বিপুল পরিমাণ ওষুধ ও তৈরী সরঞ্জাম উদ্ধার
জীবনরক্ষাকারী ক্যানসারের ওষুধ নকল হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র পরস্পর যোগসাজশে আমদানি নিষিদ্ধ হেপাটাইটিস-বি টিকা দিয়ে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন তৈরি করছে। নকলবাজ চক্র প্রতিটি নকল ভ্যাকসিন প্রায় আড়াই হাজার টাকা করে বিক্রি করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৬ হাজার নারীকে নকল ভ্যাকসিন পুশ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর দক্ষিণ খান এলাকা থেকে ওষুধ নকলবাজ চক্রের ৫ সদস্যকে সম্প্রতি গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দেয়া তথ্যমতে, নকল ভ্যাকসিন ও ভ্যাকসিন তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, সাইফুল ইসলাম শিপন, ফয়সাল আহমেদ, আল-আমিন, নুরুজ্জামান সাগর ও আতিকুল ইসলাম।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা (ডিবি) জানান, নকলবাজ চক্র আমদানি নিষিদ্ধ হেপাটাইটিস, বি টিকা দিয়ে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন তৈরি করছে।
ডিবি মিডিয়া শাখা থেকে বলা হয়েছে, আমদানি নিষিদ্ধ হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিন, যেটি অবৈধ পথে বাংলাদেশে এনে সাইফুল ইসলাম শিপন তার নিজ বাড়িতে মজুত করতো। এরপর ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি কারখানায় নকল ওষুধ তৈরির মেশিন স্থাপন করে হেপাটাইটিস-বি এর জেনি ভ্যাক-বি এ্যাম্পল খুলে জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সিআর ভ্যাকসিনে প্রতি এ্যাম্পলে এক মিলি করে ঢুকায়। পরে তা জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন হিসেবে বিক্রি করে।
আমদানি নিষিদ্ধ একটি জেনি ভ্যাক ভ্যাকসিন ভারত থেকে চোরাই পথে ৩৫০ টাকা করে কিনে এনে তা দিয়ে ১০টি জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন তৈরি করে। এরপর প্রতিটি আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করে।
এই চক্রের সদস্য আতিকুল ইসলাম, আল-আমিন, ফয়সাল ও সাগরের মাধ্যমে উক্ত জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন ও অবৈধ হেপাটাইসিস-বি ভাইরাস ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে গাজীপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পেইন করে প্রায় ৬ হাজার মেয়েকে পুশ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের হেফাজত থেকে আমদানি নিষিদ্ধ ২০টি জেনি ভ্যাক-বি ভ্যাকসিন, ১০২৫টি জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন ও ভ্যাকসিন তৈরির মেশিনসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর দক্ষিণখান খানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রাজধানীর দক্ষিণ খান থানার ওসি সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, দক্ষিণখান থানা থেকে নকল ক্যানসার ওষুধ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছেন। তারা মামলার নেপথ্য উদ্ঘাটনে কাজ করছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ জানান, যেকোন ধরনের নকল ওষুধ স্বাভাবিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে এই ওষুধ দিলে তিনি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাবেন। এমনকি মুত্যুও হতে পারে। যারা নকল ওষুধ তৈরি ও বিক্রি করছে তাদেরকে খুনি হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তাদের বিরুদ্ধে দেশে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্্য করেন।
এই সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ডা. কনক কান্তি বড়–য়া সংবাদকে ফোনে জানান, এই ধরনের নকল ওষুধ ব্যবহারে শরীরে অনেক ধরনের ক্ষতি হতে পারে। যে কাজের জন্য ওষুধ সেবন করা হয়েছে। তাতে উপকার তো হবে না। বরং অন্যান্য অঙ্গের সমস্যা হতে পারে। তবে ওষুধের ভিতিরে কি আছে তা পরীক্ষা করলে ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও র্যাবের যৌথ অভিযানে রাজধানীর মিটফোর্ড পাইকারি ওষুধ মার্কেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ধরনের নকল ভেজাল ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। একের পর এক অভিযানে নকল ভেজাল ও অরেজিস্ট্রিকৃত ওষুধ উদ্ধার করা হলেও থামছে না নকল ওষুধ তৈরি ও বিক্রি। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখনও সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্র পরস্পর যোগসাজশে নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিক্রি করছে। এই সব ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ওষধু প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ ও গোয়েন্দা পুলিশের নকল ভেজাল ওষুধ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।
বিপুল পরিমাণ ওষুধ ও তৈরী সরঞ্জাম উদ্ধার
রোববার, ১৯ মার্চ ২০২৩
জীবনরক্ষাকারী ক্যানসারের ওষুধ নকল হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র পরস্পর যোগসাজশে আমদানি নিষিদ্ধ হেপাটাইটিস-বি টিকা দিয়ে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন তৈরি করছে। নকলবাজ চক্র প্রতিটি নকল ভ্যাকসিন প্রায় আড়াই হাজার টাকা করে বিক্রি করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৬ হাজার নারীকে নকল ভ্যাকসিন পুশ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর দক্ষিণ খান এলাকা থেকে ওষুধ নকলবাজ চক্রের ৫ সদস্যকে সম্প্রতি গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দেয়া তথ্যমতে, নকল ভ্যাকসিন ও ভ্যাকসিন তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, সাইফুল ইসলাম শিপন, ফয়সাল আহমেদ, আল-আমিন, নুরুজ্জামান সাগর ও আতিকুল ইসলাম।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা (ডিবি) জানান, নকলবাজ চক্র আমদানি নিষিদ্ধ হেপাটাইটিস, বি টিকা দিয়ে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন তৈরি করছে।
ডিবি মিডিয়া শাখা থেকে বলা হয়েছে, আমদানি নিষিদ্ধ হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিন, যেটি অবৈধ পথে বাংলাদেশে এনে সাইফুল ইসলাম শিপন তার নিজ বাড়িতে মজুত করতো। এরপর ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি কারখানায় নকল ওষুধ তৈরির মেশিন স্থাপন করে হেপাটাইটিস-বি এর জেনি ভ্যাক-বি এ্যাম্পল খুলে জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সিআর ভ্যাকসিনে প্রতি এ্যাম্পলে এক মিলি করে ঢুকায়। পরে তা জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন হিসেবে বিক্রি করে।
আমদানি নিষিদ্ধ একটি জেনি ভ্যাক ভ্যাকসিন ভারত থেকে চোরাই পথে ৩৫০ টাকা করে কিনে এনে তা দিয়ে ১০টি জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন তৈরি করে। এরপর প্রতিটি আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করে।
এই চক্রের সদস্য আতিকুল ইসলাম, আল-আমিন, ফয়সাল ও সাগরের মাধ্যমে উক্ত জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন ও অবৈধ হেপাটাইসিস-বি ভাইরাস ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে গাজীপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পেইন করে প্রায় ৬ হাজার মেয়েকে পুশ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের হেফাজত থেকে আমদানি নিষিদ্ধ ২০টি জেনি ভ্যাক-বি ভ্যাকসিন, ১০২৫টি জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন ও ভ্যাকসিন তৈরির মেশিনসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর দক্ষিণখান খানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রাজধানীর দক্ষিণ খান থানার ওসি সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, দক্ষিণখান থানা থেকে নকল ক্যানসার ওষুধ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছেন। তারা মামলার নেপথ্য উদ্ঘাটনে কাজ করছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ জানান, যেকোন ধরনের নকল ওষুধ স্বাভাবিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে এই ওষুধ দিলে তিনি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাবেন। এমনকি মুত্যুও হতে পারে। যারা নকল ওষুধ তৈরি ও বিক্রি করছে তাদেরকে খুনি হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তাদের বিরুদ্ধে দেশে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্্য করেন।
এই সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ডা. কনক কান্তি বড়–য়া সংবাদকে ফোনে জানান, এই ধরনের নকল ওষুধ ব্যবহারে শরীরে অনেক ধরনের ক্ষতি হতে পারে। যে কাজের জন্য ওষুধ সেবন করা হয়েছে। তাতে উপকার তো হবে না। বরং অন্যান্য অঙ্গের সমস্যা হতে পারে। তবে ওষুধের ভিতিরে কি আছে তা পরীক্ষা করলে ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও র্যাবের যৌথ অভিযানে রাজধানীর মিটফোর্ড পাইকারি ওষুধ মার্কেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ধরনের নকল ভেজাল ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। একের পর এক অভিযানে নকল ভেজাল ও অরেজিস্ট্রিকৃত ওষুধ উদ্ধার করা হলেও থামছে না নকল ওষুধ তৈরি ও বিক্রি। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখনও সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্র পরস্পর যোগসাজশে নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিক্রি করছে। এই সব ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ওষধু প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ ও গোয়েন্দা পুলিশের নকল ভেজাল ওষুধ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।