বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ববর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা তাহের -সংবাদ
জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দলের পাঁচ দফা দাবি ১১ নভেম্বরের আগেই অন্তর্বর্তী সরকারকে মেনে নিতে বলেছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ১১ নভেম্বর আটটি রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে রাজধানীতে মহাসমাবেশ হবে। ঢাকার মহাসমাবেশ লক্ষ লক্ষ জনতার পদভারে মুখর হওয়ার আগে সরকার যেন পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের গণআকাক্সক্ষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। তা না হলে ১১ নভেম্বর ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জামায়াতের এই নেতা। বৃহস্পতিবার,(০৬ নভেম্বর ২০২৫) দুপুর দুইটার দিকে ঢাকার মৎস্য ভবন মোড়ে এক ব্রিফিংয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন।
৫ দফা দাবি না মানলে ১১ নভেম্বর ঢাকার চিত্র ভিন্ন হওয়ার হুঁশিয়ারি গোলাম পরওয়ারের
এছাড়াও একই দাবিতে বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন, সরকার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছে। ফেব্রুয়ারি কাছাকাছি চলে এসেছে, কিন্তু গণভোটের তারিখ ঘোষণা হচ্ছে না। নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। এ সময় ‘সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করবো’ বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতের এই নেতা।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করাসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে স্মারকলিপি দেয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে জামায়াতসহ আন্দোলনরত আটটি দল। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে দলগুলো আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে এসে সমবেত হয়। এরপর সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি পল্টন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে মৎস্য ভবন এলাকায় এলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাতে বাধা দেয়।
সেখান থেকে ফিরে ব্রিফিংয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘নেতারা যখন যমুনায় গেলেন, তখন প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক চলছিল। জামায়াতসহ অন্য দলগুলোর আবেদন ছিল, প্রধান উপদেষ্টা না হলেও একজন উপদেষ্টাকে তাদের কাছে পাঠাতে হবে।’ পরে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানকে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘শিল্প উপদেষ্টা রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সরকারের আন্তরিকতার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি এক সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা করে সরকারকে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা স্মরণ করে দিয়েছেন।’ আটটি দল এক্ষেত্রে সরকারকে সহযোগিতার কথা বলেছে। দলগুলোর এই আলোচনায় সরকারেরও সহযোগিতা প্রয়োজন বলে শিল্প উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে বলেও দাবি করেন পরওয়ার।
মিয়া গোলাম পরওয়ারের দাবি শিল্প উপদেষ্টা তাদের দাবির প্রতি দ্বিমত করেননি। প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই স্মারকলিপি যথাযথ প্রক্রিয়ায় পৌঁছে দেয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
জামায়াতসহ আট দলের দাবিগুলো হলো- জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয়কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করাসহ
পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচির পূর্ববর্তী সমাবেশে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও গণভোট করতে আইনি বাধা নেই। এ বিষয়ে সময়ক্ষেপণ অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলবে। সেক্ষেত্রে নতুন পথ বেরিয়ে আসবে।’
গণভোট করতে টাকার অভাব হবে না উল্লেখ করে তাহের বলেন, ‘অনেকে গণভোটের ক্ষেত্রে খরচের কথা বলেন। একদিনে বাংলাদেশে যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয়, সেই টাকা দিয়ে একটা গণভোট করা যায়।’ জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, ‘জামায়াতের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ জামায়াত নির্বাচন, সমাধান, শান্তি, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চায়। সরকারও দলগুলোকে আলোচনা করতে বলেছে। তবে সরকারকে এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে হবে।’ দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য জামায়াত একটি কমিটি গঠন করেছে। অন্য দলগুলোকে আলোচনার জন্য কমিটি গঠনের আহ্বান জানান তিনি। তাহের বলেন, ‘অবিলম্বে আলোচনা শুরু হোক। সময়ক্ষেপণ করা যাবে না।’
আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কল করেও পাননি বলে দাবি করেন সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আবারও কল করা হবে। তাকে অনুরোধ করা হবে, বিএনপির পক্ষ থেকেও যাতে আলোচনায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত আসে।’
নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বাংলাদেশ অন্ধকারের দিকে চলে যাবে দাবি করে জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাকেও বলতে হবে, নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে সেটি বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেবেন। এদেশের মানুষ আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না। সেটি মেনে নেয়া হবে না।’ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে আহ্বান জানান তাহের। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে। এরপরও উন্নতি না হলে ১১ নভেম্বর ঢাকা মহানগরী হবে জনতার নগরী। ১১ নভেম্বর হবে, চলো চলো ঢাকা চলো।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট হবে না। গণভোট ও নির্বাচনের একসঙ্গে তফসিল হবে না। যেদিনই নির্বাচন হোক, গণভোট আগে দিতে হবে। নির্বাচন পিছিয়ে গেলেও গণভোট আগে হতে হবে। যারা বলেছে সংস্কার লাগবে না, তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে না।’
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেনÑ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান প্রমুখ।
এরপর দুপুর ১২টার দিকে পল্টন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে ‘পিআর ছাড়া নির্বাচন, মানি না মানব না’, ‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচন, মানি না মানব না’, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, দিতে হবে দিয়ে দাও’, ‘গণভোটের তারিখ, দিতে হবে দিয়ে দাও’, ‘নভেম্বরে গণভোট, দিতে হবে দিয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয়।
এরপর ৮ দলের ৯ নেতা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে যান। তারা হলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল বারী মাসউদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক মূসা, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি একেএম আনোয়ারুল ইসলাম।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ববর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা তাহের -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দলের পাঁচ দফা দাবি ১১ নভেম্বরের আগেই অন্তর্বর্তী সরকারকে মেনে নিতে বলেছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ১১ নভেম্বর আটটি রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে রাজধানীতে মহাসমাবেশ হবে। ঢাকার মহাসমাবেশ লক্ষ লক্ষ জনতার পদভারে মুখর হওয়ার আগে সরকার যেন পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের গণআকাক্সক্ষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। তা না হলে ১১ নভেম্বর ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জামায়াতের এই নেতা। বৃহস্পতিবার,(০৬ নভেম্বর ২০২৫) দুপুর দুইটার দিকে ঢাকার মৎস্য ভবন মোড়ে এক ব্রিফিংয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন।
৫ দফা দাবি না মানলে ১১ নভেম্বর ঢাকার চিত্র ভিন্ন হওয়ার হুঁশিয়ারি গোলাম পরওয়ারের
এছাড়াও একই দাবিতে বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন, সরকার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছে। ফেব্রুয়ারি কাছাকাছি চলে এসেছে, কিন্তু গণভোটের তারিখ ঘোষণা হচ্ছে না। নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। এ সময় ‘সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করবো’ বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতের এই নেতা।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করাসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে স্মারকলিপি দেয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে জামায়াতসহ আন্দোলনরত আটটি দল। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে দলগুলো আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে এসে সমবেত হয়। এরপর সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি পল্টন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে মৎস্য ভবন এলাকায় এলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাতে বাধা দেয়।
সেখান থেকে ফিরে ব্রিফিংয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘নেতারা যখন যমুনায় গেলেন, তখন প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক চলছিল। জামায়াতসহ অন্য দলগুলোর আবেদন ছিল, প্রধান উপদেষ্টা না হলেও একজন উপদেষ্টাকে তাদের কাছে পাঠাতে হবে।’ পরে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানকে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘শিল্প উপদেষ্টা রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সরকারের আন্তরিকতার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি এক সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা করে সরকারকে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা স্মরণ করে দিয়েছেন।’ আটটি দল এক্ষেত্রে সরকারকে সহযোগিতার কথা বলেছে। দলগুলোর এই আলোচনায় সরকারেরও সহযোগিতা প্রয়োজন বলে শিল্প উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে বলেও দাবি করেন পরওয়ার।
মিয়া গোলাম পরওয়ারের দাবি শিল্প উপদেষ্টা তাদের দাবির প্রতি দ্বিমত করেননি। প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই স্মারকলিপি যথাযথ প্রক্রিয়ায় পৌঁছে দেয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
জামায়াতসহ আট দলের দাবিগুলো হলো- জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয়কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করাসহ
পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচির পূর্ববর্তী সমাবেশে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও গণভোট করতে আইনি বাধা নেই। এ বিষয়ে সময়ক্ষেপণ অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলবে। সেক্ষেত্রে নতুন পথ বেরিয়ে আসবে।’
গণভোট করতে টাকার অভাব হবে না উল্লেখ করে তাহের বলেন, ‘অনেকে গণভোটের ক্ষেত্রে খরচের কথা বলেন। একদিনে বাংলাদেশে যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয়, সেই টাকা দিয়ে একটা গণভোট করা যায়।’ জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, ‘জামায়াতের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ জামায়াত নির্বাচন, সমাধান, শান্তি, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চায়। সরকারও দলগুলোকে আলোচনা করতে বলেছে। তবে সরকারকে এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে হবে।’ দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য জামায়াত একটি কমিটি গঠন করেছে। অন্য দলগুলোকে আলোচনার জন্য কমিটি গঠনের আহ্বান জানান তিনি। তাহের বলেন, ‘অবিলম্বে আলোচনা শুরু হোক। সময়ক্ষেপণ করা যাবে না।’
আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কল করেও পাননি বলে দাবি করেন সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আবারও কল করা হবে। তাকে অনুরোধ করা হবে, বিএনপির পক্ষ থেকেও যাতে আলোচনায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত আসে।’
নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বাংলাদেশ অন্ধকারের দিকে চলে যাবে দাবি করে জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাকেও বলতে হবে, নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে সেটি বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেবেন। এদেশের মানুষ আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না। সেটি মেনে নেয়া হবে না।’ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে আহ্বান জানান তাহের। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে। এরপরও উন্নতি না হলে ১১ নভেম্বর ঢাকা মহানগরী হবে জনতার নগরী। ১১ নভেম্বর হবে, চলো চলো ঢাকা চলো।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট হবে না। গণভোট ও নির্বাচনের একসঙ্গে তফসিল হবে না। যেদিনই নির্বাচন হোক, গণভোট আগে দিতে হবে। নির্বাচন পিছিয়ে গেলেও গণভোট আগে হতে হবে। যারা বলেছে সংস্কার লাগবে না, তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে না।’
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেনÑ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান প্রমুখ।
এরপর দুপুর ১২টার দিকে পল্টন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে ‘পিআর ছাড়া নির্বাচন, মানি না মানব না’, ‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচন, মানি না মানব না’, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, দিতে হবে দিয়ে দাও’, ‘গণভোটের তারিখ, দিতে হবে দিয়ে দাও’, ‘নভেম্বরে গণভোট, দিতে হবে দিয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয়।
এরপর ৮ দলের ৯ নেতা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে যান। তারা হলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল বারী মাসউদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক মূসা, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি একেএম আনোয়ারুল ইসলাম।