‘শখের বসে’ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাবর রোড থেকে রিহ্যাব মেলায় এসেছেন চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া মো. আবুল কালাম। গতকাল মেলা প্রাঙ্গণে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদ’কে বলেন, ‘মেলায় এসেছি সস্তার মধ্যে যদি ৪ রুমের একটা ফ্ল্যাট পাওয়া যায়? আমার একটা ছোট ফ্ল্যাট আছে, ওই ফ্লাটটি বিক্রি করে নতুন ফ্ল্যাট কিনতাম। নাতনির জন্য একটা রুমের দরকার, পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতেও কষ্ট হচ্ছে।’
এমন ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছেন কি না -জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক স্টল ঘুরে দেখেছি, এখনো পাইনি। যে দাম আর সম্ভব না। যেটাতে আছি এখন ওটাতেই বাকি জীবন কাটাতে হবে।’
ফ্ল্যাটের মূল্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘ফ্ল্যাটের দাম তো আকাশচুম্বী। এখন সব পণ্যই এ রকম। এক সময় যেটাতে পাঁচ টাকা লাভ করতো এখন সেটাতে লাভ করে ২০ টাকা। ১ কেজি তেল-সবজিতে ২০ টাকা লাভ করার চিন্তা ভাবনা করে।’
‘আমি যেখানে বাস করি সেটা হলো বাবর রোড, মোহাম্মদপুরে। কয়েক বছর আগেও দেখছি স্কয়ার ফিট ৬ হাজার টাকা। এখন দশের নিচে (প্রতি স্কয়ার ফিট ১০ হাজার টাকা) কেউ কথাই বলে না। আমার বাসার পাশে বিল্ডিং হয়েছে, ওরা ১৪ হাজার টাকা চায়। মানুষের চাহিদাটা বড় হয়ে গেছে, রাতারাতি বড়লোক হতে হবে। নাহলে এত মূল্য বাড়াতে হবে কেন? ৪ বছর আগে আমার সামনে যে-টা প্রতি স্কয়ার ফিট ৬ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে, এখন না হয় ৮ হাজার হতে পারে কিন্তু ১৪ হাজার টাকা হয় কি করে,’ এ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
আবুল কালামের সঙ্গে কথা শেষে মোহাম্মদপুর এলাকায় ফ্ল্যাটের দাম জানতে বেশ কিছু স্টল ঘোরার পর খুঁজে পাওয়া যায় ‘আমাদের প্রোপাটিজ লিমিটেড’। এই কোম্পানি মোহাম্মদপুর, শ্যামলীসহ আশপাশের এলাকার ফ্ল্যাট বিক্রি করছে। দাম ও মেলা উপলক্ষে ছাড়ের বিষয়ে স্টলে এ কোম্পানির এ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী শাখওয়াত হোসেন সংবাদ’কে বলেন, ‘আমাদের ১ হাজার ৫০ স্কয়ার ফিট থেকে শুরু করে ২৯০০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত আছে। শেখের টেকে ৮ হাজার, শ্যামলীতে ১১ হাজার, মোহাম্মদপুর বাবর রোডে ১২ হাজার টাকা আর কর্মাশিয়াল ১৮ হাজার টাকা দামে ফ্ল্যাট বিক্রি করছি। মোহাম্মদপুরে ১৩০০ স্কায়ার ফিট যেটা আছে সেটার দাম ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। মেলা উপলক্ষে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট। ইনস্টলমেন্টের সুবিধাও আছে।’
এতো দাম কেন? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সব কিছুর দাম বাড়তি।’
‘গতকাল থেকে এ পর্যন্ত আমাদের ৭০ জন এন্ট্রি হয়ে গেছে। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমরা তথ্য আদান-প্রদান করছি। ইতোমধ্যে বেশকিছু ক্লাইন্ট আমাদের প্রজেক্ট ভিজিটও করেছেন,’ বলে জানান শাখাওয়াত।
মেলায় উচ্চবিত্তের জন্য গুলশান, বনশ্্রী, নিকেতন, ধানমন্ডী ও আফতাব নগরে ফ্ল্যাট বিক্রি করছে ইর্স্টান হাউজিং লিমিটেড। এ স্টলে কথা হয় ওই কোম্পানির ডেপুটি ম্যানেজার উজ্জ্বল চক্রবর্তীর সঙ্গে। ফ্ল্যাটের দাম নিয়ে সংবাদ’কে বলেন, ‘আমাদের ফø্যাটের সাইজ সর্বনিন্ম ২১২৯ স্কয়ার ফিট আর সর্বোচ্চ ৩৯২২ স্কয়ার ফিট। সর্বনিন্ম স্কয়ার ফিট হিসাবে আফতাব নগরে সাড়ে ১২ হাজার টাকা, ধানমন্ডী ২৯ হাজার আর গুলশানে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
মেলায় ৯৯-নাম্বার স্টলে মধ্যবিত্তের জন্য উত্তরার তৃতীয় ব্লকে সাধ্যের মধ্যে ফ্ল্যাট বিক্রি করছে ইছাহক ডেভলপারস লিমিটেড। কোম্পানিটির পরিচালক ফরহাত আফজা লুবনা সংবাদ’কে বলেন, ‘আমাদের ফ্ল্যাটগুলো মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে। ফ্ল্যাটের আকার সর্বনিন্ম ১৪৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২১২৫ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত। ১৪৫০ স্কয়ার ফিটের মূল্য ৭ হাজার ৩০০ টাকা, ১৬৮২ স্কয়ার ফিট ৭ হাজার ৫০০, ১৭১৫ স্কয়ার ফিট ৮ হাজার ৫০০ এবং ২১২৫ স্কয়ার ফিট ৮ হাজার ৫০০ টাকা।’
বুকিং-এ ৫ লাখ টাকা ছাড়ের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সবগুলো প্রজেক্ট আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে হস্তান্তর করা হবে। প্রজেক্টগুলো উত্তরা মেট্্েরারেল স্টেশনের অদূরে। এছাড়াও থাকছে ঢাকা টু কক্সবাজার এবং ডাউন্ট পেমেন্টে ঢাকা টু থাইল্যান্ড ভ্রমণের সুযোগ।’
রিহ্যাব মেলায় ফ্ল্যাট ছাড়াও বিল্ডিং তৈরির উপকরণ, ফিটিংস, লিফটসহ বেশ কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্টল দেখা গেছে। এর মধ্যে কথা হয় পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মুকুল হালদারের সঙ্গে।
গ্রাহকের সুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি সংবাদ’কে বলেন, ‘আবাসনের উদ্দেশ্যে ফ্ল্যাট কেনা, বাড়ি নির্মাণ, সংস্কার ও অফিস-দোকান কেনায় সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। যার মেয়াদ ২৫ বছর। আমাদের ইন্টারেস্ট রেট ফিক্সড, ১২ শতাংশ। কোন হিডেন চার্জ নেই।’
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
‘শখের বসে’ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাবর রোড থেকে রিহ্যাব মেলায় এসেছেন চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া মো. আবুল কালাম। গতকাল মেলা প্রাঙ্গণে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদ’কে বলেন, ‘মেলায় এসেছি সস্তার মধ্যে যদি ৪ রুমের একটা ফ্ল্যাট পাওয়া যায়? আমার একটা ছোট ফ্ল্যাট আছে, ওই ফ্লাটটি বিক্রি করে নতুন ফ্ল্যাট কিনতাম। নাতনির জন্য একটা রুমের দরকার, পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতেও কষ্ট হচ্ছে।’
এমন ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছেন কি না -জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক স্টল ঘুরে দেখেছি, এখনো পাইনি। যে দাম আর সম্ভব না। যেটাতে আছি এখন ওটাতেই বাকি জীবন কাটাতে হবে।’
ফ্ল্যাটের মূল্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘ফ্ল্যাটের দাম তো আকাশচুম্বী। এখন সব পণ্যই এ রকম। এক সময় যেটাতে পাঁচ টাকা লাভ করতো এখন সেটাতে লাভ করে ২০ টাকা। ১ কেজি তেল-সবজিতে ২০ টাকা লাভ করার চিন্তা ভাবনা করে।’
‘আমি যেখানে বাস করি সেটা হলো বাবর রোড, মোহাম্মদপুরে। কয়েক বছর আগেও দেখছি স্কয়ার ফিট ৬ হাজার টাকা। এখন দশের নিচে (প্রতি স্কয়ার ফিট ১০ হাজার টাকা) কেউ কথাই বলে না। আমার বাসার পাশে বিল্ডিং হয়েছে, ওরা ১৪ হাজার টাকা চায়। মানুষের চাহিদাটা বড় হয়ে গেছে, রাতারাতি বড়লোক হতে হবে। নাহলে এত মূল্য বাড়াতে হবে কেন? ৪ বছর আগে আমার সামনে যে-টা প্রতি স্কয়ার ফিট ৬ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে, এখন না হয় ৮ হাজার হতে পারে কিন্তু ১৪ হাজার টাকা হয় কি করে,’ এ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
আবুল কালামের সঙ্গে কথা শেষে মোহাম্মদপুর এলাকায় ফ্ল্যাটের দাম জানতে বেশ কিছু স্টল ঘোরার পর খুঁজে পাওয়া যায় ‘আমাদের প্রোপাটিজ লিমিটেড’। এই কোম্পানি মোহাম্মদপুর, শ্যামলীসহ আশপাশের এলাকার ফ্ল্যাট বিক্রি করছে। দাম ও মেলা উপলক্ষে ছাড়ের বিষয়ে স্টলে এ কোম্পানির এ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী শাখওয়াত হোসেন সংবাদ’কে বলেন, ‘আমাদের ১ হাজার ৫০ স্কয়ার ফিট থেকে শুরু করে ২৯০০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত আছে। শেখের টেকে ৮ হাজার, শ্যামলীতে ১১ হাজার, মোহাম্মদপুর বাবর রোডে ১২ হাজার টাকা আর কর্মাশিয়াল ১৮ হাজার টাকা দামে ফ্ল্যাট বিক্রি করছি। মোহাম্মদপুরে ১৩০০ স্কায়ার ফিট যেটা আছে সেটার দাম ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। মেলা উপলক্ষে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট। ইনস্টলমেন্টের সুবিধাও আছে।’
এতো দাম কেন? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সব কিছুর দাম বাড়তি।’
‘গতকাল থেকে এ পর্যন্ত আমাদের ৭০ জন এন্ট্রি হয়ে গেছে। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমরা তথ্য আদান-প্রদান করছি। ইতোমধ্যে বেশকিছু ক্লাইন্ট আমাদের প্রজেক্ট ভিজিটও করেছেন,’ বলে জানান শাখাওয়াত।
মেলায় উচ্চবিত্তের জন্য গুলশান, বনশ্্রী, নিকেতন, ধানমন্ডী ও আফতাব নগরে ফ্ল্যাট বিক্রি করছে ইর্স্টান হাউজিং লিমিটেড। এ স্টলে কথা হয় ওই কোম্পানির ডেপুটি ম্যানেজার উজ্জ্বল চক্রবর্তীর সঙ্গে। ফ্ল্যাটের দাম নিয়ে সংবাদ’কে বলেন, ‘আমাদের ফø্যাটের সাইজ সর্বনিন্ম ২১২৯ স্কয়ার ফিট আর সর্বোচ্চ ৩৯২২ স্কয়ার ফিট। সর্বনিন্ম স্কয়ার ফিট হিসাবে আফতাব নগরে সাড়ে ১২ হাজার টাকা, ধানমন্ডী ২৯ হাজার আর গুলশানে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
মেলায় ৯৯-নাম্বার স্টলে মধ্যবিত্তের জন্য উত্তরার তৃতীয় ব্লকে সাধ্যের মধ্যে ফ্ল্যাট বিক্রি করছে ইছাহক ডেভলপারস লিমিটেড। কোম্পানিটির পরিচালক ফরহাত আফজা লুবনা সংবাদ’কে বলেন, ‘আমাদের ফ্ল্যাটগুলো মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে। ফ্ল্যাটের আকার সর্বনিন্ম ১৪৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২১২৫ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত। ১৪৫০ স্কয়ার ফিটের মূল্য ৭ হাজার ৩০০ টাকা, ১৬৮২ স্কয়ার ফিট ৭ হাজার ৫০০, ১৭১৫ স্কয়ার ফিট ৮ হাজার ৫০০ এবং ২১২৫ স্কয়ার ফিট ৮ হাজার ৫০০ টাকা।’
বুকিং-এ ৫ লাখ টাকা ছাড়ের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সবগুলো প্রজেক্ট আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে হস্তান্তর করা হবে। প্রজেক্টগুলো উত্তরা মেট্্েরারেল স্টেশনের অদূরে। এছাড়াও থাকছে ঢাকা টু কক্সবাজার এবং ডাউন্ট পেমেন্টে ঢাকা টু থাইল্যান্ড ভ্রমণের সুযোগ।’
রিহ্যাব মেলায় ফ্ল্যাট ছাড়াও বিল্ডিং তৈরির উপকরণ, ফিটিংস, লিফটসহ বেশ কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্টল দেখা গেছে। এর মধ্যে কথা হয় পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মুকুল হালদারের সঙ্গে।
গ্রাহকের সুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি সংবাদ’কে বলেন, ‘আবাসনের উদ্দেশ্যে ফ্ল্যাট কেনা, বাড়ি নির্মাণ, সংস্কার ও অফিস-দোকান কেনায় সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। যার মেয়াদ ২৫ বছর। আমাদের ইন্টারেস্ট রেট ফিক্সড, ১২ শতাংশ। কোন হিডেন চার্জ নেই।’