alt

opinion » post-editorial

দ. কোরিয়ার শ্রমবাজার : কোটা পূরণে ব্যর্থ বাংলাদেশ

অসীম বিকাশ বড়ুয়া

: শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়া, বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম বৃহৎ শক্তি, অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। দেশটির উন্নত কর্মপরিবেশ, উচ্চ বেতন এবং সামাজিক সুযোগ-সুবিধা অনেক দেশের কর্মীদের জন্য স্বপ্নের মতো। ‘এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম’ (ইপিএস)-এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশের কর্মীদের নিয়োগ দিয়ে থাকে। ২০০৮ সাল থেকে এই প্রক্রিয়া চালু থাকলেও, বাংলাদেশ এই সুযোগকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে। কোটা বরাদ্দ পাওয়ার পরও কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে যে বিশাল ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, তা দেশের জনশক্তি রপ্তানি খাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

েেকাটা পূরণে ব্যর্থতা ও তার কারণ:

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী কোটা বরাদ্দ দিয়েছে। যেমন, ২০২৪ সালে ১১ হাজার ৫০০ জনের কোটা থাকলেও, মাত্র কয়েক হাজার কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়েছে। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভাষাগত দক্ষতা এবং কারিগরি প্রশিক্ষণের অভাব।

ভাষাগত দুর্বলতা: দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমবাজারে প্রবেশের জন্য কোরীয় ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক। নিয়োগকর্তারা এমন কর্মী পছন্দ করেন যারা স্থানীয় ভাষায় যোগাযোগ করতে পারেন, যা কাজের দক্ষতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বিভিন্ন গবেষণা ও প্রতিবেদনে দেখা যায়, নেপাল, ভিয়েতনাম এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোর কর্মীদের ভাষাগত দক্ষতা তুলনামূলকভাবে বেশি, যার কারণে নিয়োগকর্তাদের পছন্দের তালিকায় তারা এগিয়ে থাকে। বাংলাদেশের কর্মীদের ভাষাগত দুর্বলতা এই ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার অভাব: ভাষা পরীক্ষার পর একটি দক্ষতা পরীক্ষা হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা জরুরি। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশি কর্মীদের সেই মানের প্রশিক্ষণ থাকে না, যা তাদের কোরিয়ান কোম্পানিগুলোর চাহিদা পূরণে ব্যর্থ করে তোলে। বোয়েসেলের তথ্য অনুযায়ী, ভাষা ও দক্ষতা পরীক্ষায় পাস করার পরও পুরো প্রক্রিয়াটি কোরিয়ান কর্তৃপক্ষের হাতে থাকে। কোম্পানিগুলো কর্মীর প্রোফাইল দেখে কর্মী নির্বাচন করে। ফলে, শুধুমাত্র ভাষা পরীক্ষায় পাস করা যথেষ্ট নয়; নিয়োগকর্তার চাহিদা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কারিগরি দক্ষতা থাকাও আবশ্যক।

প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা: কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর কর্মী নির্বাচনের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। এর ফলে অনেক প্রার্থীর ভিসার আবেদন প্রক্রিয়াকরণে দেরি হয়। দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করার কারণে অনেক যোগ্য প্রার্থী হতাশ হয়ে অন্য বিকল্পের দিকে ঝুঁকে পড়েন।

অন্যান্য দেশের সাফল্যের কারণ:

দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমবাজারে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, এবং পাকিস্তান তাদের কোটা প্রায় পুরোপুরি পূরণ করতে সক্ষম হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো তাদের সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কার্যকরী পদক্ষেপ এবং কর্মীদের প্রস্তুতি। তারা কর্মীদের ভাষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণে অগ্রাধিকার দেয় এবং নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও দ্রুত করার জন্য কোরিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে। এই দেশগুলো তাদের কর্মীদের ভাষা এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ জোর দেয়, যা তাদের শ্রমবাজারে আকর্ষণীয় করে তোলে।

বাংলাদেশের সামনে করণীয়:

দক্ষিণ কোরিয়ার মতো একটি সম্ভাবনাময় শ্রমবাজারের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হলে বাংলাদেশকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে:

১. ভাষাগত ও কারিগরি প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ: সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দেশব্যাপী উন্নত মানের কোরীয় ভাষা শিক্ষা এবং কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা জরুরি। এতে শুধু ইপিএস পরীক্ষাই নয়, সরাসরি নিয়োগকর্তার চাহিদা পূরণের জন্যও কর্মীরা প্রস্তুত হতে পারবেন।

২. প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও গতিশীলতা বৃদ্ধি: বোয়েসেল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাগুলোকে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও দ্রুত করতে হবে। কর্মীদের ভিসা ও অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

৩. বাজার গবেষণা ও চাহিদা অনুযায়ী কর্মী তৈরি: দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমবাজারের চাহিদা সম্পর্কে নিয়মিত গবেষণা করে সেই অনুযায়ী নির্দিষ্ট পেশায় কর্মী তৈরি করতে হবে। যেমন, যদি নির্মাণ বা কৃষি খাতে বেশি চাহিদা থাকে, তবে সেই খাতের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি করা যেতে পারে। ৪. কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার: কোটা বৃদ্ধি এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও সুগম করার জন্য কোরিয়ান সরকারের সাথে কূটনৈতিক আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে।

দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের জন্য উচ্চ রেমিট্যান্স উপার্জনের একটি বড় সুযোগ। এই সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য শুধুমাত্র কোটা বরাদ্দের অপেক্ষা না করে, আমাদের নিজেদের কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক দুর্বলতা দূর করার ওপর জোর দেওয়া উচিত। এতে করে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি খাত শুধু দক্ষিণ কোরিয়াতেই নয়, বিশ্বজুড়ে আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাতে পারবে।

[লেখক: সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান, কোরিয়া-বাংলা প্রেসক্লাব]

দায়িত্বশীল আচরণে গড়ে উঠুক দেশের পর্যটন খাত

এশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নতুন সমীকরণ

বাংলাদেশের গিগ অর্থনীতি: উন্নয়নের হাতিয়ার নাকি অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ?

জলাতঙ্ক: প্রতিরোধযোগ্য তবু প্রাণঘাতী

বেড়ে চলা বৈষম্যের দেওয়াল

নৃশংসতার ভিডিও, নীরব দর্শক আর হারিয়ে যাওয়া মানবতা

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ও জনস্বাস্থ্যের সংকট

জেন জি’র অস্থির অভিযাত্রা

রম্যগদ্য: রবার্ট ব্রুস ও মাকড়শা

জাতিসংঘের নিউইয়র্ক সম্মেলন

বিশ্ব ফুসফুস দিবস: সুস্থ শ্বাসের অঙ্গীকার

সংখ্যার আড়ালে অর্থনীতির অদেখা বাস্তবতা

সঙ্গীত চর্চা ও ধর্ম শিক্ষা: তর্ক-বিতর্কের জায়গাটি কোথায়?

অপুষ্টি ও মাটির অবক্ষয় রোধে সবুজ সার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পোষ্য কোটা’ পুনর্বহাল বিতর্ক

আইসিইউ সেবার সংকট

পরশ্রীকাতরতা: সামাজিক ব্যাধির অদৃশ্য শেকল

চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড: ট্রাম্প কি সহিংসতাকেই রাজনীতির হাতিয়ার বানাচ্ছেন?

যুব বেকারত্ব: অর্থনৈতিক সংকট থেকে সামাজিক বিপর্যয়

চাই স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের পরিবেশ

সার সংকট, ভর্তুকি ও সিন্ডিকেট

ভারতের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বনাম আমেরিকার শুল্ক কূটনীতি

সংবিধান কাটাছেঁড়ার সুযোগ আছে কি?

সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব

চা-জনগোষ্ঠীর দণ্ডপূজা ও উপেক্ষিত অধিকার

মেরিটোক্রেসি: সমাজ ও রাজনীতির প্রাসঙ্গিকতা

রম্যগদ্য: হাতের মুঠোয় বিশ্ব

শারদীয় পূজার দিনলিপি

ঋণের জন্য আত্মহত্যা, ঋণ নিয়েই চল্লিশা

জাকসু নির্বাচন ও হট্টগোল: আমাদের জন্য শিক্ষণীয় কী?

নরসুন্দর পেশার গুরুত্ব ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন

বিভাগভিত্তিক এমপিআর নির্বাচন পদ্ধতি

প্ল্যাটফর্ম সমাজে বাংলাদেশ: জ্ঞানের ভবিষ্যৎ কার হাতে?

আনন্দবেদনার হাসপাতাল: সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ছবি

ভিন্ন ধরনের নির্বাচন, ভিন্ন ধরনের ফল

বেসরকারি খাতে সিআইবি’র যাত্রা: ঋণ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত

tab

opinion » post-editorial

দ. কোরিয়ার শ্রমবাজার : কোটা পূরণে ব্যর্থ বাংলাদেশ

অসীম বিকাশ বড়ুয়া

শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়া, বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম বৃহৎ শক্তি, অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। দেশটির উন্নত কর্মপরিবেশ, উচ্চ বেতন এবং সামাজিক সুযোগ-সুবিধা অনেক দেশের কর্মীদের জন্য স্বপ্নের মতো। ‘এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম’ (ইপিএস)-এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশের কর্মীদের নিয়োগ দিয়ে থাকে। ২০০৮ সাল থেকে এই প্রক্রিয়া চালু থাকলেও, বাংলাদেশ এই সুযোগকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে। কোটা বরাদ্দ পাওয়ার পরও কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে যে বিশাল ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, তা দেশের জনশক্তি রপ্তানি খাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

েেকাটা পূরণে ব্যর্থতা ও তার কারণ:

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী কোটা বরাদ্দ দিয়েছে। যেমন, ২০২৪ সালে ১১ হাজার ৫০০ জনের কোটা থাকলেও, মাত্র কয়েক হাজার কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়েছে। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভাষাগত দক্ষতা এবং কারিগরি প্রশিক্ষণের অভাব।

ভাষাগত দুর্বলতা: দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমবাজারে প্রবেশের জন্য কোরীয় ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক। নিয়োগকর্তারা এমন কর্মী পছন্দ করেন যারা স্থানীয় ভাষায় যোগাযোগ করতে পারেন, যা কাজের দক্ষতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বিভিন্ন গবেষণা ও প্রতিবেদনে দেখা যায়, নেপাল, ভিয়েতনাম এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোর কর্মীদের ভাষাগত দক্ষতা তুলনামূলকভাবে বেশি, যার কারণে নিয়োগকর্তাদের পছন্দের তালিকায় তারা এগিয়ে থাকে। বাংলাদেশের কর্মীদের ভাষাগত দুর্বলতা এই ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার অভাব: ভাষা পরীক্ষার পর একটি দক্ষতা পরীক্ষা হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা জরুরি। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশি কর্মীদের সেই মানের প্রশিক্ষণ থাকে না, যা তাদের কোরিয়ান কোম্পানিগুলোর চাহিদা পূরণে ব্যর্থ করে তোলে। বোয়েসেলের তথ্য অনুযায়ী, ভাষা ও দক্ষতা পরীক্ষায় পাস করার পরও পুরো প্রক্রিয়াটি কোরিয়ান কর্তৃপক্ষের হাতে থাকে। কোম্পানিগুলো কর্মীর প্রোফাইল দেখে কর্মী নির্বাচন করে। ফলে, শুধুমাত্র ভাষা পরীক্ষায় পাস করা যথেষ্ট নয়; নিয়োগকর্তার চাহিদা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কারিগরি দক্ষতা থাকাও আবশ্যক।

প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা: কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর কর্মী নির্বাচনের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। এর ফলে অনেক প্রার্থীর ভিসার আবেদন প্রক্রিয়াকরণে দেরি হয়। দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করার কারণে অনেক যোগ্য প্রার্থী হতাশ হয়ে অন্য বিকল্পের দিকে ঝুঁকে পড়েন।

অন্যান্য দেশের সাফল্যের কারণ:

দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমবাজারে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, এবং পাকিস্তান তাদের কোটা প্রায় পুরোপুরি পূরণ করতে সক্ষম হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো তাদের সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কার্যকরী পদক্ষেপ এবং কর্মীদের প্রস্তুতি। তারা কর্মীদের ভাষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণে অগ্রাধিকার দেয় এবং নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও দ্রুত করার জন্য কোরিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে। এই দেশগুলো তাদের কর্মীদের ভাষা এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ জোর দেয়, যা তাদের শ্রমবাজারে আকর্ষণীয় করে তোলে।

বাংলাদেশের সামনে করণীয়:

দক্ষিণ কোরিয়ার মতো একটি সম্ভাবনাময় শ্রমবাজারের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হলে বাংলাদেশকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে:

১. ভাষাগত ও কারিগরি প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ: সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দেশব্যাপী উন্নত মানের কোরীয় ভাষা শিক্ষা এবং কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা জরুরি। এতে শুধু ইপিএস পরীক্ষাই নয়, সরাসরি নিয়োগকর্তার চাহিদা পূরণের জন্যও কর্মীরা প্রস্তুত হতে পারবেন।

২. প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও গতিশীলতা বৃদ্ধি: বোয়েসেল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাগুলোকে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও দ্রুত করতে হবে। কর্মীদের ভিসা ও অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

৩. বাজার গবেষণা ও চাহিদা অনুযায়ী কর্মী তৈরি: দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমবাজারের চাহিদা সম্পর্কে নিয়মিত গবেষণা করে সেই অনুযায়ী নির্দিষ্ট পেশায় কর্মী তৈরি করতে হবে। যেমন, যদি নির্মাণ বা কৃষি খাতে বেশি চাহিদা থাকে, তবে সেই খাতের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি করা যেতে পারে। ৪. কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার: কোটা বৃদ্ধি এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও সুগম করার জন্য কোরিয়ান সরকারের সাথে কূটনৈতিক আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে।

দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের জন্য উচ্চ রেমিট্যান্স উপার্জনের একটি বড় সুযোগ। এই সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য শুধুমাত্র কোটা বরাদ্দের অপেক্ষা না করে, আমাদের নিজেদের কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক দুর্বলতা দূর করার ওপর জোর দেওয়া উচিত। এতে করে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি খাত শুধু দক্ষিণ কোরিয়াতেই নয়, বিশ্বজুড়ে আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাতে পারবে।

[লেখক: সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান, কোরিয়া-বাংলা প্রেসক্লাব]

back to top