দেশের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ‘নতজানু পররাষ্ট্রনীত’ থেকে বেরিয়ে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা।
আজ শনিবার মহাখালীর রাওয়া ক্লাবের সামনে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
পরিষদের আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ বলেছেন, আর কোনো নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নয়, সাম্যতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি চাই। কোনো ধরনের নতজানু নীতিকে কোনো অবস্থাতেই আমরা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেব না।
ভারতের জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের সাথে আমাদের কোনো শত্রুতা নাই; আপনারা আমাদের বন্ধু। কিন্তু ভারতের গেরুয়া পোশাকধারী হিন্দু আধিপত্যবাদকে আমরা কোনোভাবেই এদেশে প্রশ্রয়-আশ্রয় দিতে রাজি নই।
সমাবেশে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা আহসানুল্লাহ বলেন, হযরত শাহজালাল, হযরত শাহ মখদুম, অতীশ দীপঙ্কর, শ্রী চৈতন্য, অনুকূল ঠাকুর, লোকনাথ ব্রহ্মচারী প্রমুখের আবাসভূমি এই বাংলাদেশ। আমরা যুগ যুগ ধরে এই শ্যামলভূমিতে সম্প্রীতির সাথে বসবাস করে আসছি। কিন্তু অতি উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি বাংলাদেশের লেডি ফেরাউন পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতের হিন্দু নেতৃত্বের শ্যেনদৃষ্টি পড়েছে আমাদের দিকে। তাদের ইদানীংকালের কর্মকাণ্ড এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে।
তিনি বলেন, তাদের সর্বশেষ উদ্যোগ ছিল আগরতলা এবং কলকাতার বাংলাদেশি দূতাবাসে আক্রমণ চালানো এবং আমাদের বাংলাদেশের পতাকাকে অবমাননা করা। আমরা এই সমস্ত ঘটনাগুলিকে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্ভভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে মনে করছি। এছাড়া ভারতের কিছু মিডিয়া ও রাজনৈতিক নেতারা বাংলাদেশকে নিয়ে সার্বক্ষণিক বিষোদগার করে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী, যেকোনো দূতাবাসে হামলা মানে সেই দেশের সার্বভৌমত্ব এলাকার উপরে হামলা। দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে যখন আমাদের সার্বভৌমত্বের উপরে হামলায় হয়, আমাদের পতাকা পদদলিত হয়- তখন আমরা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা চুপ করে থাকতে পারি না।
তিনি বলেন, কর্মজীবনের শুরুতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যে শপথ নিয়েছিলেন, অবসরে গিয়েও সেই শপথ থেকে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বিচ্যুত হইনি। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। আসুন, সবধরনের রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে গিয়ে ধর্ম-মত ও দলের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করি।
এ ক্ষেত্রে দেশের তরুণ ছাত্র এবং শ্রমিক জনতাকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের তাগিদ দিয়ে আহসানুল্লাহ বলেন, “আপনাদের আরও আশ্বস্ত করতে চাই, সশস্ত্র বাহিনীর লাখ লাখ প্রশিক্ষিত সৈনিক, হাজার হাজার প্রশিক্ষিত অফিসার- সবসময় এদেশের জনগণের পাশে ছিলাম, আমরা থাকব। আমরা যেকোনো প্রয়োজনে দেশের জন্য জীবন বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ, আন্তর্জাতিকসহ যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র হবে; আমরা আপনাদের সকলকে সাথে নিয়ে সেই ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে চাই।
ভারতের ক্ষমতাসীন মোদী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, মোদীজি, অমিতজি এবং রাজনাথজি, আপনারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেটা দেখেছেন, ’৭২ সালের সেই সেনাবাহিনী এখন আর নাই। আমরা এখন যেকোনো শত্রু মোকাবেলায় প্রস্তুত। আপনারা আর আস্ফালন তুলবেন না, ভয় দেখাবেন না। আমরা শুধু সশস্ত্র বাহিনী নই, ১৭ কোটি জনতা আছে- আমাদের সাথে আপনাদেরকে সীমান্তেই রুখে দিতে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনার সময় সরকারের উদ্দেশে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল লুৎফুল হক বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সকল জাতীয় চুক্তিগুলো তুলে ধরুন। যেসব ভারতীয়রা বাংলাদেশে আছে, সেগুলো পুনর্বিবেচনা করে প্রয়োজন না থাকলে তাদের ফেরত পাঠানো হোক। যেসব ভারতীয় মিডিয়া সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে- দেশে সেগুলো বাতিল করা হোক।
সমাবেশ শেষে বিভিন্ন বাহিনীর সাবেক সদস্যসহ পাঁচ শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি রাওয়া ক্লাব থেকে শুরু হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংলগ্ন ক্রসিং হয়ে ঘুরে আবার রাওয়া ক্লাবে এসে শেষ হয়।
শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
দেশের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ‘নতজানু পররাষ্ট্রনীত’ থেকে বেরিয়ে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা।
আজ শনিবার মহাখালীর রাওয়া ক্লাবের সামনে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
পরিষদের আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ বলেছেন, আর কোনো নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নয়, সাম্যতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি চাই। কোনো ধরনের নতজানু নীতিকে কোনো অবস্থাতেই আমরা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেব না।
ভারতের জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের সাথে আমাদের কোনো শত্রুতা নাই; আপনারা আমাদের বন্ধু। কিন্তু ভারতের গেরুয়া পোশাকধারী হিন্দু আধিপত্যবাদকে আমরা কোনোভাবেই এদেশে প্রশ্রয়-আশ্রয় দিতে রাজি নই।
সমাবেশে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা আহসানুল্লাহ বলেন, হযরত শাহজালাল, হযরত শাহ মখদুম, অতীশ দীপঙ্কর, শ্রী চৈতন্য, অনুকূল ঠাকুর, লোকনাথ ব্রহ্মচারী প্রমুখের আবাসভূমি এই বাংলাদেশ। আমরা যুগ যুগ ধরে এই শ্যামলভূমিতে সম্প্রীতির সাথে বসবাস করে আসছি। কিন্তু অতি উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি বাংলাদেশের লেডি ফেরাউন পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতের হিন্দু নেতৃত্বের শ্যেনদৃষ্টি পড়েছে আমাদের দিকে। তাদের ইদানীংকালের কর্মকাণ্ড এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে।
তিনি বলেন, তাদের সর্বশেষ উদ্যোগ ছিল আগরতলা এবং কলকাতার বাংলাদেশি দূতাবাসে আক্রমণ চালানো এবং আমাদের বাংলাদেশের পতাকাকে অবমাননা করা। আমরা এই সমস্ত ঘটনাগুলিকে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্ভভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে মনে করছি। এছাড়া ভারতের কিছু মিডিয়া ও রাজনৈতিক নেতারা বাংলাদেশকে নিয়ে সার্বক্ষণিক বিষোদগার করে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী, যেকোনো দূতাবাসে হামলা মানে সেই দেশের সার্বভৌমত্ব এলাকার উপরে হামলা। দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে যখন আমাদের সার্বভৌমত্বের উপরে হামলায় হয়, আমাদের পতাকা পদদলিত হয়- তখন আমরা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা চুপ করে থাকতে পারি না।
তিনি বলেন, কর্মজীবনের শুরুতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যে শপথ নিয়েছিলেন, অবসরে গিয়েও সেই শপথ থেকে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বিচ্যুত হইনি। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। আসুন, সবধরনের রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে গিয়ে ধর্ম-মত ও দলের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করি।
এ ক্ষেত্রে দেশের তরুণ ছাত্র এবং শ্রমিক জনতাকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের তাগিদ দিয়ে আহসানুল্লাহ বলেন, “আপনাদের আরও আশ্বস্ত করতে চাই, সশস্ত্র বাহিনীর লাখ লাখ প্রশিক্ষিত সৈনিক, হাজার হাজার প্রশিক্ষিত অফিসার- সবসময় এদেশের জনগণের পাশে ছিলাম, আমরা থাকব। আমরা যেকোনো প্রয়োজনে দেশের জন্য জীবন বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ, আন্তর্জাতিকসহ যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র হবে; আমরা আপনাদের সকলকে সাথে নিয়ে সেই ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে চাই।
ভারতের ক্ষমতাসীন মোদী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, মোদীজি, অমিতজি এবং রাজনাথজি, আপনারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেটা দেখেছেন, ’৭২ সালের সেই সেনাবাহিনী এখন আর নাই। আমরা এখন যেকোনো শত্রু মোকাবেলায় প্রস্তুত। আপনারা আর আস্ফালন তুলবেন না, ভয় দেখাবেন না। আমরা শুধু সশস্ত্র বাহিনী নই, ১৭ কোটি জনতা আছে- আমাদের সাথে আপনাদেরকে সীমান্তেই রুখে দিতে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনার সময় সরকারের উদ্দেশে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল লুৎফুল হক বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সকল জাতীয় চুক্তিগুলো তুলে ধরুন। যেসব ভারতীয়রা বাংলাদেশে আছে, সেগুলো পুনর্বিবেচনা করে প্রয়োজন না থাকলে তাদের ফেরত পাঠানো হোক। যেসব ভারতীয় মিডিয়া সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে- দেশে সেগুলো বাতিল করা হোক।
সমাবেশ শেষে বিভিন্ন বাহিনীর সাবেক সদস্যসহ পাঁচ শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি রাওয়া ক্লাব থেকে শুরু হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংলগ্ন ক্রসিং হয়ে ঘুরে আবার রাওয়া ক্লাবে এসে শেষ হয়।