মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদ-নদী বিধৌত পলিমাটি দ্বারাই গড়ে উঠেছে এদেশের ভূ-অস্তিত্ব। আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি সহ জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে নদীর অবদান অনস্বীকার্য। এভাবে নিঃস্বার্থ অবদান রাখলেও নদ-নদীগুলো সবসময় অবহেলিতই থেকে গেছে। যার ফলে নিত্য দখল, দূষণ ও ক্রমে হারিয়ে যাওয়াই নদীর পরিণতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তীর প্রতিরক্ষা আইন ১৯৫২ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত নদীর সাথে সম্পর্কিত যত আইন-বিধি করা হয়েছে, সব কটিই নদী রক্ষার পক্ষে। তারপরও আমাদের নদীগুলো হারিয়ে যাচ্ছে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ২৫০ টির অধিক নদ নদী মৃতপ্রায় কিংবা ইতিমধ্যে মারা গেছে। সংখ্যাটা বেশ আতঙ্কের। নদীকে রক্ষা করতে না পারলে পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং আমাদের জীবনযাত্রার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। তাই নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে। এমন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি, যাতে নদীগুলো সুন্দর ভাবে তার গতি ধরে রেখে বাঁচাতে পারে। নদীকে বাঁচাতে সর্বপ্রথম অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ এবং দখলদারদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। নদীতে কলকারখানার বর্জ্য, প্লাস্টিক ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং নদী মাঝে মাঝে ড্রেজিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।
নদীর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত একক কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। অনেকগুলো মন্ত্রণালয়, কমিশন, অধিদপ্তর থাকায় সমন্বয়ের চরম অভাব দেখা যায়। সমন্বয়হীনতা কাটিয়ে উঠে সবাইকে নদী রক্ষায় একত্রিত ভাবে কাজ করতে হবে।আমাদের দেশে নদীর প্রস্থ কৃত্রিমভাবে ছোট করে তার ওপর সেতু নির্মাণ করা হয়। এটি নদীর সর্বনাশের অন্যতম কারণ। ভবিষ্যতে যাতে আর একটি সেতু কিংবা কালভার্টও নদীর প্রস্থের চেয়ে ছোট করে নির্মাণ করা না হয়, সেই বিষয়ে সতর্ক করে পরিপত্র জারি করতে হবে।আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ কনভেনশনে অনুসমর্থন করতে হবে। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের আয়োজনে আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়, যা ২০১৪ সালে কার্যকর হয়েছে। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ এটিতে অনুসমর্থন করেনি। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি আন্তসীমান্ত নদীগুলোতে ভারতের পানি শোষণের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে প্রতিকার চাওয়া প্রয়োজন। সর্বোপরি রাষ্ট্রের কঠোর হস্তক্ষেপ এবং জনগণের সচেতন কর্মপ্রচেষ্টা ছাড়া নদীরক্ষা সম্ভব নয়। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশের স্বার্থে নদী রক্ষা, পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রজ্ঞা দাস
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ
ইডেন মহিলা কলেজ
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
রোববার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদ-নদী বিধৌত পলিমাটি দ্বারাই গড়ে উঠেছে এদেশের ভূ-অস্তিত্ব। আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি সহ জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে নদীর অবদান অনস্বীকার্য। এভাবে নিঃস্বার্থ অবদান রাখলেও নদ-নদীগুলো সবসময় অবহেলিতই থেকে গেছে। যার ফলে নিত্য দখল, দূষণ ও ক্রমে হারিয়ে যাওয়াই নদীর পরিণতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তীর প্রতিরক্ষা আইন ১৯৫২ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত নদীর সাথে সম্পর্কিত যত আইন-বিধি করা হয়েছে, সব কটিই নদী রক্ষার পক্ষে। তারপরও আমাদের নদীগুলো হারিয়ে যাচ্ছে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ২৫০ টির অধিক নদ নদী মৃতপ্রায় কিংবা ইতিমধ্যে মারা গেছে। সংখ্যাটা বেশ আতঙ্কের। নদীকে রক্ষা করতে না পারলে পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং আমাদের জীবনযাত্রার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। তাই নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে। এমন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি, যাতে নদীগুলো সুন্দর ভাবে তার গতি ধরে রেখে বাঁচাতে পারে। নদীকে বাঁচাতে সর্বপ্রথম অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ এবং দখলদারদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। নদীতে কলকারখানার বর্জ্য, প্লাস্টিক ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং নদী মাঝে মাঝে ড্রেজিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।
নদীর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত একক কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। অনেকগুলো মন্ত্রণালয়, কমিশন, অধিদপ্তর থাকায় সমন্বয়ের চরম অভাব দেখা যায়। সমন্বয়হীনতা কাটিয়ে উঠে সবাইকে নদী রক্ষায় একত্রিত ভাবে কাজ করতে হবে।আমাদের দেশে নদীর প্রস্থ কৃত্রিমভাবে ছোট করে তার ওপর সেতু নির্মাণ করা হয়। এটি নদীর সর্বনাশের অন্যতম কারণ। ভবিষ্যতে যাতে আর একটি সেতু কিংবা কালভার্টও নদীর প্রস্থের চেয়ে ছোট করে নির্মাণ করা না হয়, সেই বিষয়ে সতর্ক করে পরিপত্র জারি করতে হবে।আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ কনভেনশনে অনুসমর্থন করতে হবে। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের আয়োজনে আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়, যা ২০১৪ সালে কার্যকর হয়েছে। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ এটিতে অনুসমর্থন করেনি। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি আন্তসীমান্ত নদীগুলোতে ভারতের পানি শোষণের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে প্রতিকার চাওয়া প্রয়োজন। সর্বোপরি রাষ্ট্রের কঠোর হস্তক্ষেপ এবং জনগণের সচেতন কর্মপ্রচেষ্টা ছাড়া নদীরক্ষা সম্ভব নয়। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশের স্বার্থে নদী রক্ষা, পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রজ্ঞা দাস
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ
ইডেন মহিলা কলেজ