alt

চিঠিপত্র

খাগড়াছড়ির রামগড় পর্যটন পার্কটি এখন গো-চারণভূমি

: বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠ, বিজয় ভাস্কর্য, শহীদ মিনার, বসার পাকা বেঞ্চ, ছোটখাটো একটা হ্রদও আছে পার্কে। তবে সুষ্ঠু দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এর এখন হতশ্রী চেহারা। ইতোমধ্যে বেহাত হয়েছে বেশকিছু মূল্যবান জিনিস, প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা। যাকে গো-চারণভূমি বানিয়েছেন আশপাশের লোকজন। কোনো কোনো অংশ বন-জঙ্গলে ভরপুর। বলছি, রামগড় পর্যটন পার্কটির কথা। যেটি উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত।

এ দুরাবস্থা লাঘবে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ জরুরি। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া উদ্যোগী হয়ে ঐতিহ্যবাহী সাবেক মহকুমা রামগড়ের হারিয়ে যাওয়া জৌলুস উজ্জীবিত করতে উপজেলা সদরে বিনোদন পার্কটি গড়ে তোলেন। প্রায় ৭ একর জমির ওপর লেকসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরিতে ওই সময় প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্মারকমূল্যে নানা আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ২০০৪ সালের ৩০ মার্চ পার্কের জমি পৌরসভাকে বুঝিয়ে দেয়ার পর খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে এই জমিতে একটি চিত্তাকর্ষক বিনোদন পার্ক গড়ে নিয়মিত রাজস্ব আয়ের ব্যবস্থা করা হয়। তখন দূরদূরান্তের পর্যটকদের আগমনে সব সময় মুখরিত থাকত পুরো পার্ক এলাকা। বাগান পরিচর্যাসহ যাবতীয় কাজ পৌর কর্তৃপক্ষ সুচারুভাবে সম্পন্ন করায় অল্প সময়ের মধ্যেই ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এটি একটি আকর্ষণীয় চিত্তাকর্ষক স্থান হিসাবে পরিচিতি পায়। চারিদিকে সবুজ গাছ-গাছালির মোহনীয় ছায়ায় ঘেরা ছিল এই পার্ক। পাতাবাহার ও বিভিন্ন ফুলের সমন্বয়ে সাজানো ছিল। হ্রদের ওপর নির্মিত ঝুলন্ত সেতু পার্কের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান অবস্থা পুরো উল্টো। সবুজে অভ্যস্থ চোখ আমাদের। সেই সবুজ আর নেই। রক্ষণাবেক্ষণর অভাবে নষ্ট হচ্ছে পার্কটি। কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে টিকে আছে ঝুলন্ত সেতু।

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় উপজেলা প্রশাসন পার্কের মালিকানা দাবি করে সাইন বোর্ড টানিয়ে দেয়। সেই থেকেই উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। এভাবেই পার্কটির অধপাতের শুরু।

দুই প্রশাসনের দড়ি টানাটানির সুযোগ নেন সুযোগসন্ধানী দুষ্টচক্র। শোভাবর্ধক ২০০ বাতির সবগুলো চুরি হয়ে যায়। হৃদে নামার কাঠ-লোহার তৈরি ঘাট ও ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন ভেঙে নষ্ট হয়। বেঞ্চের এসএস পাইপ (স্টেইনলেস স্টিল) ও পাইপের রেলিং খুলে নিয়ে যায় এবং মারা যায় নানা প্রজাতির গাছগাছালি। চার লাখ টাকার প্যাডেল বোট হৃদে ডুবে নষ্ট হয়। মূল্যবান জিনিস চুরি এবং নষ্ট হওয়ায় রামগড়বাসীর বিনোদনের চমৎকার একটি পার্ক চোখের সামনে কীভাবে ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হচ্ছে তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এটি রক্ষায় অবিলম্বে উদ্যোগ প্রয়োজন। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সাহায্য নিলে ভালো হবে। তাদের ভালো আর্থিক তহবিল রয়েছে। উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে পার্ক সংস্কারে ছিটেফোঁটা উদ্যোগ দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এটির বর্তমান দুরাবস্থার চিত্রে ওই সময়ের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়টি স্পষ্ট।

সরকারি মালিকাধীন হওয়া সত্ত্বেও পার্কটির হতশ্রী চেহারায় মনে হয় এটি এখন অভিভাবকহীন। পার্কের ভেতর স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘বিজয়’ ও শহীদ মিনার চত্বরে অবাধে গরু ও ছাগল বিচরণ করছে। আশপাশের লোকজন পার্কটি গো-চারণভূমি বানিয়েছে। লোহার গেটসহ অন্যান্য জিনিস জীর্ণশীর্ণ হয়ে যাওয়ায় পুরো এলাকা হয়ে লোকজন সহজেই ঢুকতে পারে পার্কে। ইভটিজার এবং মাদকাসক্তদের আনাগোনাও আছে এখানে।

রামগড়ের একমাত্র বিনোদন পার্কের হতশ্রী চেহারায় মন খারাপ হয়। পর্যটন নগরী হিসেবে পার্কটি পূর্বাবস্থায় ফিরে আসুক এটি আমাদের সবার প্রত্যাশা। সংশ্লিষ্টরা আন্তরিক হলে রামগড়ের একমাত্র বিনোদন পার্কটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেত।

শ্যামল রুদ্র

রামগড়, খাগড়াছড়ি

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের শেষ কোথায়?

টেকসই উন্নয়ন ও আদিবাসীদের অধিকার

শব্দদূষণ বন্ধ হবে কবে?

চট্টগ্রাম দোহাজারী অংশে রেল চালু হোক

দেশের প্রথম শহীদ মিনারের উপেক্ষিত ইতিহাস

তরুণদের হীনমন্যতা ও মত প্রকাশে অনীহা

বন সংরক্ষণ ও উন্নয়ন

শুধু ফেব্রুয়ারিতে ভাষার দরদ?

ভাষা ও সাহিত্যের মিলনমেলা

জমি দখলের ক্ষতিপূরণ চাই

পুরান ঢাকায় মশার উৎপাত

গুইমারায় স্বাস্থ্যসেবা সংকট : অবিলম্বে সমাধান প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু : একটি জাতীয় সংকট

নাম পাল্টে গেলে কত কী যে হয়

অনুপ্রেরণা হোক তুলনাহীন

দূষণ রোধে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা হ্রাস জরুরি

পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা বাড়ান

গণরুম প্রথার বিলুপ্তি কবে?

রেলসেবার মান বাড়ান

নওগাঁ সরকারি কলেজের সংকট

টিকিটের দাম আকাশচুম্বী

জকিগঞ্জে গ্রামীণ সড়কের দুরবস্থা

রেলে দুর্নীতি

নবায়নযোগ্য শক্তির বিকল্প নেই

পথশিশুদের ভয়ঙ্কর নেশাদ্রব্য থেকে রক্ষা করুন

ঢাকা-ময়মনসিংহ ননস্টপ ট্রেন ও ডাবল লাইন নির্মাণের দাবি

শিশুদের প্রতি প্রতিহিংসা বন্ধ করুন

চরবাসীর নদী পারাপারে নিরাপত্তার প্রয়োজন

জন্মনিবন্ধন সেবায় অতিরিক্ত অর্থ আদায় : ব্যবস্থা নিন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে স্পিডব্রেকার চাই

উন্নয়নের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান কারিগরি শিক্ষা

পোস্তগোলায় নিম্নমানের ড্রেন নির্মাণ

দিনমজুর সংকটে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত

পানাম সেতু : ঐতিহ্য রক্ষায় অবহেলা নয়

যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা থেকে ধোলাইখাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার দুরবস্থা

tab

চিঠিপত্র

খাগড়াছড়ির রামগড় পর্যটন পার্কটি এখন গো-চারণভূমি

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠ, বিজয় ভাস্কর্য, শহীদ মিনার, বসার পাকা বেঞ্চ, ছোটখাটো একটা হ্রদও আছে পার্কে। তবে সুষ্ঠু দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এর এখন হতশ্রী চেহারা। ইতোমধ্যে বেহাত হয়েছে বেশকিছু মূল্যবান জিনিস, প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা। যাকে গো-চারণভূমি বানিয়েছেন আশপাশের লোকজন। কোনো কোনো অংশ বন-জঙ্গলে ভরপুর। বলছি, রামগড় পর্যটন পার্কটির কথা। যেটি উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত।

এ দুরাবস্থা লাঘবে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ জরুরি। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া উদ্যোগী হয়ে ঐতিহ্যবাহী সাবেক মহকুমা রামগড়ের হারিয়ে যাওয়া জৌলুস উজ্জীবিত করতে উপজেলা সদরে বিনোদন পার্কটি গড়ে তোলেন। প্রায় ৭ একর জমির ওপর লেকসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরিতে ওই সময় প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্মারকমূল্যে নানা আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ২০০৪ সালের ৩০ মার্চ পার্কের জমি পৌরসভাকে বুঝিয়ে দেয়ার পর খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে এই জমিতে একটি চিত্তাকর্ষক বিনোদন পার্ক গড়ে নিয়মিত রাজস্ব আয়ের ব্যবস্থা করা হয়। তখন দূরদূরান্তের পর্যটকদের আগমনে সব সময় মুখরিত থাকত পুরো পার্ক এলাকা। বাগান পরিচর্যাসহ যাবতীয় কাজ পৌর কর্তৃপক্ষ সুচারুভাবে সম্পন্ন করায় অল্প সময়ের মধ্যেই ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এটি একটি আকর্ষণীয় চিত্তাকর্ষক স্থান হিসাবে পরিচিতি পায়। চারিদিকে সবুজ গাছ-গাছালির মোহনীয় ছায়ায় ঘেরা ছিল এই পার্ক। পাতাবাহার ও বিভিন্ন ফুলের সমন্বয়ে সাজানো ছিল। হ্রদের ওপর নির্মিত ঝুলন্ত সেতু পার্কের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান অবস্থা পুরো উল্টো। সবুজে অভ্যস্থ চোখ আমাদের। সেই সবুজ আর নেই। রক্ষণাবেক্ষণর অভাবে নষ্ট হচ্ছে পার্কটি। কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে টিকে আছে ঝুলন্ত সেতু।

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় উপজেলা প্রশাসন পার্কের মালিকানা দাবি করে সাইন বোর্ড টানিয়ে দেয়। সেই থেকেই উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। এভাবেই পার্কটির অধপাতের শুরু।

দুই প্রশাসনের দড়ি টানাটানির সুযোগ নেন সুযোগসন্ধানী দুষ্টচক্র। শোভাবর্ধক ২০০ বাতির সবগুলো চুরি হয়ে যায়। হৃদে নামার কাঠ-লোহার তৈরি ঘাট ও ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন ভেঙে নষ্ট হয়। বেঞ্চের এসএস পাইপ (স্টেইনলেস স্টিল) ও পাইপের রেলিং খুলে নিয়ে যায় এবং মারা যায় নানা প্রজাতির গাছগাছালি। চার লাখ টাকার প্যাডেল বোট হৃদে ডুবে নষ্ট হয়। মূল্যবান জিনিস চুরি এবং নষ্ট হওয়ায় রামগড়বাসীর বিনোদনের চমৎকার একটি পার্ক চোখের সামনে কীভাবে ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হচ্ছে তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এটি রক্ষায় অবিলম্বে উদ্যোগ প্রয়োজন। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সাহায্য নিলে ভালো হবে। তাদের ভালো আর্থিক তহবিল রয়েছে। উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে পার্ক সংস্কারে ছিটেফোঁটা উদ্যোগ দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এটির বর্তমান দুরাবস্থার চিত্রে ওই সময়ের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়টি স্পষ্ট।

সরকারি মালিকাধীন হওয়া সত্ত্বেও পার্কটির হতশ্রী চেহারায় মনে হয় এটি এখন অভিভাবকহীন। পার্কের ভেতর স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘বিজয়’ ও শহীদ মিনার চত্বরে অবাধে গরু ও ছাগল বিচরণ করছে। আশপাশের লোকজন পার্কটি গো-চারণভূমি বানিয়েছে। লোহার গেটসহ অন্যান্য জিনিস জীর্ণশীর্ণ হয়ে যাওয়ায় পুরো এলাকা হয়ে লোকজন সহজেই ঢুকতে পারে পার্কে। ইভটিজার এবং মাদকাসক্তদের আনাগোনাও আছে এখানে।

রামগড়ের একমাত্র বিনোদন পার্কের হতশ্রী চেহারায় মন খারাপ হয়। পর্যটন নগরী হিসেবে পার্কটি পূর্বাবস্থায় ফিরে আসুক এটি আমাদের সবার প্রত্যাশা। সংশ্লিষ্টরা আন্তরিক হলে রামগড়ের একমাত্র বিনোদন পার্কটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেত।

শ্যামল রুদ্র

রামগড়, খাগড়াছড়ি

back to top