মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
প্রযুক্তির দুনিয়ায় চ্যাট জিপিটির আলোচনা এখন হরহামেশাই হচ্ছে। এর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে বুদ্ধিজীবীরা। মানুষের জন্য, ভবিষ্যতের পৃথিবীর জন্য এর কল্যাণকর ও অকল্যাণকর দিক নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ঠিক তেমনি জলবায়ুর পরিবর্তনের বিষয়টিও মানুষকে নতুন করে ভাবাচ্ছে।
পৃথিবীর আবহাওয়া ও জলবায়ু প্রতিনিয়ত মানুষের প্রতিকূলে চলে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে জলবায়ু। এই যে চ্যাট জিপিটি কিংবা জলবায়ু পরিবর্তন যার কথাই বলি না কেন এর মঙ্গলজনক অথবা অমঙ্গলজনক দুটোর দায়ই আমাদের।
প্রথমে যদি চ্যাট জিপিটির কথা বলি- নিঃসন্দেহে এটাও জলবায়ু পরিবর্তনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটার সঙ্গে মানুষের কল্যাণ ও অকল্যাণের বিষয়টা জড়িত। এটি মূলত একটি কম্পিউটার অ্যাপ। এর অকল্যাণের বিষয়টা নিয়েই ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে গবেষকরা দাবি করেছেন যে মানুষের জন্য অমঙ্গলজনকই হবে এই অ্যাপটি। বিশ্বে এটি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা, বিতর্ক, আসছে হুঁশিয়ারি বার্তা।
সারা বিশ্বের সেরা সেরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ মাথা ঘামাচ্ছে, কী ব্যবস্থা নেয়া হবে এই প্রযুক্তি পণ্যের বিষয়ে। প্রযুক্তির দাপটে চাকরি নড়বড়ে হয়ে পড়া পেশাজীবীদের দুশ্চিন্তা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে নতুন এই অ্যাপটি। কারণ এটি কেড়ে নিতে পারে অনেক পেশাজীবীর মুখের খাবার।
তথ্য অনুসন্ধান, ভিডিও চিত্র ধারণ- এসব তো আছেই। কিন্তু তারচেয়েও বড় ব্যাপার, এটি মানুষের মতো কথা বলে, প্রশ্নের জবাব দিতে পারে, উত্তরটি ঠিক মানুষের মতোই লিখে সাজিয়ে দিতে পারে। আপনি যদি একে কোনো একটি বিষয়ের ওপর একটি নিবন্ধ লিখে দিতে বলেন, সে ঝটপট লিখে দেবে, একদন্ডে।
অন্যদিকে, আমরা মানুষরা প্রতিনিয়ত পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। যেভাবে আমরা পরিবেশ দূষণ করছি, গাছপালা বন-জঙ্গল কেটে ফেলছি তাতে আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন অচিরেই পৃথিবীর জলবায়ু পুরোপুরি মানুষের প্রতিকূলে চলে যাবে। গবেষকরা বলছেন প্রতিনিয়ত পৃথিবীর আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে।
বিশ্ব আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৮টি দেশের উপকূলীয় এলাকায় বিরূপ পরিবেশগত প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী ইতোমধ্যেই করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়ায় মারাত্মক ক্ষতির শিকার হতে হবে আমাদের। গ্রিন হাউস এফেক্টের জন্য বন উজাড়কেই প্রধান কারণ বলে গণ্য করা হয়।
একটি দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পরিবেশকে সুন্দর রাখতে দেশের মোট আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা অত্যাবশ্যক। সেখানে আমাদের দেশে বনভূমির পরিমাণ সরকারি হিসাব মতে, শতকরা ৯ ভাগ। দেশে বনভূমির এই অস্বাভাবিক হ্রাসের কারণে বাংলাদেশের জলবায়ু ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
বৃক্ষ পরিবেশের অতিরিক্ত তাপমাত্রা শোষণ করে পরিবেশকে যেমন নির্মল রাখে, তেমনি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গ্যাস কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে প্রাণীর বেঁচে থাকার মূল উপাদান অক্সিজেন নির্গমন করে। তবুও আমরা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে কিংবা উন্নয়নের বাহানায় আমরা প্রতিনিয়ত বৃক্ষ নিধন করছি।
একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীকে এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ নির্লজ্জ মানুষের অপকর্মের বিরুদ্ধে। যাদের কারণে জলবায়ু প্রতিনিয়ত মানুষের প্রতিকূলে চলে যাচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ বিকৃত মস্তিষ্কের প্রযুক্তিওয়ালাদের বিরুদ্ধে, যারা প্রযুক্তিকে মানুষের অকল্যাণে ব্যবহার করছে।
রিপন আল মামুন
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শনিবার, ১৩ মে ২০২৩
প্রযুক্তির দুনিয়ায় চ্যাট জিপিটির আলোচনা এখন হরহামেশাই হচ্ছে। এর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে বুদ্ধিজীবীরা। মানুষের জন্য, ভবিষ্যতের পৃথিবীর জন্য এর কল্যাণকর ও অকল্যাণকর দিক নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ঠিক তেমনি জলবায়ুর পরিবর্তনের বিষয়টিও মানুষকে নতুন করে ভাবাচ্ছে।
পৃথিবীর আবহাওয়া ও জলবায়ু প্রতিনিয়ত মানুষের প্রতিকূলে চলে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে জলবায়ু। এই যে চ্যাট জিপিটি কিংবা জলবায়ু পরিবর্তন যার কথাই বলি না কেন এর মঙ্গলজনক অথবা অমঙ্গলজনক দুটোর দায়ই আমাদের।
প্রথমে যদি চ্যাট জিপিটির কথা বলি- নিঃসন্দেহে এটাও জলবায়ু পরিবর্তনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটার সঙ্গে মানুষের কল্যাণ ও অকল্যাণের বিষয়টা জড়িত। এটি মূলত একটি কম্পিউটার অ্যাপ। এর অকল্যাণের বিষয়টা নিয়েই ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে গবেষকরা দাবি করেছেন যে মানুষের জন্য অমঙ্গলজনকই হবে এই অ্যাপটি। বিশ্বে এটি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা, বিতর্ক, আসছে হুঁশিয়ারি বার্তা।
সারা বিশ্বের সেরা সেরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ মাথা ঘামাচ্ছে, কী ব্যবস্থা নেয়া হবে এই প্রযুক্তি পণ্যের বিষয়ে। প্রযুক্তির দাপটে চাকরি নড়বড়ে হয়ে পড়া পেশাজীবীদের দুশ্চিন্তা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে নতুন এই অ্যাপটি। কারণ এটি কেড়ে নিতে পারে অনেক পেশাজীবীর মুখের খাবার।
তথ্য অনুসন্ধান, ভিডিও চিত্র ধারণ- এসব তো আছেই। কিন্তু তারচেয়েও বড় ব্যাপার, এটি মানুষের মতো কথা বলে, প্রশ্নের জবাব দিতে পারে, উত্তরটি ঠিক মানুষের মতোই লিখে সাজিয়ে দিতে পারে। আপনি যদি একে কোনো একটি বিষয়ের ওপর একটি নিবন্ধ লিখে দিতে বলেন, সে ঝটপট লিখে দেবে, একদন্ডে।
অন্যদিকে, আমরা মানুষরা প্রতিনিয়ত পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। যেভাবে আমরা পরিবেশ দূষণ করছি, গাছপালা বন-জঙ্গল কেটে ফেলছি তাতে আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন অচিরেই পৃথিবীর জলবায়ু পুরোপুরি মানুষের প্রতিকূলে চলে যাবে। গবেষকরা বলছেন প্রতিনিয়ত পৃথিবীর আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে।
বিশ্ব আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৮টি দেশের উপকূলীয় এলাকায় বিরূপ পরিবেশগত প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী ইতোমধ্যেই করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়ায় মারাত্মক ক্ষতির শিকার হতে হবে আমাদের। গ্রিন হাউস এফেক্টের জন্য বন উজাড়কেই প্রধান কারণ বলে গণ্য করা হয়।
একটি দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পরিবেশকে সুন্দর রাখতে দেশের মোট আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা অত্যাবশ্যক। সেখানে আমাদের দেশে বনভূমির পরিমাণ সরকারি হিসাব মতে, শতকরা ৯ ভাগ। দেশে বনভূমির এই অস্বাভাবিক হ্রাসের কারণে বাংলাদেশের জলবায়ু ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
বৃক্ষ পরিবেশের অতিরিক্ত তাপমাত্রা শোষণ করে পরিবেশকে যেমন নির্মল রাখে, তেমনি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গ্যাস কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে প্রাণীর বেঁচে থাকার মূল উপাদান অক্সিজেন নির্গমন করে। তবুও আমরা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে কিংবা উন্নয়নের বাহানায় আমরা প্রতিনিয়ত বৃক্ষ নিধন করছি।
একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীকে এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ নির্লজ্জ মানুষের অপকর্মের বিরুদ্ধে। যাদের কারণে জলবায়ু প্রতিনিয়ত মানুষের প্রতিকূলে চলে যাচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ বিকৃত মস্তিষ্কের প্রযুক্তিওয়ালাদের বিরুদ্ধে, যারা প্রযুক্তিকে মানুষের অকল্যাণে ব্যবহার করছে।
রিপন আল মামুন