হয় ৩ কোটি টাকা। এছাড়া ভিক্ষা বৃত্তি রোধকল্পে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফ, টি.আর কাবিখার মতো অসংখ্য প্রকল্প চালু করা হয়। যা এখনও চলমান। এত সুযোগ সুবিধার পরও ভিক্ষাবৃত্তির হার কমছে না বরং বেড়েই চলেছে।

জরিপের তথ্য জানাচ্ছে, ভিক্ষুকদের শতকরা ৭৯ শতাংশ পেশাদার ভিক্ষুক। তাদের বসতবাড়ী, জমি, টাকা পয়সা, আয়ের উৎস্য থাকা সত্ত্বেও তারা প্রতিদিন সকালে এই পথে নেমে সন্ধ্যা অবধি ভিক্ষা করে বেড়ায়। সারাদিনের উপার্জিত অর্থের একশ ভাগই তারা সঞ্চয় করে থাকে। দশ ভাগ হচ্ছে শৌখিন ভিক্ষুক। এরা মূলত বেকার। সারাদিন আড্ডা দিয়ে বেড়ানো এদের কাজ। সুযোগ বুঝে এরা মানুষের কাছে হাত পাতে।

দেশে ভিক্ষুকের সংখ্যা নিরূপণে হালনাগাদ সমন্বিত কোন জরিপ নেই। গত বছর মাননীয় সমাজ কল্যাণমন্ত্রী জাতীয় সংসদে জানিয়ে ছিলেন দেশে ভিক্ষুকের সংখ্যা আড়াই লাখ। অর্থাৎ মোট নজসংখ্যার শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ মানুষ ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত; কিন্তু বিভিন্ন সংস্থার জরিপ বলছে প্রকৃত সংখ্যা ২০ লাখের কাছাকাছি। এর মধ্যে শুধুমাত্র রাজধানীতেই ৫০ হাজার পেশাদার ভিক্ষুক রয়েছে।

দেশে মর্যাদাহানিকর নিকৃষ্ট জীবনযাত্রার পরিশ্রমহীন সহজ পদ্ধতি হলো ভিক্ষাবৃত্তি। ভিক্ষা হচ্ছে কোনরকম পূঁজি বিনিযোগ বা লেনদেন ছাড়াই অপরের অনুগ্রহে অর্থ আদায়ের চেষ্টা। ব্যক্তিগত, সামাজিক, জাতীয় মূল্যবোধকে জলাঞ্জলি দিয়ে অভাবগত কিংবা স্বভাবগত কারণে ভিক্ষাবৃত্তিকে একশ্রেণির মানুষ জীবিকার প্রধান হিসেবে বেছে নিয়েছে।

এক জরিপে দেখা যায়, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, কর্মসংস্থানের অভাব, সিন্ডিকেটের অধীনে ভিক্ষাবৃত্তি, বিত্তবানদের হাতেই অর্থকড়ি ঘূর্ণায়মান থাকা ইত্যাদি কারণে ভিক্ষাবৃত্তি বেড়েই চলেছে। ভিক্ষাবৃত্তির মতো সহজ পেশা আমাদের দেশে আর নেই। রেলস্টেশন, বাস স্টপেজ, এয়ারপোর্ট, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজের সামনে, মাজার, জনসভা, বাসাবাড়ি কোথাও বাদ নেই। সব জায়গায় ভিক্ষুক আছে। এ পেশার যে আয়-রোজগার তার এক-তৃতীয়াংশ হয়তো দৈনিক খেটে খাওয়া কুলি মজুরদেরও নেই। দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদেরও উচিত সুস্থ-সবলদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে সহযোগিতা করা।

সামসুজ্জামান

চিঠি : ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল

চিঠি : ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট নিয়োগ চাই

চিঠি : বিবাহবিচ্ছেদ বাড়ছে কেন

চিঠি : দাঁড়াশ সাপ শত্রু নয়, বরং কৃষকের বন্ধু

চিঠি : অ্যালকোহল সেন্টাল অ্যাব্রেশন পদ্ধতিতে হৃদরোগ চিকিৎসা

চিঠি : প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতা

চিঠি : দয়ার সাগর বিদ্যাসাগর

চিঠি : কেন বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ

চিঠি : মাদক নিয়ন্ত্রণে চাই সম্মিলিত প্রয়াস

চিঠি : ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা

চিঠি : রাস্তাটি সংস্কার জরুরি

চিঠি : সুখী দেশ

চিঠি : ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অলিগলি

চিঠি : শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে

চিঠি : কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচনে মৎস্য খাতের সাফল্য

চিঠি : অনলাইন বিনিয়োগে সতর্ক হোন

চিঠি : গ্রাম ও শহরের স্বাস্থ্যসেবার পার্থক্য ঘুচুক

চিঠি : এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে : যাতায়াতে মিলবে স্বস্তি

চিঠি : চুয়েট : গৌরবময় পথচলা

চিঠি : ইভটিজিং প্রতিরোধে প্রয়োজন নৈতিক শিক্ষা

চিঠি : লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হোক

চিঠি : বিদ্যুৎ খাতে অটোমেশন পদ্ধতি চালু করুন

চিঠি : দক্ষ জাতি গড়তে কারিগরি শিক্ষা জরুরি

চিঠি : সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা বোঝা নয়

চিঠি : মাদককে না বলুন

চিঠি : গাছপালা নেই, আছে অট্টালিকা

চিঠি : সিলেটে ক্যান্সারের পেটসিটি মেশিন চাই

চিঠি : ‘নজরুল স্টাডিস’ কোর্স

চিঠি : ঢাকা কলেজের সামনের সড়কে স্পিড ব্রেকার চাই

চিঠি : বানভাসিদের কষ্ট লাঘবে প্রয়োজন সহায়তা

চিঠি : পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে করণীয়

চিঠি : যানজটমুক্ত শহর গড়তে প্রয়োজন মুক্ত ফুটপাত

চিঠি : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভাগ বৈষম্য বন্ধ হোক

চিঠি : ভিক্ষাবৃত্তি কি বন্ধ হবে না?

চিঠি : চার টাকার সমাধান করবে কে?

চিঠি : সরকারি সম্পত্তির ব্যক্তিগত ব্যবহার বন্ধ হোক

tab

চিঠিপত্র

চিঠি : ভিক্ষুক মুক্ত দেশ চাই

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

রোববার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলাকে ভিক্ষুক মুক্ত হিসেবে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয় ৩০ এপ্রিল ২০১৭ সালে। পৌরসভার বিভিন্ন দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন ২০ থেকে ৫০ জন পর্যন্ত ভিক্ষুক এখন তাদের দোকানে এসে থাকেন। এ সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু কেশবপুর পৌরসভাকে ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে ২০১৭ সালে।

দেশে দারিদ্র্য নিরসনে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এবং ভিক্ষাবৃত্তির মতো অমর্যাদাকর পেশা থেকে মানুষকে নিবৃত্ত করার লক্ষ্যে ভিক্ষা বৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্টির পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্যে সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ‘ভিক্ষা বৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান’ শীর্ষক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। ২০১০ সাল থেকে এ কর্মসূচির কার্য্যক্রম শুরু হলেও তা তেমন ব্যাপকতা পায়নি।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো দেশের ৫৮টি জেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের নিমিত্তে অর্থপ্রেরণ করা হয়। এ বছর ২ লাখ ৩ হাজার ৫০৮ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসনের জন্যে বরাদ্দ করা হয় ৪২২ কোটি ২২ লাখ টাকা। অনুরূপ ভাবে ১৮-১৯ অর্থ বছরের বরাদ্দ করা হয় ৩ কোটি টাকা। এছাড়া ভিক্ষা বৃত্তি রোধকল্পে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফ, টি.আর কাবিখার মতো অসংখ্য প্রকল্প চালু করা হয়। যা এখনও চলমান। এত সুযোগ সুবিধার পরও ভিক্ষাবৃত্তির হার কমছে না বরং বেড়েই চলেছে।

জরিপের তথ্য জানাচ্ছে, ভিক্ষুকদের শতকরা ৭৯ শতাংশ পেশাদার ভিক্ষুক। তাদের বসতবাড়ী, জমি, টাকা পয়সা, আয়ের উৎস্য থাকা সত্ত্বেও তারা প্রতিদিন সকালে এই পথে নেমে সন্ধ্যা অবধি ভিক্ষা করে বেড়ায়। সারাদিনের উপার্জিত অর্থের একশ ভাগই তারা সঞ্চয় করে থাকে। দশ ভাগ হচ্ছে শৌখিন ভিক্ষুক। এরা মূলত বেকার। সারাদিন আড্ডা দিয়ে বেড়ানো এদের কাজ। সুযোগ বুঝে এরা মানুষের কাছে হাত পাতে।

দেশে ভিক্ষুকের সংখ্যা নিরূপণে হালনাগাদ সমন্বিত কোন জরিপ নেই। গত বছর মাননীয় সমাজ কল্যাণমন্ত্রী জাতীয় সংসদে জানিয়ে ছিলেন দেশে ভিক্ষুকের সংখ্যা আড়াই লাখ। অর্থাৎ মোট নজসংখ্যার শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ মানুষ ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত; কিন্তু বিভিন্ন সংস্থার জরিপ বলছে প্রকৃত সংখ্যা ২০ লাখের কাছাকাছি। এর মধ্যে শুধুমাত্র রাজধানীতেই ৫০ হাজার পেশাদার ভিক্ষুক রয়েছে।

দেশে মর্যাদাহানিকর নিকৃষ্ট জীবনযাত্রার পরিশ্রমহীন সহজ পদ্ধতি হলো ভিক্ষাবৃত্তি। ভিক্ষা হচ্ছে কোনরকম পূঁজি বিনিযোগ বা লেনদেন ছাড়াই অপরের অনুগ্রহে অর্থ আদায়ের চেষ্টা। ব্যক্তিগত, সামাজিক, জাতীয় মূল্যবোধকে জলাঞ্জলি দিয়ে অভাবগত কিংবা স্বভাবগত কারণে ভিক্ষাবৃত্তিকে একশ্রেণির মানুষ জীবিকার প্রধান হিসেবে বেছে নিয়েছে।

এক জরিপে দেখা যায়, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, কর্মসংস্থানের অভাব, সিন্ডিকেটের অধীনে ভিক্ষাবৃত্তি, বিত্তবানদের হাতেই অর্থকড়ি ঘূর্ণায়মান থাকা ইত্যাদি কারণে ভিক্ষাবৃত্তি বেড়েই চলেছে। ভিক্ষাবৃত্তির মতো সহজ পেশা আমাদের দেশে আর নেই। রেলস্টেশন, বাস স্টপেজ, এয়ারপোর্ট, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজের সামনে, মাজার, জনসভা, বাসাবাড়ি কোথাও বাদ নেই। সব জায়গায় ভিক্ষুক আছে। এ পেশার যে আয়-রোজগার তার এক-তৃতীয়াংশ হয়তো দৈনিক খেটে খাওয়া কুলি মজুরদেরও নেই। দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদেরও উচিত সুস্থ-সবলদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে সহযোগিতা করা।

সামসুজ্জামান

back to top