মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
গণমাধ্যমের তথ্যমতে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর বর্ষবরণের রাতে শব্দ ও বায়ুদূষণে রাজধানীতে শতাধিক পাখির মৃত্যু হয়। ২০২১ সালে ইতালির রোম শহরে থার্টি ফার্স্ট নাইটে উদযাপনে আতশবাজির শব্দে কয়েক হাজার পাখি মরে রাস্তায় পড়ে ছিল। এই পাখিগুলো আতশবাজির তীব্র শব্দে হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছিল।
পুলিশের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাতে আতশবাজি এবং ফানুস থেকে সারাদেশে প্রায় ২০০ জায়গায় আগুন লাগে। এই অগ্নিকান্ডের উৎস ছিলো ফানুস ও আতশবাজি। ফানুসের আগুনগুলো বিভিন্ন ভবন ও স্থাপনায় গিয়ে পড়ছে সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটছে। আমরা কি একবার ভেবে দেখেছি ফানুসের আগুন গুলো তেল পাম্প, বৈদ্যুতিক তার, ট্রান্সমিটার, বিভিন্ন রাসায়নিক কারখানার উপরে গিয়ে পড়লে কি ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। আমাদের অসাবধানতার কারণে ঘটতে পারে অনেক বড় দুর্ঘটনা।
আতশবাজির কারণে অতিরিক্ত শব্দ, পশুপাখি, মানুষের ক্ষতি সহ আমাদের চারপাশে পরিবেশ ও ধ্বংস করে ফেলছি। আতশবাজিতে বিদ্যামান ক্ষতিকর ক্যামিক্যাল গুলো বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে আমাদের বায়ু দূষিত করছে। জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডায়েচ ভেলের প্রতিবেদন অনুসারে, থার্টি-ফাস্ট নাইট উদযাপনের কারণে যে পরিমান ধোয়া উৎপন্ন হয় তা একবছরে যানবাহন কর্তৃক উৎপন্ন ধোয়ার সমান। আতশবাজির কারণে ধাতব মৌলগুলো বাতাস, পানি ও মাটিতে মিশে বিষক্ত করে তুলছে। ২০২৪ সালে বছরের প্রথম দিন ১০৯ টি শহরের মধ্যে বায়ু দূষণের শীর্ষে ছিলো ঢাকা। আইকিউ এয়ারের বাতাসের মানসূচকে ঢাকার স্কোর ছিলো ২৪৬। যেটিকে খুব অস্বাস্থ্যকর হিসাবে ধরা হয়।
প্রতিবছর থার্টি-ফাস্ট নাইট উদযাপনে আতশবাজি এবং ফানুস উড়ানো তে নিষেধাজ্ঞা থাকলোও সেটি শুধু কাগজে কলমে থাকে। যার প্রতিফলন আমরা মাঠ পার্যায়ে দেখতে পাই না। শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নয় সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমাদের উচিত অতিরঞ্জিত উদযাপন থেকে বিরত থাকা যা আমাদের নিজেদের এবং পরিবেশের জন্য ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়। উদযাপন ভারসাম্য নিয়ে আসা। নিজে বিরত থাকা এবং আশেপাশে মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করা। আমাদের আশেপাশে কত মানুষ শীতে নিজেদের কাপড় কিনতে পারছে না। কত পথশিশু শীতে রাস্তায় থর থর করে কাঁপছে। আমরা অযাথা সাময়িক আনন্দের জন্য আতশবাজি ফাটিয়ে ও ফানুস উড়িয়ে টাকা নষ্ট না করে সে সমস্ত টাকা শীতার্তদের সহযোগিতা করতে পারি। তাহলে ইহকালে আমরা পরিবেশ ধ্বংস থেকে বিরত থাকতে পারবো এবং পরকালের জন্য পূন্য সঞ্চয় করতে পারবো। আসুন আমরা মানবিকতার পরিচয় দেই এবং দায়িত্ববান আচরণ করি। বছরের প্রথম সূর্যোদয় নিকষ কালো আঁধারে আচ্ছন্ন না হোক। আশেপাশে পরে না থাকুক শতশত মৃত্যু পাখি এবং অন্য ক্ষুদ্র জীবজন্তু। আমাদের মাঝে জাগ্রত হোক অপরাধ বোধ। আমরা শুধু কথায় মানুষ না হয়ে আমাদের কাজে মানুষত্বের প্রতিফলন ঘটুক।
রুহুল আমিন
শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
গণমাধ্যমের তথ্যমতে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর বর্ষবরণের রাতে শব্দ ও বায়ুদূষণে রাজধানীতে শতাধিক পাখির মৃত্যু হয়। ২০২১ সালে ইতালির রোম শহরে থার্টি ফার্স্ট নাইটে উদযাপনে আতশবাজির শব্দে কয়েক হাজার পাখি মরে রাস্তায় পড়ে ছিল। এই পাখিগুলো আতশবাজির তীব্র শব্দে হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছিল।
পুলিশের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাতে আতশবাজি এবং ফানুস থেকে সারাদেশে প্রায় ২০০ জায়গায় আগুন লাগে। এই অগ্নিকান্ডের উৎস ছিলো ফানুস ও আতশবাজি। ফানুসের আগুনগুলো বিভিন্ন ভবন ও স্থাপনায় গিয়ে পড়ছে সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটছে। আমরা কি একবার ভেবে দেখেছি ফানুসের আগুন গুলো তেল পাম্প, বৈদ্যুতিক তার, ট্রান্সমিটার, বিভিন্ন রাসায়নিক কারখানার উপরে গিয়ে পড়লে কি ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। আমাদের অসাবধানতার কারণে ঘটতে পারে অনেক বড় দুর্ঘটনা।
আতশবাজির কারণে অতিরিক্ত শব্দ, পশুপাখি, মানুষের ক্ষতি সহ আমাদের চারপাশে পরিবেশ ও ধ্বংস করে ফেলছি। আতশবাজিতে বিদ্যামান ক্ষতিকর ক্যামিক্যাল গুলো বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে আমাদের বায়ু দূষিত করছে। জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডায়েচ ভেলের প্রতিবেদন অনুসারে, থার্টি-ফাস্ট নাইট উদযাপনের কারণে যে পরিমান ধোয়া উৎপন্ন হয় তা একবছরে যানবাহন কর্তৃক উৎপন্ন ধোয়ার সমান। আতশবাজির কারণে ধাতব মৌলগুলো বাতাস, পানি ও মাটিতে মিশে বিষক্ত করে তুলছে। ২০২৪ সালে বছরের প্রথম দিন ১০৯ টি শহরের মধ্যে বায়ু দূষণের শীর্ষে ছিলো ঢাকা। আইকিউ এয়ারের বাতাসের মানসূচকে ঢাকার স্কোর ছিলো ২৪৬। যেটিকে খুব অস্বাস্থ্যকর হিসাবে ধরা হয়।
প্রতিবছর থার্টি-ফাস্ট নাইট উদযাপনে আতশবাজি এবং ফানুস উড়ানো তে নিষেধাজ্ঞা থাকলোও সেটি শুধু কাগজে কলমে থাকে। যার প্রতিফলন আমরা মাঠ পার্যায়ে দেখতে পাই না। শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নয় সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমাদের উচিত অতিরঞ্জিত উদযাপন থেকে বিরত থাকা যা আমাদের নিজেদের এবং পরিবেশের জন্য ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়। উদযাপন ভারসাম্য নিয়ে আসা। নিজে বিরত থাকা এবং আশেপাশে মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করা। আমাদের আশেপাশে কত মানুষ শীতে নিজেদের কাপড় কিনতে পারছে না। কত পথশিশু শীতে রাস্তায় থর থর করে কাঁপছে। আমরা অযাথা সাময়িক আনন্দের জন্য আতশবাজি ফাটিয়ে ও ফানুস উড়িয়ে টাকা নষ্ট না করে সে সমস্ত টাকা শীতার্তদের সহযোগিতা করতে পারি। তাহলে ইহকালে আমরা পরিবেশ ধ্বংস থেকে বিরত থাকতে পারবো এবং পরকালের জন্য পূন্য সঞ্চয় করতে পারবো। আসুন আমরা মানবিকতার পরিচয় দেই এবং দায়িত্ববান আচরণ করি। বছরের প্রথম সূর্যোদয় নিকষ কালো আঁধারে আচ্ছন্ন না হোক। আশেপাশে পরে না থাকুক শতশত মৃত্যু পাখি এবং অন্য ক্ষুদ্র জীবজন্তু। আমাদের মাঝে জাগ্রত হোক অপরাধ বোধ। আমরা শুধু কথায় মানুষ না হয়ে আমাদের কাজে মানুষত্বের প্রতিফলন ঘটুক।
রুহুল আমিন
শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়