জিয়াউদ্দীন আহমেদ
জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠন ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় লাভ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির এই প্রথম প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পেল, সুযোগ পেয়েই শিবির নির্বাচনে সকল ছাত্র সংগঠনকে ধরাশায়ী করে ফেলেছে। মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল। অবশ্য ছাত্রদলকে প্রতিদ্বন্দ্বী বলা ঠিক হয়নি। তারা নিশ্চিত ছিল জিতবে, যেমন আশা করেছিল আওয়ামী লীগ ১৯৯১ সনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। কেন হেরে গেল তার বিচার-বিশ্লেষণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভরে গেছে। ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে, যে শিবিরের রাজনীতি দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ছিল, সেই শিবিরই নির্বাচনে বিপ্লব ঘটিয়ে দিল। মনে হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা বুমেরাং হয়েছে। অলিখিত এই নিষেধাজ্ঞায় জোট বেঁধেছিল ছাত্রলীগ এবং ছাত্রদল। শিবির সংঘাতে যায়নি, তাদের নেতারা কাজ করেছে ছাত্রলীগে, আর কর্মীরা ছিল ছাত্রদলে; যেভাবে পাকিস্তান আমলে নিষিদ্ধ কমিউনিস্টরা কাজ করত ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বা ন্যাপের ছত্রছায়ায়। এখন অনেকে বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে পঁচানোর সব খেলা খেলেছে ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরের নেতারা। কিন্তু এই কর্মে শিবিরের কোন অপরাধ নেই, রাজনৈতিক কৌশলে তাদের চাণক্যনীতি জয়ী হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী এত শীঘ্র জাতীয় সংসদের নির্বাচন চায় না, সম্ভবত নির্বাচনে জয়লাভের ভিত তৈরি এখনো হয়নি। তারা চেয়েছিল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কিন্তু বিএনপি তাতে রাজি হয়নি। নির্বাচন বিলম্বিত করার জামায়াত এবং এনসিপির এই ফাঁদে বিএনপি পা দেয়নি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ইমেজের একচেটিয়া প্রভাব থাকবে না বিধায় এই নির্বাচনে নানা সমীকরণে ভোট হবে, জামায়াতে ইসলামী মনে করে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আগে হলে তারা ভালো করবে। কারণ চাঁদাবাজি আর সন্ত্রাসী কর্মকা-ে বিএনপি ও তার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের জড়িয়ে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিএনপির ইমেজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নির্বাচনে জামায়াতের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। জামায়াত জানে, প্রচার-প্রচারণায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের কৌশলে বিএনপির জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমবে। বিএনপি তাদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত বহু কর্মীকে বিএনপি তাদের দল ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন থেকে বহিস্কার করেছে, কিন্তু তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। গ্রেফতার করার কাজটি সরকারের, বহিস্কৃতদের গ্রেফতার না করায় বিএনপি সরকারকে নিচু স্বরে অভিযোগও করেছে, কিন্তু সরকার নির্লিপ্ত। ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস দমনে সরকারের এই নির্লিপ্ততা বিএনপির জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আগামী সরকার বিএনপির হলে ভয়ের কারণ আছে। ডাকসু নির্বাচনে প্রায় নয় হাজার ভোটের ব্যবধানে সহসভাপতি পদের শিবির প্রার্থী জিতেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও ছাত্রশিবির জিতেছে। দেশের অন্যন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও শিবির ভালো করবে। কারণ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটে ইতোমধ্যে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার খবর চাউর হয়েছে। চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের একচেটিয়া প্রভাব আগে থেকেই ছিল। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের আইনগত কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে জেন-জি’র অনাগত আন্দোলনও তাদের কব্জায় চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জামায়াতে ইসলামী আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না জিতলেও আগামী সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার শক্তি অর্জন করেছে। শুধু জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের শক্তি অর্জনই ভবিষ্যত আন্দলনের একমাত্র নিয়ামক হবে না, প্রেসার সৃষ্টির নিয়ামক আরও আছে। ছাত্রশিবির বহির্ভূত জেন-জি’রা এখন অলিগলিতে। এই অবস্থা আগামী বাংলাদেশের জন্য হয়তো সুখকর নয়। আগামী দিনে বুক পেতে দেওয়ার জন্য অগণিত যুবক কান পেতে থাকবে, হুইসেল বাজলেই রাস্তায় নেমে যাবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে স্কুলের কম বয়সী ছাত্রছাত্রীরাও অংশগ্রহণ করেছে, অংশগ্রহণ করেছে রাস্তার ছিন্নমূল শিশু। বঞ্চিতরা সব সময় স্টাবলিস্টমেন্টের বিপক্ষে থাকে বলেই ছিন্নমূল শিশুরা ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। ঔপন্যাসিক মানিক বন্দোপাধ্যায়কে কোলকাতার একটি মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দেখে তার বন্ধু দূর থেকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘মানিক, কাদের মিছিল’? মানিক বন্দোপাধ্যায় উত্তরে বললেন, ‘তা তো জানি না’। মিছিল, মিটিং, আন্দোলন, অভ্যুত্থানে কর্মহীনদের অংশগ্রহণের সহজাত প্রেরণা থাকে, উত্তেজনা ও অস্থিরতার প্রেষণা যুবকদের তাড়িত করে। জুলাই অভ্যুত্থানে বস্তির অশিক্ষিত ছেলেদের গলায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মতো নকল আইডি কার্ড ঝুলিয়ে রাখতে দেখেছি। এরা আগুন নেভাতে যেমন ঝাপিয়ে পড়ে, আগুন লাগাতেও সাতপাঁচ ভাবে না। এই অবস্থায় বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠিত হবে, কিন্তু সরকারের মানসগঠন ভিন্নতর না হয়ে গতানুগতিক হলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন সরকারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি আবার মারমুখী হবে? অবশ্যই হবে, হতে বাধ্য হবে। কারণ শক্তি প্রয়োগ না হলে এই দেশের লোক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে না। যে দেশে ফুটপাতের ডাস্টবিনকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়, সেদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সচিবালয়ে ছাত্রদের লাঠিপেটা করতে হয়েছে। অন্যদিকে সৃষ্ট ‘মব’-এ আবেগ আর বুদ্ধির সমন্বয় থাকে না বিধায় মবকে ভয় করার সংস্কৃতি শুরু হয়ে গেছে। মব সরকারের বিরুদ্ধেও হয় এবং ভবিষ্যতে হবে। জনসমর্থন খোয়ানোর ভয়ে অন্তর্বর্তী সরকারও সংস্কার করার সাহস পাচ্ছে না। নারী অধিকার সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পড়ে প্রধান উপদেষ্টা আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন, কিন্তু ‘তৌহিদী’ জনতার হুমকির ভাষা শুনে তিনি একেবারে চুপ হয়ে গেছেন। পরিবেশ উপদেষ্টা পলিথিন ব্যাগের উৎপাদন বন্ধ করার সাহস করলেন না। করিডোর দিয়ে রোহিঙ্গাদের পার করার চেষ্টাও ব্যর্থ হলো। টার্মিনাল পরিচালনার ভার বিদেশিদের হাতে তুলে দিয়ে বন্দর সচল করার স্বপ্নও উবে গেল। এই ‘না পারার দীর্ঘশ্বাস’ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসও হতাশ হচ্ছেন।
বিরোধী জনতাকে কেন এত ভয় ? কেন এত গুরুত্ব দিতে হয় ? দিতে হয়, কারণ সরকার গঠিত হয় মাত্র ৩০ বা ৩৫ শতাংশ ভোটের বদৌলতে, অপরদিকে সরকার বিরোধী ভোটের অংশ ৭০ বা ৬৫ শতাংশ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ১৯৯১ সনে বিএনপি ৩০. ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে সংসদে আসন পেয়েছিল ১৪০, আর আওয়ামী লীগ ৩০.০১ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় মাত্র ৮৮টি। ১৯৯৬ সনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পায় ৩৭.৪০ শতাংশ ভোট আর বিএনপি পায় ৩৩.৬০ শতাংশ। ২০০১ সনে বিএনপির ৪০.৯৭ শতাংশ ভোটে আসন পায় ১৯৩টি, আর আওয়ামী লীগ ৪০.১৩ শতাংশ ভোটে আসন পায় মাত্র ৬৬টি। ২০০৮ সনের নির্বাচনে ৪৯.০০ শতাংশ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ আসন পায় ২৩০টি এবং বিএনপি ৩৩. ২০ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় মাত্র ৩০টি। লক্ষ্যণীয় যে, ভোট এবং আসনের মধ্যে কোন সঙ্গতি নেই এবং সরকার গঠনকারী কোন দলই কোন নির্বাচনে ৫০ শতাংশ ভোট পায়নি।
সংবিধান অনুযায়ী জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলে সেই ক্ষমতার অংশীজন মাত্র ৩০ শতাংশ, বাকি ৭০ শতাংশ ভোটারের কোন প্রতিনিধি সংসদ বা সরকারে থাকে না। ৭০ শতাংশ ভোটারের প্রতিনিধি না থাকলে সেই সংসদ বা সরকার জনপ্রতিনিধিত্বমূলক হয় কী করে? ৩০ শতাংশ ভোটারের সরকার তাই সর্বদা চাপে থাকে, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য দমন-পীড়নের আশ্রয় নেয়। এই সমস্যার মোকাবিলায় কোন কোন দেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে বা পিআর পদ্ধতিতে আসন বন্টনের ব্যবস্থা রয়েছে। এই নীতিতে হিসাব করলে ১৯৯১ সনে বিএনপির ৩০.৮১ শতাংশ ভোটের বিপরীতে আসন পাওয়ার কথা ৯২টি, কিন্তু পেয়েছে ১৪০টি, আওয়ামী লীগের ৩০.০১ শতাংশ ভোটের বিপরীতে আসন পাওয়া কথা ৯০টি, কিন্তু পেয়েছে ৮৮টি। জামায়াতের ১২.১৩ শতাংশ এবং জাতীয় পার্টির ১১. ৯২ শতাংশ ভোটের বিপরীতে আসন পাওয়ার কথা ৩৬টি করে, কিন্তু জামায়াতে ইসলামী পেয়েছে মাত্র ১৮টি এবং জাতীয় পার্টি পেয়েছে ৩৫টি আসন। এই একই হিসেবে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ ৫টি, জাকের পার্টি ৪টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ৪টি, জাসদ (রব), ইসলামী ঐক্যজোট, ন্যাশানাল আওয়ামী পার্টি (মুজাফফর) ২টি করে এবং জাসদ (ইনু), গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টিসহ আরও কয়েটি পার্টি ১টি করে আসন পাওয়ার কথা ছিল।
পিআর পদ্ধতিতে সমস্যা আছে, এই পদ্ধতিতে আসন বন্টন হলে কোন একক দলের পক্ষে সরকার গঠন করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু কঠিন হলেও এটা স্বীকার করতে হবে যে, পিআর পদ্ধতিই হচ্ছে সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বমূলক পদ্ধতি। একমাত্র এই পদ্ধতিতেই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রায় সবগুলো দলের সংসদে প্রতিনিধিত্ব থাকার সম্ভাবনা থাকে। আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না থাকায় বর্তমান অবস্থান বিবেচনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে। তবে জেতার সম্ভাবনা বিএনপি’র বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচনে সহসভাপতির পদে ছাত্রদলের প্রার্থীর সঙ্গে ছাত্রশিবির প্রার্থীর ভোটের পার্থক্য নয় হাজার হলেও ছাত্রশিবিরের প্যানেল ভোট হচ্ছে মাত্র চার হাজার, বাকি দশ হাজার স্যুয়িং ভোট। নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগ না থাকায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও স্যুয়িং ভোটের গুরুত্ব অপরিসীম। এই স্যুয়িং ভোট কোন দলের বাক্সে যাবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি। জামায়াতও তা জানে এবং জানে বলেই তারা এখনো পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের পক্ষে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন না হলে নির্বাচনে জামায়াতের অংশগ্রহণ না থাকার সম্ভাবনার কথাও জামায়াতের নেতারা আগে বলেছেন। অন্যদিকে বিজয় নিশ্চিত জেনেই বিএনপি পিআর পদ্ধতির ঘোর বিরোধী।
বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবিরে অবস্থান দেখে জামায়াতে ইসলামীর আস্থা বেড়েছে, বিএনপির মধ্যে কিছুটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনের পর বিএনপি এবং জামায়াতের জোটবদ্ধ নির্বাচন করার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। ডাকসু, জাকসু নির্বাচনের কারণে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোটারদের কদর কিছুটা বেড়ে গেল কিনা বোঝা যাচ্ছে না। স্যুয়িং ভোটার ক্যাপচার করার চেষ্টা নির্বাচনমুখী দলের থাকা স্বাভাবিক। তবে জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের নির্বাচন বর্জনের অসহায়ত্ব জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হলে জাতির জন্য তা হবে মানহানিকর লজ্জা। তাই পিআর পক্ষে থাকাই ভালো, সবার মুখ রক্ষা হবে।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
[লেখক: সাবেক নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক]
জিয়াউদ্দীন আহমেদ
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠন ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় লাভ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির এই প্রথম প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পেল, সুযোগ পেয়েই শিবির নির্বাচনে সকল ছাত্র সংগঠনকে ধরাশায়ী করে ফেলেছে। মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল। অবশ্য ছাত্রদলকে প্রতিদ্বন্দ্বী বলা ঠিক হয়নি। তারা নিশ্চিত ছিল জিতবে, যেমন আশা করেছিল আওয়ামী লীগ ১৯৯১ সনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। কেন হেরে গেল তার বিচার-বিশ্লেষণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভরে গেছে। ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে, যে শিবিরের রাজনীতি দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ছিল, সেই শিবিরই নির্বাচনে বিপ্লব ঘটিয়ে দিল। মনে হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা বুমেরাং হয়েছে। অলিখিত এই নিষেধাজ্ঞায় জোট বেঁধেছিল ছাত্রলীগ এবং ছাত্রদল। শিবির সংঘাতে যায়নি, তাদের নেতারা কাজ করেছে ছাত্রলীগে, আর কর্মীরা ছিল ছাত্রদলে; যেভাবে পাকিস্তান আমলে নিষিদ্ধ কমিউনিস্টরা কাজ করত ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বা ন্যাপের ছত্রছায়ায়। এখন অনেকে বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে পঁচানোর সব খেলা খেলেছে ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরের নেতারা। কিন্তু এই কর্মে শিবিরের কোন অপরাধ নেই, রাজনৈতিক কৌশলে তাদের চাণক্যনীতি জয়ী হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী এত শীঘ্র জাতীয় সংসদের নির্বাচন চায় না, সম্ভবত নির্বাচনে জয়লাভের ভিত তৈরি এখনো হয়নি। তারা চেয়েছিল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কিন্তু বিএনপি তাতে রাজি হয়নি। নির্বাচন বিলম্বিত করার জামায়াত এবং এনসিপির এই ফাঁদে বিএনপি পা দেয়নি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ইমেজের একচেটিয়া প্রভাব থাকবে না বিধায় এই নির্বাচনে নানা সমীকরণে ভোট হবে, জামায়াতে ইসলামী মনে করে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আগে হলে তারা ভালো করবে। কারণ চাঁদাবাজি আর সন্ত্রাসী কর্মকা-ে বিএনপি ও তার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের জড়িয়ে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিএনপির ইমেজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নির্বাচনে জামায়াতের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। জামায়াত জানে, প্রচার-প্রচারণায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের কৌশলে বিএনপির জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমবে। বিএনপি তাদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত বহু কর্মীকে বিএনপি তাদের দল ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন থেকে বহিস্কার করেছে, কিন্তু তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। গ্রেফতার করার কাজটি সরকারের, বহিস্কৃতদের গ্রেফতার না করায় বিএনপি সরকারকে নিচু স্বরে অভিযোগও করেছে, কিন্তু সরকার নির্লিপ্ত। ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস দমনে সরকারের এই নির্লিপ্ততা বিএনপির জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আগামী সরকার বিএনপির হলে ভয়ের কারণ আছে। ডাকসু নির্বাচনে প্রায় নয় হাজার ভোটের ব্যবধানে সহসভাপতি পদের শিবির প্রার্থী জিতেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও ছাত্রশিবির জিতেছে। দেশের অন্যন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও শিবির ভালো করবে। কারণ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটে ইতোমধ্যে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার খবর চাউর হয়েছে। চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের একচেটিয়া প্রভাব আগে থেকেই ছিল। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের আইনগত কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে জেন-জি’র অনাগত আন্দোলনও তাদের কব্জায় চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জামায়াতে ইসলামী আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না জিতলেও আগামী সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার শক্তি অর্জন করেছে। শুধু জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের শক্তি অর্জনই ভবিষ্যত আন্দলনের একমাত্র নিয়ামক হবে না, প্রেসার সৃষ্টির নিয়ামক আরও আছে। ছাত্রশিবির বহির্ভূত জেন-জি’রা এখন অলিগলিতে। এই অবস্থা আগামী বাংলাদেশের জন্য হয়তো সুখকর নয়। আগামী দিনে বুক পেতে দেওয়ার জন্য অগণিত যুবক কান পেতে থাকবে, হুইসেল বাজলেই রাস্তায় নেমে যাবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে স্কুলের কম বয়সী ছাত্রছাত্রীরাও অংশগ্রহণ করেছে, অংশগ্রহণ করেছে রাস্তার ছিন্নমূল শিশু। বঞ্চিতরা সব সময় স্টাবলিস্টমেন্টের বিপক্ষে থাকে বলেই ছিন্নমূল শিশুরা ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। ঔপন্যাসিক মানিক বন্দোপাধ্যায়কে কোলকাতার একটি মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দেখে তার বন্ধু দূর থেকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘মানিক, কাদের মিছিল’? মানিক বন্দোপাধ্যায় উত্তরে বললেন, ‘তা তো জানি না’। মিছিল, মিটিং, আন্দোলন, অভ্যুত্থানে কর্মহীনদের অংশগ্রহণের সহজাত প্রেরণা থাকে, উত্তেজনা ও অস্থিরতার প্রেষণা যুবকদের তাড়িত করে। জুলাই অভ্যুত্থানে বস্তির অশিক্ষিত ছেলেদের গলায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মতো নকল আইডি কার্ড ঝুলিয়ে রাখতে দেখেছি। এরা আগুন নেভাতে যেমন ঝাপিয়ে পড়ে, আগুন লাগাতেও সাতপাঁচ ভাবে না। এই অবস্থায় বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠিত হবে, কিন্তু সরকারের মানসগঠন ভিন্নতর না হয়ে গতানুগতিক হলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন সরকারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি আবার মারমুখী হবে? অবশ্যই হবে, হতে বাধ্য হবে। কারণ শক্তি প্রয়োগ না হলে এই দেশের লোক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে না। যে দেশে ফুটপাতের ডাস্টবিনকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়, সেদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সচিবালয়ে ছাত্রদের লাঠিপেটা করতে হয়েছে। অন্যদিকে সৃষ্ট ‘মব’-এ আবেগ আর বুদ্ধির সমন্বয় থাকে না বিধায় মবকে ভয় করার সংস্কৃতি শুরু হয়ে গেছে। মব সরকারের বিরুদ্ধেও হয় এবং ভবিষ্যতে হবে। জনসমর্থন খোয়ানোর ভয়ে অন্তর্বর্তী সরকারও সংস্কার করার সাহস পাচ্ছে না। নারী অধিকার সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পড়ে প্রধান উপদেষ্টা আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন, কিন্তু ‘তৌহিদী’ জনতার হুমকির ভাষা শুনে তিনি একেবারে চুপ হয়ে গেছেন। পরিবেশ উপদেষ্টা পলিথিন ব্যাগের উৎপাদন বন্ধ করার সাহস করলেন না। করিডোর দিয়ে রোহিঙ্গাদের পার করার চেষ্টাও ব্যর্থ হলো। টার্মিনাল পরিচালনার ভার বিদেশিদের হাতে তুলে দিয়ে বন্দর সচল করার স্বপ্নও উবে গেল। এই ‘না পারার দীর্ঘশ্বাস’ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসও হতাশ হচ্ছেন।
বিরোধী জনতাকে কেন এত ভয় ? কেন এত গুরুত্ব দিতে হয় ? দিতে হয়, কারণ সরকার গঠিত হয় মাত্র ৩০ বা ৩৫ শতাংশ ভোটের বদৌলতে, অপরদিকে সরকার বিরোধী ভোটের অংশ ৭০ বা ৬৫ শতাংশ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ১৯৯১ সনে বিএনপি ৩০. ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে সংসদে আসন পেয়েছিল ১৪০, আর আওয়ামী লীগ ৩০.০১ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় মাত্র ৮৮টি। ১৯৯৬ সনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পায় ৩৭.৪০ শতাংশ ভোট আর বিএনপি পায় ৩৩.৬০ শতাংশ। ২০০১ সনে বিএনপির ৪০.৯৭ শতাংশ ভোটে আসন পায় ১৯৩টি, আর আওয়ামী লীগ ৪০.১৩ শতাংশ ভোটে আসন পায় মাত্র ৬৬টি। ২০০৮ সনের নির্বাচনে ৪৯.০০ শতাংশ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ আসন পায় ২৩০টি এবং বিএনপি ৩৩. ২০ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় মাত্র ৩০টি। লক্ষ্যণীয় যে, ভোট এবং আসনের মধ্যে কোন সঙ্গতি নেই এবং সরকার গঠনকারী কোন দলই কোন নির্বাচনে ৫০ শতাংশ ভোট পায়নি।
সংবিধান অনুযায়ী জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলে সেই ক্ষমতার অংশীজন মাত্র ৩০ শতাংশ, বাকি ৭০ শতাংশ ভোটারের কোন প্রতিনিধি সংসদ বা সরকারে থাকে না। ৭০ শতাংশ ভোটারের প্রতিনিধি না থাকলে সেই সংসদ বা সরকার জনপ্রতিনিধিত্বমূলক হয় কী করে? ৩০ শতাংশ ভোটারের সরকার তাই সর্বদা চাপে থাকে, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য দমন-পীড়নের আশ্রয় নেয়। এই সমস্যার মোকাবিলায় কোন কোন দেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে বা পিআর পদ্ধতিতে আসন বন্টনের ব্যবস্থা রয়েছে। এই নীতিতে হিসাব করলে ১৯৯১ সনে বিএনপির ৩০.৮১ শতাংশ ভোটের বিপরীতে আসন পাওয়ার কথা ৯২টি, কিন্তু পেয়েছে ১৪০টি, আওয়ামী লীগের ৩০.০১ শতাংশ ভোটের বিপরীতে আসন পাওয়া কথা ৯০টি, কিন্তু পেয়েছে ৮৮টি। জামায়াতের ১২.১৩ শতাংশ এবং জাতীয় পার্টির ১১. ৯২ শতাংশ ভোটের বিপরীতে আসন পাওয়ার কথা ৩৬টি করে, কিন্তু জামায়াতে ইসলামী পেয়েছে মাত্র ১৮টি এবং জাতীয় পার্টি পেয়েছে ৩৫টি আসন। এই একই হিসেবে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ ৫টি, জাকের পার্টি ৪টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ৪টি, জাসদ (রব), ইসলামী ঐক্যজোট, ন্যাশানাল আওয়ামী পার্টি (মুজাফফর) ২টি করে এবং জাসদ (ইনু), গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টিসহ আরও কয়েটি পার্টি ১টি করে আসন পাওয়ার কথা ছিল।
পিআর পদ্ধতিতে সমস্যা আছে, এই পদ্ধতিতে আসন বন্টন হলে কোন একক দলের পক্ষে সরকার গঠন করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু কঠিন হলেও এটা স্বীকার করতে হবে যে, পিআর পদ্ধতিই হচ্ছে সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বমূলক পদ্ধতি। একমাত্র এই পদ্ধতিতেই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রায় সবগুলো দলের সংসদে প্রতিনিধিত্ব থাকার সম্ভাবনা থাকে। আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না থাকায় বর্তমান অবস্থান বিবেচনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে। তবে জেতার সম্ভাবনা বিএনপি’র বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচনে সহসভাপতির পদে ছাত্রদলের প্রার্থীর সঙ্গে ছাত্রশিবির প্রার্থীর ভোটের পার্থক্য নয় হাজার হলেও ছাত্রশিবিরের প্যানেল ভোট হচ্ছে মাত্র চার হাজার, বাকি দশ হাজার স্যুয়িং ভোট। নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগ না থাকায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও স্যুয়িং ভোটের গুরুত্ব অপরিসীম। এই স্যুয়িং ভোট কোন দলের বাক্সে যাবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি। জামায়াতও তা জানে এবং জানে বলেই তারা এখনো পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের পক্ষে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন না হলে নির্বাচনে জামায়াতের অংশগ্রহণ না থাকার সম্ভাবনার কথাও জামায়াতের নেতারা আগে বলেছেন। অন্যদিকে বিজয় নিশ্চিত জেনেই বিএনপি পিআর পদ্ধতির ঘোর বিরোধী।
বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবিরে অবস্থান দেখে জামায়াতে ইসলামীর আস্থা বেড়েছে, বিএনপির মধ্যে কিছুটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনের পর বিএনপি এবং জামায়াতের জোটবদ্ধ নির্বাচন করার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। ডাকসু, জাকসু নির্বাচনের কারণে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোটারদের কদর কিছুটা বেড়ে গেল কিনা বোঝা যাচ্ছে না। স্যুয়িং ভোটার ক্যাপচার করার চেষ্টা নির্বাচনমুখী দলের থাকা স্বাভাবিক। তবে জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের নির্বাচন বর্জনের অসহায়ত্ব জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হলে জাতির জন্য তা হবে মানহানিকর লজ্জা। তাই পিআর পক্ষে থাকাই ভালো, সবার মুখ রক্ষা হবে।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
[লেখক: সাবেক নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক]