মেহেরপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গাংনী শহরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে ঢাকায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির ২৩৮টি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। ওই তালিকায় মেহেরপুর-২ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনকে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী করা হয়। কিন্তু জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনও মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন; তিনি প্রার্থী না হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে তার সমর্থকদের মধ্যে।
রাতেই মিল্টনের অনুসারীরা আমজাদ হোসেনকে এলাকায় ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে বিক্ষোভে নামে এবং ভাঙচুর চালায়। মঙ্গলবার সকালেও সেই উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় গাংনী শহরে সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষ ও ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, মনোনয়ন নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে নামে।
গাংনী বাজারের ব্যবসায়ী সুলাইমান শেখসহ স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সোমবার রাত ৮টা থেকেই বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক অবরোধ করে রাখে। এসময় শহরের বহু দোকান বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তারা মিছিলসহ শহরের বিভিন্ন হোটেল ও দোকানে ভাঙচুর চালায় এবং বিএনপি প্রার্থী আমজাদ হোসেনের নির্বাচনি কার্যালয়ে হামলা করে।
হামলাকারীরা ইট-পাটকেল ছোড়ে, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং তা রাস্তায় এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর আমজাদ হোসেনের সমর্থকরা প্রতিরোধে এগিয়ে আসলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে প্রার্থী আমজাদ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তার কর্মীদের থামিয়ে দেন। পুলিশ ও সেনা সদস্যরা সড়কে অবস্থান নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছরের ত্যাগ ও অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে আমজাদ হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া যথাযথ সিদ্ধান্ত। কিন্তু জেলা সভাপতির সমর্থকরা যেভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন, তা দলের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর।”
মনোনয়নবঞ্চিত জেলা বিএনপি সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, কেন্দ্র থেকে ঘোষিত “অবৈধ প্রার্থী”র মনোনয়ন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। তিনি জানান, তার সমর্থকরা প্রতিবাদ মিছিল ও সভা অব্যাহত রাখবেন।
অন্যদিকে মনোনীত প্রার্থী আমজাদ হোসেন বলেন, “দলীয় সভাপতিসহ কয়েকজন কর্মী ফ্যাসিস্ট দলের ধাঁচে আচরণ করছেন। আমি আমার কর্মীদের বলেছি, ভাইয়ে ভাইয়ে মতবিরোধ হতে পারে, কিন্তু তা সংঘর্ষে রূপ নিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা ঠিক নয়।” তিনি আরও বলেন, “দুই দিন পরই সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের পক্ষে মাঠে নামবে।”
গাংনী থানার ওসি ইসরাইল হোসেন জানান, এক পক্ষ মনোনয়ন না পেয়ে সড়ক অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছিল। পুলিশ কঠোর অবস্থানে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
মেহেরপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গাংনী শহরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে ঢাকায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির ২৩৮টি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। ওই তালিকায় মেহেরপুর-২ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনকে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী করা হয়। কিন্তু জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনও মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন; তিনি প্রার্থী না হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে তার সমর্থকদের মধ্যে।
রাতেই মিল্টনের অনুসারীরা আমজাদ হোসেনকে এলাকায় ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে বিক্ষোভে নামে এবং ভাঙচুর চালায়। মঙ্গলবার সকালেও সেই উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় গাংনী শহরে সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষ ও ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, মনোনয়ন নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে নামে।
গাংনী বাজারের ব্যবসায়ী সুলাইমান শেখসহ স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সোমবার রাত ৮টা থেকেই বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক অবরোধ করে রাখে। এসময় শহরের বহু দোকান বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তারা মিছিলসহ শহরের বিভিন্ন হোটেল ও দোকানে ভাঙচুর চালায় এবং বিএনপি প্রার্থী আমজাদ হোসেনের নির্বাচনি কার্যালয়ে হামলা করে।
হামলাকারীরা ইট-পাটকেল ছোড়ে, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং তা রাস্তায় এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর আমজাদ হোসেনের সমর্থকরা প্রতিরোধে এগিয়ে আসলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে প্রার্থী আমজাদ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তার কর্মীদের থামিয়ে দেন। পুলিশ ও সেনা সদস্যরা সড়কে অবস্থান নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছরের ত্যাগ ও অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে আমজাদ হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া যথাযথ সিদ্ধান্ত। কিন্তু জেলা সভাপতির সমর্থকরা যেভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন, তা দলের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর।”
মনোনয়নবঞ্চিত জেলা বিএনপি সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, কেন্দ্র থেকে ঘোষিত “অবৈধ প্রার্থী”র মনোনয়ন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। তিনি জানান, তার সমর্থকরা প্রতিবাদ মিছিল ও সভা অব্যাহত রাখবেন।
অন্যদিকে মনোনীত প্রার্থী আমজাদ হোসেন বলেন, “দলীয় সভাপতিসহ কয়েকজন কর্মী ফ্যাসিস্ট দলের ধাঁচে আচরণ করছেন। আমি আমার কর্মীদের বলেছি, ভাইয়ে ভাইয়ে মতবিরোধ হতে পারে, কিন্তু তা সংঘর্ষে রূপ নিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা ঠিক নয়।” তিনি আরও বলেন, “দুই দিন পরই সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের পক্ষে মাঠে নামবে।”
গাংনী থানার ওসি ইসরাইল হোসেন জানান, এক পক্ষ মনোনয়ন না পেয়ে সড়ক অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছিল। পুলিশ কঠোর অবস্থানে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।