ইন্দোনেশিয়ার একটি ফুটবল স্টেডিয়ামে পুলিশের সঙ্গে সমর্থকদের সংঘর্ষের পর পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৪ জনে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ১৮০ জন। ম্যাচ শেষে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর পদদলিত হয়ে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সময় শনিবার (১ অক্টোবর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় মালাং শহরে ফুটবল খেলায় জয়-পরাজয় নিয়ে এ সংঘর্ষ হয়। মালাং স্টেডিয়ামে আরেমা এফসি ও পেরসেবায়া সুরাবায়া নামের দুটি ফুটবল ক্লাবের মধ্যে খেলা চলছিল।
খেলায় আরেমাকে ৩–২ গোলে হারায় পেরসেবায়া। দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে পেরসেবায়ার কাছে এই প্রথম কোনো ম্যাচে হারল আরেমা। হারের পর স্টেডিয়ামে থাকা দলটির সমর্থকেরা মাঠে নেমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাদের থামাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এতে আতঙ্কিত হয়ে দৌড়াতে থাকে দর্শক। এ সময় পদদলিত হয়ে নিহত হয় অনেকে বলে দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, খেলার শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক হাজার ফুটবল সমর্থক মাঠে ঢুকে পড়ে।
পুলিশের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ম্যাচের আরেমা এফসি হেরে যাওয়ার পর কয়েক হাজার সমর্থক মাঠে ঢুকে পড়ে এবং এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এ ঘটনায় দু’জন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ছোড়ে।
পূর্ব জাভার পুলিশ প্রধান নিকো আফিন্তা জানান, দাঙ্গাকারীদের মাঠ থেকে গ্যালারিতে ফেরত পাঠাতে পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়তে শুরু করে। এ সময় হুড়োহুড়িতে অনেকে পদদলিত হয় এবং সেখানে দমবন্ধ করা একটি পরিস্থিতির তৈরি হয়।
নিহতদের মধ্যে দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন জানিয়ে নিকো আফিন্তা বলেন, ‘৩৪ জন স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাকিরা হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।’
তিনি জানান, সবাই একটি স্থান দিয়েই বের হওয়ার চেষ্টা করছিলো। ফলে প্রচণ্ড ভিড়ের এক পর্যায়ে অক্সিজেনের অভাবে দমবদ্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতির তৈরি হয়।
দেশটির নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ মাহফুদ মাহমোদিনের দাবি, ৩৮ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার ওই স্টেডিয়ামে শনিবারের ম্যাচের জন্য টিকিট বিক্রি হয়েছিল ৪২ হাজার। স্টেডিয়ামটিতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে চার হাজার দর্শক বেশি ছিলো।
স্থানীয় টিভি স্টেশনগুলোর ভিডিওতে দেখা যায়, দর্শকরা বানের জলের মত মাঠে প্রবেশ করছে এবং ধস্তাধস্তি হচ্ছে। সংজ্ঞা হারানো দর্শকদের বয়ে নিতেও দেখা যায় অন্যদের।
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফার নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, মাঠে নিরাপত্তাকর্মীরা কখনোই আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা ‘দর্শক নিয়ন্ত্রণে গ্যাস’ ব্যবহার করতে পারেন না। পূর্ব জাভার পুলিশ আইনটির কথা জানত কিনা, সেই প্রশ্নের তাৎক্ষণিক কোনো জবাব পায়নি রয়টার্স।
ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার কমিশনার রয়টার্সকে বলেছেন, কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ার ঘটনাসহ মাঠের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
ইন্দোনেশিয়ায় ফুটবল মাঠে দাঙ্গা ও সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। ফুটবল ক্লাবগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তুমুল, যা সমর্থকদেরও আগ্রাসী করে তোলে অনেক সময়।
হতাহতের এ ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে দেশটির সরকার। দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী জাইনুদিন আমালি বলেন, দুঃখজনক এ ঘটনা এমন সময়ে ঘটল, যখন কিনা ফুটবলপ্রেমীরা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএসএসআই) ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এ ঘটনা ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলকে কলঙ্কিত করেছে বলেও জানিয়েছে পিএসএসআই। ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ ফুটবল লিগ এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করার কথা জানিয়েছে দেশটির ফুটবল ফেডারেশন।
উল্লেখ্য, ফুটবলের ইতিহাসে মাঠে গণ্ডগোলে হতাহতের অনেক ঘটনা আছে। গত জানুয়ারিতে ক্যামেরুনে এক মাঠে পদদলিত হয়ে মারা যান ৮ জন। আর ২০১২ সালে মিসরের পোর্ট সাইদ শহরে আল-মাসরি ও আল-আহলি ক্লাবের ম্যাচ শেষে ভক্তদের মধ্যকার সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত হন এবং সহস্রাধিক আহত হন। এর ফলে মিসরের লীগের খেলা দুবছরের জন্য স্থগিত করা হয়।
রোববার, ০২ অক্টোবর ২০২২
ইন্দোনেশিয়ার একটি ফুটবল স্টেডিয়ামে পুলিশের সঙ্গে সমর্থকদের সংঘর্ষের পর পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৪ জনে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ১৮০ জন। ম্যাচ শেষে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর পদদলিত হয়ে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সময় শনিবার (১ অক্টোবর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় মালাং শহরে ফুটবল খেলায় জয়-পরাজয় নিয়ে এ সংঘর্ষ হয়। মালাং স্টেডিয়ামে আরেমা এফসি ও পেরসেবায়া সুরাবায়া নামের দুটি ফুটবল ক্লাবের মধ্যে খেলা চলছিল।
খেলায় আরেমাকে ৩–২ গোলে হারায় পেরসেবায়া। দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে পেরসেবায়ার কাছে এই প্রথম কোনো ম্যাচে হারল আরেমা। হারের পর স্টেডিয়ামে থাকা দলটির সমর্থকেরা মাঠে নেমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাদের থামাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এতে আতঙ্কিত হয়ে দৌড়াতে থাকে দর্শক। এ সময় পদদলিত হয়ে নিহত হয় অনেকে বলে দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, খেলার শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক হাজার ফুটবল সমর্থক মাঠে ঢুকে পড়ে।
পুলিশের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ম্যাচের আরেমা এফসি হেরে যাওয়ার পর কয়েক হাজার সমর্থক মাঠে ঢুকে পড়ে এবং এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এ ঘটনায় দু’জন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ছোড়ে।
পূর্ব জাভার পুলিশ প্রধান নিকো আফিন্তা জানান, দাঙ্গাকারীদের মাঠ থেকে গ্যালারিতে ফেরত পাঠাতে পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়তে শুরু করে। এ সময় হুড়োহুড়িতে অনেকে পদদলিত হয় এবং সেখানে দমবন্ধ করা একটি পরিস্থিতির তৈরি হয়।
নিহতদের মধ্যে দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন জানিয়ে নিকো আফিন্তা বলেন, ‘৩৪ জন স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাকিরা হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।’
তিনি জানান, সবাই একটি স্থান দিয়েই বের হওয়ার চেষ্টা করছিলো। ফলে প্রচণ্ড ভিড়ের এক পর্যায়ে অক্সিজেনের অভাবে দমবদ্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতির তৈরি হয়।
দেশটির নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ মাহফুদ মাহমোদিনের দাবি, ৩৮ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার ওই স্টেডিয়ামে শনিবারের ম্যাচের জন্য টিকিট বিক্রি হয়েছিল ৪২ হাজার। স্টেডিয়ামটিতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে চার হাজার দর্শক বেশি ছিলো।
স্থানীয় টিভি স্টেশনগুলোর ভিডিওতে দেখা যায়, দর্শকরা বানের জলের মত মাঠে প্রবেশ করছে এবং ধস্তাধস্তি হচ্ছে। সংজ্ঞা হারানো দর্শকদের বয়ে নিতেও দেখা যায় অন্যদের।
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফার নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, মাঠে নিরাপত্তাকর্মীরা কখনোই আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা ‘দর্শক নিয়ন্ত্রণে গ্যাস’ ব্যবহার করতে পারেন না। পূর্ব জাভার পুলিশ আইনটির কথা জানত কিনা, সেই প্রশ্নের তাৎক্ষণিক কোনো জবাব পায়নি রয়টার্স।
ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার কমিশনার রয়টার্সকে বলেছেন, কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ার ঘটনাসহ মাঠের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
ইন্দোনেশিয়ায় ফুটবল মাঠে দাঙ্গা ও সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। ফুটবল ক্লাবগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তুমুল, যা সমর্থকদেরও আগ্রাসী করে তোলে অনেক সময়।
হতাহতের এ ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে দেশটির সরকার। দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী জাইনুদিন আমালি বলেন, দুঃখজনক এ ঘটনা এমন সময়ে ঘটল, যখন কিনা ফুটবলপ্রেমীরা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএসএসআই) ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এ ঘটনা ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলকে কলঙ্কিত করেছে বলেও জানিয়েছে পিএসএসআই। ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ ফুটবল লিগ এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করার কথা জানিয়েছে দেশটির ফুটবল ফেডারেশন।
উল্লেখ্য, ফুটবলের ইতিহাসে মাঠে গণ্ডগোলে হতাহতের অনেক ঘটনা আছে। গত জানুয়ারিতে ক্যামেরুনে এক মাঠে পদদলিত হয়ে মারা যান ৮ জন। আর ২০১২ সালে মিসরের পোর্ট সাইদ শহরে আল-মাসরি ও আল-আহলি ক্লাবের ম্যাচ শেষে ভক্তদের মধ্যকার সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত হন এবং সহস্রাধিক আহত হন। এর ফলে মিসরের লীগের খেলা দুবছরের জন্য স্থগিত করা হয়।