alt

চিঠিপত্র

চিঠি : সাইবার অপরাধ রোধে সতর্কতা দরকার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসার ও বিকাশ চোখে পড়ার মতো। অধিকাংশের হাতেই স্মার্টফোন দৃশ্যমান। বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি; যার মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি। তবে অবাক করার বিষয় হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তি, সহজ অ্যাক্সেস ও দিনকে দিন নতুন প্ল্যাটফর্ম আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে সাইবার অপরাধ ও নিরাপত্তা ঝুঁকি।

কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে চারটি ভিন্ন আইনের অধীনে প্রতি মাসে গড়ে ১৬৯টি সাইবার মামলা দায়ের হয়েছে। ২০২১ সালে এই সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৪টি। আসলে সাইবার অপরাধের ধরন দিনকে দিন বদলে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে অপরাধের সংখ্যাও। এসব অপরাধের বেশিরভাগই মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ই-কমার্স ও এফ-কমার্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এমনকি এ ধরনের কার্যক্রমে বিদেশি নাগরিকদেরও সংশ্লিতাও দেখা গেছে।

মূলত সাইবার নিরাপত্তা হচ্ছে এমন কিছু উপায় যার মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য, কম্পিউটার, আমাদের বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ডিভাইসকে- হ্যাকিং ও বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ থেকে নিরাপদ রাখতে পারি। অন্যদিকে তথ্য প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইনে যে অপরাধসমূহ সংগঠিত হয় তাকে বলা হয় সাইবার ক্রাইম বা অপরাধ। সাইবার অপরাধের একটি বড় অংশ হচ্ছে প্রতারণা। ভুল পরিচয় এবং ভুল তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে নানাভাবে যোগাযোগ করা হয় এবং তাদের নানাভাবে প্রতারিত করার চেষ্টা করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং থেকে প্রায়ই অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার খবর শোনা যায়।

এসব অপরাধের ধরনগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ‘টিকটকে তারকা’ হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মূলত তরুণীদের প্রলুব্ধ করে। ভুক্তভোগীরা একবার সেই ফাঁদে পা দেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় ভয়ংকর নির্যাতন ও পরিশেষে মানসিক ট্রমা। এ ধরনের ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ ও বিদেশে পাচার করার মতো ঘটনা ঘটে বলে জানা যাচ্ছে।

যেকোন ধরনের সাইবার আক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হচ্ছে সচেতনতা। অপরাধীরা নানাভাবে ফোনে প্রতারণা করে ভুক্তভোগীর গোপন তথ্য নিয়ে নেয়। এখন যদি কেউ তার পাসওয়ার্ড বা এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বলে দেয় তাহলে তার আর্থিক ক্ষতি করতে পারে। এ থেকে রক্ষা পেতে এখন টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহার করা উচিৎ। এটা পাসওয়ার্ডের ওপর পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হয় এবং এটা স্বয়ংক্রিয় পরিচালিত। ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখলে দেখতে পাওয়া যায় মাইক্রোসফট, গুগলসহ অনেক প্রতিষ্ঠান এই সার্ভিসগুলো বিনা পয়সায় দিচ্ছে।

সাইবার নিরাপত্তায় সচেতনতার পাশাপাশি কিছু অতি প্রয়োজনীয় বিষয়ে সতর্ক থাকা খুবই জরুরি। পাসওয়ার্ড, পিন, ওটিপি ইত্যাদি মনের ভুলেও কাউকে বলা বা শেয়ার করা উচিৎ নয়। শুধুমাত্র ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ডই সাইবার জগতে নিরাপদ রাখতে যথেষ্ট নয়। সাইবার অপরাধ থেকে রক্ষা পেতে হলে প্রথমত যারা অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে, তাদের সরকারের সাইবার ক্রাইম বিভাগের পেজে গিয়ে আইনগুলো ভালো করে পড়তে ও জানতে হবে। দ্বিতীয়ত, অনলাইনে যদি কেউ ভালোবাসা বা ব্যবসার প্রস্তাব দেয়, তাহলে তা ভালো করে যাচাই-বাছাই করতে হবে। আর তৃতীয়ত, যদি কেউ সাইবার অপরাধের শিকার হয়েই যায়, তাহলে দ্বিধাদ্বন্দ্ব না করে তথ্য দিয়ে পুরোটা বিষয়টা যথাসম্ভব খুলে বলতে হবে এবং সমস্যা সমাধানের জন্য নিকটজন বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা নিতে হবে। মোট কথা সাইবার অপরাধের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে হলে সচেতনতা ও সতর্কতার বিকল্প নেই।

জিল্লুর রহমান

লেখক, ব্যাংকার

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের শেষ কোথায়?

টেকসই উন্নয়ন ও আদিবাসীদের অধিকার

শব্দদূষণ বন্ধ হবে কবে?

চট্টগ্রাম দোহাজারী অংশে রেল চালু হোক

দেশের প্রথম শহীদ মিনারের উপেক্ষিত ইতিহাস

তরুণদের হীনমন্যতা ও মত প্রকাশে অনীহা

বন সংরক্ষণ ও উন্নয়ন

শুধু ফেব্রুয়ারিতে ভাষার দরদ?

ভাষা ও সাহিত্যের মিলনমেলা

জমি দখলের ক্ষতিপূরণ চাই

পুরান ঢাকায় মশার উৎপাত

গুইমারায় স্বাস্থ্যসেবা সংকট : অবিলম্বে সমাধান প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু : একটি জাতীয় সংকট

নাম পাল্টে গেলে কত কী যে হয়

অনুপ্রেরণা হোক তুলনাহীন

দূষণ রোধে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা হ্রাস জরুরি

পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা বাড়ান

গণরুম প্রথার বিলুপ্তি কবে?

রেলসেবার মান বাড়ান

নওগাঁ সরকারি কলেজের সংকট

টিকিটের দাম আকাশচুম্বী

জকিগঞ্জে গ্রামীণ সড়কের দুরবস্থা

রেলে দুর্নীতি

নবায়নযোগ্য শক্তির বিকল্প নেই

পথশিশুদের ভয়ঙ্কর নেশাদ্রব্য থেকে রক্ষা করুন

ঢাকা-ময়মনসিংহ ননস্টপ ট্রেন ও ডাবল লাইন নির্মাণের দাবি

শিশুদের প্রতি প্রতিহিংসা বন্ধ করুন

চরবাসীর নদী পারাপারে নিরাপত্তার প্রয়োজন

জন্মনিবন্ধন সেবায় অতিরিক্ত অর্থ আদায় : ব্যবস্থা নিন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে স্পিডব্রেকার চাই

উন্নয়নের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান কারিগরি শিক্ষা

পোস্তগোলায় নিম্নমানের ড্রেন নির্মাণ

দিনমজুর সংকটে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত

পানাম সেতু : ঐতিহ্য রক্ষায় অবহেলা নয়

যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা থেকে ধোলাইখাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার দুরবস্থা

tab

চিঠিপত্র

চিঠি : সাইবার অপরাধ রোধে সতর্কতা দরকার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসার ও বিকাশ চোখে পড়ার মতো। অধিকাংশের হাতেই স্মার্টফোন দৃশ্যমান। বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি; যার মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি। তবে অবাক করার বিষয় হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তি, সহজ অ্যাক্সেস ও দিনকে দিন নতুন প্ল্যাটফর্ম আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে সাইবার অপরাধ ও নিরাপত্তা ঝুঁকি।

কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে চারটি ভিন্ন আইনের অধীনে প্রতি মাসে গড়ে ১৬৯টি সাইবার মামলা দায়ের হয়েছে। ২০২১ সালে এই সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৪টি। আসলে সাইবার অপরাধের ধরন দিনকে দিন বদলে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে অপরাধের সংখ্যাও। এসব অপরাধের বেশিরভাগই মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ই-কমার্স ও এফ-কমার্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এমনকি এ ধরনের কার্যক্রমে বিদেশি নাগরিকদেরও সংশ্লিতাও দেখা গেছে।

মূলত সাইবার নিরাপত্তা হচ্ছে এমন কিছু উপায় যার মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য, কম্পিউটার, আমাদের বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ডিভাইসকে- হ্যাকিং ও বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ থেকে নিরাপদ রাখতে পারি। অন্যদিকে তথ্য প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইনে যে অপরাধসমূহ সংগঠিত হয় তাকে বলা হয় সাইবার ক্রাইম বা অপরাধ। সাইবার অপরাধের একটি বড় অংশ হচ্ছে প্রতারণা। ভুল পরিচয় এবং ভুল তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে নানাভাবে যোগাযোগ করা হয় এবং তাদের নানাভাবে প্রতারিত করার চেষ্টা করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং থেকে প্রায়ই অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার খবর শোনা যায়।

এসব অপরাধের ধরনগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ‘টিকটকে তারকা’ হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মূলত তরুণীদের প্রলুব্ধ করে। ভুক্তভোগীরা একবার সেই ফাঁদে পা দেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় ভয়ংকর নির্যাতন ও পরিশেষে মানসিক ট্রমা। এ ধরনের ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ ও বিদেশে পাচার করার মতো ঘটনা ঘটে বলে জানা যাচ্ছে।

যেকোন ধরনের সাইবার আক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হচ্ছে সচেতনতা। অপরাধীরা নানাভাবে ফোনে প্রতারণা করে ভুক্তভোগীর গোপন তথ্য নিয়ে নেয়। এখন যদি কেউ তার পাসওয়ার্ড বা এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বলে দেয় তাহলে তার আর্থিক ক্ষতি করতে পারে। এ থেকে রক্ষা পেতে এখন টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহার করা উচিৎ। এটা পাসওয়ার্ডের ওপর পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হয় এবং এটা স্বয়ংক্রিয় পরিচালিত। ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখলে দেখতে পাওয়া যায় মাইক্রোসফট, গুগলসহ অনেক প্রতিষ্ঠান এই সার্ভিসগুলো বিনা পয়সায় দিচ্ছে।

সাইবার নিরাপত্তায় সচেতনতার পাশাপাশি কিছু অতি প্রয়োজনীয় বিষয়ে সতর্ক থাকা খুবই জরুরি। পাসওয়ার্ড, পিন, ওটিপি ইত্যাদি মনের ভুলেও কাউকে বলা বা শেয়ার করা উচিৎ নয়। শুধুমাত্র ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ডই সাইবার জগতে নিরাপদ রাখতে যথেষ্ট নয়। সাইবার অপরাধ থেকে রক্ষা পেতে হলে প্রথমত যারা অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে, তাদের সরকারের সাইবার ক্রাইম বিভাগের পেজে গিয়ে আইনগুলো ভালো করে পড়তে ও জানতে হবে। দ্বিতীয়ত, অনলাইনে যদি কেউ ভালোবাসা বা ব্যবসার প্রস্তাব দেয়, তাহলে তা ভালো করে যাচাই-বাছাই করতে হবে। আর তৃতীয়ত, যদি কেউ সাইবার অপরাধের শিকার হয়েই যায়, তাহলে দ্বিধাদ্বন্দ্ব না করে তথ্য দিয়ে পুরোটা বিষয়টা যথাসম্ভব খুলে বলতে হবে এবং সমস্যা সমাধানের জন্য নিকটজন বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা নিতে হবে। মোট কথা সাইবার অপরাধের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে হলে সচেতনতা ও সতর্কতার বিকল্প নেই।

জিল্লুর রহমান

লেখক, ব্যাংকার

back to top