alt

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠি : অতিথি পাখিরা থাকুক নিরাপদে

: শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২২

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

অপরূপ বাংলার প্রকৃতিতে চলছে শীতের আমেজ। কুয়াশার চাদর ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে সূর্যিমামা। ঘাসের ওপরে শিশিরের ছোঁয়া আর কুয়াশাচ্ছন্ন সকালের রাস্তাঘাট সমস্বরে শীতের আর্বিভাবকে জানান দিচ্ছে। গ্রামের কর্মব্যস্ত কৃষক ছুটছে ক্ষেত-খামারে, গাছিরা ব্যস্ত হয়ে উঠেছে খেজুর গাছ কাটায়। চারিদিকে সৌন্দর্যের ছড়াছড়িতে প্রকৃতি যেন আপন মনে সাজতে শুরু করেছে।

এদিকে প্রতি বছরের মতো এবারও হিমালয়ের পাদদেশ আর রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখিরা। বিশেষ করে সাইবেরিয়া, ফিলিপিন্স, আসাম, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ডসহ তিব্বতের উপত্যকা অঞ্চল থেকে শীতের তীব্র প্রকোপে এসব পাখিরা নিজেদের কিছুদিনের জন্য এই পরিবেশে মানিয়ে নেয়। নির্দিষ্ট একটা সময় শেষে তারা আবারও হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ফিরে যায় তাদের স্থায়ী আবাসস্থলে। মূলত খাদ্য ও পরিবেশগত কিছু সুবিধায় নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য তারা নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য দেশান্তর হয়ে আমাদের দেশে পাড়ি দেয়। অতিরিক্ত শীতের কারনে বহু পথ পাড়ি দিয়ে আসা এসব পাখিদের পালক পড়ে যায়। পরবর্তী এ পরিবেশে বেশকিছু থাকার পর অনুকূল পরিবেশ পেয়ে তারা আবারও স্বাভাবিক গড়নে ফিরে আসে।

আগত এসব অতিথি পাখিদের নিরাপদ এই আবাসস্থলে হানা দেয় আমাদের দেশের একশ্রেণীর অতিলোভী শিকারিরা। তারা ফাঁদ পেতে থাকে বসে এই মৌসুমের জন্য। তাদের এমন অমানবিক নিষ্ঠুর কাজের জন্য কমতে শুরু করেছে অতিথি পাখির বিচরণ। যা আমাদের প্রকৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ। পাখি শিকারিদের এমন আচারণ বন্ধ করা না করা গেলে একটা সময় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। যা আমাদের জন্য কোনভাবেই কাম্য নয়।

পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘এক দশক আগেও এ দেশে ২০০ থেকে ২১৫ প্রজাতির অতিথি পাখি আসত। তবে এ সংখ্যা বছর গড়াতেই ব্যাপক হারে হ্রাস পাচ্ছে।’ যার অন্যতম কারণ হলো অবাধে পাখি শিকার আর জলাভূমির সংকট। আমাদের মধ্যে প্রকৃতিপ্রেমের বড় ঘাটতি তৈরি করছে। পাশাপাশি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের পরিবেশও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অতিথি পাখির জন্য ১২টি অভয়ারণ্য থাকার কথা রয়েছে। তবে প্রকৃতপক্ষে তাদের বাসযোগ্য অভয়ারণ্য বলতে যা বোঝায় তা আজও পরিপূর্ণভাবে গড়ে উঠেনি। এর বাইরে গ্রামাঞ্চলের খাল-বিল, জলাশয়ের পরিবেশ আরও কমতে শুরু করেছে। যার ফলে অতিথি পাখির সংখ্যা কমার পাশাপাশি যারা আসছে তারাও অনুকূল আবহাওয়া পাচ্ছে না।

এসব পাখিদের রক্ষা করতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যক্তিসচেতনতা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী আইনের ২৬ ধারা মতে, পাখি শিকার ও হত্যা দন্ডনীয় অপরাধ। এ আইনে বলা হয়েছে, পোষা পাখি লালন-পালন, খামার স্থাপন, কেনা-বেচার জন্য লাইসেন্স নিতে হবে। না নিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। তবে শুধু আইন প্রণয়ন করে অতিথি পাখি রক্ষা করা সম্ভব নয়। আইনের এসব ধারা কতৃপক্ষকে মাঠপর্যায়ে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সচেতনতা আর আমাদের মধ্যে প্রকৃতিপ্রেম ছাড়া আগত এসব অতিথি পাখির জন্য নিরাপদ অভয়ারণ্যে তৈরি করা কিংবা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব নয়।

রিয়াদ হোসেন

শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

সব হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা চালু করা হোক

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতা

পানি সংকট: জীবন ও সভ্যতার জন্য বিরাট হুমকি

ই-লার্নিং: সীমান্তহীন শিক্ষার নতুন দিগন্ত

আজিমপুর কলোনির অব্যবস্থাপনা

জনস্বাস্থ্যের নীরব ঘাতক : তামাকজাত পণ্য

বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়: অবস্থান, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

ইন্দো-প্যাসিফিক রাজনীতি ও বাংলাদেশের সমুদ্রকৌশল

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট: দীর্ঘসূত্রতা ও ভোগান্তির শেষ কোথায়?

পুরান ঢাকার রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থা

নিরাপদ শিশু খাদ্য: জাতির ভবিষ্যতের প্রশ্ন

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়: প্রতিদিনের দুঃস্বপ্ন

পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা

হেমন্ত আসে হিম কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে

জীবনের অভিধানে প্রবীণদের স্থান কোথায়?

নীরবতা নয়, বলতে শেখ

সুন্দরবনে টেকসই পর্যটন মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ও করণীয়

প্রথার নামে প্রথাগত শোষণ: উচ্চ কাবিনের ফাঁদ

শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা

মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক জায়ান্টদের মাস্টার প্ল্যান

গার্মেন্টস শ্রমিকের মৃত্যু কেন কেবলই সংখ্যা?

বাল্যবিয়ে: সমাজের এক নীরব অভিশাপ

মনোস্বাস্থ্যের সংকটে তরুণরা: নীরবতার আড়ালে এক ভয়াবহ বাস্তবতা

ধূমপানের প্রভাব

tab

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠি : অতিথি পাখিরা থাকুক নিরাপদে

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২২

অপরূপ বাংলার প্রকৃতিতে চলছে শীতের আমেজ। কুয়াশার চাদর ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে সূর্যিমামা। ঘাসের ওপরে শিশিরের ছোঁয়া আর কুয়াশাচ্ছন্ন সকালের রাস্তাঘাট সমস্বরে শীতের আর্বিভাবকে জানান দিচ্ছে। গ্রামের কর্মব্যস্ত কৃষক ছুটছে ক্ষেত-খামারে, গাছিরা ব্যস্ত হয়ে উঠেছে খেজুর গাছ কাটায়। চারিদিকে সৌন্দর্যের ছড়াছড়িতে প্রকৃতি যেন আপন মনে সাজতে শুরু করেছে।

এদিকে প্রতি বছরের মতো এবারও হিমালয়ের পাদদেশ আর রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখিরা। বিশেষ করে সাইবেরিয়া, ফিলিপিন্স, আসাম, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ডসহ তিব্বতের উপত্যকা অঞ্চল থেকে শীতের তীব্র প্রকোপে এসব পাখিরা নিজেদের কিছুদিনের জন্য এই পরিবেশে মানিয়ে নেয়। নির্দিষ্ট একটা সময় শেষে তারা আবারও হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ফিরে যায় তাদের স্থায়ী আবাসস্থলে। মূলত খাদ্য ও পরিবেশগত কিছু সুবিধায় নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য তারা নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য দেশান্তর হয়ে আমাদের দেশে পাড়ি দেয়। অতিরিক্ত শীতের কারনে বহু পথ পাড়ি দিয়ে আসা এসব পাখিদের পালক পড়ে যায়। পরবর্তী এ পরিবেশে বেশকিছু থাকার পর অনুকূল পরিবেশ পেয়ে তারা আবারও স্বাভাবিক গড়নে ফিরে আসে।

আগত এসব অতিথি পাখিদের নিরাপদ এই আবাসস্থলে হানা দেয় আমাদের দেশের একশ্রেণীর অতিলোভী শিকারিরা। তারা ফাঁদ পেতে থাকে বসে এই মৌসুমের জন্য। তাদের এমন অমানবিক নিষ্ঠুর কাজের জন্য কমতে শুরু করেছে অতিথি পাখির বিচরণ। যা আমাদের প্রকৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ। পাখি শিকারিদের এমন আচারণ বন্ধ করা না করা গেলে একটা সময় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। যা আমাদের জন্য কোনভাবেই কাম্য নয়।

পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘এক দশক আগেও এ দেশে ২০০ থেকে ২১৫ প্রজাতির অতিথি পাখি আসত। তবে এ সংখ্যা বছর গড়াতেই ব্যাপক হারে হ্রাস পাচ্ছে।’ যার অন্যতম কারণ হলো অবাধে পাখি শিকার আর জলাভূমির সংকট। আমাদের মধ্যে প্রকৃতিপ্রেমের বড় ঘাটতি তৈরি করছে। পাশাপাশি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের পরিবেশও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অতিথি পাখির জন্য ১২টি অভয়ারণ্য থাকার কথা রয়েছে। তবে প্রকৃতপক্ষে তাদের বাসযোগ্য অভয়ারণ্য বলতে যা বোঝায় তা আজও পরিপূর্ণভাবে গড়ে উঠেনি। এর বাইরে গ্রামাঞ্চলের খাল-বিল, জলাশয়ের পরিবেশ আরও কমতে শুরু করেছে। যার ফলে অতিথি পাখির সংখ্যা কমার পাশাপাশি যারা আসছে তারাও অনুকূল আবহাওয়া পাচ্ছে না।

এসব পাখিদের রক্ষা করতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যক্তিসচেতনতা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী আইনের ২৬ ধারা মতে, পাখি শিকার ও হত্যা দন্ডনীয় অপরাধ। এ আইনে বলা হয়েছে, পোষা পাখি লালন-পালন, খামার স্থাপন, কেনা-বেচার জন্য লাইসেন্স নিতে হবে। না নিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। তবে শুধু আইন প্রণয়ন করে অতিথি পাখি রক্ষা করা সম্ভব নয়। আইনের এসব ধারা কতৃপক্ষকে মাঠপর্যায়ে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সচেতনতা আর আমাদের মধ্যে প্রকৃতিপ্রেম ছাড়া আগত এসব অতিথি পাখির জন্য নিরাপদ অভয়ারণ্যে তৈরি করা কিংবা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব নয়।

রিয়াদ হোসেন

শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ

back to top