মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
কাগজ-কলম, বইয়ের পাতা কিংবা মুখস্ত বিদ্যায় বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ ঠিকই; কিন্তু এই মাছের স্বাদ গ্রহণ করা বর্তমানে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে দেশের নি¤œ ও মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষের। কোন চাষাবাদ ছাড়াই সত্তরের দশকে ইলিশকে জাতীয় মাছ ঘোষণা হলেও দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। স্বাদে, ঘ্রাণে, রূপে অন্যান্য মাছকে পেছনে ফেলে ইলিশ বাঙালি সমাজে ‘মাছের রাজা’ হিসেবে সমাদৃত। শুধু যে রূপেগুণে বিষয়টা এমনও না, অন্যান্য মাছের পুষ্টিগুণের দিক থেকেও এগিয়ে আছে এই সমুদ্র থেকে আসা নদীর রাজা। এই মাছটিতে আছে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা; যা অন্যান্য মাছ ও মাংসের তুলনায় অনেক বেশি। জনপ্রিয় এই মাছটি নিয়েও বর্তমানে প্রতারণা করে যাচ্ছেন একশ্রেণীর প্রতারক চক্র। এতে একদিকে প্রতারণার শিকার হচ্ছে ক্রেতা, অন্যদিকে প্রকৃত ব্যবসায়ীরাও হচ্ছে বদনামের ভাগিদার। কিছু অনলাইন ইলিশ ব্যবসায়ী নামে বেনামে ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে পদ্মা-মেঘনার টাটকা ইলিশ পাওয়া যায়, নিচের নম্বরে যোগাযোগ করুন এমন লোভনীয় অফার দিচ্ছে। তা দেখে অনলাইনে অর্ডার করেন দূর-দূরান্তের অনেক ক্রেতা। এদের কারও কারও ভাগ্যে মিলছে পচা, ছোট ও অন্য জেলার ইলিশ। আবার অনেকে বিকাশে টাকা পেমেন্ট করে হা-হুতাশ করছেন। প্রতারক চক্র টাকা পেয়ে অনলাইন পেজ, মোবাইল নম্বর ও বিকাশ নম্বর বন্ধ করে দিচ্ছে।
জাতীয় মাছ ইলিশের এই ভরা মৌসুমেও চড়া দামে বাজার সয়লাব; কিন্তু অনলাইনে কম দাম দেখিয়ে ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রীম টাকা নিয়ে আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাদের। চাঁদপুরের ইলিশের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন সময় ইলিশ মাছের মূল্যছাড়ের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা একটি চক্র। কয়েকটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিও বার্তা ও লোভনীয় অফারে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে তারা। বিকাশে অগ্রিম লেনদেন করে অর্ডার নিশ্চিতের পর বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা মোবাইল নম্বরটি ব্লক করে দেয়া হচ্ছে। এভাবেই প্রতিদিন প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতা। বিজ্ঞাপনে ‘চাঁদপুরের ইলিশ’ লেখা থাকায় অনেকে মাছ না পেয়ে প্রতারকদের খুঁজে বেড়াচ্ছে চাঁদপুরে। সেখানকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, অনলাইনে অর্ডার করলে কুরিয়ারে ইলিশ মাছ পাঠানোর পর টাকা নেয়া হচ্ছে। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের পেজ নকল করে দেশের আনাচে-কানাচে একটি প্রতারক চক্র গড়ে উঠেছে। তারা আগেই টাকা হাতিয়ে নেয়। চাঁদপুরের পুলিশ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাছে সম্প্রতি বৈধ বিক্রেতাদের তালিকা জমা দিয়েছে চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতি। এর মধ্যে ৪১ বৈধ অনলাইন ব্যবসায়ীর তালিকা করে অবৈধদের রোধ করতে মাঠে নেমেছে সংস্থাটি। চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের কাছে অনলাইনে মাছ বিক্রির নামে ক্রেতাদের কাছ থেকে প্রতারণার বহু অভিযোগ আসে। যারা এসব প্রতারণা করে, তারা চাঁদপুরের লোক নয়। তারা মাছ ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত নয়। আমাদের এখানে যারা অনলাইনে মাছ বিক্রি করে, সমিতির পক্ষ থেকে তাদের তালিকাভুক্ত করেছি এবং একজন সদস্যের রেফারেন্স নিয়ে তাদের ব্যবসা করার অনুমতি দেয়া আছে। এ তালিকা পুলিশ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাছেও রয়েছে। তারপরও ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হন সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’
তাই অনলাইনে জাতীয় মাছ ইলিশ নিয়ে প্রতারণা বন্ধ করতে হবে। এজন্য পুলিশ প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তরের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।
মাসুদ হোসেন
চাঁদপুর সদর।
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
রোববার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪
কাগজ-কলম, বইয়ের পাতা কিংবা মুখস্ত বিদ্যায় বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ ঠিকই; কিন্তু এই মাছের স্বাদ গ্রহণ করা বর্তমানে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে দেশের নি¤œ ও মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষের। কোন চাষাবাদ ছাড়াই সত্তরের দশকে ইলিশকে জাতীয় মাছ ঘোষণা হলেও দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। স্বাদে, ঘ্রাণে, রূপে অন্যান্য মাছকে পেছনে ফেলে ইলিশ বাঙালি সমাজে ‘মাছের রাজা’ হিসেবে সমাদৃত। শুধু যে রূপেগুণে বিষয়টা এমনও না, অন্যান্য মাছের পুষ্টিগুণের দিক থেকেও এগিয়ে আছে এই সমুদ্র থেকে আসা নদীর রাজা। এই মাছটিতে আছে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা; যা অন্যান্য মাছ ও মাংসের তুলনায় অনেক বেশি। জনপ্রিয় এই মাছটি নিয়েও বর্তমানে প্রতারণা করে যাচ্ছেন একশ্রেণীর প্রতারক চক্র। এতে একদিকে প্রতারণার শিকার হচ্ছে ক্রেতা, অন্যদিকে প্রকৃত ব্যবসায়ীরাও হচ্ছে বদনামের ভাগিদার। কিছু অনলাইন ইলিশ ব্যবসায়ী নামে বেনামে ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে পদ্মা-মেঘনার টাটকা ইলিশ পাওয়া যায়, নিচের নম্বরে যোগাযোগ করুন এমন লোভনীয় অফার দিচ্ছে। তা দেখে অনলাইনে অর্ডার করেন দূর-দূরান্তের অনেক ক্রেতা। এদের কারও কারও ভাগ্যে মিলছে পচা, ছোট ও অন্য জেলার ইলিশ। আবার অনেকে বিকাশে টাকা পেমেন্ট করে হা-হুতাশ করছেন। প্রতারক চক্র টাকা পেয়ে অনলাইন পেজ, মোবাইল নম্বর ও বিকাশ নম্বর বন্ধ করে দিচ্ছে।
জাতীয় মাছ ইলিশের এই ভরা মৌসুমেও চড়া দামে বাজার সয়লাব; কিন্তু অনলাইনে কম দাম দেখিয়ে ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রীম টাকা নিয়ে আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাদের। চাঁদপুরের ইলিশের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন সময় ইলিশ মাছের মূল্যছাড়ের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা একটি চক্র। কয়েকটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিও বার্তা ও লোভনীয় অফারে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে তারা। বিকাশে অগ্রিম লেনদেন করে অর্ডার নিশ্চিতের পর বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা মোবাইল নম্বরটি ব্লক করে দেয়া হচ্ছে। এভাবেই প্রতিদিন প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতা। বিজ্ঞাপনে ‘চাঁদপুরের ইলিশ’ লেখা থাকায় অনেকে মাছ না পেয়ে প্রতারকদের খুঁজে বেড়াচ্ছে চাঁদপুরে। সেখানকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, অনলাইনে অর্ডার করলে কুরিয়ারে ইলিশ মাছ পাঠানোর পর টাকা নেয়া হচ্ছে। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের পেজ নকল করে দেশের আনাচে-কানাচে একটি প্রতারক চক্র গড়ে উঠেছে। তারা আগেই টাকা হাতিয়ে নেয়। চাঁদপুরের পুলিশ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাছে সম্প্রতি বৈধ বিক্রেতাদের তালিকা জমা দিয়েছে চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতি। এর মধ্যে ৪১ বৈধ অনলাইন ব্যবসায়ীর তালিকা করে অবৈধদের রোধ করতে মাঠে নেমেছে সংস্থাটি। চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের কাছে অনলাইনে মাছ বিক্রির নামে ক্রেতাদের কাছ থেকে প্রতারণার বহু অভিযোগ আসে। যারা এসব প্রতারণা করে, তারা চাঁদপুরের লোক নয়। তারা মাছ ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত নয়। আমাদের এখানে যারা অনলাইনে মাছ বিক্রি করে, সমিতির পক্ষ থেকে তাদের তালিকাভুক্ত করেছি এবং একজন সদস্যের রেফারেন্স নিয়ে তাদের ব্যবসা করার অনুমতি দেয়া আছে। এ তালিকা পুলিশ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাছেও রয়েছে। তারপরও ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হন সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’
তাই অনলাইনে জাতীয় মাছ ইলিশ নিয়ে প্রতারণা বন্ধ করতে হবে। এজন্য পুলিশ প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তরের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।
মাসুদ হোসেন
চাঁদপুর সদর।