পুষ্টিগুণে ভরা বিভিন্ন দেশীয় ফল আমাদের খাবার টেবিলের শোভা বাড়ায়। অথচ কিছুটা আশঙ্কা নিয়ে মৌসুমি ফল কিনতে হয় আমাদের। দ্রুত বাজার ধরার জন্য, বেশিদিন ফল সতেজ রাখার জন্য কিংবা দ্রুত পাকানোর জন্য ফলে মেশানো হয় কার্বাইডসহ বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিক কেমিক্যাল।
বিভিন্ন গবেষণায় দেশের অনিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে। একশ্রেণীর মুনাফাখোর লোভী মানুষের জন্য আমাদের খাদ্য শৃঙ্খলে ‘বিষ’ ঢুকে গেছে।
আমাদের পছন্দের চিকন চাল তাও কিনা ভেজালমুক্ত নয়! বাজারে ওঠা অধিকাংশ শাক সবজিতেও মেশানো হয় বিষ! দীর্ঘ সময় সতেজ রাখার জন্য বিভিন্ন ক্যামিকেল মেশানো হয়, আর অনেকটা বাধ্য হয়ে আমাদের সেটা কিনতে হচ্ছে! শাক সবজি যেমন বিষমুক্ত নয়, তেমনি মাছ মাংসও নয় ভেজালমুক্ত!
পরিবেশ বাঁচাও অন্দোলনের (পবা) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- শুধু ভেজাল খাদ্য গ্রহণের কারণে প্রতি বছর দেশে ৩ লাখ লোক ক্যান্সারে, ২ লাখ লোক কিডনি রোগে, দেড় লাখ লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্যে ভেজালের কারণে মানুষ ১২ থেকে ১৫টি জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে! দীর্ঘমেয়াদে যা ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগ সৃষ্টি করে! ভেজাল পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহারে মৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে। খাদ্যে ভেজালজনিত বেশ কয়েকটি রোগ, বিশেষ করে আমাশয়, পেটের পীড়া, গ্যাস্ট্রিক-আলচার, উচ্চ রক্তচাপ, হূদরোগ, কিডনী ও পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা ও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। প্রতিটি পরিবারে উদ্যেগজনকভাবে বেড়ে গেছে ডায়াবেটিকস ও উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা।
কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে প্রতি বছর প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ভেজাল বা নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি হয়। মোট ওষুধ বিক্রির প্রায় ২০ শতাংশ। বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশীয় বাজারে ভেজাল ও নকল ঔষধের বার্ষিক বিক্রি প্রায় ১.৫ হাজার কোটি টাকার উপর! অর্থাৎ আমরা অসুস্থ হলে যে ঔষধের উপর নির্ভর করি তাও পুরোপুরি ভেজালমুক্ত নয়! আইন আর তার বাস্তবায়ন পুরোপুরি হয়তো কখনো সম্ভব নয়।
বর্তমানে অর্গানিক কৃষি বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। বিশেষ করে সচেতন মহলে অর্গানিক কৃষি বেশ জনপ্রিয়। উৎপাদিত ফসলকে বিষমুক্ত রাখা আর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাই হচ্ছে অর্গানিক কৃষির মূল ভাবনা। প্রত্যেকের উচিত নিজ বাড়ির আঙ্গিনা কিংবা পতিত জমিতে যথা সম্ভব চাষ করা। এতে করে যেমন পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে পাশাপাশি ভেজালমুক্ত খাবারও গ্রহণ করা যাবে। বাচ্চাদের খাবারের বিষয়ে বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন, কারন বাচ্চাদের খাবারেই ভেজাল মেশানো হয় বেশি। এমনকি বিভিন্ন নামি দামি ব্রান্ডের গুড়া দুধেও পাওয়া যায় ক্ষতিকারক রাসায়নিক।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ রাখতে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। আমাদের দেশে বড় সমস্যা হচ্ছে এখানে আইন অনেক কঠোর তবে এর বাস্তবতায়ন খুব কম। বিশেষ করে খাদ্যে ভেজাল কিংবা ঔষধে ভেজাল প্রতিরোধে আইন আছে তা তার যথাযথ বাস্তবায়ন নেই। আমাদের খাদ্য হোক বিষমুক্ত, নিত্য দিন হোক সুন্দর এ কামনা সব সময়।
কেএম মাসুম বিল্লাহ
বুধবার, ২১ জুন ২০২৩
পুষ্টিগুণে ভরা বিভিন্ন দেশীয় ফল আমাদের খাবার টেবিলের শোভা বাড়ায়। অথচ কিছুটা আশঙ্কা নিয়ে মৌসুমি ফল কিনতে হয় আমাদের। দ্রুত বাজার ধরার জন্য, বেশিদিন ফল সতেজ রাখার জন্য কিংবা দ্রুত পাকানোর জন্য ফলে মেশানো হয় কার্বাইডসহ বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিক কেমিক্যাল।
বিভিন্ন গবেষণায় দেশের অনিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে। একশ্রেণীর মুনাফাখোর লোভী মানুষের জন্য আমাদের খাদ্য শৃঙ্খলে ‘বিষ’ ঢুকে গেছে।
আমাদের পছন্দের চিকন চাল তাও কিনা ভেজালমুক্ত নয়! বাজারে ওঠা অধিকাংশ শাক সবজিতেও মেশানো হয় বিষ! দীর্ঘ সময় সতেজ রাখার জন্য বিভিন্ন ক্যামিকেল মেশানো হয়, আর অনেকটা বাধ্য হয়ে আমাদের সেটা কিনতে হচ্ছে! শাক সবজি যেমন বিষমুক্ত নয়, তেমনি মাছ মাংসও নয় ভেজালমুক্ত!
পরিবেশ বাঁচাও অন্দোলনের (পবা) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- শুধু ভেজাল খাদ্য গ্রহণের কারণে প্রতি বছর দেশে ৩ লাখ লোক ক্যান্সারে, ২ লাখ লোক কিডনি রোগে, দেড় লাখ লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্যে ভেজালের কারণে মানুষ ১২ থেকে ১৫টি জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে! দীর্ঘমেয়াদে যা ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগ সৃষ্টি করে! ভেজাল পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহারে মৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে। খাদ্যে ভেজালজনিত বেশ কয়েকটি রোগ, বিশেষ করে আমাশয়, পেটের পীড়া, গ্যাস্ট্রিক-আলচার, উচ্চ রক্তচাপ, হূদরোগ, কিডনী ও পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা ও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। প্রতিটি পরিবারে উদ্যেগজনকভাবে বেড়ে গেছে ডায়াবেটিকস ও উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা।
কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে প্রতি বছর প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ভেজাল বা নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি হয়। মোট ওষুধ বিক্রির প্রায় ২০ শতাংশ। বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশীয় বাজারে ভেজাল ও নকল ঔষধের বার্ষিক বিক্রি প্রায় ১.৫ হাজার কোটি টাকার উপর! অর্থাৎ আমরা অসুস্থ হলে যে ঔষধের উপর নির্ভর করি তাও পুরোপুরি ভেজালমুক্ত নয়! আইন আর তার বাস্তবায়ন পুরোপুরি হয়তো কখনো সম্ভব নয়।
বর্তমানে অর্গানিক কৃষি বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। বিশেষ করে সচেতন মহলে অর্গানিক কৃষি বেশ জনপ্রিয়। উৎপাদিত ফসলকে বিষমুক্ত রাখা আর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাই হচ্ছে অর্গানিক কৃষির মূল ভাবনা। প্রত্যেকের উচিত নিজ বাড়ির আঙ্গিনা কিংবা পতিত জমিতে যথা সম্ভব চাষ করা। এতে করে যেমন পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে পাশাপাশি ভেজালমুক্ত খাবারও গ্রহণ করা যাবে। বাচ্চাদের খাবারের বিষয়ে বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন, কারন বাচ্চাদের খাবারেই ভেজাল মেশানো হয় বেশি। এমনকি বিভিন্ন নামি দামি ব্রান্ডের গুড়া দুধেও পাওয়া যায় ক্ষতিকারক রাসায়নিক।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ রাখতে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। আমাদের দেশে বড় সমস্যা হচ্ছে এখানে আইন অনেক কঠোর তবে এর বাস্তবতায়ন খুব কম। বিশেষ করে খাদ্যে ভেজাল কিংবা ঔষধে ভেজাল প্রতিরোধে আইন আছে তা তার যথাযথ বাস্তবায়ন নেই। আমাদের খাদ্য হোক বিষমুক্ত, নিত্য দিন হোক সুন্দর এ কামনা সব সময়।
কেএম মাসুম বিল্লাহ