শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনের ওপর হামলা
শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনের ওপর আরেক সন্ত্রাসী গ্রুপের হামলার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ পথচারী ভুবন চন্দ্র শীলের জ্ঞান এখনও ফেরেনি। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বর্তমানে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। চিকিৎসা খরচ নিয়ে চরম সংকটে পড়েছে তার পরিবার।
ভুবন চন্দ্র পেশায় আইনজীবী। ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আইনি পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন।
গত সোমবার রাত ১০টার দিকে তেজগাঁও শিল্প এলাকার বিজি প্রেসের সামনের রাস্তায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ ওরফে মামুনের প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে একদল সন্ত্রাসী। সেই সময় ওই পথ দিয়ে মোটরসাইকেলে করে আরামবাগে নিজের বাসার ফিরছিলেন ভুবন। এ সময় মাথায় গুলি লাগে তার।
অচেতন অবস্থায় তাকে প্রথমে শমরিতা হাসপাতালে, পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে ভুবনকে ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে স্থানান্তর করেন স্বজনেরা। বর্তমানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে গুলির পর মামুন গাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে, তাকে কুপিয়ে জখম করে হামলাকারীরা। মামুন বর্তমানে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ওই ঘটনায় আরও একজন পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার জেল খেটে সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান তারিক সাঈদ ওরফে মামুন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ পুলিশের। তবে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
পুলিশ বলছে আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। পপুলার হাসপাতালেরর কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, গুলিবিদ্ধ ভুবন চন্দ্র শীল এখনও লাইফ সাপোর্টে আছেন। তার জ্ঞান ফেরেনি। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পুনরায় তার সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। এর প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তার মস্তিষ্কের অবস্থা জানা যাবে। তারপর তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা যাবে কি না, সে বিষয়ে একজন নিউরো সার্জনের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ভুবন গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের আইনি পরামর্শক হিসেবে কাজ করতেন। গুলশানে তার কার্যালয়। তার স্ত্রী-সন্তান থাকেন নোয়াখালীতে। আরামবাগে একটি বাসায় থাকেন ভুবন চন্দ্র শীল। ওই রাতে গুলশানের কার্যালয় থেকে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। ভুবনের আহত হওয়ার খবর শুনে ঢাকায় ছুটে এসেছেন তার স্ত্রী রত্না রানী শীল ও একমাত্র মেয়ে সদ্য এসএসসি পাস করা ভূমিকা চন্দ্র শীল। তারা পপুলার হাসপাতালের বারান্দা –সিঁড়িতে বসে অপেক্ষায় আছেন, কখন ভুবনের জ্ঞান ফিরবে।
রত্না রানী শীল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ও তার মেয়ে তিন দিন ধরে হাসপাতালেই থাকছেন। তাদের সংসারের একমাত্র অভিভাবক তার স্বামী ভুবন। ৩ দিনেও তার স্বামীর জ্ঞান না ফেরায় পুরো পরিবার উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। চিকিৎসকদের কাছে জানতে চাইলে তারা পরিষ্কার কোন ধারণা দিতে পারছেন না, কোন আশাও দেখাচ্ছেন না।। চিকিৎসকেরা বলছেন, দোয়া করেন। তিনিও তার স্বামীর জন্য সবার কাছে দোয়া চান।
পপুলার হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যয়বহুল উল্লেখ করে রত্না রানী শীল বলেন, প্রতিদিনই বড় অঙ্কের অর্থ লাগছে। বেসরকারি হাসপাতাল হওয়ায় এখানে চিকিৎসা খরচ অনেক। গত ৩ দিনে তাদের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখনও তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। অস্ত্রোপচার করলে কী পরিমাণ অর্থ লাগবে সে চিন্তায় তাদের ঘুম আসে না। এত টাকা দেয়ার মতো অর্থও তাদের নেই।
ভুবন চন্দ্র শীলের শ্যালক তাপস মজুমদার বলেন, তার বোন রত্না রানী শীল নোয়াখালীর মাইজদির একটি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক। তবে তার ভগ্নিপতিই ছিলেন পরিবারের মূল উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি চাকরি থেকে মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার মতো বেতন পেতেন। ঢাকা থেকে ১৫ থেকে ২০ দিন পরপর নোয়াখালীতে গিয়ে সংসারের খরচ দিয়ে আসতেন। তার বোন ভগ্নিপতির সংসারে তেমন কোন সঞ্চয় নেই। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করার প্রথম দিনে চিকিৎসার খরচ ৯৩ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে বিল এসেছে ৬৭ হাজার টাকা। ধারদেনা করে হাসপাতালের বিল দিচ্ছেন তারা। ‘সামনের দিনগুলোতে কারও কাছ থেকে ঋণ পাওয়ারও কোন সম্ভাবনা দেখছেন না। কীভাবে চিকিৎসা করাবেন, তা বুঝতে পারছে না তারা।’
ভগ্নিপতিকে বাঁচানোর জন্য সরকার ও বিত্তবানদের সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়ে তাপস মজুমদার বলেন, চিকিৎসকেরা বলেছেন, ভুবন বেঁচে গেলে তার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা লাগবে। সেক্ষেত্রে আগারগাঁওয়ে ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা এবং চিকিৎসার খরচ জোগানোর ব্যবস্থা করা গেলে পরিবারটি বেঁচে যাবে। ভুবনের বাবা কৃষ্ণ কুমার শীল মারা গেছেন ২৩ বছর আগে। ভুবনের মা গিরিবালা শীলের বয়স ৭৫ বছর। তিনি ভুবনের স্ত্রী রত্না রানী শীলের সঙ্গে নোয়াখালীতে থাকেন। তিনিও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত্র। স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেয়েছে, কথা বলতে পারেন না। ভুবন মা-বাবার একমাত্র সন্তান।
স্বামী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় রত্না রানী শীল গত মঙ্গলবার রাতে হাতিরঝিল থানায় অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। তিন দিনেও ওই মামলায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. দুলাল হোসেন বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
হামলার নেপথ্যের কারণ
পুলিশ বলছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন ও সানজিদুল ইসলাম ইমন দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি। ঢাকার আন্ডার ওয়ার্ডের এক সময় আতঙ্ক ছিল ইমন ও মামুন। এছাড়া ইমন ও মামুন সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলারও আসামি। গত ২৪ বছর ধরে তারা দুজন কারাগারে থাকলেও সম্প্রতি জামিন পায় মামুন।
পুলিশ বলছে, সন্ত্রাসী ইমন ও মামুন একসময় ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার আতঙ্ক ছিলেন। তাদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। ইমন কারাগারে থাকলেও সম্প্রতি মামুন জামিনে বের হন। কারাগারে থাকা অবস্থাতেই দুজনের বিরোধ দেখা দেয়। মূলত জামিনে বের হওয়ার আগ থেকেই জেলে বসেই নিজের সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ করছিল মামুন। চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসা, মাদক ব্যবসা, হামলাসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে মামুন নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে। আর এনিয়ে বিরোধ হয় ইমনের সঙ্গে। মূলত ইমনের নির্দেশেই মামুনের ওপর হামলা হয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনের ওপর হামলা
বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনের ওপর আরেক সন্ত্রাসী গ্রুপের হামলার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ পথচারী ভুবন চন্দ্র শীলের জ্ঞান এখনও ফেরেনি। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বর্তমানে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। চিকিৎসা খরচ নিয়ে চরম সংকটে পড়েছে তার পরিবার।
ভুবন চন্দ্র পেশায় আইনজীবী। ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আইনি পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন।
গত সোমবার রাত ১০টার দিকে তেজগাঁও শিল্প এলাকার বিজি প্রেসের সামনের রাস্তায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ ওরফে মামুনের প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে একদল সন্ত্রাসী। সেই সময় ওই পথ দিয়ে মোটরসাইকেলে করে আরামবাগে নিজের বাসার ফিরছিলেন ভুবন। এ সময় মাথায় গুলি লাগে তার।
অচেতন অবস্থায় তাকে প্রথমে শমরিতা হাসপাতালে, পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে ভুবনকে ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে স্থানান্তর করেন স্বজনেরা। বর্তমানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে গুলির পর মামুন গাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে, তাকে কুপিয়ে জখম করে হামলাকারীরা। মামুন বর্তমানে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ওই ঘটনায় আরও একজন পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার জেল খেটে সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান তারিক সাঈদ ওরফে মামুন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ পুলিশের। তবে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
পুলিশ বলছে আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। পপুলার হাসপাতালেরর কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, গুলিবিদ্ধ ভুবন চন্দ্র শীল এখনও লাইফ সাপোর্টে আছেন। তার জ্ঞান ফেরেনি। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পুনরায় তার সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। এর প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তার মস্তিষ্কের অবস্থা জানা যাবে। তারপর তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা যাবে কি না, সে বিষয়ে একজন নিউরো সার্জনের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ভুবন গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের আইনি পরামর্শক হিসেবে কাজ করতেন। গুলশানে তার কার্যালয়। তার স্ত্রী-সন্তান থাকেন নোয়াখালীতে। আরামবাগে একটি বাসায় থাকেন ভুবন চন্দ্র শীল। ওই রাতে গুলশানের কার্যালয় থেকে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। ভুবনের আহত হওয়ার খবর শুনে ঢাকায় ছুটে এসেছেন তার স্ত্রী রত্না রানী শীল ও একমাত্র মেয়ে সদ্য এসএসসি পাস করা ভূমিকা চন্দ্র শীল। তারা পপুলার হাসপাতালের বারান্দা –সিঁড়িতে বসে অপেক্ষায় আছেন, কখন ভুবনের জ্ঞান ফিরবে।
রত্না রানী শীল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ও তার মেয়ে তিন দিন ধরে হাসপাতালেই থাকছেন। তাদের সংসারের একমাত্র অভিভাবক তার স্বামী ভুবন। ৩ দিনেও তার স্বামীর জ্ঞান না ফেরায় পুরো পরিবার উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। চিকিৎসকদের কাছে জানতে চাইলে তারা পরিষ্কার কোন ধারণা দিতে পারছেন না, কোন আশাও দেখাচ্ছেন না।। চিকিৎসকেরা বলছেন, দোয়া করেন। তিনিও তার স্বামীর জন্য সবার কাছে দোয়া চান।
পপুলার হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যয়বহুল উল্লেখ করে রত্না রানী শীল বলেন, প্রতিদিনই বড় অঙ্কের অর্থ লাগছে। বেসরকারি হাসপাতাল হওয়ায় এখানে চিকিৎসা খরচ অনেক। গত ৩ দিনে তাদের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখনও তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। অস্ত্রোপচার করলে কী পরিমাণ অর্থ লাগবে সে চিন্তায় তাদের ঘুম আসে না। এত টাকা দেয়ার মতো অর্থও তাদের নেই।
ভুবন চন্দ্র শীলের শ্যালক তাপস মজুমদার বলেন, তার বোন রত্না রানী শীল নোয়াখালীর মাইজদির একটি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক। তবে তার ভগ্নিপতিই ছিলেন পরিবারের মূল উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি চাকরি থেকে মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার মতো বেতন পেতেন। ঢাকা থেকে ১৫ থেকে ২০ দিন পরপর নোয়াখালীতে গিয়ে সংসারের খরচ দিয়ে আসতেন। তার বোন ভগ্নিপতির সংসারে তেমন কোন সঞ্চয় নেই। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করার প্রথম দিনে চিকিৎসার খরচ ৯৩ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে বিল এসেছে ৬৭ হাজার টাকা। ধারদেনা করে হাসপাতালের বিল দিচ্ছেন তারা। ‘সামনের দিনগুলোতে কারও কাছ থেকে ঋণ পাওয়ারও কোন সম্ভাবনা দেখছেন না। কীভাবে চিকিৎসা করাবেন, তা বুঝতে পারছে না তারা।’
ভগ্নিপতিকে বাঁচানোর জন্য সরকার ও বিত্তবানদের সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়ে তাপস মজুমদার বলেন, চিকিৎসকেরা বলেছেন, ভুবন বেঁচে গেলে তার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা লাগবে। সেক্ষেত্রে আগারগাঁওয়ে ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা এবং চিকিৎসার খরচ জোগানোর ব্যবস্থা করা গেলে পরিবারটি বেঁচে যাবে। ভুবনের বাবা কৃষ্ণ কুমার শীল মারা গেছেন ২৩ বছর আগে। ভুবনের মা গিরিবালা শীলের বয়স ৭৫ বছর। তিনি ভুবনের স্ত্রী রত্না রানী শীলের সঙ্গে নোয়াখালীতে থাকেন। তিনিও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত্র। স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেয়েছে, কথা বলতে পারেন না। ভুবন মা-বাবার একমাত্র সন্তান।
স্বামী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় রত্না রানী শীল গত মঙ্গলবার রাতে হাতিরঝিল থানায় অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। তিন দিনেও ওই মামলায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. দুলাল হোসেন বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
হামলার নেপথ্যের কারণ
পুলিশ বলছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন ও সানজিদুল ইসলাম ইমন দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি। ঢাকার আন্ডার ওয়ার্ডের এক সময় আতঙ্ক ছিল ইমন ও মামুন। এছাড়া ইমন ও মামুন সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলারও আসামি। গত ২৪ বছর ধরে তারা দুজন কারাগারে থাকলেও সম্প্রতি জামিন পায় মামুন।
পুলিশ বলছে, সন্ত্রাসী ইমন ও মামুন একসময় ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার আতঙ্ক ছিলেন। তাদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। ইমন কারাগারে থাকলেও সম্প্রতি মামুন জামিনে বের হন। কারাগারে থাকা অবস্থাতেই দুজনের বিরোধ দেখা দেয়। মূলত জামিনে বের হওয়ার আগ থেকেই জেলে বসেই নিজের সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ করছিল মামুন। চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসা, মাদক ব্যবসা, হামলাসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে মামুন নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে। আর এনিয়ে বিরোধ হয় ইমনের সঙ্গে। মূলত ইমনের নির্দেশেই মামুনের ওপর হামলা হয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।