alt

শীতে খেজুরের রস-গুড়ের স্বাদ জোগাতে ব্যস্ত গাছিরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, নওগাঁ : মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

রাতের শেষভাগে হালকা শীত, সকালে ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু আর ভোরের কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আমেজ। ফলে গ্রামীণ জনপদে এখন শীতের আগমনী হাওয়া বইছে। শীতের এই আবহে সবকিছু যেন বদলে যেতে শুরু করেছে। জানান দিচ্ছে খেজুরের রস ও গুড়ের স্বাদের কথা।

শীত এখনও না নামলেও খেজুরের রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেছেন নওগাঁর গাছিরা। আর কদিন পর শুরু হবে রস সংগ্রহ, তাই গাছিদেরও বেড়েছে ব্যস্ততা। আগামী ৪-৫ মাস চলবে রস সংগ্রহের কর্মযজ্ঞ, যা থেকে থেকে তৈরি হয় সুমিষ্ট পাটালি ও লালি গুড়।

নওগাঁর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়- জমির আইল, রাস্তার পাশ এবং পুকুর পাড়ে বছরজুড়ে অযত্ন-অবহেলায় খেজুর গাছগুলো পড়ে থাকলেও এখন কদর বেড়েছে। কারণ এসব গাছ দিবে শীত মৌসুমজুড়ে আহরিত সুমিষ্ট রস। তাই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এক গাছ থেকে অন্য গাছে ডাল কেটে পরিষ্কার করতে ছুটছেন গাছিরা। হাতে দা, কোমরে রশি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ তৈরি করছেন তারা। এরই মধ্যে অনেকে রস সংগ্রহের জন্য গাছে নলি গাঁথা শুরু করেছেন।

গাছিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে খেজুরের গাছ তোলা (গাছের উপরিভাগ চেঁছে পরিষ্কার করা) হয়। কয়েকদিন রেখে দিয়ে গাছের তোলা অংশ শুকানো হয়। এরপর খেজুরগাছ চেঁছে ওপরের দিকে দুটি চোখ কাটা হয়। নিচের দিকে বসানো হয় নলি। পরে সেখান থেকে রস সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। শীত মৌসুমে ৪-৫ মাস খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা যায়। যত বেশি শীত পড়ে, গাছ থেকে তত বেশি রস সংগ্রহ করা হয়। তবে গ্রামের মাঠে আর মেঠোপথের ধারে কিছু গাছ থাকলে বিভিন্ন কারণে দিনে দিনে কমছে খেজুরের গাছের সংখ্যা বলে জানান তারা।

আত্রাই উপজেলা সাহাগোলা এলাকায় নাটোরের লালপুর থেকে এসেছেন গাছি সোহেল রানা। তিনি ২৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করেন। তিনি বলেন, ‘এ বছরও ৭০টির বেশি খেজুরের গাছ তোলার (পরিচর্যার) কাজ শুরু করেছি। আমি গুড় তৈরি করি। শীত মৌসুমে ভালো আয় হয়। খেজুরের গাছ কেটেই বছরের ৬ মাস সংসার চালাই। এখন নতুন গাছি আর পাওয়া যায় না। কেউ এসব কাজে আসতে চান না। খেজুর গাছও কমছে, গাছিও হারিয়ে যাচ্ছে।’

সাহাগোলা এলাকার আরেক গাছি আব্দুল খালেক বলেন, ‘২০টি গাছ থেকে এবার রস সংগ্রহ করবো। নিজের ১০ গাছ আর ১০ গাছ চুক্তি করে নিয়েছি এক গাছ মালিকের কাছে থেকে।

প্রতি গাছ থেকে মালিককে দিতে হবে ৫ কেজি করে লালি। এক খেজুরগাছ থেকে প্রতিদিন চার কেজির মতো রস পাওয়া যায়। আর ৬ কেজি রস থেকে ১ কেজি গুড় পাওয়া যায়। লালির ক্ষেত্রে ৩ কেজি রসে মেলে ১ কেজি। প্রতি কেজি গুড় ১৮০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়।’

সদর উপজেলার দিঘিরপাড় গ্রামের গাছি আকামত আলী বলেন, ‘আমি আগে প্রায় ১০০ গাছ কাটতাম। এখন সেটি এসে দাঁড়িয়েছে ৩০-৪০টি। শীতের শুরুতে রস কম পাওয়া যায়। যত বেশি শীত পড়ে, গাছ থেকে তত বেশি রস পাওয়া যায়। কাঁচা রস বিক্রির পাশাপাশি পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করি। তবে বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে, হয়তো এক সময় আমাদের এলাকায় খেজুর গাছ খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

ছবি

চাটমোহরের কুমড়ো বড়ি যাচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকা

ছবি

ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের নির্মাণ কাজ বন্ধ

ছবি

হাটহাজারীতে দুই দিনে ৩ অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার

ছবি

প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে চাটমোহরে বিএনপির সমাবেশ

ছবি

মোরেলগঞ্জে শিক্ষকের মারপিটে ছাত্রীর প্রানহানির অভিযোগ

ছবি

ভূয়া জন্মনিবন্ধন তৈরি রৌমারীতে ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

ছবি

তরুণ উদ্যোক্তা পরানের সাফল্য : নদীতীরে হাঁসের খামারে ভাগ্যের দিগন্ত

ছবি

সিরাজগঞ্জে হাসিনা-কাদেরসহ সাড়ে ৫শ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

ছবি

শ্রীপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৬৮ পরিবারের মাঝে ছাগল বিতরণ

চাটখিলে চিহ্নিত মাদক কারবারি ইয়াবাসহ আটক

সিরাজগঞ্জে কৃষক-কৃষাণী প্রশিক্ষণ

কালিয়াকৈরে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

ছবি

কুমিল্লায় গোখরা সাপসহ ১৭টি বাচ্চা উদ্ধার

ছবি

বোয়ালখালীতে আগাম সরিষার জমি প্রস্তুতে ব্যস্ত কৃষক

ছবি

শক্তিশালী বোমা মেশিনে বালি অপসারণ, ঝুঁকিতে তিস্তা ব্যারেজ

ছবি

নিয়ম না মেনেই সড়কের পার্শ্বে দ্বিতল ভবন নির্মাণ, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

ছবি

সুপেয় পানির দাবিতে সোচ্চার মোরেলগঞ্জবাসী

মহেশপুর ভূমি অফিসের কর্মকর্তা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত

ছবি

সাবেক এমপি সাদেক খানের ১২ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

নিরাপত্তার দাবিতে গৃহবধুর সংবাদ সম্মেলন

ছবি

নারীকে বাঁচাতে গিয়ে ২ তরুণের মৃত্যু

ছবি

ধনবাড়ীতে পিকাপ-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৪

তাহিরপুরে ইয়াবাসহ ব্যবসায়ী আটক

ছবি

রাণীনগরে গোয়াল ঘরের তালা কেটে গরু চুরি

ছবি

বরুড়ার কচুর লতি বিদেশে

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু

ছবি

সিরাজগঞ্জে গৃহবধু হত্যায় স্বামী ও ননদের যাবজ্জীবন

ছবি

হবিগঞ্জে ইসকন মন্দিরে অগ্নিকান্ড

ছবি

নোয়াখালীতে ইয়াবাসহ দুই রোহিঙ্গা যুবক আটক

ছবি

কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩, আহত ৫

ছবি

সিরাজগঞ্জের রোপা আমন কাটা শুরু, ভালো ফলনে খুশি কৃষক

ছবি

চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে নারীসহ দুজনের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

পলাশের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ এখন মরা গাঙ

ছবি

ঠিকাদার লাপাত্তা, খুলনায় বন্ধ দুই উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ

ছবি

চকরিয়ায় ইয়াংছা সড়কে রাত নামলেই ডাকাত আতঙ্ক

ছবি

ডিমলায় কৃষকেদের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ

tab

শীতে খেজুরের রস-গুড়ের স্বাদ জোগাতে ব্যস্ত গাছিরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, নওগাঁ

মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

রাতের শেষভাগে হালকা শীত, সকালে ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু আর ভোরের কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আমেজ। ফলে গ্রামীণ জনপদে এখন শীতের আগমনী হাওয়া বইছে। শীতের এই আবহে সবকিছু যেন বদলে যেতে শুরু করেছে। জানান দিচ্ছে খেজুরের রস ও গুড়ের স্বাদের কথা।

শীত এখনও না নামলেও খেজুরের রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেছেন নওগাঁর গাছিরা। আর কদিন পর শুরু হবে রস সংগ্রহ, তাই গাছিদেরও বেড়েছে ব্যস্ততা। আগামী ৪-৫ মাস চলবে রস সংগ্রহের কর্মযজ্ঞ, যা থেকে থেকে তৈরি হয় সুমিষ্ট পাটালি ও লালি গুড়।

নওগাঁর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়- জমির আইল, রাস্তার পাশ এবং পুকুর পাড়ে বছরজুড়ে অযত্ন-অবহেলায় খেজুর গাছগুলো পড়ে থাকলেও এখন কদর বেড়েছে। কারণ এসব গাছ দিবে শীত মৌসুমজুড়ে আহরিত সুমিষ্ট রস। তাই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এক গাছ থেকে অন্য গাছে ডাল কেটে পরিষ্কার করতে ছুটছেন গাছিরা। হাতে দা, কোমরে রশি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ তৈরি করছেন তারা। এরই মধ্যে অনেকে রস সংগ্রহের জন্য গাছে নলি গাঁথা শুরু করেছেন।

গাছিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে খেজুরের গাছ তোলা (গাছের উপরিভাগ চেঁছে পরিষ্কার করা) হয়। কয়েকদিন রেখে দিয়ে গাছের তোলা অংশ শুকানো হয়। এরপর খেজুরগাছ চেঁছে ওপরের দিকে দুটি চোখ কাটা হয়। নিচের দিকে বসানো হয় নলি। পরে সেখান থেকে রস সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। শীত মৌসুমে ৪-৫ মাস খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা যায়। যত বেশি শীত পড়ে, গাছ থেকে তত বেশি রস সংগ্রহ করা হয়। তবে গ্রামের মাঠে আর মেঠোপথের ধারে কিছু গাছ থাকলে বিভিন্ন কারণে দিনে দিনে কমছে খেজুরের গাছের সংখ্যা বলে জানান তারা।

আত্রাই উপজেলা সাহাগোলা এলাকায় নাটোরের লালপুর থেকে এসেছেন গাছি সোহেল রানা। তিনি ২৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করেন। তিনি বলেন, ‘এ বছরও ৭০টির বেশি খেজুরের গাছ তোলার (পরিচর্যার) কাজ শুরু করেছি। আমি গুড় তৈরি করি। শীত মৌসুমে ভালো আয় হয়। খেজুরের গাছ কেটেই বছরের ৬ মাস সংসার চালাই। এখন নতুন গাছি আর পাওয়া যায় না। কেউ এসব কাজে আসতে চান না। খেজুর গাছও কমছে, গাছিও হারিয়ে যাচ্ছে।’

সাহাগোলা এলাকার আরেক গাছি আব্দুল খালেক বলেন, ‘২০টি গাছ থেকে এবার রস সংগ্রহ করবো। নিজের ১০ গাছ আর ১০ গাছ চুক্তি করে নিয়েছি এক গাছ মালিকের কাছে থেকে।

প্রতি গাছ থেকে মালিককে দিতে হবে ৫ কেজি করে লালি। এক খেজুরগাছ থেকে প্রতিদিন চার কেজির মতো রস পাওয়া যায়। আর ৬ কেজি রস থেকে ১ কেজি গুড় পাওয়া যায়। লালির ক্ষেত্রে ৩ কেজি রসে মেলে ১ কেজি। প্রতি কেজি গুড় ১৮০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়।’

সদর উপজেলার দিঘিরপাড় গ্রামের গাছি আকামত আলী বলেন, ‘আমি আগে প্রায় ১০০ গাছ কাটতাম। এখন সেটি এসে দাঁড়িয়েছে ৩০-৪০টি। শীতের শুরুতে রস কম পাওয়া যায়। যত বেশি শীত পড়ে, গাছ থেকে তত বেশি রস পাওয়া যায়। কাঁচা রস বিক্রির পাশাপাশি পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করি। তবে বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে, হয়তো এক সময় আমাদের এলাকায় খেজুর গাছ খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

back to top