alt

opinion » post-editorial

মামলা ছাড়া জমির ভুল সংশোধন

সিরাজ প্রামাণিক

: শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১

আপনি জমি কিনেছেন, জমির দলিল আছে, যুগ যুগ ধরে জমি ভোগদখল করে আসছেন, কিন্তু জমির রেকর্ড ভুলবশত অন্য কারও নামে হয়ে আছে কিংবা কম রেকর্ড হয়েছে কিংবা জমির দাগ ভুলভাবে রেকর্ড হয়েছে কিংবা ১নং খাস খতিয়ানে কিংবা অর্পিত তালিকায় চলে গেছে কিংবা ম্যাপের সঙ্গে রেকর্ডের ভুল হয়েছে। নো টেনশন। আপনি সহজেই আপনার জমির এ সমস্যাগুলো সমাধান করিয়ে নিতে পারবেন।

২০১৪ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে বলেন যে, জমির উপরোক্ত সমস্যা সমাধানে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে ব্যাপকহারে মামলা হচ্ছে, যা রীতিরকম উদ্বেগজনক। ফলে সমস্যাগুলো সমাধানে তিন প্রকারের কর্তৃপক্ষ তিন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণে আইনত ক্ষমতা দিয়ে পরিপত্র জারি করেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে জানাতে হয় কর্তৃপক্ষগণ মোটেও এ সমস্যা সমাধানে কোনরূপ আগ্রহ দেখান না।

প্রথমত, সংশ্লিষ্ট রাজস্ব কর্মকর্তা বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্টেট অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড টেনান্সি অ্যাক্ট ১৯৫০’র ১৪৩ ধারামতে এবং প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ১৯৫৫-এর বিধি ২৩(৩) অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত রেকর্ডের করণিক ভুল (ক্ল্যারিকাল মিসটেকস) যেমন-নামের ভুল, অংশ বসানোর হিসেবে ভুল, দাগসূচিতে ভুল, ম্যাপের সঙ্গে রেকর্ডের ভুল ইত্যাদি নিজেই সংশোধন করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, স্টেট অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড টেনান্সি অ্যাক্ট ১৯৫০’র ১৪৯(৪) ধারামতে ভূমি প্রশাসন বোর্ড বোনাফাইড মিসটেক যেমন-জরিপকালে পিতার মৃত্যুর কারণে সন্তানদের নামে সম্পত্তি রেকর্ড হওয়ার কথা থাকলেও জরিপকারকদের ভুলে তা হয়নি- এমন ভুল সংশোধন করতে পারেন। আবার ভূমি আপিল বোর্ডেরও এ ধরনের ভুল সংশোধনের ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এগুলোর কোনো প্রয়োগ নেই। ভুক্তভোগীরা এসব জায়গার প্রতিকার চাইতে গেলে তাদের ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আবার আপনার জমি খাসজমি হিসেবে রেকর্ড হলে ভোগান্তির শেষ নেই। ভুলক্রমে কোনো ব্যক্তির জমি ১ নাম্বার খাস খতিয়ানে (গ্রামের ভাষায় ডিসির নামে) অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলে অর্থাৎ সরকারি খাস জমি হয়ে গেলে তাকে আদালতের মাধ্যমেই নাম সংশোধন করতে হয়। আদালতে ভুক্তভোগী পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর অনেক সময় সমন পাওয়ার পরও

সরকারের পক্ষ থেকে (জেলা প্রশাসনের পক্ষে) কেউ আদালতে হাজির হয় না। ফলে সরকারের বিপক্ষে একতরফা ডিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু সরকারের বিপক্ষে একতরফা ডিক্রি গ্রহণযোগ্য নয় বলে এডিসি (রেভিনিউ) নামজারি প্রক্রিয়া বন্ধ রেখে আপিল দায়ের করেন।

আবার জরিপ চলাকালীন ভুল ধরা পরলে তখন সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট ৩০ ধারা/৩১ ধারায় আপিল করে খুব সহজেই ভুলগুলো সংশোধন করে নেওয়া যায়। কিন্তু যদি এই সময়ের মধ্যে ভুলগুলো সংশোধন করা না হয় এবং চূড়ান্ত খতিয়ান প্রকাশিত হয়ে যায়, তবে উক্ত খতিয়ান সংশোধনের ক্ষমতা আর সেটেলমেন্ট অফিসারের থাকে না তখন এই খতিয়ান সংশোধন করতে হয় কোর্টে মামলা করে। তবে চূড়ান্ত রেকর্ড প্রকাশিত হয়ে গেলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটেলমেন্ট অফিসার রেকর্ড সংশোধন করতে পারে, যেমন উক্ত ভুলগুলো যদি হয় শুধু কারণিক ভুল/ প্রিন্টিং -এ ভুল সেক্ষেত্রে এ ধরনের সামান্য ভুলগুলো অবশ্য সেটেলমেন্ট অফিসার সংশোধন করতে পারে। খতিয়ান বা খসড়া খতিয়ানে কোন ভুল-ত্রুটি থাকলে বা এ সম্পর্কে কারও কোন আপত্তি বা দাবি থাকলে, প্রজাস্বত্ব বিধি ৩০ অনুযায়ী আপত্তি দাখিল করতে হবে।

অত্র আপত্তি দাখিল করতে হবে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে ৪০ টাকার কোর্ট ফি দিয়ে। অফিসার প্রয়োজন মনে করলে খতিয়ান ও নকশা সংশোধন, পরিবর্তন বা পূর্বাবস্থায় বহাল রাখার বিষয়ে রায় প্রদান করবেন এবং অবশ্যই রায় মোতাবেক রেকর্ড সংশোধন করবেন। আপত্তি কেসের রায়ে যদি কেউ অসন্তুষ্ট হয় তবে সেই প্রেক্ষিতে তিনি প্রজাস্বত্ব বিধিমালার ৩১ বিধি অনুসারে রায় প্রদানের ৩০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে ও নির্ধারিত ফি প্রদান করে সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট আপিল করতে পারেন। আপিল আবেদনের সঙ্গে আপত্তি কেসের রায়ের কপি দাখিল করতে হবে। সেটেলমেন্ট অফিসার বা তার মনোনীত অন্যকোন আপিল অফিসার সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে নোটিস প্রদান করে শুনানির মাধ্যমে দ্রুত আপিল নিষ্পত্তি করবেন। সর্বশেষ আপিল রায় মোতাবেক খতিয়ান ও নকশা সংশোধন করা হয়।

উপরোক্ত কাজগুলো করেও আপনি যদি ব্যর্থ হন তাহলে খতিয়ান সংশোধন করতে উক্ত জমিতে আপনার মালিকানার সব দলিল পত্র (যেমন-মূল দলিল, বায়া দলিল, পূর্বের খতিয়ানের কপি), চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত ভুল রেকর্ডের কপি, নিজের আইডি কার্ডের ফটোকপি, প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নিয়ে এখতিয়ারধীন কোর্টে গিয়ে একজন দক্ষ সিভিল লইয়ার কে উক্ত খতিয়ানটি সংশোধানের দায়িত্ব দিতে হবে। তিনি আপনার এ কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করে দেবন। কিন্তু আদালত থেকে কোন ব্যক্তি ডিক্রি পেলে সেই মোতাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা রেকর্ড সংশোধনের উদ্যোগ নেবেন এটাই আইন। সেখানেও রয়েছে নানা জটিলতা। আইন আছে, প্রয়োগ নেই। ‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’।

[লেখক : আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট]

নরসুন্দর পেশার গুরুত্ব ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন

বিভাগভিত্তিক এমপিআর নির্বাচন পদ্ধতি

প্ল্যাটফর্ম সমাজে বাংলাদেশ: জ্ঞানের ভবিষ্যৎ কার হাতে?

আনন্দবেদনার হাসপাতাল: সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ছবি

ভিন্ন ধরনের নির্বাচন, ভিন্ন ধরনের ফল

বেসরকারি খাতে সিআইবি’র যাত্রা: ঋণ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত

স্বাস্থ্যসেবায় মানবিকতা প্রতিষ্ঠা হোক

ছবি

নেপালে সরকার পতন ও বামপন্থীদের ভবিষ্যৎ

ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কারপ্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত

নির্বাচন কি সব সমস্যার সমাধান

জিতিয়া উৎসব

ছবি

অলির পর নেপাল কোন পথে?

রম্যগদ্য: “মরেও বাঁচবি নারে পাগলা...”

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শ্রীপুর পৌরসভা

ভূরিভোজ, উচ্ছেদ এবং আদিবাসী পাহাড়িয়া

অনলাইন সংস্কৃতিতে হাস্যরসের সমাজবিজ্ঞান

মামলাজট নিরসনে দেওয়ানি কার্যবিধির সংস্কার

বাস্তব মস্কো বনাম বিভ্রান্ত ইউরোপ

ছাত্রসংসদ নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ ছাত্ররাজনীতির গতিপ্রকৃতি

সড়ক দুর্ঘটনা: কারও মৃত্যু সাধারণ, কারও মৃত্যু বিশেষ

ঐকমত্য ছাড়াও কিছু সংস্কার সম্ভব

আবার বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম : সংকটে সাধারণ মানুষ

ডায়াবেটিস রোগীর সেবা ও জনসচেতনতা

ভিন্ন ধরনের ডাকসু নির্বাচন

ডাকসু নির্বাচন : পেছনে ফেলে আসি

প্রসঙ্গ : এলডিসি তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ

“কোপা চাটিগাঁ...”

ই-কমার্স হতে পারে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন

ভারত-চীনের নতুন সমীকরণ

সাইবার যুগে মানুষের মর্যাদা ও নিরাপত্তা

ছবি

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

একজন নাগরিকের অভিমানী বিদায় ও রাষ্ট্রের নৈতিক সংকট

নিষিদ্ধ জালের অভিশাপে হুমকির মুখে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য

আধিপত্যবাদের শৃঙ্খল এবং পুঁজির লুন্ঠন যাদের রক্তাক্ত করে, তাদের চাই একজোটে

জার্মানি : কৃচ্ছসাধনের বোঝা জনগণের কাঁধে

tab

opinion » post-editorial

মামলা ছাড়া জমির ভুল সংশোধন

সিরাজ প্রামাণিক

শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১

আপনি জমি কিনেছেন, জমির দলিল আছে, যুগ যুগ ধরে জমি ভোগদখল করে আসছেন, কিন্তু জমির রেকর্ড ভুলবশত অন্য কারও নামে হয়ে আছে কিংবা কম রেকর্ড হয়েছে কিংবা জমির দাগ ভুলভাবে রেকর্ড হয়েছে কিংবা ১নং খাস খতিয়ানে কিংবা অর্পিত তালিকায় চলে গেছে কিংবা ম্যাপের সঙ্গে রেকর্ডের ভুল হয়েছে। নো টেনশন। আপনি সহজেই আপনার জমির এ সমস্যাগুলো সমাধান করিয়ে নিতে পারবেন।

২০১৪ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে বলেন যে, জমির উপরোক্ত সমস্যা সমাধানে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে ব্যাপকহারে মামলা হচ্ছে, যা রীতিরকম উদ্বেগজনক। ফলে সমস্যাগুলো সমাধানে তিন প্রকারের কর্তৃপক্ষ তিন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণে আইনত ক্ষমতা দিয়ে পরিপত্র জারি করেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে জানাতে হয় কর্তৃপক্ষগণ মোটেও এ সমস্যা সমাধানে কোনরূপ আগ্রহ দেখান না।

প্রথমত, সংশ্লিষ্ট রাজস্ব কর্মকর্তা বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্টেট অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড টেনান্সি অ্যাক্ট ১৯৫০’র ১৪৩ ধারামতে এবং প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ১৯৫৫-এর বিধি ২৩(৩) অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত রেকর্ডের করণিক ভুল (ক্ল্যারিকাল মিসটেকস) যেমন-নামের ভুল, অংশ বসানোর হিসেবে ভুল, দাগসূচিতে ভুল, ম্যাপের সঙ্গে রেকর্ডের ভুল ইত্যাদি নিজেই সংশোধন করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, স্টেট অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড টেনান্সি অ্যাক্ট ১৯৫০’র ১৪৯(৪) ধারামতে ভূমি প্রশাসন বোর্ড বোনাফাইড মিসটেক যেমন-জরিপকালে পিতার মৃত্যুর কারণে সন্তানদের নামে সম্পত্তি রেকর্ড হওয়ার কথা থাকলেও জরিপকারকদের ভুলে তা হয়নি- এমন ভুল সংশোধন করতে পারেন। আবার ভূমি আপিল বোর্ডেরও এ ধরনের ভুল সংশোধনের ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এগুলোর কোনো প্রয়োগ নেই। ভুক্তভোগীরা এসব জায়গার প্রতিকার চাইতে গেলে তাদের ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আবার আপনার জমি খাসজমি হিসেবে রেকর্ড হলে ভোগান্তির শেষ নেই। ভুলক্রমে কোনো ব্যক্তির জমি ১ নাম্বার খাস খতিয়ানে (গ্রামের ভাষায় ডিসির নামে) অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলে অর্থাৎ সরকারি খাস জমি হয়ে গেলে তাকে আদালতের মাধ্যমেই নাম সংশোধন করতে হয়। আদালতে ভুক্তভোগী পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর অনেক সময় সমন পাওয়ার পরও

সরকারের পক্ষ থেকে (জেলা প্রশাসনের পক্ষে) কেউ আদালতে হাজির হয় না। ফলে সরকারের বিপক্ষে একতরফা ডিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু সরকারের বিপক্ষে একতরফা ডিক্রি গ্রহণযোগ্য নয় বলে এডিসি (রেভিনিউ) নামজারি প্রক্রিয়া বন্ধ রেখে আপিল দায়ের করেন।

আবার জরিপ চলাকালীন ভুল ধরা পরলে তখন সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট ৩০ ধারা/৩১ ধারায় আপিল করে খুব সহজেই ভুলগুলো সংশোধন করে নেওয়া যায়। কিন্তু যদি এই সময়ের মধ্যে ভুলগুলো সংশোধন করা না হয় এবং চূড়ান্ত খতিয়ান প্রকাশিত হয়ে যায়, তবে উক্ত খতিয়ান সংশোধনের ক্ষমতা আর সেটেলমেন্ট অফিসারের থাকে না তখন এই খতিয়ান সংশোধন করতে হয় কোর্টে মামলা করে। তবে চূড়ান্ত রেকর্ড প্রকাশিত হয়ে গেলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটেলমেন্ট অফিসার রেকর্ড সংশোধন করতে পারে, যেমন উক্ত ভুলগুলো যদি হয় শুধু কারণিক ভুল/ প্রিন্টিং -এ ভুল সেক্ষেত্রে এ ধরনের সামান্য ভুলগুলো অবশ্য সেটেলমেন্ট অফিসার সংশোধন করতে পারে। খতিয়ান বা খসড়া খতিয়ানে কোন ভুল-ত্রুটি থাকলে বা এ সম্পর্কে কারও কোন আপত্তি বা দাবি থাকলে, প্রজাস্বত্ব বিধি ৩০ অনুযায়ী আপত্তি দাখিল করতে হবে।

অত্র আপত্তি দাখিল করতে হবে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে ৪০ টাকার কোর্ট ফি দিয়ে। অফিসার প্রয়োজন মনে করলে খতিয়ান ও নকশা সংশোধন, পরিবর্তন বা পূর্বাবস্থায় বহাল রাখার বিষয়ে রায় প্রদান করবেন এবং অবশ্যই রায় মোতাবেক রেকর্ড সংশোধন করবেন। আপত্তি কেসের রায়ে যদি কেউ অসন্তুষ্ট হয় তবে সেই প্রেক্ষিতে তিনি প্রজাস্বত্ব বিধিমালার ৩১ বিধি অনুসারে রায় প্রদানের ৩০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে ও নির্ধারিত ফি প্রদান করে সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট আপিল করতে পারেন। আপিল আবেদনের সঙ্গে আপত্তি কেসের রায়ের কপি দাখিল করতে হবে। সেটেলমেন্ট অফিসার বা তার মনোনীত অন্যকোন আপিল অফিসার সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে নোটিস প্রদান করে শুনানির মাধ্যমে দ্রুত আপিল নিষ্পত্তি করবেন। সর্বশেষ আপিল রায় মোতাবেক খতিয়ান ও নকশা সংশোধন করা হয়।

উপরোক্ত কাজগুলো করেও আপনি যদি ব্যর্থ হন তাহলে খতিয়ান সংশোধন করতে উক্ত জমিতে আপনার মালিকানার সব দলিল পত্র (যেমন-মূল দলিল, বায়া দলিল, পূর্বের খতিয়ানের কপি), চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত ভুল রেকর্ডের কপি, নিজের আইডি কার্ডের ফটোকপি, প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নিয়ে এখতিয়ারধীন কোর্টে গিয়ে একজন দক্ষ সিভিল লইয়ার কে উক্ত খতিয়ানটি সংশোধানের দায়িত্ব দিতে হবে। তিনি আপনার এ কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করে দেবন। কিন্তু আদালত থেকে কোন ব্যক্তি ডিক্রি পেলে সেই মোতাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা রেকর্ড সংশোধনের উদ্যোগ নেবেন এটাই আইন। সেখানেও রয়েছে নানা জটিলতা। আইন আছে, প্রয়োগ নেই। ‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’।

[লেখক : আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট]

back to top