মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
সকালে ঘুম ভাঙে পাখির কলকাকলিতে নয়, বরং যানবাহনের হর্ন, নির্মাণ কাজের ভারী যন্ত্রপাতির আওয়াজ আর মাইকের কর্কশ শব্দে। এটাই এখন ঢাকা শহরের বাস্তব চিত্র।
বাংলাদেশে শব্দদূষণ দিন দিন একটি গুরুতর সমস্যায় পরিণত হচ্ছে। এর প্রভাব শুধু পরিবেশ নয়, মানুষের স্বাস্থ্যকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে শব্দদূষণের মাত্রা অনেক বেশি। এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে হকারদের মাইকের ব্যবহার, নির্মাণ কাজের তীব্র শব্দ এবং যানবাহনের হর্ন, বিশেষ করে হাইড্রোলিক হর্ন।
হকাররা তাদের পণ্য বিক্রির জন্য মাইক ব্যবহার করে, যা অনেক সময় সহণীয় মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। বাজার, বাসস্ট্যান্ড কিংবা আবাসিক এলাকাতেও তারা এই মাইক বাজায়। ফলে শিশু, বয়স্ক এবং অসুস্থ মানুষদের জন্য এটি চরম বিরক্তিকর এবং ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। স্কুল ও হাসপাতালের মতো জায়গাগুলোও এই শব্দদূষণের বাইরে নয়। এছাড়া যানবাহনের হর্ন, বিশেষত হাইড্রোলিক হর্ন, শব্দদূষণের আরেকটি বড় কারণ। হাইড্রোলিক হর্নের শব্দ এতটাই তীব্র যে তা শ্রবণশক্তি নষ্ট করার মতো ক্ষতি করতে পারে। ট্রাফিক জ্যামে চালকদের অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজানোর প্রবণতা এই দূষণকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
এছাড়া শহরাঞ্চলে নির্মাণকাজের তীব্র শব্দ দিনরাত মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। নির্মাণস্থলে ব্যবহৃত ভারী যন্ত্রপাতি, যেমন- ড্রিলিং মেশিন, কংক্রিট মিক্সার এবং ক্রেনের শব্দ খুবই উচ্চমাত্রার। এছাড়াও ইট-ভাঙা মেশিন এবং লোহার রড কাটার আওয়াজ আশপাশের পরিবেশকে দূষিত করে তোলে। অনেক সময় রাতেও এই কাজ চলতে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘসময় ধরে এই ধরনের তীব্র শব্দে থাকতে হলে শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়ার ঝুঁকি থাকে এবং অতিরিক্ত শব্দের কারণে দীর্ঘমেয়াদে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। ঘুমের ব্যাঘাত, উদ্বেগ এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা এর অন্যতম ফলাফল।
এ সমস্যা সমাধানে কঠোর আইন প্রয়োগ করা জরুরি। হাইড্রোলিক হর্ন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, হকারদের মাইকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মাণ স্থলে শব্দ নিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করতে হবে। একমাত্র সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমেই শব্দদূষণের এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মাহাদিয়া মুতমাইন্না বিনতে আহমেদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
সকালে ঘুম ভাঙে পাখির কলকাকলিতে নয়, বরং যানবাহনের হর্ন, নির্মাণ কাজের ভারী যন্ত্রপাতির আওয়াজ আর মাইকের কর্কশ শব্দে। এটাই এখন ঢাকা শহরের বাস্তব চিত্র।
বাংলাদেশে শব্দদূষণ দিন দিন একটি গুরুতর সমস্যায় পরিণত হচ্ছে। এর প্রভাব শুধু পরিবেশ নয়, মানুষের স্বাস্থ্যকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে শব্দদূষণের মাত্রা অনেক বেশি। এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে হকারদের মাইকের ব্যবহার, নির্মাণ কাজের তীব্র শব্দ এবং যানবাহনের হর্ন, বিশেষ করে হাইড্রোলিক হর্ন।
হকাররা তাদের পণ্য বিক্রির জন্য মাইক ব্যবহার করে, যা অনেক সময় সহণীয় মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। বাজার, বাসস্ট্যান্ড কিংবা আবাসিক এলাকাতেও তারা এই মাইক বাজায়। ফলে শিশু, বয়স্ক এবং অসুস্থ মানুষদের জন্য এটি চরম বিরক্তিকর এবং ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। স্কুল ও হাসপাতালের মতো জায়গাগুলোও এই শব্দদূষণের বাইরে নয়। এছাড়া যানবাহনের হর্ন, বিশেষত হাইড্রোলিক হর্ন, শব্দদূষণের আরেকটি বড় কারণ। হাইড্রোলিক হর্নের শব্দ এতটাই তীব্র যে তা শ্রবণশক্তি নষ্ট করার মতো ক্ষতি করতে পারে। ট্রাফিক জ্যামে চালকদের অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজানোর প্রবণতা এই দূষণকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
এছাড়া শহরাঞ্চলে নির্মাণকাজের তীব্র শব্দ দিনরাত মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। নির্মাণস্থলে ব্যবহৃত ভারী যন্ত্রপাতি, যেমন- ড্রিলিং মেশিন, কংক্রিট মিক্সার এবং ক্রেনের শব্দ খুবই উচ্চমাত্রার। এছাড়াও ইট-ভাঙা মেশিন এবং লোহার রড কাটার আওয়াজ আশপাশের পরিবেশকে দূষিত করে তোলে। অনেক সময় রাতেও এই কাজ চলতে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘসময় ধরে এই ধরনের তীব্র শব্দে থাকতে হলে শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়ার ঝুঁকি থাকে এবং অতিরিক্ত শব্দের কারণে দীর্ঘমেয়াদে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। ঘুমের ব্যাঘাত, উদ্বেগ এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা এর অন্যতম ফলাফল।
এ সমস্যা সমাধানে কঠোর আইন প্রয়োগ করা জরুরি। হাইড্রোলিক হর্ন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, হকারদের মাইকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মাণ স্থলে শব্দ নিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করতে হবে। একমাত্র সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমেই শব্দদূষণের এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মাহাদিয়া মুতমাইন্না বিনতে আহমেদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়