alt

অর্থ-বাণিজ্য

দেশে রপ্তানির ৯০০ ডলার অর্থ আর ফেরত আসেনি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩

২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ থেকে ৫ হাজার ৫৫৫ কোটি ৮৭ লাখ ৭০ হাজার (৫৫ দশমিক ৫৫ বিলিয়নের বেশি) ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তবে বাংলাদেশ বলছে, ৫৫ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হলেও ফেরত এসেছে ৪৬ বিলিয়র (৪৬ হাজার) ডলারের আয়। ৯ বিলিয়ন (৯ শত ডলারের) সমান আয় ফেরত আসেনি দেশে। এই অর্থ পাচার হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হকের রপ্তানি আয়ে ফারাক কেনÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে সেই পরিমাণ আয় দেশে আসেনি। আবার অনেক ক্ষেত্রে রপ্তানির পণ্যমূল্য পরিশোধের জন্য ইচ্ছা করে সময় বাড়িয়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যের আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে মরক্কো গিয়েছিলেন এবং সেই বিষয়ে ধারণা দিতেই বৈঠক হয়েছে ব্যাংকের এমডি সঙ্গে। এতে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক সংকটগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এছাড়া আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছে এবং সংস্থাটির ঋণের শর্তাবলি কতটা পূরণ হয়েছে, তা নিয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে। দেশের কয়েকটি ব্যাংকের এমডিদের সঙ্গেও আইএমএফ কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকে আইএমএফের সঙ্গে ব্যাংকের এমডিদের কী আলোচনা হয়েছে, সেই বিষয়ে তারা গভর্নরকে অবহিত করেন।

বৈঠকে দেশের সার্বিক আর্থিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বোরাপ করা হয়েছে মূল্যস্ফীতির। মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যা যা পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেই বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমানোই এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য। এটি কমাতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেই সম্পর্কে আজকের বৈঠকে ব্যাংকগুলোকে অবহিত করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হয়তো অন্যান্য ক্ষেত্রেও কিছু প্রভাব পড়বে। ইতোমধ্যে আমানতের সুদহার ও ট্রেজারি বিল বন্ডের রেট বাড়ানো হয়েছে। আমরা এই রেটগুলো বাড়িয়ে টাকাকে আরও বেশি এক্সপেনসিভ করতে চাচ্ছি। এর ফলে নতুন ঋণের পরিমাণ কমবে ও মার্কেটে টাকার সরবরাহ কমবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, গত জুন ও জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমার পর আগস্ট মাসে তা আবার বেড়েছে। আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। এ সময় দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হঠাৎ অনেকটা বেড়ে গেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার উঠেছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে। যা বিগত বছরে কখনো হয়নি। এর আগের মাসে এই খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৭৬ শতাংশ। অর্থাৎ আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ২.৭৮ শতাংশ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের দায় পরিশোধ করতে প্রতিদিনই বাজারে ডলার ছাড়ছে। মার্কেটকে বাংলাদেশ ব্যাংক কীভাবে দেখতে চায় সেই বিষয়ে এবিবিকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে এবিবির বিভিন্ন চেয়ারম্যান সিআইবির তথ্য আপডেটের বিষয়ে গভর্নরকে অভহিত করেছেন। এছাড়া নন-পারফর্মিং লোন ও চলমান বৈদেশিক মুদ্রার সংকট নিয়েও এবিবির সঙ্গে আলোচনা হয়।

এবিবি বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে শ্রেণীকৃত ও নন-পারফর্মিং লোন বেড়েছে। বিদ্যমান আইনি কাঠামোতে ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি। এসব ক্ষেত্রে কীভাবে সময় কমানো যায় সেই বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে এসেছে।

মেজবাউল হক বলেন, আমাদের রপ্তানি ও এর প্রবৃদ্ধিও বেড়েছে। একই সময়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমাদের এক্সপোর্ট প্রসিড কম আসছে। এর কারণ হিসেবে ডেফার্ড পেমেন্টকে দায়ী করছেন এবিবি। তাই আজকের বৈঠকে ডেফার্ড পেমেন্ট সম্পর্কে অনুৎসাহিত করা হয়েছে।

এছাড়া আজকের এই বৈঠকে ওভারঅল ব্যালেন্স অব পেমেন্টের বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক আলোচনা করেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, আমাদের কারেন্ট অ্যাকাউন্টের ঘাটতি অনেক কমিয়ে এনেছি। তবে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টে এখনও কিছু ঘাটতি লক্ষ্য করছি। তাই আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট স্বাভাবিক করা যায়। উন্নত বিশ্বে সুদের হার অনেক বেশি হওয়ায় ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসা আমাদের জন্য সহজ হচ্ছে না। এর ফলে নতুন করে ঋণ বা বিনিয়োগ আনা সম্ভব হয়নি।

বৈঠকে রেমিট্যান্স বাড়ানোর ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, গত বছরের এই সময়ের চেয়ে রেমিট্যান্স বাড়ছে। এটা আরও বাড়ানোর ব্যাপারে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে এই বর্তমান অবস্থায় ডলারের দাম বাড়ানো হবে না। রেমিট্যান্স বাড়াতে গিয়ে হুন্ডিওয়ালাদের ভয়ে ডলারের দাম বাড়ানো কোনো সঠিক সমাধান না। আমরা বাড়ালে তখন হুন্ডিওয়ালারাও আরও বাড়াবে। তিনি বলেন, হুন্ডি বন্ধের জন্য ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। ৫০টিরও বেশি অনলাইন সাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমাদের এ সমস্ত কার্যক্রম চলমান।

হুন্ডির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা অবৈধ পয়সা দিয়ে ডলার ব্যবসা করেন তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কারণ আমরা যদি এখন ১৩০ টাকা ডলার রেট অফার করি তারা ১৪০ টাকা দিয়ে কিনবে। তাদের কাছে যেহেতু অবৈধ টাকা রয়েছে তাই যেভাবেই হোক তারা টাকা পাচার করবেই। এখানে ডলারের দাম ১৪০ বা ১৫০ টাকা কোনো গুরুত্ব রাখে না। হঠাৎ হুন্ডির সঙ্গে ডলারের ফরমাল রেট মিলানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাছাড়া কার্ব মার্কেটে প্রতি বছরে ৩০ থেকে ৪০ মিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়। যেটা বাংলাদেশের ওভারঅল লেনদেনের তুলনায় অতি নগণ্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী দেশে সার্বিক ডলারের লেনদেন হয় ২৫৭ বিলিয়ন ডলার।

ছবি

চলতি অর্থবছরের এডিপির ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি

ছবি

অনলাইন কোরবানি হাট চালু করল বেঙ্গল মিট

ছবি

আড়াই শতাংশ কমতে পারে করপোরেট কর

ছবি

ব্রহ্মপুত্র নদে ডুবে এক জেলের মৃত্যু

ছবি

রপ্তানির প্রণোদনা কমালো সরকার

ছবি

বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে বড় ঘাটতি

ছবি

অর্থনীতিতে চার উদ্বেগ

ছবি

ঢাকায় সেনহাইজার ও নিউম্যান বার্লিন এর পণ্য প্রদর্শনী

ছবি

নতুন করে রিজার্ভ চুরির খবর ভুয়া : বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

মামলা নয়, সমঝোতায় খেলাপি ঋণ আদায়ে ‘জোর’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

ছবি

ড্যাপ এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় সংশোধন চান আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা

সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার চুক্তি করলো বিডিবিএল

ছবি

সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার চুক্তি করল বিডিবিএল

ছবি

বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের লন্ডনে বিজনেস গ্রোথ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ

ছবি

গরম কমলে আমরা বড় আন্দোলনে নামবো : মান্না

ছবি

বেগুনের কেজি ১২০, সোনালি মুরগির দাম উঠেছে ৪২০ টাকায়

ছবি

অর্থনীতির দুই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিন পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

ছবি

টাকার অবমূল্যায়ন, ডলারের দাম বাড়ল ৭ টাকা

ছবি

সিঙ্গাপুর-কাতার থেকে ১৩৫০ কোটি টাকায় এলএনজি কিনবে সরকার

ছবি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন বয়কট করলেন সাংবাদিকরা

ছবি

ন্যায্যমূল্যে পণ্য মানুষের কাছে পৌঁছাতে কাজ করছে টিসিবি

ছবি

আধাঘণ্টায় আড়াইশ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে লেনদেন

ছবি

প্রায় ৬ মাস পর পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত

ছবি

চামড়াখাতে ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার ৭৭৬ টাকার প্রস্তাব সিপিডি’র

ছবি

বাজার মূলধন বাড়লো ৬ হাজার কোটি টাকা

ছবি

পেঁয়াজ- সবজিতে অস্বস্তি, কমেছে ব্রয়লার-ডিমের দাম

ছবি

তড়িঘড়ি করে একীভূত করা ঠিক হবে না: ফরাসউদ্দিন

ছবি

ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছাল

ছবি

আইএসডিবি থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা পাচ্ছে হাউজ বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন

ছবি

বিটিএমএ’র সেক্রেটারী জেনারেল হলেন জাকির হোসেন

ছবি

ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশের পরামর্শ আইএমএফের

নিয়ম মেনে সময় নিয়েই হবে ব্যাংক একীভূতকরণ : এবিবি চেয়ারম্যান

ছবি

দু’টি বিদেশি এয়ারলাইন্সের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে মে মাসে

ছবি

আবারও বিএসইসি চেয়ারম্যান হলেন শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম

ছবি

টানা পতনে বাজার মূলধন কমলো সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা

ছবি

সবজির বাজার অপরিবর্তিত, তবে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম

tab

অর্থ-বাণিজ্য

দেশে রপ্তানির ৯০০ ডলার অর্থ আর ফেরত আসেনি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩

২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ থেকে ৫ হাজার ৫৫৫ কোটি ৮৭ লাখ ৭০ হাজার (৫৫ দশমিক ৫৫ বিলিয়নের বেশি) ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তবে বাংলাদেশ বলছে, ৫৫ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হলেও ফেরত এসেছে ৪৬ বিলিয়র (৪৬ হাজার) ডলারের আয়। ৯ বিলিয়ন (৯ শত ডলারের) সমান আয় ফেরত আসেনি দেশে। এই অর্থ পাচার হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হকের রপ্তানি আয়ে ফারাক কেনÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে সেই পরিমাণ আয় দেশে আসেনি। আবার অনেক ক্ষেত্রে রপ্তানির পণ্যমূল্য পরিশোধের জন্য ইচ্ছা করে সময় বাড়িয়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যের আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে মরক্কো গিয়েছিলেন এবং সেই বিষয়ে ধারণা দিতেই বৈঠক হয়েছে ব্যাংকের এমডি সঙ্গে। এতে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক সংকটগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এছাড়া আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছে এবং সংস্থাটির ঋণের শর্তাবলি কতটা পূরণ হয়েছে, তা নিয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে। দেশের কয়েকটি ব্যাংকের এমডিদের সঙ্গেও আইএমএফ কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকে আইএমএফের সঙ্গে ব্যাংকের এমডিদের কী আলোচনা হয়েছে, সেই বিষয়ে তারা গভর্নরকে অবহিত করেন।

বৈঠকে দেশের সার্বিক আর্থিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বোরাপ করা হয়েছে মূল্যস্ফীতির। মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যা যা পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেই বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমানোই এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য। এটি কমাতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেই সম্পর্কে আজকের বৈঠকে ব্যাংকগুলোকে অবহিত করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হয়তো অন্যান্য ক্ষেত্রেও কিছু প্রভাব পড়বে। ইতোমধ্যে আমানতের সুদহার ও ট্রেজারি বিল বন্ডের রেট বাড়ানো হয়েছে। আমরা এই রেটগুলো বাড়িয়ে টাকাকে আরও বেশি এক্সপেনসিভ করতে চাচ্ছি। এর ফলে নতুন ঋণের পরিমাণ কমবে ও মার্কেটে টাকার সরবরাহ কমবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, গত জুন ও জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমার পর আগস্ট মাসে তা আবার বেড়েছে। আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। এ সময় দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হঠাৎ অনেকটা বেড়ে গেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার উঠেছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে। যা বিগত বছরে কখনো হয়নি। এর আগের মাসে এই খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৭৬ শতাংশ। অর্থাৎ আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ২.৭৮ শতাংশ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের দায় পরিশোধ করতে প্রতিদিনই বাজারে ডলার ছাড়ছে। মার্কেটকে বাংলাদেশ ব্যাংক কীভাবে দেখতে চায় সেই বিষয়ে এবিবিকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে এবিবির বিভিন্ন চেয়ারম্যান সিআইবির তথ্য আপডেটের বিষয়ে গভর্নরকে অভহিত করেছেন। এছাড়া নন-পারফর্মিং লোন ও চলমান বৈদেশিক মুদ্রার সংকট নিয়েও এবিবির সঙ্গে আলোচনা হয়।

এবিবি বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে শ্রেণীকৃত ও নন-পারফর্মিং লোন বেড়েছে। বিদ্যমান আইনি কাঠামোতে ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি। এসব ক্ষেত্রে কীভাবে সময় কমানো যায় সেই বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে এসেছে।

মেজবাউল হক বলেন, আমাদের রপ্তানি ও এর প্রবৃদ্ধিও বেড়েছে। একই সময়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমাদের এক্সপোর্ট প্রসিড কম আসছে। এর কারণ হিসেবে ডেফার্ড পেমেন্টকে দায়ী করছেন এবিবি। তাই আজকের বৈঠকে ডেফার্ড পেমেন্ট সম্পর্কে অনুৎসাহিত করা হয়েছে।

এছাড়া আজকের এই বৈঠকে ওভারঅল ব্যালেন্স অব পেমেন্টের বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক আলোচনা করেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, আমাদের কারেন্ট অ্যাকাউন্টের ঘাটতি অনেক কমিয়ে এনেছি। তবে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টে এখনও কিছু ঘাটতি লক্ষ্য করছি। তাই আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট স্বাভাবিক করা যায়। উন্নত বিশ্বে সুদের হার অনেক বেশি হওয়ায় ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসা আমাদের জন্য সহজ হচ্ছে না। এর ফলে নতুন করে ঋণ বা বিনিয়োগ আনা সম্ভব হয়নি।

বৈঠকে রেমিট্যান্স বাড়ানোর ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, গত বছরের এই সময়ের চেয়ে রেমিট্যান্স বাড়ছে। এটা আরও বাড়ানোর ব্যাপারে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে এই বর্তমান অবস্থায় ডলারের দাম বাড়ানো হবে না। রেমিট্যান্স বাড়াতে গিয়ে হুন্ডিওয়ালাদের ভয়ে ডলারের দাম বাড়ানো কোনো সঠিক সমাধান না। আমরা বাড়ালে তখন হুন্ডিওয়ালারাও আরও বাড়াবে। তিনি বলেন, হুন্ডি বন্ধের জন্য ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। ৫০টিরও বেশি অনলাইন সাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমাদের এ সমস্ত কার্যক্রম চলমান।

হুন্ডির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা অবৈধ পয়সা দিয়ে ডলার ব্যবসা করেন তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কারণ আমরা যদি এখন ১৩০ টাকা ডলার রেট অফার করি তারা ১৪০ টাকা দিয়ে কিনবে। তাদের কাছে যেহেতু অবৈধ টাকা রয়েছে তাই যেভাবেই হোক তারা টাকা পাচার করবেই। এখানে ডলারের দাম ১৪০ বা ১৫০ টাকা কোনো গুরুত্ব রাখে না। হঠাৎ হুন্ডির সঙ্গে ডলারের ফরমাল রেট মিলানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাছাড়া কার্ব মার্কেটে প্রতি বছরে ৩০ থেকে ৪০ মিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়। যেটা বাংলাদেশের ওভারঅল লেনদেনের তুলনায় অতি নগণ্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী দেশে সার্বিক ডলারের লেনদেন হয় ২৫৭ বিলিয়ন ডলার।

back to top