image

এপিপিজির প্রতিবেদনে ‘মিথ্যা’ তথ্য, হাই কমিশনারকে জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
কুটনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাজ্যের অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) ফর দ্য কমনওয়েলথের প্রতিবেদন এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কয়েকজন এমপির বক্তব্যের বিষয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকা ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ওই প্রতিবেদনে ও এমপিদের বক্তব্যে কিছু ‘মিথ্যা’ ও ‘বিকৃত’ তথ্যের উপস্থিতি পেয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

ব্রিটিশ হাই কমিশনারকে ডেকে বৈঠকে করার পর বিকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

বাংলাদেশে গণআন্দোলনে দমনপীড়নের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নানা সহিংসতার কথা তুলে ধরে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এপিপিজি।

আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ‘আশা জাগানিয়া’ যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সেই জায়গায় রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ‘উদ্বেগ’ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা এপিপিজির ওই প্রতিবেদনে দুই সহস্রাধিক নৃশংসতার বর্ণনা দিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে সতর্ক করা হয়।

তবে হত্যাকাণ্ডগুলোর সময় তুলে ধরার ক্ষেত্রে প্রতিবেদনে ‘মিথ্যা’ তথ্য দেওয়ার কথা ব্রিটিশ দূতকে জানানোর কথা বলেন তৌহিদ হোসেন।

এ বিষয়ে সারাহ কুকের কাছে সরকার কী বক্তব্য দিয়েছে, তা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের একটা বিবৃতি এসেছে বেশ বড়সড়।

“সেখানে খুব দুঃখজনকভাবে যেটা এসছে, আমি বলেছিও তাকে যে, আমরা খুবই হার্ট… দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে, ৫ অগাস্টের পরে বেশি মৃত্যু হয়েছে। এ জিনিসটি পুরো মিথ্যা। ৫ অগাস্টের আগের কথা বলা হয়েছে, মোট ২৮০ জন আর মোট সংখ্যা এক হাজারের বেশি।”

‘বিষয়টা মোটেই তা না’, এমন বক্তব্য ব্রিটিশ হাই কমিশানারের কাছে দেওয়ার কথা তুলে ধরে তৌহিদ হোসেন বলেন, “৫ অগাস্ট বা তারও আগে, অন্তত দেড় হাজার ছেলেমেয়ে মারা গেছে, নিহত হয়েছিল। তার মধ্যে ৭৮০ জনের তো আমরা একেবারে বাই নেইম পরিচয় জানি। বাকি অনেকের পরিচিতি এখন নিশ্চিত করা যায়নি। কিন্তু ডেডবডি পাওয়া গেছে এবং তারা মারা গেছে, এতে কোনো সন্দেহ নাই।

“এর পরে বিচ্ছিন্ন দুয়েকটা ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু যেভাবে রিপোর্টটি করা হয়েছে, সেটা একেবারেই সঠিক নয়। বরং দুঃখজনক যে, এখানে এত বড় একটা ঘটনা যে ঘটেছে, সেটার কোনো উল্লেখ নেই। তাদের রিপোর্টে উল্লেখই নেই যে, এখানে বিপুল সংখ্যক ছাত্রকে রাস্তাঘাটে গুলি করে মারা হয়েছে।”

সরকারের অবস্থান হাই কমিশনারের কাছে ব্যাখ্যা করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমি বলেছি, তারা বলেছে তাদের কথা, আমরা তো আমাদের অবস্থানটা ব্যাখ্যা করছি। আপনিও একটু ব্যাখ্যা করুন, আপনার সরকারের কাছে এবং আপনার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে, এটাই।”

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এমপিদের বক্তব্যে ‘বিকৃত তথ্য’ থাকার কথা বুধবার হাই কমিশনারের কাছে তুলে ধরার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “২ তারিখ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে কয়েকজন এমপি বক্তব্য দিয়েছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতির উপরে।

“সেখানে কিছু মিসইনফরমেশন আছে, এটা আমি হাই কমিশনারকে জানিয়েছি এবং বলেছি যে, চারিদিকে যে তথ্যের প্রবাহ চলছে, সেটা থেকে মনে হয় যেন তারা তথ্য নিয়েছেন। আর দুয়েকটা সংগঠন যারা কথাবার্তা বলেছে, সেগুলি মোটামুটি ব্রিটেন-বেইজড। এখানে যেটা পরিস্থিতি, সেটার প্রতিফলন ঘটেনি।”

তিনি বলেন, “আমি যেটা বলেছি, পার্লামেন্ট মেম্বাররা তো যা ইচ্ছা তা বলবেন। এটাতে তো কারও কিছু করার নাই, আমাদেরও কিছু করার নাই। কিন্তু আমাদের যে অবস্থানটা, তারা যেন তাদের চ্যানেলে জানান। উনিও বলেছেন, ‘আপনারা আপনাদের দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে জানান, আমরাও জানাব’।”

‘জাতীয়’ : আরও খবর

» এখনও ছাপার বাকি মাধ্যমিকের প্রায় ৮ কোটি পাঠ্যবই

সম্প্রতি