alt

opinion » post-editorial

জাতিসংঘের নিউইয়র্ক সম্মেলন

ফকর উদ্দিন মানিক

: বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সেপ্টেম্বর মানেই নিউইয়র্কে কূটনীতির এক বিশাল নাট্যদলের ঝড়। লাল কার্পেট, ঝলমলে আলো, ক্যামেরার ফ্ল্যাশÑসবকিছু প্রস্তুত রাষ্ট্রপ্রধানদের শোভা দেখানোর জন্য। জাতিসংঘ সদর দফতর তখন পরিণত হয় ভাষণ, প্রতিশ্রুতি এবং কূটনীতির এক বড় মঞ্চে। কিন্তু এই ঝলকানি যতই দৃষ্টিনন্দন হোক, অতীতের ভুলের ছায়া সবসময় মঞ্চের কোণে দেখা যায়।

গত কয়েক দশক ধরে আমরা দেখেছিÑকত বক্তৃতা হয়েছে, কত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাস্তবের মাঠে ফলাফল প্রায়শই নীরব। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক তহবিলের প্রতিশ্রুতি এসেছে, কিন্তু তার অধিকাংশই আটকা পড়েছে জটিল শর্ত আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় । জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে হাজারো সম্মেলন হয়েছে, কিন্তু কার্বন নির্গমন ঠেকানোর প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবে পূর্ণ হয়নি। যুদ্ধবিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে শান্তি স্থাপনের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু অস্ত্র বাজারের নতুন চুক্তি আর ক্ষমতার দখলই বাস্তবতা। অতীতের এই ভুল আমাদের শেখায়Ñশব্দের ঝলমলে আবরণে সমস্যার সমাধান হয় না।

বর্তমানের শিক্ষা হলোÑএই নাট্যদলের ভেতরেই আমরা বাস্তবতা বুঝতে পারি। রাষ্ট্রপ্রধানরা একে অপরের দিকে হাসি বিনিময় করছেন, হাত মেলাচ্ছেন, মিডিয়ায় ছবি ছড়াচ্ছেন। কিন্তু আমাদের দৃষ্টি ধরে রাখতে হবেÑকতটা সত্যিই আলোকিত হচ্ছে মানবতার পথ? ভাষণ, প্রতিশ্রুতি এবং করতালি সবই এক ধরনের রূপক। ভাষণ ঝলমলে কাঁচের ঝাঁকুনি, যা আলো প্রতিফলিত করে কিন্তু ধরলে কাঁচের টুকরোয় হাত কেটে যায়। প্রতিশ্রুতি চকচকে চকলেটের আবরণ, মুখে দিলেই গলে যায়। করতালি হয় শব্দের মুদ্রণ, যা বাস্তব সমস্যার সমাধানে অক্ষম।

তবু এই শিক্ষা মানে হতাশা নয়। বরং আমাদের শেখায়Ñভাষণ ও প্রতিশ্রুতি শুধুই সূচনা, বাস্তব কাজের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। আমরা দেখতে পাই, কেবল মিডিয়ার আলো বা আন্তর্জাতিক করতালি দিয়ে সমাধান আসে না। বাস্তব প্রতিক্রিয়া, কার্যকর উদ্যোগ, দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক সমন্বয়Ñএগুলোই চূড়ান্ত শিক্ষা।

ভবিষ্যতের প্রকৃত আশা জন্ম নেয় এই শিক্ষা থেকে। আমরা বুঝতে পারি, শুধুমাত্র বড় মঞ্চের ভাষণ বা আকর্ষণীয় শিরোনাম দিয়ে মানবতার সমস্যা সমাধান হবে না। আশা আসবে যখন রাষ্ট্রগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সত্যিই অগ্রগামী হবে। যখন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে। যখন দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রকল্পগুলো বাস্তবভাবে প্রয়োগ করা হবে। এবং যখন কূটনীতির চমকপ্রদ নাট্যদলের আড়ালে ছোট ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর কণ্ঠস্বর সঠিকভাবে শোনা যাবে।

ইতিহাস আমাদের দেখিয়েছে, বড় ভাষণ আর প্রতিশ্রুতির ফোয়ারা প্রায়শই ব্যর্থ হয়, যদি বাস্তব উদ্যোগ না থাকে। কিন্তু বর্তমান আমাদের শিক্ষা দেয়Ñসমস্যার গভীরতা বুঝে, সঠিক কৌশল নিয়ে এগোলে আমরা পরিবর্তন আনতে পারি। এবং ভবিষ্যত আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, আসল আশা আসে কার্যকর উদ্যোগ, স্বচ্ছ নেতৃত্ব ও আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের মাধ্যমে।

নিউইয়র্কের লাল কার্পেট ও ঝলমলে আলো কেবল একটি রূপক। সেখানে রাষ্ট্রপ্রধানরা যেমন ছবি তুলছেন, কথাবার্তা বলছেন, ঠিক তেমনি আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবেÑকতটা সত্যিই আলোকিত হচ্ছে মানবতার পথ? কতটা বাস্তবের মাঠে প্রতিশ্রুতি রূপায়িত হচ্ছে? এবং কতটা ভবিষ্যতের জন্য কার্যকর শিক্ষা অর্জন করা যাচ্ছে?

প্রতিটি ভাষণ, প্রতিশ্রুতি এবং করতালি আমাদের মনে করিয়ে দেয়Ñমানবতার চ্যালেঞ্জ সমাধান করতে হলে শুধু কথায় নয়, কাজেও এগোতে হবে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে, বর্তমানের পরিস্থিতি বুঝে, এবং ভবিষ্যতের জন্য বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ করাই প্রকৃত আশা।

জলবায়ু, দারিদ্র্য, সংঘাত, মানবাধিকারÑএই বিষয়গুলো কেবল কাগজে লেখা নয়। এগুলো বাস্তবের মাঠে প্রতিফলিত হয়। আমাদের দায়িত্ব হলো, এই বড় মঞ্চের ঝলকানি দেখে হতাশ না হয়ে, বাস্তব উদ্যোগে মনোযোগ দেওয়া। ভাষণ ও প্রতিশ্রুতি কেবল সূচনা, কিন্তু কাজের মাধ্যমে শিক্ষার আলো ছড়ানোই ভবিষ্যতের প্রকৃত আশা।

শেষ প্রশ্নটি রয়ে যায়Ñনিউইয়র্কের ভাষণ, প্রতিশ্রুতি আর কূটনীতির আতশবাজির আড়ালে আমরা কি মানবতার সত্যিকারের আলো দেখতে পারব? অথবা কি এই ঝলকানি কেবল আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে, কিন্তু বাস্তব পরিবর্তন হবে না? উত্তরটি আমরা পাবো, যদি অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে, বর্তমান পরিস্থিতি বোঝা যায় এবং ভবিষ্যতের জন্য বাস্তবিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

সেপ্টেম্বরের ২১ থেকে ২৮ পর্যন্ত নিউইয়র্কে জাতিসংঘের এই মহোৎসব আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়Ñভাষণ, প্রতিশ্রুতি আর কূটনীতির আড়ালে মানবতার জন্য প্রকৃত আশা অর্জন করা সম্ভব, যদি আমরা শুধু দেখার নয়, কাজ করারও সাহস রাখি।

[লেখক: সভাপতি, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ এলামনাই এসোসিয়েশন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

দায়িত্বশীল আচরণে গড়ে উঠুক দেশের পর্যটন খাত

এশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নতুন সমীকরণ

বাংলাদেশের গিগ অর্থনীতি: উন্নয়নের হাতিয়ার নাকি অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ?

জলাতঙ্ক: প্রতিরোধযোগ্য তবু প্রাণঘাতী

বেড়ে চলা বৈষম্যের দেওয়াল

নৃশংসতার ভিডিও, নীরব দর্শক আর হারিয়ে যাওয়া মানবতা

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ও জনস্বাস্থ্যের সংকট

জেন জি’র অস্থির অভিযাত্রা

রম্যগদ্য: রবার্ট ব্রুস ও মাকড়শা

বিশ্ব ফুসফুস দিবস: সুস্থ শ্বাসের অঙ্গীকার

সংখ্যার আড়ালে অর্থনীতির অদেখা বাস্তবতা

সঙ্গীত চর্চা ও ধর্ম শিক্ষা: তর্ক-বিতর্কের জায়গাটি কোথায়?

অপুষ্টি ও মাটির অবক্ষয় রোধে সবুজ সার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পোষ্য কোটা’ পুনর্বহাল বিতর্ক

আইসিইউ সেবার সংকট

পরশ্রীকাতরতা: সামাজিক ব্যাধির অদৃশ্য শেকল

চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড: ট্রাম্প কি সহিংসতাকেই রাজনীতির হাতিয়ার বানাচ্ছেন?

যুব বেকারত্ব: অর্থনৈতিক সংকট থেকে সামাজিক বিপর্যয়

চাই স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের পরিবেশ

সার সংকট, ভর্তুকি ও সিন্ডিকেট

দ. কোরিয়ার শ্রমবাজার : কোটা পূরণে ব্যর্থ বাংলাদেশ

ভারতের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বনাম আমেরিকার শুল্ক কূটনীতি

সংবিধান কাটাছেঁড়ার সুযোগ আছে কি?

সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব

চা-জনগোষ্ঠীর দণ্ডপূজা ও উপেক্ষিত অধিকার

মেরিটোক্রেসি: সমাজ ও রাজনীতির প্রাসঙ্গিকতা

রম্যগদ্য: হাতের মুঠোয় বিশ্ব

শারদীয় পূজার দিনলিপি

ঋণের জন্য আত্মহত্যা, ঋণ নিয়েই চল্লিশা

জাকসু নির্বাচন ও হট্টগোল: আমাদের জন্য শিক্ষণীয় কী?

নরসুন্দর পেশার গুরুত্ব ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন

বিভাগভিত্তিক এমপিআর নির্বাচন পদ্ধতি

প্ল্যাটফর্ম সমাজে বাংলাদেশ: জ্ঞানের ভবিষ্যৎ কার হাতে?

আনন্দবেদনার হাসপাতাল: সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ছবি

ভিন্ন ধরনের নির্বাচন, ভিন্ন ধরনের ফল

বেসরকারি খাতে সিআইবি’র যাত্রা: ঋণ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত

tab

opinion » post-editorial

জাতিসংঘের নিউইয়র্ক সম্মেলন

ফকর উদ্দিন মানিক

বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সেপ্টেম্বর মানেই নিউইয়র্কে কূটনীতির এক বিশাল নাট্যদলের ঝড়। লাল কার্পেট, ঝলমলে আলো, ক্যামেরার ফ্ল্যাশÑসবকিছু প্রস্তুত রাষ্ট্রপ্রধানদের শোভা দেখানোর জন্য। জাতিসংঘ সদর দফতর তখন পরিণত হয় ভাষণ, প্রতিশ্রুতি এবং কূটনীতির এক বড় মঞ্চে। কিন্তু এই ঝলকানি যতই দৃষ্টিনন্দন হোক, অতীতের ভুলের ছায়া সবসময় মঞ্চের কোণে দেখা যায়।

গত কয়েক দশক ধরে আমরা দেখেছিÑকত বক্তৃতা হয়েছে, কত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাস্তবের মাঠে ফলাফল প্রায়শই নীরব। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক তহবিলের প্রতিশ্রুতি এসেছে, কিন্তু তার অধিকাংশই আটকা পড়েছে জটিল শর্ত আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় । জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে হাজারো সম্মেলন হয়েছে, কিন্তু কার্বন নির্গমন ঠেকানোর প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবে পূর্ণ হয়নি। যুদ্ধবিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে শান্তি স্থাপনের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু অস্ত্র বাজারের নতুন চুক্তি আর ক্ষমতার দখলই বাস্তবতা। অতীতের এই ভুল আমাদের শেখায়Ñশব্দের ঝলমলে আবরণে সমস্যার সমাধান হয় না।

বর্তমানের শিক্ষা হলোÑএই নাট্যদলের ভেতরেই আমরা বাস্তবতা বুঝতে পারি। রাষ্ট্রপ্রধানরা একে অপরের দিকে হাসি বিনিময় করছেন, হাত মেলাচ্ছেন, মিডিয়ায় ছবি ছড়াচ্ছেন। কিন্তু আমাদের দৃষ্টি ধরে রাখতে হবেÑকতটা সত্যিই আলোকিত হচ্ছে মানবতার পথ? ভাষণ, প্রতিশ্রুতি এবং করতালি সবই এক ধরনের রূপক। ভাষণ ঝলমলে কাঁচের ঝাঁকুনি, যা আলো প্রতিফলিত করে কিন্তু ধরলে কাঁচের টুকরোয় হাত কেটে যায়। প্রতিশ্রুতি চকচকে চকলেটের আবরণ, মুখে দিলেই গলে যায়। করতালি হয় শব্দের মুদ্রণ, যা বাস্তব সমস্যার সমাধানে অক্ষম।

তবু এই শিক্ষা মানে হতাশা নয়। বরং আমাদের শেখায়Ñভাষণ ও প্রতিশ্রুতি শুধুই সূচনা, বাস্তব কাজের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। আমরা দেখতে পাই, কেবল মিডিয়ার আলো বা আন্তর্জাতিক করতালি দিয়ে সমাধান আসে না। বাস্তব প্রতিক্রিয়া, কার্যকর উদ্যোগ, দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক সমন্বয়Ñএগুলোই চূড়ান্ত শিক্ষা।

ভবিষ্যতের প্রকৃত আশা জন্ম নেয় এই শিক্ষা থেকে। আমরা বুঝতে পারি, শুধুমাত্র বড় মঞ্চের ভাষণ বা আকর্ষণীয় শিরোনাম দিয়ে মানবতার সমস্যা সমাধান হবে না। আশা আসবে যখন রাষ্ট্রগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সত্যিই অগ্রগামী হবে। যখন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে। যখন দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রকল্পগুলো বাস্তবভাবে প্রয়োগ করা হবে। এবং যখন কূটনীতির চমকপ্রদ নাট্যদলের আড়ালে ছোট ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর কণ্ঠস্বর সঠিকভাবে শোনা যাবে।

ইতিহাস আমাদের দেখিয়েছে, বড় ভাষণ আর প্রতিশ্রুতির ফোয়ারা প্রায়শই ব্যর্থ হয়, যদি বাস্তব উদ্যোগ না থাকে। কিন্তু বর্তমান আমাদের শিক্ষা দেয়Ñসমস্যার গভীরতা বুঝে, সঠিক কৌশল নিয়ে এগোলে আমরা পরিবর্তন আনতে পারি। এবং ভবিষ্যত আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, আসল আশা আসে কার্যকর উদ্যোগ, স্বচ্ছ নেতৃত্ব ও আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের মাধ্যমে।

নিউইয়র্কের লাল কার্পেট ও ঝলমলে আলো কেবল একটি রূপক। সেখানে রাষ্ট্রপ্রধানরা যেমন ছবি তুলছেন, কথাবার্তা বলছেন, ঠিক তেমনি আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবেÑকতটা সত্যিই আলোকিত হচ্ছে মানবতার পথ? কতটা বাস্তবের মাঠে প্রতিশ্রুতি রূপায়িত হচ্ছে? এবং কতটা ভবিষ্যতের জন্য কার্যকর শিক্ষা অর্জন করা যাচ্ছে?

প্রতিটি ভাষণ, প্রতিশ্রুতি এবং করতালি আমাদের মনে করিয়ে দেয়Ñমানবতার চ্যালেঞ্জ সমাধান করতে হলে শুধু কথায় নয়, কাজেও এগোতে হবে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে, বর্তমানের পরিস্থিতি বুঝে, এবং ভবিষ্যতের জন্য বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ করাই প্রকৃত আশা।

জলবায়ু, দারিদ্র্য, সংঘাত, মানবাধিকারÑএই বিষয়গুলো কেবল কাগজে লেখা নয়। এগুলো বাস্তবের মাঠে প্রতিফলিত হয়। আমাদের দায়িত্ব হলো, এই বড় মঞ্চের ঝলকানি দেখে হতাশ না হয়ে, বাস্তব উদ্যোগে মনোযোগ দেওয়া। ভাষণ ও প্রতিশ্রুতি কেবল সূচনা, কিন্তু কাজের মাধ্যমে শিক্ষার আলো ছড়ানোই ভবিষ্যতের প্রকৃত আশা।

শেষ প্রশ্নটি রয়ে যায়Ñনিউইয়র্কের ভাষণ, প্রতিশ্রুতি আর কূটনীতির আতশবাজির আড়ালে আমরা কি মানবতার সত্যিকারের আলো দেখতে পারব? অথবা কি এই ঝলকানি কেবল আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে, কিন্তু বাস্তব পরিবর্তন হবে না? উত্তরটি আমরা পাবো, যদি অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে, বর্তমান পরিস্থিতি বোঝা যায় এবং ভবিষ্যতের জন্য বাস্তবিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

সেপ্টেম্বরের ২১ থেকে ২৮ পর্যন্ত নিউইয়র্কে জাতিসংঘের এই মহোৎসব আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়Ñভাষণ, প্রতিশ্রুতি আর কূটনীতির আড়ালে মানবতার জন্য প্রকৃত আশা অর্জন করা সম্ভব, যদি আমরা শুধু দেখার নয়, কাজ করারও সাহস রাখি।

[লেখক: সভাপতি, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ এলামনাই এসোসিয়েশন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

back to top