মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষির ওপরই এদেশের অর্থনীতি অনেকাংশে নির্ভরশীল। বর্তমানে দেশে জিডিপির ১৮ শতাংশ অর্জিত হয় কৃষি খাত থেকে। বিশেষ করে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা মেটাতে যে বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্যের প্রয়োজন তা আসে কৃষিজমি থেকেই। কিন্তু এখন বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান হারে কমে যাচ্ছে কৃষি জমি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর কৃষিশুমারি ২০১৯-এর তথ্য মতে, দেশে আবাদি জমির পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমছে। ২০০৮ সালে নিট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার একর। ১১ বছরের ব্যবধানে দেশে আবাদি জমির পরিমাণ কমে হয়েছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার একর। জমির পরিমাণ কমেছে ৪ লাখ ১৬ হাজার একর। আবাদি জমির মধ্যে অস্থায়ী ফসলের জমির পরিমাণ এক কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার একর; স্থায়ী ফসলের জমি ১৯ লাখ ৭০ হাজার একর। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নানা কারণে প্রতি বছর প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের মতে, প্রতি বছর দেশে ১ শতাংশ হারে কৃষিজমি নষ্ট হচ্ছে। এই হারে ভূমি ব্যবহার চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে কোনো কৃষিজমি থাকবে না।
জনসংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে না জমি। নতুন বসতভিটা, অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি, রাস্তা-ঘাট-অবকাঠামো নির্মাণ, ইটভাটা, কলকারখানা, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়ণের ফলে কৃষিজমি ক্রমেই কমছে। আমন মৌসুম শেষ হওয়ার পর পরই আশঙ্কাজনক হারে কেটে নেয়া হয় কৃষিজমির মাটি। জমির উপরিভাগের ছয় থেকে সাত ইঞ্চির মধ্যেই থাকে সব ধরনের জৈব গুণাগুণ। অথচ এটাই কেটে নেয়া হচ্ছে। ফলে এসব জমির উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে। এখন কৃষির প্রতি মানুষের আগ্রহও কমে যাচ্ছে। পূর্বে দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত থাকলেও বর্তমানে ৪৮ শতাংশ। জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি, ২০১০ এবং কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি জোনিং আইন, ২০১০ অনুসারে, কৃষিজমি কৃষিকাজ ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু এই আইনের কোন বাস্তবায়নই হচ্ছে না।
কৃষি জমির মাটি কাটা বন্ধ করতে হবে। জমি যাতে অকৃষি খাতে ব্যবহার করা না হয় সেজন্য জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
আফরোজা আক্তার
শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩
বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষির ওপরই এদেশের অর্থনীতি অনেকাংশে নির্ভরশীল। বর্তমানে দেশে জিডিপির ১৮ শতাংশ অর্জিত হয় কৃষি খাত থেকে। বিশেষ করে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা মেটাতে যে বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্যের প্রয়োজন তা আসে কৃষিজমি থেকেই। কিন্তু এখন বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান হারে কমে যাচ্ছে কৃষি জমি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর কৃষিশুমারি ২০১৯-এর তথ্য মতে, দেশে আবাদি জমির পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমছে। ২০০৮ সালে নিট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার একর। ১১ বছরের ব্যবধানে দেশে আবাদি জমির পরিমাণ কমে হয়েছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার একর। জমির পরিমাণ কমেছে ৪ লাখ ১৬ হাজার একর। আবাদি জমির মধ্যে অস্থায়ী ফসলের জমির পরিমাণ এক কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার একর; স্থায়ী ফসলের জমি ১৯ লাখ ৭০ হাজার একর। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নানা কারণে প্রতি বছর প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের মতে, প্রতি বছর দেশে ১ শতাংশ হারে কৃষিজমি নষ্ট হচ্ছে। এই হারে ভূমি ব্যবহার চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে কোনো কৃষিজমি থাকবে না।
জনসংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে না জমি। নতুন বসতভিটা, অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি, রাস্তা-ঘাট-অবকাঠামো নির্মাণ, ইটভাটা, কলকারখানা, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়ণের ফলে কৃষিজমি ক্রমেই কমছে। আমন মৌসুম শেষ হওয়ার পর পরই আশঙ্কাজনক হারে কেটে নেয়া হয় কৃষিজমির মাটি। জমির উপরিভাগের ছয় থেকে সাত ইঞ্চির মধ্যেই থাকে সব ধরনের জৈব গুণাগুণ। অথচ এটাই কেটে নেয়া হচ্ছে। ফলে এসব জমির উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে। এখন কৃষির প্রতি মানুষের আগ্রহও কমে যাচ্ছে। পূর্বে দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত থাকলেও বর্তমানে ৪৮ শতাংশ। জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি, ২০১০ এবং কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি জোনিং আইন, ২০১০ অনুসারে, কৃষিজমি কৃষিকাজ ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু এই আইনের কোন বাস্তবায়নই হচ্ছে না।
কৃষি জমির মাটি কাটা বন্ধ করতে হবে। জমি যাতে অকৃষি খাতে ব্যবহার করা না হয় সেজন্য জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
আফরোজা আক্তার
শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা