মঙ্গলবার সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদন হয়
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে দুই কিস্তির অর্থ ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার একসঙ্গে পাচ্ছে বাংলাদেশ। ২৬ জুন বাংলাদেশের হিসাবে এ অর্থ জমা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রগুলো জানায়, মঙ্গলবার,(২৪ জুন ২০২৫) এই দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ সময় রাতে হওয়া সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদিত হয়। বৈঠকে ঋণ কর্মসূচির আওতায় থাকা তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে আইএমএফ।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ কর্মসূচি অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন হওয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া মূলত এ তিন কারণে আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
মোট ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) এবং বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম ঋণ পায়।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার বাংলাদেশ পেয়েছে। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩১ কোটি ডলার। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার। মঙ্গলবার দুই কিস্তির প্রস্তাব অনুমোদন হওয়ার পর বাকি থাকবে ১২৯ কোটি ডলার, যা পাওয়া যাবে আরও দুই কিস্তিতে।
মঙ্গলবার যে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে পাওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হলো, তার মধ্যে চতুর্থ কিস্তি পাওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেই। কিন্তু গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। অতিরিক্ত বরফের কারণে প্রায় অচল হয়ে যায় তখনকার জনজীবন। মার্কিন প্রশাসনকে এজন্য সতর্কবার্তা জারি করতে হয়। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেকদিন।
পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। মার্চে বৈঠক হলেও বাংলাদেশের ঋণ কর্মসূচি প্রসঙ্গ আর সংস্থাটির নির্বাহী
পর্ষদে ওঠেনি। এরই মধ্যে গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত আইএমএফের ব্রিফিংয়ে আইএমএফ জানায়নি যে বাংলাদেশ কোনো কিস্তি পাচ্ছে কিনা। যদিও আগের দু’বার ব্রিফিংয়েই জানিয়ে দেয়া হয়েছিল।
এরই মধ্যে শুরু হয় উভয়পক্ষের টানাপোড়েন। তবে আশা ছাড়েনি বাংলাদেশ। ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়। যদিও তখন কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল বাংলাদেশে মুদ্রা বিনিময়ের হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চেয়ে আসছিল, রাজি হচ্ছিল না বাংলাদেশ।
এরপর গত মে মাসের শুরুর দিকে আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশ কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে। এসব বৈঠকে বাংলাদেশের দিক থেকে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। শেষ পর্যন্ত গত ১২ মে দুইপক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় এবং বিনিময়হার বাজারভিত্তিক করে দেয় বাংলাদেশ। গত ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনেই, এ ব্যাপারে দুইপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।
মঙ্গলবার সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদন হয়
মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে দুই কিস্তির অর্থ ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার একসঙ্গে পাচ্ছে বাংলাদেশ। ২৬ জুন বাংলাদেশের হিসাবে এ অর্থ জমা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রগুলো জানায়, মঙ্গলবার,(২৪ জুন ২০২৫) এই দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ সময় রাতে হওয়া সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদিত হয়। বৈঠকে ঋণ কর্মসূচির আওতায় থাকা তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে আইএমএফ।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ কর্মসূচি অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন হওয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া মূলত এ তিন কারণে আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
মোট ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) এবং বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম ঋণ পায়।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার বাংলাদেশ পেয়েছে। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩১ কোটি ডলার। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার। মঙ্গলবার দুই কিস্তির প্রস্তাব অনুমোদন হওয়ার পর বাকি থাকবে ১২৯ কোটি ডলার, যা পাওয়া যাবে আরও দুই কিস্তিতে।
মঙ্গলবার যে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে পাওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হলো, তার মধ্যে চতুর্থ কিস্তি পাওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেই। কিন্তু গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। অতিরিক্ত বরফের কারণে প্রায় অচল হয়ে যায় তখনকার জনজীবন। মার্কিন প্রশাসনকে এজন্য সতর্কবার্তা জারি করতে হয়। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেকদিন।
পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। মার্চে বৈঠক হলেও বাংলাদেশের ঋণ কর্মসূচি প্রসঙ্গ আর সংস্থাটির নির্বাহী
পর্ষদে ওঠেনি। এরই মধ্যে গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত আইএমএফের ব্রিফিংয়ে আইএমএফ জানায়নি যে বাংলাদেশ কোনো কিস্তি পাচ্ছে কিনা। যদিও আগের দু’বার ব্রিফিংয়েই জানিয়ে দেয়া হয়েছিল।
এরই মধ্যে শুরু হয় উভয়পক্ষের টানাপোড়েন। তবে আশা ছাড়েনি বাংলাদেশ। ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়। যদিও তখন কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল বাংলাদেশে মুদ্রা বিনিময়ের হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চেয়ে আসছিল, রাজি হচ্ছিল না বাংলাদেশ।
এরপর গত মে মাসের শুরুর দিকে আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশ কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে। এসব বৈঠকে বাংলাদেশের দিক থেকে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। শেষ পর্যন্ত গত ১২ মে দুইপক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় এবং বিনিময়হার বাজারভিত্তিক করে দেয় বাংলাদেশ। গত ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনেই, এ ব্যাপারে দুইপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।