alt

সাময়িকী কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

বড়শিগাঁথা শীতসকাল
শেলী সেনগুপ্তা

কুয়াশাঘেরা জলের ভেতর

ডুবেছিলো আস্ত একটি শীতকাল

বড়শি গেঁথে তুলতেই

শুনিÑ

ভেজা শাড়ির সোঁদা গন্ধ

আর

মাটির গল্পকথা

রোদশিকারি মাছের ঝাঁক ভাসছে জলের ওপর

এক পায়ে দাঁড়ানো বক ভুলেছে জলকেলির কথা,

এই দৃশ্য দেখে কেউ কেউ

মানুষ এবং প্রকৃতির মেলবন্ধন খুঁজে

কোথাও কিছু নেই,

তবুও উত্তরের হাওয়া দেখছেÑ

ভেজা শরীরী বাগানের

আনাচে কানাচে জেগে ওঠা

কিছু নির্বিকার চুম্বন

আজ সকালের ঘুম যাপনে রোদ্দুরও মশগুল...

গ্র্যাভিটি হোল
অনিল সেন

তোমাকে না বলা কথাগুলো আমাকে যজ্ঞের

আগুনে নিবেদন করেছে।

বহুদিন পর তুমি দৃষ্টি ছিঁড়ে সম্মুখধ্বনিতে

দাঁড়ালে।

না বলা কথাগুলো লজ্জায় মুখ ফেরাতে চায় না

দুচোখে আঁধার ভরা দৃষ্টি খোলা

শুধু আমি থেকে গেলাম তুমি হারা।

যেখানে বসে দুজনে মুখ ফিরিয়ে কথা হতো

সেখানকার জায়গাটা এখন গ্র্যাভিটি হোল

পাখপাখালিরা প্রতিদিন সেখানে স্নান সেরে

মুখ ফিরিয়ে তুমুল গল্পে মজে।

বলা কথাগুলো আর কথার মতো শোনায় না

মুখটা মৃত্যুর পরের মুখের মতো

ঠিক ঠাহর করা যায় না।

যে কণ্ঠস্বরে অভ্যস্ত সেটা এখন

খুব বেসুরো ভাবে কানে লাগে

সন্ধ্যাবেলায় ভৈরবী গাওয়ার মতো।

ইদানীং ইমন রাগের তীব্র স্বর আমাকে গভীর

তলে আটকিয়ে রাখে

সেখানে সাঁতার কেটে একটার পর একটা

মৎস্য শিকার করি।

তুমি আমার মৎস্যমুখে নিমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলে

আমার এইটুকু মনে আছে।

তুমি না এসে না বলা কথাগুলোকে পাঠিয়ে দিয়েছ

আমার গভীর নিস্তব্ধতায়।

ইশকের সুগন্ধ
সায়্যিদ লুমরান

পবিত্র পদ্মের মত মেলে দাও তোমার হৃদয়:

বন্ধু,

সত্যের সন্ধানে মরমের শ্রম লাগে, মগজের নয়।

ইন্দ্রিয়কে নয়,

অন্তরকেই মানো তোমার প্রথম মুরশিদ।

মুখোমুখি হও, ধরো বাজি-রুহ ও নফসের দ্বন্দ্বে।

যুদ্ধের জমিনে রুহই হবে জয়ী ইশকের সুগন্ধে।

সেই ইশকের গুনেই রুহকে ভরো আরশের খামে,

জেনো নিজেকে, যা তোমাকে পৌঁছে দিবে এলাহী মোকামে।

অন্ত্যমিল
হাসিদা মুন

ছন্দের যুগল সন্ধি সমতালে দোলে

প্রচীন চীনের থেকে অপর ভাষায়

আরবি ছড়ার ছন্দÑ সুরেলা ‘কাসিদা’

পেরিয়ে শতাব্দী-পথ পৌঁছাল বাংলায়

আদিতে সাহিত্য ছিল মুখে-মুখে ফেরা

এক দাঁড়িদুই দাঁড়ি, ভাবের কথন

চরণে স্তবকে পর্বে, ভাষার লালিত্যে

কবির নন্দন চিন্তাÑ ধ্রুপদী প্রকাশ

জো-মেলানো পাখি, যেন দম্পতির

সুখের প্রশান্তি-প্রীতিÑ ঋদ্ধ অন্ত্যমিলে...

উপেক্ষার দেউলদ্বারে জীবনানন্দ এসেছিলো
রোখসানা ইয়াসমিন মণি

কতো বেদনারা ঘুমিয়ে গেছে আজ রাতে

মেঘের ফিসফাসে লুকিয়ে আছে দীর্ঘশ্বাস

ঘুম চোখেরা কাকে যেনো বের করে আনে

স্মৃতিচিহ্ন খুলে দেখি সে জীবনানন্দ দাশ।

নভেম্বরের বৃষ্টির মতো একজোড়া চোখ

উপেক্ষার বেদনায় দাঁড়িয়ে দেউলদ্বারে;

প্রিয় ঘামগন্ধ লুকিয়ে রেখে হৃদয় তলায়

মৃতগাঙে কে আগুন জ্বালাতে পারে

দগ্ধময় জীবনকে মিছে ফাঁকি দিয়ে

কে পারে দাঁড়াতে মেঘের কিনারে

সে কি মৃত্তিকার গোপন শেকড়

যে বহু তাপ সয়ে উদ্ভিদ প্রসব করে

ছবি

দিনু বিল্লাহ: জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে

জেলার সিরিজ কবিতা

ছবি

লাল লুঙ্গি

সাময়িকী কবিতা

ছবি

নির্মলেন্দু গুণের রাজনৈতিক বলয় অতিক্রমের ক্ষমতা

ছবি

কেরাসিন বাত্তি ও লালচুলা মেয়েটি

ছবি

তাঁর সমকালীনদের চোখে

ছবি

নিজের মতো করেই সঠিক পথটি বেছে নিতে হবে

ছবি

সুকান্ত ভট্টাচার্য: বহুচর্চিত, বহুপঠিত এক অনন্য কবি

ছবি

চিত্রাঙ্গদা: দ্বৈত সত্তার শিল্পস্মারক

ছবি

খালেদ হামিদীর দৌত্যে ওরহান পামুক

সাময়িকী কবিতা

ছবি

মেঘলা আকাশ বৃষ্টি

ছবি

স্মৃতি ভদ্র

ছবি

হৃদয়রেখা

ছবি

সুরমা বুজি অথবা কাচপোকা

ছবি

শ্রাবণের জোছনায় হেসেছিল নার্গিস

ছবি

যোগাযোগ

ছবি

বাংলাদেশের স্বাপ্নিক কবি নজরুল

ছবি

ইলিয়াসের আশ্চর্য নিরীক্ষা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

মাটি ও মানুষের কথক

ছবি

অনাবিল প্রাচুর্যে ঋদ্ধ নজরুল প্রতিভা

ছবি

নজরুল: চির-বিস্ময়

ছবি

জীবনের সাথে সংযোগ ঘটল কই

পোয়েমস দ্যাট কেম টু মি

ছবি

লালন ও রবীন্দ্রনাথ অন্তর্জগতের আলাপন

ছবি

বংশধারা

ছবি

অনন্ত নক্ষত্র বিথিতে এক নির্বাসিত কবির যাত্রা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

তিন প্রহরের শকুন

ছবি

ইলিয়াসের আশ্চর্য নিরীক্ষা

ছবি

যতীন সরকার : সাম্যবাদের চেতনায় একজীবন

ছবি

‘প্রান্তিক মানুষের হারানোর কিছু নেই’

ছবি

ভাঙা ছাদ

ছবি

চন্দ্রাবতী : মধ্যযুগের প্রথম মহিলা কবি

tab

সাময়িকী কবিতা

বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

বড়শিগাঁথা শীতসকাল
শেলী সেনগুপ্তা

কুয়াশাঘেরা জলের ভেতর

ডুবেছিলো আস্ত একটি শীতকাল

বড়শি গেঁথে তুলতেই

শুনিÑ

ভেজা শাড়ির সোঁদা গন্ধ

আর

মাটির গল্পকথা

রোদশিকারি মাছের ঝাঁক ভাসছে জলের ওপর

এক পায়ে দাঁড়ানো বক ভুলেছে জলকেলির কথা,

এই দৃশ্য দেখে কেউ কেউ

মানুষ এবং প্রকৃতির মেলবন্ধন খুঁজে

কোথাও কিছু নেই,

তবুও উত্তরের হাওয়া দেখছেÑ

ভেজা শরীরী বাগানের

আনাচে কানাচে জেগে ওঠা

কিছু নির্বিকার চুম্বন

আজ সকালের ঘুম যাপনে রোদ্দুরও মশগুল...

গ্র্যাভিটি হোল
অনিল সেন

তোমাকে না বলা কথাগুলো আমাকে যজ্ঞের

আগুনে নিবেদন করেছে।

বহুদিন পর তুমি দৃষ্টি ছিঁড়ে সম্মুখধ্বনিতে

দাঁড়ালে।

না বলা কথাগুলো লজ্জায় মুখ ফেরাতে চায় না

দুচোখে আঁধার ভরা দৃষ্টি খোলা

শুধু আমি থেকে গেলাম তুমি হারা।

যেখানে বসে দুজনে মুখ ফিরিয়ে কথা হতো

সেখানকার জায়গাটা এখন গ্র্যাভিটি হোল

পাখপাখালিরা প্রতিদিন সেখানে স্নান সেরে

মুখ ফিরিয়ে তুমুল গল্পে মজে।

বলা কথাগুলো আর কথার মতো শোনায় না

মুখটা মৃত্যুর পরের মুখের মতো

ঠিক ঠাহর করা যায় না।

যে কণ্ঠস্বরে অভ্যস্ত সেটা এখন

খুব বেসুরো ভাবে কানে লাগে

সন্ধ্যাবেলায় ভৈরবী গাওয়ার মতো।

ইদানীং ইমন রাগের তীব্র স্বর আমাকে গভীর

তলে আটকিয়ে রাখে

সেখানে সাঁতার কেটে একটার পর একটা

মৎস্য শিকার করি।

তুমি আমার মৎস্যমুখে নিমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলে

আমার এইটুকু মনে আছে।

তুমি না এসে না বলা কথাগুলোকে পাঠিয়ে দিয়েছ

আমার গভীর নিস্তব্ধতায়।

ইশকের সুগন্ধ
সায়্যিদ লুমরান

পবিত্র পদ্মের মত মেলে দাও তোমার হৃদয়:

বন্ধু,

সত্যের সন্ধানে মরমের শ্রম লাগে, মগজের নয়।

ইন্দ্রিয়কে নয়,

অন্তরকেই মানো তোমার প্রথম মুরশিদ।

মুখোমুখি হও, ধরো বাজি-রুহ ও নফসের দ্বন্দ্বে।

যুদ্ধের জমিনে রুহই হবে জয়ী ইশকের সুগন্ধে।

সেই ইশকের গুনেই রুহকে ভরো আরশের খামে,

জেনো নিজেকে, যা তোমাকে পৌঁছে দিবে এলাহী মোকামে।

অন্ত্যমিল
হাসিদা মুন

ছন্দের যুগল সন্ধি সমতালে দোলে

প্রচীন চীনের থেকে অপর ভাষায়

আরবি ছড়ার ছন্দÑ সুরেলা ‘কাসিদা’

পেরিয়ে শতাব্দী-পথ পৌঁছাল বাংলায়

আদিতে সাহিত্য ছিল মুখে-মুখে ফেরা

এক দাঁড়িদুই দাঁড়ি, ভাবের কথন

চরণে স্তবকে পর্বে, ভাষার লালিত্যে

কবির নন্দন চিন্তাÑ ধ্রুপদী প্রকাশ

জো-মেলানো পাখি, যেন দম্পতির

সুখের প্রশান্তি-প্রীতিÑ ঋদ্ধ অন্ত্যমিলে...

উপেক্ষার দেউলদ্বারে জীবনানন্দ এসেছিলো
রোখসানা ইয়াসমিন মণি

কতো বেদনারা ঘুমিয়ে গেছে আজ রাতে

মেঘের ফিসফাসে লুকিয়ে আছে দীর্ঘশ্বাস

ঘুম চোখেরা কাকে যেনো বের করে আনে

স্মৃতিচিহ্ন খুলে দেখি সে জীবনানন্দ দাশ।

নভেম্বরের বৃষ্টির মতো একজোড়া চোখ

উপেক্ষার বেদনায় দাঁড়িয়ে দেউলদ্বারে;

প্রিয় ঘামগন্ধ লুকিয়ে রেখে হৃদয় তলায়

মৃতগাঙে কে আগুন জ্বালাতে পারে

দগ্ধময় জীবনকে মিছে ফাঁকি দিয়ে

কে পারে দাঁড়াতে মেঘের কিনারে

সে কি মৃত্তিকার গোপন শেকড়

যে বহু তাপ সয়ে উদ্ভিদ প্রসব করে

back to top