alt

চিঠিপত্র

চিঠি : মৎস্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিন

: মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

মৎস্য অধিদপ্তরের স্লোগান হলো- ‘করলে জাটকা সংরক্ষণ-বাড়বে ইলিশের উৎপাদন।’ বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে রয়েছে অসংখ্য নদ-নদী যা মানুষের জীবিকা ও যাতায়াতের একটি বড় মাধ্যম। আমাদের দেশের মানুষের আমিষের অধিকাংশ চাহিদা পূরণ হয় এই সবাই নদী থেকে পাওয়া মাছ থেকে।

বাংলাদেশে মৎস্য জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মৎস্যবিজ্ঞানীরা। মৎস্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বর্তমানে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হলেও তার মূল সুরটিই হচ্ছে দেশীয় মাছের আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণ। কিন্তু বিষয়টি উপস্থাপন করা যতটা সহজ বাস্তবায়ন করা ততোই কঠিন। কারণ এর সঙ্গে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং অধিক মুনাফার আকাক্সক্ষাবিষয়ক নানাবিধ প্রভাব ওতপ্রোতভাবে জড়িত, যা আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের প্রধান অন্তরায়। কিন্তু এ অন্তরায়সমূহ দূর করা সম্ভব না হলে দেশের মৎস্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গৃহীত ব্যবস্থাপনাসমূহ টেকসই করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।

দেশীয় মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস এবং উভয় প্রকৃতির জলাশয়ের মাঝে মাছ চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির নেপথ্যের কারণগুলোর অধিকাংশই কৃত্রিম। যেমন- অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ ও রাস্তাঘাট নির্মাণ, প্লাবনভূমিতে ধান চাষের ধাঁচে পরিবর্তন, জলাশয় দখল ও ভরাট এবং জলাশয়ের পানি দূষণ, আড়াআড়ি বাঁধ নির্মাণ ও অধিকহারে পানি প্রত্যাহারের পরিপ্রেক্ষিতে নদীর মরে যাওয়া ইত্যাদি।

এসব কারণকে দূর করার জন্য যেসব ব্যবস্থাপনা ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে তার বেশির ভাগই কৃত্রিম (যেমন- ফিশপাস তথা মৎস্যবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ, ক্ষুদ্র পরিসরে অভয়াশ্রম নির্মাণ ইত্যাদি) যা আমাদের দেশের মতো গঠন প্রক্রিয়া চলমান এরকম একটি ব-দ্বীপের ক্ষেত্রে কোনভাবেই কার্যকর হতে পারেনি, হওয়ার কথাও নয়।

মাছের আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র পুনরুদ্ধার এবং উভয় জলাশয়ের মাঝে মাছ চলাচলের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে প্রধান পদক্ষেপ হওয়া উচিত। যেসব অপরিকল্পিত বাঁধের কারণে জলাশয়ের ভূপ্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা অপসারণ করা। নির্মিত ও নির্মিতব্য রাস্তায় সেতুর ব্যবস্থা করা। যাতে করে বৃষ্টি বা ঢলের পানি স্বাভাবিক গতিতে নদীর দুকুল ভাসিয়ে জমিকে প্লাবিত করে নেমে যেতে পারে। প্লাবনভূমিতে দেশীয় বর্ষালী ধান বা পাটের আবাদ কমতে থাকায় জলজ পরিবেশের যে পরিবর্তন ঘটেছে তার সঙ্গে দেশীয় মাছ খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি। কারণ দেশীয় বর্ষালী ধান-পাটের ক্ষেতই হচ্ছে দেশীয় ছোট মাছের প্রধান প্রজননক্ষেত্র।

মাছের আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণে আরও যেসব ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা জরুরি সেসব হলো- জলজ বনায়ন সৃজন ও টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা কৌশল প্রণয়ন, জলাশয়ের স্বল্পমেয়াদি মুনাফামুখী বাণিজ্যিক ইজারা প্রথার পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি বিজ্ঞানসম্মত উৎপাদনভিত্তিক জৈব ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রচলন, উন্মুক্ত জলাশয় হতে মাছ আহরণের ক্ষতিকর উপকরণ ও পদ্ধতির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, বৃহৎ পরিসরে অভয়াশ্রম স্থাপন ও তার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ, কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে দেশীয় প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন, উন্মুক্ত জলাশয়ে অবমুক্তকরণ।

জলাশয় ও পানিসম্পদবিষয়ক আইন প্রণয়ন ও প্রচলিত মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও সংরক্ষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং মৎস্যজীবীসহ সবাই জনসাধারণের মধ্যে এবিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে আমাদের মৎস্য-জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা যাবে বলে আমরা মনে করি।

সাকিবুল ইসলাম

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের শেষ কোথায়?

টেকসই উন্নয়ন ও আদিবাসীদের অধিকার

শব্দদূষণ বন্ধ হবে কবে?

চট্টগ্রাম দোহাজারী অংশে রেল চালু হোক

দেশের প্রথম শহীদ মিনারের উপেক্ষিত ইতিহাস

তরুণদের হীনমন্যতা ও মত প্রকাশে অনীহা

বন সংরক্ষণ ও উন্নয়ন

শুধু ফেব্রুয়ারিতে ভাষার দরদ?

ভাষা ও সাহিত্যের মিলনমেলা

জমি দখলের ক্ষতিপূরণ চাই

পুরান ঢাকায় মশার উৎপাত

গুইমারায় স্বাস্থ্যসেবা সংকট : অবিলম্বে সমাধান প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু : একটি জাতীয় সংকট

নাম পাল্টে গেলে কত কী যে হয়

অনুপ্রেরণা হোক তুলনাহীন

দূষণ রোধে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা হ্রাস জরুরি

পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা বাড়ান

গণরুম প্রথার বিলুপ্তি কবে?

রেলসেবার মান বাড়ান

নওগাঁ সরকারি কলেজের সংকট

টিকিটের দাম আকাশচুম্বী

জকিগঞ্জে গ্রামীণ সড়কের দুরবস্থা

রেলে দুর্নীতি

নবায়নযোগ্য শক্তির বিকল্প নেই

পথশিশুদের ভয়ঙ্কর নেশাদ্রব্য থেকে রক্ষা করুন

ঢাকা-ময়মনসিংহ ননস্টপ ট্রেন ও ডাবল লাইন নির্মাণের দাবি

শিশুদের প্রতি প্রতিহিংসা বন্ধ করুন

চরবাসীর নদী পারাপারে নিরাপত্তার প্রয়োজন

জন্মনিবন্ধন সেবায় অতিরিক্ত অর্থ আদায় : ব্যবস্থা নিন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে স্পিডব্রেকার চাই

উন্নয়নের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান কারিগরি শিক্ষা

পোস্তগোলায় নিম্নমানের ড্রেন নির্মাণ

দিনমজুর সংকটে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত

পানাম সেতু : ঐতিহ্য রক্ষায় অবহেলা নয়

যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা থেকে ধোলাইখাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার দুরবস্থা

tab

চিঠিপত্র

চিঠি : মৎস্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিন

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩

মৎস্য অধিদপ্তরের স্লোগান হলো- ‘করলে জাটকা সংরক্ষণ-বাড়বে ইলিশের উৎপাদন।’ বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে রয়েছে অসংখ্য নদ-নদী যা মানুষের জীবিকা ও যাতায়াতের একটি বড় মাধ্যম। আমাদের দেশের মানুষের আমিষের অধিকাংশ চাহিদা পূরণ হয় এই সবাই নদী থেকে পাওয়া মাছ থেকে।

বাংলাদেশে মৎস্য জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মৎস্যবিজ্ঞানীরা। মৎস্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বর্তমানে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হলেও তার মূল সুরটিই হচ্ছে দেশীয় মাছের আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণ। কিন্তু বিষয়টি উপস্থাপন করা যতটা সহজ বাস্তবায়ন করা ততোই কঠিন। কারণ এর সঙ্গে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং অধিক মুনাফার আকাক্সক্ষাবিষয়ক নানাবিধ প্রভাব ওতপ্রোতভাবে জড়িত, যা আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের প্রধান অন্তরায়। কিন্তু এ অন্তরায়সমূহ দূর করা সম্ভব না হলে দেশের মৎস্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গৃহীত ব্যবস্থাপনাসমূহ টেকসই করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।

দেশীয় মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস এবং উভয় প্রকৃতির জলাশয়ের মাঝে মাছ চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির নেপথ্যের কারণগুলোর অধিকাংশই কৃত্রিম। যেমন- অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ ও রাস্তাঘাট নির্মাণ, প্লাবনভূমিতে ধান চাষের ধাঁচে পরিবর্তন, জলাশয় দখল ও ভরাট এবং জলাশয়ের পানি দূষণ, আড়াআড়ি বাঁধ নির্মাণ ও অধিকহারে পানি প্রত্যাহারের পরিপ্রেক্ষিতে নদীর মরে যাওয়া ইত্যাদি।

এসব কারণকে দূর করার জন্য যেসব ব্যবস্থাপনা ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে তার বেশির ভাগই কৃত্রিম (যেমন- ফিশপাস তথা মৎস্যবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ, ক্ষুদ্র পরিসরে অভয়াশ্রম নির্মাণ ইত্যাদি) যা আমাদের দেশের মতো গঠন প্রক্রিয়া চলমান এরকম একটি ব-দ্বীপের ক্ষেত্রে কোনভাবেই কার্যকর হতে পারেনি, হওয়ার কথাও নয়।

মাছের আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র পুনরুদ্ধার এবং উভয় জলাশয়ের মাঝে মাছ চলাচলের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে প্রধান পদক্ষেপ হওয়া উচিত। যেসব অপরিকল্পিত বাঁধের কারণে জলাশয়ের ভূপ্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা অপসারণ করা। নির্মিত ও নির্মিতব্য রাস্তায় সেতুর ব্যবস্থা করা। যাতে করে বৃষ্টি বা ঢলের পানি স্বাভাবিক গতিতে নদীর দুকুল ভাসিয়ে জমিকে প্লাবিত করে নেমে যেতে পারে। প্লাবনভূমিতে দেশীয় বর্ষালী ধান বা পাটের আবাদ কমতে থাকায় জলজ পরিবেশের যে পরিবর্তন ঘটেছে তার সঙ্গে দেশীয় মাছ খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি। কারণ দেশীয় বর্ষালী ধান-পাটের ক্ষেতই হচ্ছে দেশীয় ছোট মাছের প্রধান প্রজননক্ষেত্র।

মাছের আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণে আরও যেসব ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা জরুরি সেসব হলো- জলজ বনায়ন সৃজন ও টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা কৌশল প্রণয়ন, জলাশয়ের স্বল্পমেয়াদি মুনাফামুখী বাণিজ্যিক ইজারা প্রথার পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি বিজ্ঞানসম্মত উৎপাদনভিত্তিক জৈব ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রচলন, উন্মুক্ত জলাশয় হতে মাছ আহরণের ক্ষতিকর উপকরণ ও পদ্ধতির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, বৃহৎ পরিসরে অভয়াশ্রম স্থাপন ও তার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ, কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে দেশীয় প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন, উন্মুক্ত জলাশয়ে অবমুক্তকরণ।

জলাশয় ও পানিসম্পদবিষয়ক আইন প্রণয়ন ও প্রচলিত মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও সংরক্ষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং মৎস্যজীবীসহ সবাই জনসাধারণের মধ্যে এবিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে আমাদের মৎস্য-জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা যাবে বলে আমরা মনে করি।

সাকিবুল ইসলাম

back to top