alt

জাতীয়তাবাদী চেতনায় ঐক্যের আহ্বান বিএনপি নেতাদের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী চেতনায় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েয়েছেন বিএনপি নেতারা। ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বাণীতে এই আহ্বান জানান।

৭ নভেম্বরের চেতনা শক্তিশালী গণতন্ত্র বিনির্মাণের ভিত্তি হতে পারে: তারেক রহমান

জনগণের সমর্থনের কারণে জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বরের বিপ্লবে মহানায়কে পরিণত হন: মির্জা ফখরুল

আজ ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সংঘটিত সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানকে স্মরণ করে বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালন করছে। দলটি বলছে, ওই দিনের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল।

তারেক রহমানের বাণী

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ৭ নভেম্বরের ঘটনাকে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ‘মোড় পরিবর্তনকারী অধ্যায়’ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। তার দাবি, সেদিন ‘সিপাহী-জনতা জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা এবং গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অঙ্গীকার নিয়ে রাজপথে নেমেছিলেন।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, দেশের ইতিহাসে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার সীমিত করার প্রচেষ্টার ফলে রাষ্ট্রীয় সংকট দেখা দিয়েছিল। তার বক্তব্যে বলা হয়, ‘৭ নভেম্বরের চেতনা শক্তিশালী গণতন্ত্র বিনির্মাণের ভিত্তি হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতাত্তোর ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী নিজ স্বার্থে দেশকে আধিপত্যবাদের থাবার মধ্যে ঠেলে দেয়। এর উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাকে চিরদিনের জন্য ধরে রাখা। সেজন্য একদলীয় বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার হরণ করে। দেশমাতৃকার এই চরম সঙ্কটকালে ৭৫-এর ৩ নভেম্বর কুচক্রীরা মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করে। জাতির এই গভীর সংকটকালে ৭ নভেম্বর স্বজাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় সৈনিক এবং জনতার ঢলে রাজপথে এক অনন্য সংহতির স্ফুরণ ঘটে এবং স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান মুক্ত হন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রপতি জিয়ার নেতৃত্বে দেশে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয় এবং গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে বাক, ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু আধিপত্যবাদী শক্তির এ দেশীয় এজেন্টরা উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে। জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনও ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।

তিনি বলেন, আবারও চক্রান্তের গোপন পথে আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা প্রায় ১৬ বছর গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে রাষ্ট্রক্ষমতাকে হাতের মুঠোর মধ্যে ধরে রাখে। এদের নতজানু নীতির কারণেই দেশের সার্বভৌমত্ব দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়েছিল। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতাকর্মীদের বিভৎস নির্মমতায় দমন করেছে, আয়নাঘর, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ দুর্নীতি ও অপশাসনের এক ভয়াল রাজত্ব কায়েম করেছিল। ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করে বহু বছর মুক্তি দেয়া হয়নি।

তারেক রহমান বলেন, আমি মনে করি ৭ নভেম্বরের চেতনায় সব জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্তিশালী গণতন্ত্র বিনির্মাণ করতে হবে। আর সেজন্য জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।

মির্জা ফখরুলের বিবৃতি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেন, ৭ নভেম্বরের মাধ্যমে ‘রাজনৈতিক শূন্যতার অবসান হয়েছিল’ এবং জনগণ ‘নতুন প্রত্যয়ে জেগে উঠেছিল’। তার দাবি, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান সামরিক ও বেসামরিক মহলের সমর্থন অর্জন করেন এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী ও সর্বস্তরের জনগণের সার্বিক সমর্থনের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। এই বিপ্লবের মূল চরিত্র ছিল জিয়াউর রহমানের প্রতি সেনাবাহিনী ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন। স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে ও একজন নিষ্কলুষ সাহসী সৈনিক হিসেবে জিয়ার প্রতি সামরিক বাহিনী ও জনগণের ব্যাপক সমর্থন ছিল। জনগণের সমর্থনের কারণে জিয়াউর রহমান ৭ই নভেম্বরের বিপ্লবে মহানায়কে পরিণত হন। সিপাহী-জনতার এই বিপ্লবের সম্মিলিত প্রয়াসে জনগণ নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠে। ৭ই নভেম্বর বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক মুক্তির পথ পেয়েছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বিপ্লবের মধ্য দিয়েই আইনের শাসন, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সামাজিক শান্তি ফিরে এসেছিল। দেশ, জনগণ, স্বাধীকারসহ জাতীয় স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী সুগভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে ৭ই নভেম্বর সিপাহী-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল, এই বিপ্লবে বন্দীদশা থেকে মুক্ত হন জিয়াউর রহমান।’

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে সমর্থন করে সামরিক বাহিনী এবং তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও যোগ দেয়। জাতি পেয়েছিল এক যোগ্য নেতৃত্ব জিয়াউর রহমানকে, যিনি ‘৭১-এ জাতির চরম ক্রান্তিলগ্নে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সফল রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উন্মেষ ঘটিয়ে জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠিয়েছিলেন। আর সেজন্যই আমাদের জাতীয় জীবনে ৭ই নভেম্বরের বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম।’

ছবি

শুক্রবার ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় সংহতি ও বিপ্লব দিবস’

ছবি

আঙুল বাঁকা করার হুমকি জামায়াতের তাহেরের, কারণ ‘ঘি তাদের লাগবেই’

ছবি

গণতন্ত্রের পথ সরকারকেই সুগম করতে হবে, যশোরে মির্জা ফখরুল

ছবি

সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট হতে হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট দাবিতে প্রয়োজনে ‘আঙ্গুল বাঁকা’ করার হুঁশিয়ারি  : জামায়াত নেতৃত্ব

ছবি

৯ রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা , জাতীয় সনদ ও গণভোটে দূরত্ব ঘোচানোর উদ্যোগ

ছবি

৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতিতে এনসিপি, জোট না হলে সরাসরি লড়াই

ছবি

পদ ছেড়ে ‘ভোট করবেন’ অ্যাটর্নি জেনারেল, বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ‘আশাবাদী’

ছবি

বিএনপিতে যোগ দিলেন শহীদ মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ

মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ

ছবি

জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা ও পৃথক দিনে গণভোট চায় জামায়াতে ইসলামী

নীলফামারী ১ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ছবি

বরিশাল বিভাগে একমাত্র নারী প্রার্থী ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো

ছবি

শেষ নির্বাচন ঘোষণা দিয়ে আবেগঘন বার্তা দিলেন বিএনপি মহাসচিব

ছবি

প্রার্থী ঘোষণা: সিলেট বিএনপিতে অস্থিরতা

ছবি

চাঁদপুরে জাতীয় পার্টি ও জাতীয় জাসদ থেকে শতাধিক নেতাকর্মীর এনসিপিতে যোগদান

ছবি

বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর কোথাও আনন্দ, কোথাও বিক্ষোভ

ছবি

জামায়াত ‘যথাসময়ে’ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা দেবে: শফিকুর রহমান

ছবি

জাতিসংঘকে নির্বাচনি সহায়তা স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ

ছবি

মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত করেছে বিএনপি

ছবি

দিনাজপুর-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন

ছবি

বরগুনার দু’টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন নজরুল ও মনি

ছবি

কুড়িগ্রামে ৪টি আসনের বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস

ছবি

কুড়িগ্রামে ৪টি আসনের বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস

ছবি

নাসিরনগর বিএনপি প্রার্থী এমএ হান্নান

ছবি

সিরাজগঞ্জে বিএনপি ও জামায়াতের দলীয় মনোনায়ন পেয়ে প্রচারণায় নেমেছে

ছবি

কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী আপন দুই ভাইকে নিয়ে আলোচনার ঝড়

ছবি

রাজবাড়ী-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম

ছবি

নরসিংদীর ৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

ছবি

শেরপুর থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

ছবি

জয়পুরহাটে বিএনপির দুই প্রার্থী মাসুদ রানা ও আব্দুল বারী

ছবি

সিলেট বিএনপির প্রার্থী লুনা

ছবি

কিশোরগঞ্জের ৪টি আসনের বিএনপির প্রার্থীতা ঘোষণা

ছবি

কবিরহাটে ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার চালকসহ ছয়জন নিহত

ছবি

মেহেরপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ

ছবি

এই নির্বাচন হয়তো আমার জীবনের শেষ” : মির্জা ফখরুল

tab

জাতীয়তাবাদী চেতনায় ঐক্যের আহ্বান বিএনপি নেতাদের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী চেতনায় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েয়েছেন বিএনপি নেতারা। ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বাণীতে এই আহ্বান জানান।

৭ নভেম্বরের চেতনা শক্তিশালী গণতন্ত্র বিনির্মাণের ভিত্তি হতে পারে: তারেক রহমান

জনগণের সমর্থনের কারণে জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বরের বিপ্লবে মহানায়কে পরিণত হন: মির্জা ফখরুল

আজ ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সংঘটিত সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানকে স্মরণ করে বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালন করছে। দলটি বলছে, ওই দিনের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল।

তারেক রহমানের বাণী

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ৭ নভেম্বরের ঘটনাকে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ‘মোড় পরিবর্তনকারী অধ্যায়’ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। তার দাবি, সেদিন ‘সিপাহী-জনতা জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা এবং গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অঙ্গীকার নিয়ে রাজপথে নেমেছিলেন।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, দেশের ইতিহাসে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার সীমিত করার প্রচেষ্টার ফলে রাষ্ট্রীয় সংকট দেখা দিয়েছিল। তার বক্তব্যে বলা হয়, ‘৭ নভেম্বরের চেতনা শক্তিশালী গণতন্ত্র বিনির্মাণের ভিত্তি হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতাত্তোর ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী নিজ স্বার্থে দেশকে আধিপত্যবাদের থাবার মধ্যে ঠেলে দেয়। এর উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাকে চিরদিনের জন্য ধরে রাখা। সেজন্য একদলীয় বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার হরণ করে। দেশমাতৃকার এই চরম সঙ্কটকালে ৭৫-এর ৩ নভেম্বর কুচক্রীরা মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করে। জাতির এই গভীর সংকটকালে ৭ নভেম্বর স্বজাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় সৈনিক এবং জনতার ঢলে রাজপথে এক অনন্য সংহতির স্ফুরণ ঘটে এবং স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান মুক্ত হন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রপতি জিয়ার নেতৃত্বে দেশে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয় এবং গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে বাক, ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু আধিপত্যবাদী শক্তির এ দেশীয় এজেন্টরা উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে। জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনও ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।

তিনি বলেন, আবারও চক্রান্তের গোপন পথে আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা প্রায় ১৬ বছর গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে রাষ্ট্রক্ষমতাকে হাতের মুঠোর মধ্যে ধরে রাখে। এদের নতজানু নীতির কারণেই দেশের সার্বভৌমত্ব দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়েছিল। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতাকর্মীদের বিভৎস নির্মমতায় দমন করেছে, আয়নাঘর, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ দুর্নীতি ও অপশাসনের এক ভয়াল রাজত্ব কায়েম করেছিল। ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করে বহু বছর মুক্তি দেয়া হয়নি।

তারেক রহমান বলেন, আমি মনে করি ৭ নভেম্বরের চেতনায় সব জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্তিশালী গণতন্ত্র বিনির্মাণ করতে হবে। আর সেজন্য জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।

মির্জা ফখরুলের বিবৃতি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেন, ৭ নভেম্বরের মাধ্যমে ‘রাজনৈতিক শূন্যতার অবসান হয়েছিল’ এবং জনগণ ‘নতুন প্রত্যয়ে জেগে উঠেছিল’। তার দাবি, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান সামরিক ও বেসামরিক মহলের সমর্থন অর্জন করেন এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী ও সর্বস্তরের জনগণের সার্বিক সমর্থনের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। এই বিপ্লবের মূল চরিত্র ছিল জিয়াউর রহমানের প্রতি সেনাবাহিনী ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন। স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে ও একজন নিষ্কলুষ সাহসী সৈনিক হিসেবে জিয়ার প্রতি সামরিক বাহিনী ও জনগণের ব্যাপক সমর্থন ছিল। জনগণের সমর্থনের কারণে জিয়াউর রহমান ৭ই নভেম্বরের বিপ্লবে মহানায়কে পরিণত হন। সিপাহী-জনতার এই বিপ্লবের সম্মিলিত প্রয়াসে জনগণ নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠে। ৭ই নভেম্বর বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক মুক্তির পথ পেয়েছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বিপ্লবের মধ্য দিয়েই আইনের শাসন, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সামাজিক শান্তি ফিরে এসেছিল। দেশ, জনগণ, স্বাধীকারসহ জাতীয় স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী সুগভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে ৭ই নভেম্বর সিপাহী-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল, এই বিপ্লবে বন্দীদশা থেকে মুক্ত হন জিয়াউর রহমান।’

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে সমর্থন করে সামরিক বাহিনী এবং তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও যোগ দেয়। জাতি পেয়েছিল এক যোগ্য নেতৃত্ব জিয়াউর রহমানকে, যিনি ‘৭১-এ জাতির চরম ক্রান্তিলগ্নে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সফল রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উন্মেষ ঘটিয়ে জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠিয়েছিলেন। আর সেজন্যই আমাদের জাতীয় জীবনে ৭ই নভেম্বরের বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম।’

back to top