alt

মুক্ত আলোচনা

নোভাভ্যাক্সের টিকাই এ মুহূর্তে সেরা

হিল্ডা ব্যাস্টিয়ান

: সোমবার, ২৩ আগস্ট ২০২১

চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে যখন ট্রায়ালে কোভিড-১৯-এর একটি টিকার ৭০ শতাংশ কার্যকারিতার কথা জানা গেলো, তখন তা যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকাগুলোয় প্রথম পাতার খবর হলো। আরএ মাসের শুরুতে মেরিল্যান্ড-ভিত্তিক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান নোভাভ্যাক্স যখন করোনা ভাইরাসের যে কোনো ভ্যারিয়্যান্টের বিরুদ্ধে তাদের তৈরী টিকার ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকারিতার খবর জানালো, তা নিয়ে গণমাধ্যম তাকে পাত্তাই দিলো না। পার্থক্য অবশ্যই সময়ের।

যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ইতোমধ্যেইতিনটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে। দেশজুড়ে এখন সেই টিকাগুলোই দেওয়া হচ্ছে বলে জানাচ্ছে নিউইয়র্ক টাইমস। ফলেযদি এফডিআই যদি জরুরি মনে না করে, তাহলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেওযুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নোভাভ্যাক্স পাওয়া যাবে না। ততদিনে সে দেশে চাহিদার তুলনায় করোনার টিকার যোগান থাকবে বেশি।

এছাড়া দুই ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের দুই ধরনের ভূমিকার প্রভাব তো থাকবেই। কেননা আগে বেরোনো ফাইজার ও মডার্নার ট্রায়ালের ফল নিয়ে যে মাতামাতি হয়েছে, তাতে মানুষের এক ধরনের ধারণা হয়ে আছে।

এই দুটি টিকা যখন খুব দ্রুত বাজারে এলো, নিউইয়র্ক টাইমস তাকেবর্ণনা করে এমআরএনএ পদ্ধতির শ্রেষ্ঠত্ব হিসেবে। তাদের মতে, মহামারি কেটে যাওয়ার পরও টিকা তৈরি এ প্রযুক্তি কাজে লাগবে। কোনো কোনো পত্রিকায় উচ্ছ্বাসের সঙ্গে একে টিকার দীর্ঘ ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাদের চোখে এ পদ্ধতি বায়োটেক বা জৈবপ্রযুক্তিকে চিরদিনের জন্য বদলে দিয়ছে। এসব প্রতিবেদন যে ধারণাটি তৈরি হয়েছে, সেটি হচ্ছে এখন পর্যন্ত যত টিকা তৈরি হয়েছে তার মধ্যেএমআরএনএ পদ্ধতিতে তৈরী টিকাগুলোই সবচেয়ে কার্যকারী।

ফাইজার এবং মডার্নার টিকা দুটি নিয়ে এত আগ্রহের কারণে কতগুলো মৌলিক বিষয় ঢাকা পড়েছে। প্রথমত, িএই দুটি টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ফলাফল সবার আগে পাওয়া গিয়েছিল। টিকার গুণে না, তা সম্ভব হয়েছিল সফল ব্যবস্থাপনার কারণে।তবে এখনে দেখো যাচ্ছে, এমআরএনএ পদ্ধতির টিকাগুলোর উৎপাদান ও বিতরণ এর আগে উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে তৈরি টিকাসমূহের চেয়ে কঠিন ও ব্যয়বহুল। এমআরএনএ টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বেশি। নোভাভ্যাক্স বলছে, পুরোনো পদ্ধতিতেই বেশি কার্যকরী হওয়া সম্ভব। মানুষও আস্থা বেশি পাবে। তৃতীয় পর্বের ট্রায়ালে করোনা ভাইরাসের প্রথম ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে এমআরএনএ টিকা দুটি ৯৫ ও ৯৪ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়ছে, সেখানে প্রথমট্রায়ালে প্রথম ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে নোভাভ্যাক্সের কার্যকারিতা দেখা গেছে ৯৬ শতাংশ। আর সব ধরনেরভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ৯০ শতাংশ।

গত বছর আমি লিখেছিলোম টিকার কার্যকারিতার জন্য পদ্ধতি কোনো বিষয় না। প্রথমত, আপনার টিকাটি অবশ্যই ভালো হতে হবে। তারপরতা দ্রুত বাজারে আনার জন্য বড় আকারের ট্রায়াল চালাতে হবে। ভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে এমন জায়গায় সময়মতো ট্রায়াল করতে হবে। আপনার টিকা যত ভালোই হোক না কেন, আপনি যদি ট্রায়াল না করেন, তাহলে আপনার টিকার কার্যকারিতা প্রমাণে সময় বেশি লাগবে।

টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য সময় নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে ফাইজার ও মডার্নার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল ২০২০ সালের গ্রীষ্মের (জুন থেকে আগস্ট) শেষ দিকে চালানো হয়। সে কারণেইপরবর্তী শরতে (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর) যখন করোনা ব্যাপকভাবে ছড়াতে শুরু করে সেই সময়টাকে ধরতে পেরেছিল তারা। কিন্তু ততদিনে নোভাভ্যাক্স মাত্র যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে তলিকা করা শেষ করেছে। এরপর ফেব্রুয়ারিতে করোনার সংক্রমনের হার পড়তে থাকে। ফলে নোভাভ্যাক্সের টিকার তৃতীয় ট্রায়াল করতে দেরি হয়ে যায়।

ব্যবসায়িক কৌশল ছিল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। টিকা তৈরির দৌড়ে জয়ী হতে গেলে দ্রুতগতিতে বিপুল সংখ্যায় নির্ভরযোগ্য মানের টিকার ডোজ উৎপাদনে সক্ষম হতে হবে। বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের সাথে কাজ করার চ্যালেঞ্জগুলোও মোকাবেলা করতে হবে। এগুলো সব একসঙ্গেই করতে হবে। জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেক নিজে একা এত কিছু, এত দ্রুত করতে পারতো না। গত অক্টোবরে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী উগুর শাহিনের কাছ থেকে জানা যায়, টিকার অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিশাল ক্লিনিক্যাল-ট্রায়াল চালানোর জন্য তারা ফাইজারের সাহায্য চেয়েছে।

শুধু এমআরএনএ পদ্ধতিতে টিকার উদ্ভাবন দিয়ে নয়, বরং সেই কৌশলগত অংশীদারিত্বের কল্যাণেই লক্ষ্য অর্জনে সমর্থ হয়বায়োএনটেক-ফাইজার। মডার্নাও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অফ হেলথের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সুফল পেয়েছে।

এবার দেখুন, গত বছর ৩০শে এপ্রিল বায়োটেক-ফাইজার প্রথম ট্রায়ালের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধন করে।একই সময়ে করে নোভাভ্যাক্সও।কিন্তু নোভাভ্যাক্স যদি বায়োএনটেকের মতো অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান যেমন ধরুন মার্কের সঙ্গে কাজ করতো তাহলে কিন্তু গল্পটা অন্যরকম হতে পারতো।

ফাইজার ও মডার্নার টিকা আগেই সাফল্য পাওয়ায়এমআরএনএ-পদ্ধতিতে তৈরি অন্য টিকাগুলোর থেকেও মনোযোগ সরে গেছে সবার। নোভাভ্যাক্সের টিকার কার্যকারিতার বিষয়ে ঘোষণা আসার দুইদিন পর কিওরভ্যাকেরও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ফল জানা গেলো। তবে তারকার্যকারিতা খুব দুর্বল। ৫০ শতাংশের কম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও এফডিএ’র বেধে দেওয়া ন্যূনতম মানের নিচে। কিওরভ্যাকের ট্রায়ালেরএই ফল বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করেছে, জানায় নিউ ইয়র্ক টাইমস। এইকিওরভ্যাককেই ডনাল্ড ট্রাম্প মহামারির শুরু দিকে যুক্তরাষ্ট্রে আনার চেষ্টা করেছিলেন। মহাকাশ ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক বলেছিলেন, তিনি টিকা প্রস্তুত করার জন্য অটোমেটেড আরএনএ মাইক্রোফ্যাক্টরির যোগান দেবেন। শেষ পর্যন্ত এগুলো কোনো কিছুইহয়নি। কিওরভ্যাকের এই পরিস্থিতিতে মহামারি বিশেষজ্ঞরা এমআরএনএ পদ্ধতিতে তৈরিশুধু ভালো উদাহরণগুলো নিয়ে কথা বলছেন। সে কারণেই যখন ফাইজার ও মডার্নার টিকা সফল হলো ওয়াশিংটন পোস্টে তখন বলা হলো, ঝুঁকি থাকা সত্ত্বে দ্রুত টিকা তৈরি করে বাজিমাত করেছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ মহামারী বিশেষজ্ঞঅ্যান্থনি ফাউচিও প্রশংসা করেছেন এমআরএনএ পদ্ধতিতে তৈরী ফাইজার ও মডার্নার টিকার। তিনি একে বলেছেন দুর্দান্ত এক সাফল্য। কিন্তু এমআরএনএ বাদে অন্য পদ্ধতিতে তৈরী টিকাগুলো নিয়ে তেমন আলোচনা নেই। এখন আমরা দেখছি কিউরভ্যাকের ক্ষেত্রে কী হয়েছে। সেই সঙ্গে এমআরএনএ পদ্ধতিতে তৈরী কিছু টিকা, যেগুলো ভালো করছে। ২০২০ সালের মে মাসে নয়টি গোষ্ঠী প্রাণিদেহে টিকার পরীক্ষা ‍শুরু করে। কয়েক মাসের মধ্যে অন্তত ছটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়ার কথা। কিন্তু বছর শেষে নন-এমআরএনএ গোত্রের ১৩টি টিকার বিপরীতে শুধু বায়োএনটেক-ফাইজার, মডার্না ও কিওরভ্যাক তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে পৌছেছে। প্রাণিদেহে পরীক্ষা চালানো নয়টি এমআরএনএ টিকার মধ্যে ২০২০ সালের মাঝামাঝি কার্যকারিতা দেখা গেছে শুধু বায়োএনটেক-ফাইজার এবং মডার্নার। আর গতানুগতিক, এমআরএনএ’র বাইরের পদ্ধতিতে তৈরী টিকার মধ্যে অন্তত নয়টির কার্যকারিতা দেখা গেছে।

এই নন-এমআরএনএ টিকাই বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে ব্যবহার হচ্ছে, যেগুলোর কয়েকটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহার করা হলেও ভালো ফল দিতে পারে। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচুর পরিমাণে ফাইজার ও মডার্নার টিকা আছে। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০ রাজ্যে টিকা নিয়েছে ৩৫ শতাংশেরও কম। কোভিড-১৯ টিকা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণার ওপর গত মে মাসে প্রকাশিত একটি আন্তর্জাতিক গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে, অনলাইনে সবচেয়ে প্রচলিত গুজবগুলোর অন্যতম ছিল এমআরএনএ টিকাৎ নাকি মানুষের বংশগত বৈশিষ্ট্য পাল্টে দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন(সিডিসি) তা নাকচ করে দিয়েছে। একটা সময় মনে হয়েছিল জনসন এন্ড জনসনের টিকা এ সমস্যা সমাধান করতে পারবে, যেহেতু এটি আরেকটি পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছিল। তবে তাদের অনেকগুলো টিকা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবং বিরল কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় সেই আশা পূরণ হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রে সিঙ্গেল ডোজের এই টিকা দেওয়া হয়েছে ৪ শতাংশেরও কম।

এই পরিপ্রেক্ষিতে নোভাভ্যাক্সের কার্যকারিতার খবর সবচেয়ে বড় সুসংবাদ। সম্প্রতি পাওয়া ফলাফলে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পাওয়া ফাইজার ও মডার্নার চেয়ে কম নয় এর কার্যকারিতা। এর সঙ্গে বাড়তি সুবিধা হচ্ছে, এটি বেশ পুরনো ও পরিচিত পদ্ধতিতে তৈরি করাহয়েছে। নোভাভ্যাক্স তৈরিতে যে প্রোটিন-সাবইউনিট অ্যাপ্রোচ ব্যবহার করেছে, তা হেপাটাইটিস বি’র টিকা তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। ১৯৮৬ সাল থেকেই এ পদ্ধতিরব্যবহার হয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সব পাবলিক স্কুলে হুপিং কাশির যে টিকা দেওয়া হয় সেটাও এই পদ্ধতিতেই করা। ফলে যারা এমআরএনএ টিকা নিয়ে সংশয়ে আছেন, তারা অনায়াসে নোভাভ্যাক্সের এই টিকা নিতে পারেন।

অনুমোদিত এমআরএনএ টিকা দুটির তুলনায় নোভাভ্যাক্স টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও যথেষ্ট কম। গত সপ্তাহেদেখা গেছে, নোভাভ্যাক্সের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারীদের মধ্যে অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ৪০ শতাংশের কম। সেখানে মডার্নার ক্ষেত্রে তা ৬৫ শতাংশ এবং ফাইজারের ক্ষেত্রে ৫৫ শতাংশের বেশি। যুক্তরাজ্যে নোভাভ্যাক্সের কার্যকারিতা পরীক্ষায় পরিচালিত প্রথম ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা যায় ক্লান্তিসহ অন্যান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নোভাভ্যাক্সে শুধু যে কম তা-ই নয়, মৃদুও বটে। ঘন্টা হিসেবে মজুরিতে যারা কাজ করে তাদের এমনিতেইকোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কিন্তু টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কাজ হারানোর ভয়ে তাদের মধ্যে তাদের টিকা নেওয়ার প্রবণতা কম। কোভিডের টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া একটি বড় বাধা। সিডিসি জরিপ অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ বছরের নিচে প্রায় অর্ধেকই টিকা নিয়েছে বা নিতে আগ্রহী। কিন্তু বাকিদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন।

আমাকে ভুল বুঝবেন না। ফাইজার এবং মডার্নার টিকা এই মহামারীতে অসাধারণ জীবন রক্ষাকারী ভূমিকা পালন করেছে। তবে

এখন টিকার বেশ কিছু কার্যকর বিকল্পের মধ্যে, নোভাভ্যাক্স উচ্চ কার্যকারিতা এবং নিম্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সমন্বয়ে টিকা তৈরি করেছে। আপাতত, এটিই আমাদের কাছে সেরা কোভিড-১৯ এর টিকা।

[হিল্ডা ব্যাস্টিয়ান বিজ্ঞানী, লেখক। বর্তমানে স্বাস্থ্যপণ্য বিষয়ক আইনজীবী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের পাবমেড হেলথ প্রজেক্টের এডিটর ছিলেন] (মূলানুবাদ: মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক)

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

টম সয়ার না রবিনহুড

ছবি

‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’

বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা স্মারক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনন্য মাইলফলক

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

কুয়েতের জীবনযাত্রার সাতকাহন: পর্ব-১-বিয়ে

বিবেকের লড়াই

ছবি

ছবি যেন শুধু ছবি নয়

বাত ব্যথার কারণ ও আধুনিক চিকিৎসা

ছবি

স্বাধীন স্বদেশে মুক্ত বঙ্গবন্ধু

ছবি

মহান নেতার স্বভূমিতে ফিরে আসা

ছবি

মেট্রোরেল : প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার ফসল

ছবি

আমার মা

ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

ছবি

৩ নভেম্বর: ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতা

দেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক দ্বিতীয় অধ্যায়

এইচ এস সি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের অনুশীলন

ছবি

ত্রিশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

শিল্প কারখানার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এনভায়রনমেন্টাল ইন্জিনিয়ারিং

অসুর: এক পরাজিত বিপ্লবী

অসুর জাতির ইতিহাস

tab

মুক্ত আলোচনা

নোভাভ্যাক্সের টিকাই এ মুহূর্তে সেরা

হিল্ডা ব্যাস্টিয়ান

সোমবার, ২৩ আগস্ট ২০২১

চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে যখন ট্রায়ালে কোভিড-১৯-এর একটি টিকার ৭০ শতাংশ কার্যকারিতার কথা জানা গেলো, তখন তা যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকাগুলোয় প্রথম পাতার খবর হলো। আরএ মাসের শুরুতে মেরিল্যান্ড-ভিত্তিক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান নোভাভ্যাক্স যখন করোনা ভাইরাসের যে কোনো ভ্যারিয়্যান্টের বিরুদ্ধে তাদের তৈরী টিকার ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকারিতার খবর জানালো, তা নিয়ে গণমাধ্যম তাকে পাত্তাই দিলো না। পার্থক্য অবশ্যই সময়ের।

যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ইতোমধ্যেইতিনটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে। দেশজুড়ে এখন সেই টিকাগুলোই দেওয়া হচ্ছে বলে জানাচ্ছে নিউইয়র্ক টাইমস। ফলেযদি এফডিআই যদি জরুরি মনে না করে, তাহলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেওযুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নোভাভ্যাক্স পাওয়া যাবে না। ততদিনে সে দেশে চাহিদার তুলনায় করোনার টিকার যোগান থাকবে বেশি।

এছাড়া দুই ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের দুই ধরনের ভূমিকার প্রভাব তো থাকবেই। কেননা আগে বেরোনো ফাইজার ও মডার্নার ট্রায়ালের ফল নিয়ে যে মাতামাতি হয়েছে, তাতে মানুষের এক ধরনের ধারণা হয়ে আছে।

এই দুটি টিকা যখন খুব দ্রুত বাজারে এলো, নিউইয়র্ক টাইমস তাকেবর্ণনা করে এমআরএনএ পদ্ধতির শ্রেষ্ঠত্ব হিসেবে। তাদের মতে, মহামারি কেটে যাওয়ার পরও টিকা তৈরি এ প্রযুক্তি কাজে লাগবে। কোনো কোনো পত্রিকায় উচ্ছ্বাসের সঙ্গে একে টিকার দীর্ঘ ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাদের চোখে এ পদ্ধতি বায়োটেক বা জৈবপ্রযুক্তিকে চিরদিনের জন্য বদলে দিয়ছে। এসব প্রতিবেদন যে ধারণাটি তৈরি হয়েছে, সেটি হচ্ছে এখন পর্যন্ত যত টিকা তৈরি হয়েছে তার মধ্যেএমআরএনএ পদ্ধতিতে তৈরী টিকাগুলোই সবচেয়ে কার্যকারী।

ফাইজার এবং মডার্নার টিকা দুটি নিয়ে এত আগ্রহের কারণে কতগুলো মৌলিক বিষয় ঢাকা পড়েছে। প্রথমত, িএই দুটি টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ফলাফল সবার আগে পাওয়া গিয়েছিল। টিকার গুণে না, তা সম্ভব হয়েছিল সফল ব্যবস্থাপনার কারণে।তবে এখনে দেখো যাচ্ছে, এমআরএনএ পদ্ধতির টিকাগুলোর উৎপাদান ও বিতরণ এর আগে উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে তৈরি টিকাসমূহের চেয়ে কঠিন ও ব্যয়বহুল। এমআরএনএ টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বেশি। নোভাভ্যাক্স বলছে, পুরোনো পদ্ধতিতেই বেশি কার্যকরী হওয়া সম্ভব। মানুষও আস্থা বেশি পাবে। তৃতীয় পর্বের ট্রায়ালে করোনা ভাইরাসের প্রথম ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে এমআরএনএ টিকা দুটি ৯৫ ও ৯৪ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়ছে, সেখানে প্রথমট্রায়ালে প্রথম ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে নোভাভ্যাক্সের কার্যকারিতা দেখা গেছে ৯৬ শতাংশ। আর সব ধরনেরভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ৯০ শতাংশ।

গত বছর আমি লিখেছিলোম টিকার কার্যকারিতার জন্য পদ্ধতি কোনো বিষয় না। প্রথমত, আপনার টিকাটি অবশ্যই ভালো হতে হবে। তারপরতা দ্রুত বাজারে আনার জন্য বড় আকারের ট্রায়াল চালাতে হবে। ভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে এমন জায়গায় সময়মতো ট্রায়াল করতে হবে। আপনার টিকা যত ভালোই হোক না কেন, আপনি যদি ট্রায়াল না করেন, তাহলে আপনার টিকার কার্যকারিতা প্রমাণে সময় বেশি লাগবে।

টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য সময় নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে ফাইজার ও মডার্নার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল ২০২০ সালের গ্রীষ্মের (জুন থেকে আগস্ট) শেষ দিকে চালানো হয়। সে কারণেইপরবর্তী শরতে (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর) যখন করোনা ব্যাপকভাবে ছড়াতে শুরু করে সেই সময়টাকে ধরতে পেরেছিল তারা। কিন্তু ততদিনে নোভাভ্যাক্স মাত্র যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে তলিকা করা শেষ করেছে। এরপর ফেব্রুয়ারিতে করোনার সংক্রমনের হার পড়তে থাকে। ফলে নোভাভ্যাক্সের টিকার তৃতীয় ট্রায়াল করতে দেরি হয়ে যায়।

ব্যবসায়িক কৌশল ছিল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। টিকা তৈরির দৌড়ে জয়ী হতে গেলে দ্রুতগতিতে বিপুল সংখ্যায় নির্ভরযোগ্য মানের টিকার ডোজ উৎপাদনে সক্ষম হতে হবে। বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের সাথে কাজ করার চ্যালেঞ্জগুলোও মোকাবেলা করতে হবে। এগুলো সব একসঙ্গেই করতে হবে। জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেক নিজে একা এত কিছু, এত দ্রুত করতে পারতো না। গত অক্টোবরে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী উগুর শাহিনের কাছ থেকে জানা যায়, টিকার অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিশাল ক্লিনিক্যাল-ট্রায়াল চালানোর জন্য তারা ফাইজারের সাহায্য চেয়েছে।

শুধু এমআরএনএ পদ্ধতিতে টিকার উদ্ভাবন দিয়ে নয়, বরং সেই কৌশলগত অংশীদারিত্বের কল্যাণেই লক্ষ্য অর্জনে সমর্থ হয়বায়োএনটেক-ফাইজার। মডার্নাও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অফ হেলথের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সুফল পেয়েছে।

এবার দেখুন, গত বছর ৩০শে এপ্রিল বায়োটেক-ফাইজার প্রথম ট্রায়ালের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধন করে।একই সময়ে করে নোভাভ্যাক্সও।কিন্তু নোভাভ্যাক্স যদি বায়োএনটেকের মতো অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান যেমন ধরুন মার্কের সঙ্গে কাজ করতো তাহলে কিন্তু গল্পটা অন্যরকম হতে পারতো।

ফাইজার ও মডার্নার টিকা আগেই সাফল্য পাওয়ায়এমআরএনএ-পদ্ধতিতে তৈরি অন্য টিকাগুলোর থেকেও মনোযোগ সরে গেছে সবার। নোভাভ্যাক্সের টিকার কার্যকারিতার বিষয়ে ঘোষণা আসার দুইদিন পর কিওরভ্যাকেরও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ফল জানা গেলো। তবে তারকার্যকারিতা খুব দুর্বল। ৫০ শতাংশের কম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও এফডিএ’র বেধে দেওয়া ন্যূনতম মানের নিচে। কিওরভ্যাকের ট্রায়ালেরএই ফল বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করেছে, জানায় নিউ ইয়র্ক টাইমস। এইকিওরভ্যাককেই ডনাল্ড ট্রাম্প মহামারির শুরু দিকে যুক্তরাষ্ট্রে আনার চেষ্টা করেছিলেন। মহাকাশ ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক বলেছিলেন, তিনি টিকা প্রস্তুত করার জন্য অটোমেটেড আরএনএ মাইক্রোফ্যাক্টরির যোগান দেবেন। শেষ পর্যন্ত এগুলো কোনো কিছুইহয়নি। কিওরভ্যাকের এই পরিস্থিতিতে মহামারি বিশেষজ্ঞরা এমআরএনএ পদ্ধতিতে তৈরিশুধু ভালো উদাহরণগুলো নিয়ে কথা বলছেন। সে কারণেই যখন ফাইজার ও মডার্নার টিকা সফল হলো ওয়াশিংটন পোস্টে তখন বলা হলো, ঝুঁকি থাকা সত্ত্বে দ্রুত টিকা তৈরি করে বাজিমাত করেছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ মহামারী বিশেষজ্ঞঅ্যান্থনি ফাউচিও প্রশংসা করেছেন এমআরএনএ পদ্ধতিতে তৈরী ফাইজার ও মডার্নার টিকার। তিনি একে বলেছেন দুর্দান্ত এক সাফল্য। কিন্তু এমআরএনএ বাদে অন্য পদ্ধতিতে তৈরী টিকাগুলো নিয়ে তেমন আলোচনা নেই। এখন আমরা দেখছি কিউরভ্যাকের ক্ষেত্রে কী হয়েছে। সেই সঙ্গে এমআরএনএ পদ্ধতিতে তৈরী কিছু টিকা, যেগুলো ভালো করছে। ২০২০ সালের মে মাসে নয়টি গোষ্ঠী প্রাণিদেহে টিকার পরীক্ষা ‍শুরু করে। কয়েক মাসের মধ্যে অন্তত ছটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়ার কথা। কিন্তু বছর শেষে নন-এমআরএনএ গোত্রের ১৩টি টিকার বিপরীতে শুধু বায়োএনটেক-ফাইজার, মডার্না ও কিওরভ্যাক তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে পৌছেছে। প্রাণিদেহে পরীক্ষা চালানো নয়টি এমআরএনএ টিকার মধ্যে ২০২০ সালের মাঝামাঝি কার্যকারিতা দেখা গেছে শুধু বায়োএনটেক-ফাইজার এবং মডার্নার। আর গতানুগতিক, এমআরএনএ’র বাইরের পদ্ধতিতে তৈরী টিকার মধ্যে অন্তত নয়টির কার্যকারিতা দেখা গেছে।

এই নন-এমআরএনএ টিকাই বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে ব্যবহার হচ্ছে, যেগুলোর কয়েকটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহার করা হলেও ভালো ফল দিতে পারে। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচুর পরিমাণে ফাইজার ও মডার্নার টিকা আছে। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০ রাজ্যে টিকা নিয়েছে ৩৫ শতাংশেরও কম। কোভিড-১৯ টিকা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণার ওপর গত মে মাসে প্রকাশিত একটি আন্তর্জাতিক গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে, অনলাইনে সবচেয়ে প্রচলিত গুজবগুলোর অন্যতম ছিল এমআরএনএ টিকাৎ নাকি মানুষের বংশগত বৈশিষ্ট্য পাল্টে দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন(সিডিসি) তা নাকচ করে দিয়েছে। একটা সময় মনে হয়েছিল জনসন এন্ড জনসনের টিকা এ সমস্যা সমাধান করতে পারবে, যেহেতু এটি আরেকটি পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছিল। তবে তাদের অনেকগুলো টিকা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবং বিরল কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় সেই আশা পূরণ হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রে সিঙ্গেল ডোজের এই টিকা দেওয়া হয়েছে ৪ শতাংশেরও কম।

এই পরিপ্রেক্ষিতে নোভাভ্যাক্সের কার্যকারিতার খবর সবচেয়ে বড় সুসংবাদ। সম্প্রতি পাওয়া ফলাফলে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পাওয়া ফাইজার ও মডার্নার চেয়ে কম নয় এর কার্যকারিতা। এর সঙ্গে বাড়তি সুবিধা হচ্ছে, এটি বেশ পুরনো ও পরিচিত পদ্ধতিতে তৈরি করাহয়েছে। নোভাভ্যাক্স তৈরিতে যে প্রোটিন-সাবইউনিট অ্যাপ্রোচ ব্যবহার করেছে, তা হেপাটাইটিস বি’র টিকা তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। ১৯৮৬ সাল থেকেই এ পদ্ধতিরব্যবহার হয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সব পাবলিক স্কুলে হুপিং কাশির যে টিকা দেওয়া হয় সেটাও এই পদ্ধতিতেই করা। ফলে যারা এমআরএনএ টিকা নিয়ে সংশয়ে আছেন, তারা অনায়াসে নোভাভ্যাক্সের এই টিকা নিতে পারেন।

অনুমোদিত এমআরএনএ টিকা দুটির তুলনায় নোভাভ্যাক্স টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও যথেষ্ট কম। গত সপ্তাহেদেখা গেছে, নোভাভ্যাক্সের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারীদের মধ্যে অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ৪০ শতাংশের কম। সেখানে মডার্নার ক্ষেত্রে তা ৬৫ শতাংশ এবং ফাইজারের ক্ষেত্রে ৫৫ শতাংশের বেশি। যুক্তরাজ্যে নোভাভ্যাক্সের কার্যকারিতা পরীক্ষায় পরিচালিত প্রথম ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা যায় ক্লান্তিসহ অন্যান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নোভাভ্যাক্সে শুধু যে কম তা-ই নয়, মৃদুও বটে। ঘন্টা হিসেবে মজুরিতে যারা কাজ করে তাদের এমনিতেইকোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কিন্তু টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কাজ হারানোর ভয়ে তাদের মধ্যে তাদের টিকা নেওয়ার প্রবণতা কম। কোভিডের টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া একটি বড় বাধা। সিডিসি জরিপ অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ বছরের নিচে প্রায় অর্ধেকই টিকা নিয়েছে বা নিতে আগ্রহী। কিন্তু বাকিদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন।

আমাকে ভুল বুঝবেন না। ফাইজার এবং মডার্নার টিকা এই মহামারীতে অসাধারণ জীবন রক্ষাকারী ভূমিকা পালন করেছে। তবে

এখন টিকার বেশ কিছু কার্যকর বিকল্পের মধ্যে, নোভাভ্যাক্স উচ্চ কার্যকারিতা এবং নিম্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সমন্বয়ে টিকা তৈরি করেছে। আপাতত, এটিই আমাদের কাছে সেরা কোভিড-১৯ এর টিকা।

[হিল্ডা ব্যাস্টিয়ান বিজ্ঞানী, লেখক। বর্তমানে স্বাস্থ্যপণ্য বিষয়ক আইনজীবী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের পাবমেড হেলথ প্রজেক্টের এডিটর ছিলেন] (মূলানুবাদ: মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক)

back to top