মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
পুরান ঢাকাকে বাসযোগ্য করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এ জন্য পুরান ঢাকার বংশাল, চকবাজার, ইসলামবাগ, মৌলভীবাজার, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগ এলাকার পুনরুন্নয়নের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে আর্থিক সহযোগিতা দেবে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)। জানুয়ারিতেই শুরু হবে প্রকল্পের কাজ। নগর পুনরুন্নয়নের জন্য পুরান ঢাকার যে সাতটি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে এর মধ্যে বংশাল অন্যতম। প্রায় ১২.৭১ একর আয়তনের বংশালে আবাসিক ভবন, বাণিজ্যিক ভবনসহ প্রায় ৫০০ অবকাঠামো রয়েছে। এই এলাকার ভবনগুলো ইমারত নির্মাণের বিধান মেনে নির্মিত হয়নি। রাস্তাগুলো সংকীর্ণ। তাই বংশালে বসবাসকারীরা খুব কমই প্রাকৃতিক আলো-বাতাস পান। সরু রাস্তা থাকায় জরুরি ও দুর্যোগের সময় ভোগান্তি তৈরি হয়।
রাজধানী হিসেবে বয়স ৪০০ হলেও জনবসতি হিসেবে ঢাকার বয়স ৮০০ বছরেরও বেশি। বিভিন্ন বণিক সম্প্রদায় ঢাকায় এসে বসতি গড়েছেন বাণিজ্যিক কারণে। বেশ কয়েকটি নদীর সংযুক্তি ছাড়াও ঢাকায় শতাধিক খালের উপস্থিতির তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গাসহ ছয়টি নদী দখল-দূষণে বিপর্যস্ত অবস্থায় টিকে থাকলেও বেশির ভাগ খাল হারিয়ে গিয়েছে।
অগ্নি দুর্ঘটনার পাশাপাশি ভূমিকম্প ঝুঁকিতে পুরান ঢাকার জনবহুল ৪৪টি এলাকা। যেখানে রয়েছে রাসায়নিক দাহ্য ও বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্যের সাড়ে ৩ হাজার গুদাম, কারখানা কিংবা দোকান। ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলি ও ২০১৯ সালে চুড়িহাট্টায় ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা। নিমতলিতে আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয় ১২৪ তাজা প্রাণ, আর চুড়িহাট্টায় ৭১। দুবারই সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বলা হয়েছিল খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পুরান ঢাকা থেকে দাহ্য রাসায়নিকের ব্যবসা স্থানান্তর করা হবে। কিন্তু সেটা আর হয়নি।
পুরান ঢাকার অনেক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে; যার বেশির ভাগই প্লাস্টিকের ওয়ার্কশপ বা প্লাস্টিক শিল্প। প্লাস্টিকের বোতল, ব্যাগ, পলিথিন ও অন্যান্য পণ্য তৈরি হয়। আর এ এলাকার বেশির ভাগ রাস্তা সরু থাকায় সব সময় যানজটে আটকে থাকতে হয় বাসিন্দাদের। ফুটপাত না থাকায় পথচারীরা রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করেন।
নগর পুনরুন্নয়নের মাধ্যমে মৌলিক চাহিদাগুলো নিশ্চিত করে সুন্দর আবাসিক এলাকা নির্মাণের মাধ্যমে পুরান ঢাকার ঐতিহ্য আবারও পুনরুজ্জীবিত করা হবে। একইভাবে পুরান ঢাকার অন্য এলাকাগুলোর পুনরুন্নয়ন করা হবে।
মৌলভীবাজার, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগ এলাকাও পুনরুন্নয়নের মাধ্যমে ফিরে পাবে নতুন চেহারা। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে এআইআইবি। এর মধ্যে ৩ মিলিয়ন ডলার দেয়া হবে অনুদান হিসেবে। পুরান ঢাকার পুনরুন্নয়ন সম্পন্ন হলে পাল্টে যাবে হতশ্রী চেহারা। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিতির অবসান ঘটবে।
আর কে চৌধুরী
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩
পুরান ঢাকাকে বাসযোগ্য করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এ জন্য পুরান ঢাকার বংশাল, চকবাজার, ইসলামবাগ, মৌলভীবাজার, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগ এলাকার পুনরুন্নয়নের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে আর্থিক সহযোগিতা দেবে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)। জানুয়ারিতেই শুরু হবে প্রকল্পের কাজ। নগর পুনরুন্নয়নের জন্য পুরান ঢাকার যে সাতটি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে এর মধ্যে বংশাল অন্যতম। প্রায় ১২.৭১ একর আয়তনের বংশালে আবাসিক ভবন, বাণিজ্যিক ভবনসহ প্রায় ৫০০ অবকাঠামো রয়েছে। এই এলাকার ভবনগুলো ইমারত নির্মাণের বিধান মেনে নির্মিত হয়নি। রাস্তাগুলো সংকীর্ণ। তাই বংশালে বসবাসকারীরা খুব কমই প্রাকৃতিক আলো-বাতাস পান। সরু রাস্তা থাকায় জরুরি ও দুর্যোগের সময় ভোগান্তি তৈরি হয়।
রাজধানী হিসেবে বয়স ৪০০ হলেও জনবসতি হিসেবে ঢাকার বয়স ৮০০ বছরেরও বেশি। বিভিন্ন বণিক সম্প্রদায় ঢাকায় এসে বসতি গড়েছেন বাণিজ্যিক কারণে। বেশ কয়েকটি নদীর সংযুক্তি ছাড়াও ঢাকায় শতাধিক খালের উপস্থিতির তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গাসহ ছয়টি নদী দখল-দূষণে বিপর্যস্ত অবস্থায় টিকে থাকলেও বেশির ভাগ খাল হারিয়ে গিয়েছে।
অগ্নি দুর্ঘটনার পাশাপাশি ভূমিকম্প ঝুঁকিতে পুরান ঢাকার জনবহুল ৪৪টি এলাকা। যেখানে রয়েছে রাসায়নিক দাহ্য ও বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্যের সাড়ে ৩ হাজার গুদাম, কারখানা কিংবা দোকান। ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলি ও ২০১৯ সালে চুড়িহাট্টায় ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা। নিমতলিতে আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয় ১২৪ তাজা প্রাণ, আর চুড়িহাট্টায় ৭১। দুবারই সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বলা হয়েছিল খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পুরান ঢাকা থেকে দাহ্য রাসায়নিকের ব্যবসা স্থানান্তর করা হবে। কিন্তু সেটা আর হয়নি।
পুরান ঢাকার অনেক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে; যার বেশির ভাগই প্লাস্টিকের ওয়ার্কশপ বা প্লাস্টিক শিল্প। প্লাস্টিকের বোতল, ব্যাগ, পলিথিন ও অন্যান্য পণ্য তৈরি হয়। আর এ এলাকার বেশির ভাগ রাস্তা সরু থাকায় সব সময় যানজটে আটকে থাকতে হয় বাসিন্দাদের। ফুটপাত না থাকায় পথচারীরা রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করেন।
নগর পুনরুন্নয়নের মাধ্যমে মৌলিক চাহিদাগুলো নিশ্চিত করে সুন্দর আবাসিক এলাকা নির্মাণের মাধ্যমে পুরান ঢাকার ঐতিহ্য আবারও পুনরুজ্জীবিত করা হবে। একইভাবে পুরান ঢাকার অন্য এলাকাগুলোর পুনরুন্নয়ন করা হবে।
মৌলভীবাজার, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগ এলাকাও পুনরুন্নয়নের মাধ্যমে ফিরে পাবে নতুন চেহারা। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে এআইআইবি। এর মধ্যে ৩ মিলিয়ন ডলার দেয়া হবে অনুদান হিসেবে। পুরান ঢাকার পুনরুন্নয়ন সম্পন্ন হলে পাল্টে যাবে হতশ্রী চেহারা। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিতির অবসান ঘটবে।
আর কে চৌধুরী