alt

চিঠিপত্র

চিঠি : স্যানিটারি ন্যাপকিন সহজলভ্য হোক

: বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

মেয়েদের জীবনে অবিচ্ছেদ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো পিরিয়ড। তবে পিরিয়ড নিয়ে রয়েছে আজগুবি সব ভ্রান্ত ধারণা, লজ্জা আর সংকোচ। এর প্রভাব পড়ে নারীদের স্বাস্থ্যের ওপর; যার ফলে পিরিয়ড চলাকালীন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপদ থাকার বিষয়ে থাকে সচেতনতার অভাব।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মধ্যে নারীর জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হলো স্যানেটারি ন্যাপকিন বা প্যাড। সাধারণত বাজারে ১১০ টাকায় যেসব স্যানিটারি ন্যাপকিন পাওয়া যায় তাতে প্যাড থাকে ৮টি। ধরা যাক, একজন নারীর ৯৬ ঘণ্টা রক্তক্ষরণ হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তার ৬ ঘণ্টা পরপর স্যানিটারি ন্যাপকিন পরিবর্তন করতে গেলে মোট প্যাড প্রয়োজন ১৬টি, যার সর্বনিম্ন বাজার মূল্য ২২০ টাকা।

সুতরাং শুধু পিরিয়ড চলাকালীন একজন নারীকে প্রতি মাসে প্যাডের মূল্য পরিশোধ করতে হয় সর্বনিম্ন ২২০-৩০০ টাকা। আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারে যদি ৫ জন নারী থাকেন, তাহলে তাদের প্রতি মাসে স্যানিটারি ন্যাপকিন ক্রয় বাবদ খরচ হয় ১১০০-১৫০০ টাকা। যে পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা, সেখানে এত পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে স্যানিটারি ন্যাপকিন ক্রয় করা কতটা কষ্টকর তা সহজেই অনুমেয়। যেখানে ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতেই নাভিশ্বাস উঠে যায়, স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার সেখানে বিলাসিতা।

স্যানিটারি ন্যাপকিনের বেশি দামের কারণে অসংখ্য নারীর পক্ষে তা ব্যবহার করা সম্ভবপর হয়ে উঠে না। ২০১৪ সালের বাংলাদেশ ন্যাশনাল হাইজিন বেজলাইন সার্ভ থেকে জানা যায়, দামের কারণে এখনও মাত্র ১৪ শতাংশ নারী প্যাড ব্যবহার করেন। আর ৮৪ শতাংশ নারী পুরাতন কাপড়, ন্যাকড়া বা তুলা ব্যবহার করেন। স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামালের ওপর বিভিন্ন স্তরে বিভিন্নমাত্রায় কর পরিশোধ করতে হয় কর। এক্ষেত্রে সর্বমোট কর ইন্সিডেন্ট ১২৭.৮৪ শতাংশ। বিভিন্ন স্তরে এভাবে কর দেয়ার ফলে বাজারজাতকরণের পর প্যাডের যে অর্থ মূল্য দাঁড়ায় তা সমাজের বৃহত্তর অংশের পক্ষেই ক্রয় করা সম্ভব হয় না। প্যাড ব্যবহার না করলে নারীদের জরায়ু, জরায়ুমুখ, মূত্রনালিতে লোকাল ইনফেকশন হয়; যা পরবর্তীতে ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিতে পরিণত হতে পারে।

সরকার কৃষি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও অন্যান্য খাতে যেভাবে ভর্তুকি দেয়, একইভাবে ন্যাপকিনের ক্ষেত্রেও ভর্তুকি দেয়া উচিত। এছাড়াও অন্য পদ্ধতিতে সরকারের পক্ষ থেকে আবশ্যক ঘোষণা করে কিছু পণ্যের মূল্য যেমন নির্ধারণ করা হয়, তেমনি স্যানিটারি ন্যাপকিনকে আবশ্যকীয় হিসেবে ঘোষণা করে দাম নির্ধারণ করে দেয়া প্রয়োজন। তাতে সব শ্রেণীর নারীদের পক্ষে স্যানিটারি ন্যাপকিন ক্রয় করা ও ব্যবহারের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এ পদক্ষেপ নারীর প্রতি করুণা বা সহানুভূতি নয় বরং সমতাভিত্তিক বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণের ন্যায্য দাবি। স্যানিটারি ন্যাপকিন ঘরে সাজিয়ে রাখা সৌন্দর্যবর্ধক, শৌখিন-বিলাসী পণ্য নয়। বরং রোজকার দিনে ব্যবহৃত অন্যান্য নিত্যপ্রয়েজনীয় দ্রব্যের মতোই আবশ্যকীয়।

সোনিয়া আক্তার

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি

বেকারত্ব নিরসনে কুটির শিল্পের ভূমিকা

দুর্যোগ পূর্ববর্তী প্রস্তুতি

ছবি

সোনালি পাটের প্রয়োজনীয়তা

কালীকচ্ছের ধর্মতীর্থ বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি

চিঠি : হলে খাবারের মান উন্নত করুন

চিঠি : স্বাস্থ্য শিক্ষা বিষয়ে ডিপ্লোমাধারীদের বৈষম্য দূর করুন

চিঠি : শিক্ষার মান উন্নয়ন চাই

চিঠি : সড়ক আইন বাস্তবায়ন করুন

চিঠি : রাস্তায় বাইক সন্ত্রাস

চিঠি : কঠিন হয়ে পড়ছে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা

চিঠি : ডিসেম্বরের স্মৃতি

চিঠি : টেকসই ও সাশ্রয়ী ক্লিন এনার্জি

চিঠি : নকল গুড় জব্দ হোক

চিঠি : সড়কে বাড়ছে লেন ঝরছে প্রাণ

চিঠি : ঢাকাবাসীর কাছে মেট্রোরেল আশীর্বাদ

চিঠি : কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন জরুরি

চিঠি : পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস চাই

চিঠি : তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগান

চিঠি : এইডস থেকে বাঁচতে সচেতন হোন

চিঠি : অতিথি পাখি নিধন বন্ধ হোক

চিঠি : হাসুন, সুস্থ থাকুন

চিঠি : হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধ হোক

চিঠি : রাজনীতিতে তরুণ সমাজের অংশগ্রহণ

চিঠি : মাদককে ‘না’ বলুন

চিঠি : পুনরুন্নয়ন প্রকল্প : পাল্টে যাবে পুরান ঢাকা

চিঠি : শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান

চিঠি : চন্দ্রগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন চাই

চিঠি : বাড়ছে বাল্যবিয়ে

চিঠি : টিকটকের অপব্যবহার রোধ করতে হবে

চিঠি : আত্মবিশ্বাস ও আস্থা

চিঠি : শিক্ষকরা কি প্রকৃত মর্যাদা পাচ্ছে

চিঠি : শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সম্প্রীতি চাই

চিঠি : সকালে ও বিকেলে মেট্রোরেল চলুক

চিঠি : অতিথি পাখি নিধন বন্ধ করতে হবে

চিঠি : ঢাবি’র কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার আধুনিকায়ন করা হোক

চিঠি : নিত্যপণ্যের দাম

tab

চিঠিপত্র

চিঠি : স্যানিটারি ন্যাপকিন সহজলভ্য হোক

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

মেয়েদের জীবনে অবিচ্ছেদ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো পিরিয়ড। তবে পিরিয়ড নিয়ে রয়েছে আজগুবি সব ভ্রান্ত ধারণা, লজ্জা আর সংকোচ। এর প্রভাব পড়ে নারীদের স্বাস্থ্যের ওপর; যার ফলে পিরিয়ড চলাকালীন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপদ থাকার বিষয়ে থাকে সচেতনতার অভাব।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মধ্যে নারীর জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হলো স্যানেটারি ন্যাপকিন বা প্যাড। সাধারণত বাজারে ১১০ টাকায় যেসব স্যানিটারি ন্যাপকিন পাওয়া যায় তাতে প্যাড থাকে ৮টি। ধরা যাক, একজন নারীর ৯৬ ঘণ্টা রক্তক্ষরণ হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তার ৬ ঘণ্টা পরপর স্যানিটারি ন্যাপকিন পরিবর্তন করতে গেলে মোট প্যাড প্রয়োজন ১৬টি, যার সর্বনিম্ন বাজার মূল্য ২২০ টাকা।

সুতরাং শুধু পিরিয়ড চলাকালীন একজন নারীকে প্রতি মাসে প্যাডের মূল্য পরিশোধ করতে হয় সর্বনিম্ন ২২০-৩০০ টাকা। আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারে যদি ৫ জন নারী থাকেন, তাহলে তাদের প্রতি মাসে স্যানিটারি ন্যাপকিন ক্রয় বাবদ খরচ হয় ১১০০-১৫০০ টাকা। যে পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা, সেখানে এত পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে স্যানিটারি ন্যাপকিন ক্রয় করা কতটা কষ্টকর তা সহজেই অনুমেয়। যেখানে ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতেই নাভিশ্বাস উঠে যায়, স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার সেখানে বিলাসিতা।

স্যানিটারি ন্যাপকিনের বেশি দামের কারণে অসংখ্য নারীর পক্ষে তা ব্যবহার করা সম্ভবপর হয়ে উঠে না। ২০১৪ সালের বাংলাদেশ ন্যাশনাল হাইজিন বেজলাইন সার্ভ থেকে জানা যায়, দামের কারণে এখনও মাত্র ১৪ শতাংশ নারী প্যাড ব্যবহার করেন। আর ৮৪ শতাংশ নারী পুরাতন কাপড়, ন্যাকড়া বা তুলা ব্যবহার করেন। স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামালের ওপর বিভিন্ন স্তরে বিভিন্নমাত্রায় কর পরিশোধ করতে হয় কর। এক্ষেত্রে সর্বমোট কর ইন্সিডেন্ট ১২৭.৮৪ শতাংশ। বিভিন্ন স্তরে এভাবে কর দেয়ার ফলে বাজারজাতকরণের পর প্যাডের যে অর্থ মূল্য দাঁড়ায় তা সমাজের বৃহত্তর অংশের পক্ষেই ক্রয় করা সম্ভব হয় না। প্যাড ব্যবহার না করলে নারীদের জরায়ু, জরায়ুমুখ, মূত্রনালিতে লোকাল ইনফেকশন হয়; যা পরবর্তীতে ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিতে পরিণত হতে পারে।

সরকার কৃষি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও অন্যান্য খাতে যেভাবে ভর্তুকি দেয়, একইভাবে ন্যাপকিনের ক্ষেত্রেও ভর্তুকি দেয়া উচিত। এছাড়াও অন্য পদ্ধতিতে সরকারের পক্ষ থেকে আবশ্যক ঘোষণা করে কিছু পণ্যের মূল্য যেমন নির্ধারণ করা হয়, তেমনি স্যানিটারি ন্যাপকিনকে আবশ্যকীয় হিসেবে ঘোষণা করে দাম নির্ধারণ করে দেয়া প্রয়োজন। তাতে সব শ্রেণীর নারীদের পক্ষে স্যানিটারি ন্যাপকিন ক্রয় করা ও ব্যবহারের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এ পদক্ষেপ নারীর প্রতি করুণা বা সহানুভূতি নয় বরং সমতাভিত্তিক বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণের ন্যায্য দাবি। স্যানিটারি ন্যাপকিন ঘরে সাজিয়ে রাখা সৌন্দর্যবর্ধক, শৌখিন-বিলাসী পণ্য নয়। বরং রোজকার দিনে ব্যবহৃত অন্যান্য নিত্যপ্রয়েজনীয় দ্রব্যের মতোই আবশ্যকীয়।

সোনিয়া আক্তার

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

back to top