ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
পাকিস্তানের তেহরিক-ই-তালেবানের (টিটিপি) হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত তরুণ রতন ঢালীর বাড়ি গোপালগঞ্জে। ওই তরুণ দেড় বছরের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ ছিলেন বলে তার পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে। গত বছরের রমজানের পর তার সঙ্গে আর কথা হয়নি পরিবারের কারও। আর ওই তরুণের নিহতের খবর তার বাবা ছাড়া পরিবারের কোনো সদস্য জানেন না।
তবে টিটিপি’র হয়ে যুদ্ধ করে নিহত রতনের পরিবারে শোক থাকলেও তারা তা লুকিয়ে রাখছেন এই ভেবে যে?তাদের সন্তান কোনো ভালো কাজের জন্য জীবন দেয়নি। যারা তাকে এ কাজের সঙ্গে জড়িয়েছে, তাদের বিচারের দাবি জানিয়েছে পরিবারটি। গোপালগঞ্জ জেলার মকুসুদপুর ?উপজেলার হরিশ্চর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার ঢালী স্ত্রী আর এক মেয়েকে নিয়ে একটি টিনের ঘরে বসবাস করেন। আনোয়ার ঢালীর ৪ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান রতন ঢালী। রতন ঢাকার খিলগাঁওয়ের একটি মেডিকেল সেন্টারে কাজ করতো। আর বাবা আনোয়ার ঢালী ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। এরপর বাবা আনোয়ার ঢালী স্ত্রীকে নিয়ে মকুসুদপুর চলে আসলেও ছেলে রতন ঢাকা থেকে যান । সর্বশেষ ২০২৪ সালের রমজান শুরুর ৩ দিন আগে ১০ এপ্রিল বাড়িতে আসেন রতন। তারপর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি।
মেডিকেল সেন্টারে কাজ করা ফয়সালকে নিয়ে রতন গত বছরের ২৭ মার্চ বেনাপোল বর্ডার দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে তারা অবৈধভাবে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তানে যান এবং তারা টিটিপিতে যোগ দেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানে ওই তরুণ এবং ফয়সাল হোসেন নামে আরেক বাংলাদেশি নিহত হন। রতন শেষবার তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ২০২৪ সালের ১০ এপ্রিল। তখন তিনি পরিবারকে জানান, ভারতে আছেন, শিগগিরই দুবাই যাবেন।
নিহত রতনের বাবা আনোয়ার ঢালী বলেন, রতন শেষবার তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ২০২৪ সালের ১০ এপ্রিল। তখন তিনি পরিবারকে জানান, ভারতে আছেন, শিগগিরই দুবাই যাবেন। এরপর আর রতনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি পরিবারের। এরপর কয়েকদিন আগে পুলিশ তাদের বাসায় আসলে রতনের নিহত হওয়ার খবর পান তারা। রতন কীভাবে পাকিস্তান গেল আর কীভাবে টিটিপির সঙ্গে যোগ দিলো, তা তারা জানেন না। যারা রতনকে এ কাজের সঙ্গে জড়িত করেছে, তাদের বিচারের দাবি জানান রতনের বাবা আনোয়ার ঢালী।
রতনের মা সেলিনা বেগম বলেন, ২০২৪ সালের রোজার ঈদে (১০ এপ্রিল) শেষবার রতনের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তখন রতন বলেছিল, ‘মা, আমি দুবাই যাচ্ছি, এখন দিল্লিতে আছি।’ তখন আমি জানতে চাই, দুবাই যাওয়ার জন্য এত টাকা কীভাবে পেলি। তখন রতন বলে, ‘যেখানে কাজ করছি, তারাই টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।’ এরপর আর তার সঙ্গে কথা হয়নি।
প্রসঙ্গত, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে দেশটির যৌথ নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই বাংলাদেশি তরুণ নিহত হন। নিহতদের একজন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রতন ঢালী (২৯)। অন্যজন ফয়সাল হোসেন (২২)। বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (সিটিটিসি) ইউনিট বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫
পাকিস্তানের তেহরিক-ই-তালেবানের (টিটিপি) হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত তরুণ রতন ঢালীর বাড়ি গোপালগঞ্জে। ওই তরুণ দেড় বছরের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ ছিলেন বলে তার পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে। গত বছরের রমজানের পর তার সঙ্গে আর কথা হয়নি পরিবারের কারও। আর ওই তরুণের নিহতের খবর তার বাবা ছাড়া পরিবারের কোনো সদস্য জানেন না।
তবে টিটিপি’র হয়ে যুদ্ধ করে নিহত রতনের পরিবারে শোক থাকলেও তারা তা লুকিয়ে রাখছেন এই ভেবে যে?তাদের সন্তান কোনো ভালো কাজের জন্য জীবন দেয়নি। যারা তাকে এ কাজের সঙ্গে জড়িয়েছে, তাদের বিচারের দাবি জানিয়েছে পরিবারটি। গোপালগঞ্জ জেলার মকুসুদপুর ?উপজেলার হরিশ্চর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার ঢালী স্ত্রী আর এক মেয়েকে নিয়ে একটি টিনের ঘরে বসবাস করেন। আনোয়ার ঢালীর ৪ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান রতন ঢালী। রতন ঢাকার খিলগাঁওয়ের একটি মেডিকেল সেন্টারে কাজ করতো। আর বাবা আনোয়ার ঢালী ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। এরপর বাবা আনোয়ার ঢালী স্ত্রীকে নিয়ে মকুসুদপুর চলে আসলেও ছেলে রতন ঢাকা থেকে যান । সর্বশেষ ২০২৪ সালের রমজান শুরুর ৩ দিন আগে ১০ এপ্রিল বাড়িতে আসেন রতন। তারপর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি।
মেডিকেল সেন্টারে কাজ করা ফয়সালকে নিয়ে রতন গত বছরের ২৭ মার্চ বেনাপোল বর্ডার দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে তারা অবৈধভাবে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তানে যান এবং তারা টিটিপিতে যোগ দেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানে ওই তরুণ এবং ফয়সাল হোসেন নামে আরেক বাংলাদেশি নিহত হন। রতন শেষবার তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ২০২৪ সালের ১০ এপ্রিল। তখন তিনি পরিবারকে জানান, ভারতে আছেন, শিগগিরই দুবাই যাবেন।
নিহত রতনের বাবা আনোয়ার ঢালী বলেন, রতন শেষবার তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ২০২৪ সালের ১০ এপ্রিল। তখন তিনি পরিবারকে জানান, ভারতে আছেন, শিগগিরই দুবাই যাবেন। এরপর আর রতনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি পরিবারের। এরপর কয়েকদিন আগে পুলিশ তাদের বাসায় আসলে রতনের নিহত হওয়ার খবর পান তারা। রতন কীভাবে পাকিস্তান গেল আর কীভাবে টিটিপির সঙ্গে যোগ দিলো, তা তারা জানেন না। যারা রতনকে এ কাজের সঙ্গে জড়িত করেছে, তাদের বিচারের দাবি জানান রতনের বাবা আনোয়ার ঢালী।
রতনের মা সেলিনা বেগম বলেন, ২০২৪ সালের রোজার ঈদে (১০ এপ্রিল) শেষবার রতনের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তখন রতন বলেছিল, ‘মা, আমি দুবাই যাচ্ছি, এখন দিল্লিতে আছি।’ তখন আমি জানতে চাই, দুবাই যাওয়ার জন্য এত টাকা কীভাবে পেলি। তখন রতন বলে, ‘যেখানে কাজ করছি, তারাই টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।’ এরপর আর তার সঙ্গে কথা হয়নি।
প্রসঙ্গত, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে দেশটির যৌথ নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই বাংলাদেশি তরুণ নিহত হন। নিহতদের একজন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রতন ঢালী (২৯)। অন্যজন ফয়সাল হোসেন (২২)। বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (সিটিটিসি) ইউনিট বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।