কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল
চমৎকার এক উপভোগ্য ম্যাচে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল ৩-২ গোলে ঘানাকে পরাজিত করেছে। এইচ গ্রুপের ম্যাচটি প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে গোল হয় ৫টি। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমন পাল্টা আক্রমনে বেশ জমে ওঠে খেলা। শেষ বাশি বাজা পর্যন্ত বজায় থাকে উত্তেজনা। অথচ প্রথমার্ধে বলতে গেলে এক তরফাই খেলেছে পর্তুগাল। তারা এক পর্যায়ে ৩-১ গোলে এগিয়ে গেলে ধরে নেয় ম্যাচ জিতে গেছে। সে সুযোগে ঘানা একটি গোল শোধ করে খেলায় উত্তেজনা ফেরায়।
এ ম্যাচ জিতে পর্তুগাল গ্রুপের শীর্ষে উঠেছে। এর ফলে তাদের পরের রাউন্ডে ওঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলো। গ্রুপের অপর ম্যাচে উরুগুয়ে এবং দক্ষিণ কোরিয়া গোলশূন্য ড্র করায় বাড়তি সুবিধা পাবে পর্র্তুগাল।
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো এ ম্যাচে একটি গোল করায় ৫টি বিশ্বকাপে গোল করার বিরল কৃতিত্ব অর্জণ করেন। আগেই তিনি অর্জণ করেছিলেন আন্তর্জাতিক ম্যাচে সবচেয়ে বেশী গোল করার কৃতিত্ব। এ ম্যাচে দশ মিনিটের সময় রোনালদো গোলের দারুন একটি সুযোগ পেয়েছিলেন। ফাকায় বল পেয়ে তিনি ঢুকে পড়েছিলেন পেনাল্টি বক্সে। কিন্তু গোলরক্ষক এগিয়ে গিয়ে রোনালদোর প্রচেষ্টা রুখে দেন। এর দুই মিনিট পর তিনি অনেকটা লাফিয়ে হেড দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটি পোস্টে রাখতে পারেননি। এ ঘটনার পর থেকে ঘানার সীমানায় একের পর এক আক্রমন করতে থাকে পর্তুগাল। খেলার ধারা দেখে মনে হচ্ছিল পর্তুগাল যে কোন সময় গোল করে ফেলবে। কিন্তু তা হয়নি। পর্তুগালের খেলার গতি কমে যায় ধীরে ধীরে এবং ঘানা নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে পাল্টা আক্রমনে যেতে সক্ষম হয়। যদিও প্রথম আধ ঘন্টায় পর্তুগালের গোলরক্ষকের কোন পরীক্ষা নিতে পারেনি ঘানা। ৩০ মিনিটের সময় ঘানা জালে বল পাঠিয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু তিনি বল নিয়ন্ত্রনে নেয়ার সময় প্রতিপক্ষের একজন খেলোয়াড়কে ফাউল করেন বলে রেফারি ফাউলের বাশি বাজান। পর্তুগালের সুস্পষ্ট প্রাধান্য থাকলেও প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ভাবেই।
দ্বিতীয়ার্ধেও পর্তুগাল প্রাধান্য বজায় রাখে। কিন্তু সেভাবে সুযোগ তারা সৃষ্টি করতে পারছিল না। উল্টো ৫৪ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে ভীতি ছড়িয়েছিল পর্তুগাল শিবিরে। সময় বাড়ার সাথে সাথে পর্তুগাল চাপ বাড়ায়। খেলার ৬৩ মিনিটে পেনাল্টি পায় তারা। পেনাল্টি থেকে গোল করেন রোনালদো। রোনালদোকে ফাউল করে পেনাল্টিটি উপহার দেন সালিসু। যদিও রেফারির সিদ্ধান্ত সহজে মেনে নেয়নি আফ্রিকান দলটি।
গোল খাওয়ার পর সেটি পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাতে থাকে ঘানা। পর্তুগাল গোলটি ধরে রাখার জন্য সবাই রক্ষণকাজে নিয়োজিত হয়। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। ৭২ মিনিটে সমতা ফেরায় ঘানা। বাম দিক দিয়ে গড়া আক্রমণ ঠিকমতো প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয় ডিফেন্স এবং গোলমুখে বল পেয়ে ট্যাপ করে সমতা ফেরান আইয়ু। পর্তুগাল অবশ্য ৭৭ মিনিটে আবার লিড নিতে সক্ষম হয়। দারুন একটি আক্রমণ থেকে গোলটি করেন জোয়াও ফেলিক্স। এর দুই মিনিট পর আবারো গোল করে পর্তুগাল। মাঝ মাঠ থেকে ফেলিক্স বল কেড়ে নিয়ে সামনে দিলে রাফায়েল লিয়াও সেটি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে পরাস্ত করেন গোলরক্ষককে। ৩-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর পর্তুগাল খেলার গতি কমিয়ে দেয়। শেষ দিকে কোচ মাঠ থেকে তুলে নেন ফেলিক্স, রোনালদো এবং সিলভাকে। তারকাদের ইনজুরি থেকে রক্ষা এবং অন্যদের সুযোগ দেয়ার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেন কোচ। এ তিনজনকে তুলে নেয়ার পর পরই একটি গোল শোধ করে ঘানা। বুকারি করেন গোলটি। দুই দলের ব্যবধান মাত্র এক গোল হওয়ায় শেষ দিকে দারুন উত্তেজনা ফিরে আসে ম্যাচে। উভয় দলের খেলোয়াড়রা প্রতিপক্ষকে ফাউল করে খেলতে থাকে। রেফারি কঠোর হাতে ম্যাচ নিয়ন্ত্রন করেন। ইনজুরি টাইমেই তিনি হলুদ কার্ড দেখান তিনটি। ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে গোলের সুযোগ পায় ঘানা। পর্তুুগালের গোলরক্ষক কস্টা হাত দিয়ে সামনে বল রাখলে উইলিয়াম পেছন থেকে গিয়ে সেটি কেড়ে নেন। কিন্তু পোস্টে শট মারার আগে তিনি ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে রক্ষা পায় পর্তুগাল।
কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল
শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২
চমৎকার এক উপভোগ্য ম্যাচে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল ৩-২ গোলে ঘানাকে পরাজিত করেছে। এইচ গ্রুপের ম্যাচটি প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে গোল হয় ৫টি। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমন পাল্টা আক্রমনে বেশ জমে ওঠে খেলা। শেষ বাশি বাজা পর্যন্ত বজায় থাকে উত্তেজনা। অথচ প্রথমার্ধে বলতে গেলে এক তরফাই খেলেছে পর্তুগাল। তারা এক পর্যায়ে ৩-১ গোলে এগিয়ে গেলে ধরে নেয় ম্যাচ জিতে গেছে। সে সুযোগে ঘানা একটি গোল শোধ করে খেলায় উত্তেজনা ফেরায়।
এ ম্যাচ জিতে পর্তুগাল গ্রুপের শীর্ষে উঠেছে। এর ফলে তাদের পরের রাউন্ডে ওঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলো। গ্রুপের অপর ম্যাচে উরুগুয়ে এবং দক্ষিণ কোরিয়া গোলশূন্য ড্র করায় বাড়তি সুবিধা পাবে পর্র্তুগাল।
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো এ ম্যাচে একটি গোল করায় ৫টি বিশ্বকাপে গোল করার বিরল কৃতিত্ব অর্জণ করেন। আগেই তিনি অর্জণ করেছিলেন আন্তর্জাতিক ম্যাচে সবচেয়ে বেশী গোল করার কৃতিত্ব। এ ম্যাচে দশ মিনিটের সময় রোনালদো গোলের দারুন একটি সুযোগ পেয়েছিলেন। ফাকায় বল পেয়ে তিনি ঢুকে পড়েছিলেন পেনাল্টি বক্সে। কিন্তু গোলরক্ষক এগিয়ে গিয়ে রোনালদোর প্রচেষ্টা রুখে দেন। এর দুই মিনিট পর তিনি অনেকটা লাফিয়ে হেড দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটি পোস্টে রাখতে পারেননি। এ ঘটনার পর থেকে ঘানার সীমানায় একের পর এক আক্রমন করতে থাকে পর্তুগাল। খেলার ধারা দেখে মনে হচ্ছিল পর্তুগাল যে কোন সময় গোল করে ফেলবে। কিন্তু তা হয়নি। পর্তুগালের খেলার গতি কমে যায় ধীরে ধীরে এবং ঘানা নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে পাল্টা আক্রমনে যেতে সক্ষম হয়। যদিও প্রথম আধ ঘন্টায় পর্তুগালের গোলরক্ষকের কোন পরীক্ষা নিতে পারেনি ঘানা। ৩০ মিনিটের সময় ঘানা জালে বল পাঠিয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু তিনি বল নিয়ন্ত্রনে নেয়ার সময় প্রতিপক্ষের একজন খেলোয়াড়কে ফাউল করেন বলে রেফারি ফাউলের বাশি বাজান। পর্তুগালের সুস্পষ্ট প্রাধান্য থাকলেও প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ভাবেই।
দ্বিতীয়ার্ধেও পর্তুগাল প্রাধান্য বজায় রাখে। কিন্তু সেভাবে সুযোগ তারা সৃষ্টি করতে পারছিল না। উল্টো ৫৪ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে ভীতি ছড়িয়েছিল পর্তুগাল শিবিরে। সময় বাড়ার সাথে সাথে পর্তুগাল চাপ বাড়ায়। খেলার ৬৩ মিনিটে পেনাল্টি পায় তারা। পেনাল্টি থেকে গোল করেন রোনালদো। রোনালদোকে ফাউল করে পেনাল্টিটি উপহার দেন সালিসু। যদিও রেফারির সিদ্ধান্ত সহজে মেনে নেয়নি আফ্রিকান দলটি।
গোল খাওয়ার পর সেটি পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাতে থাকে ঘানা। পর্তুগাল গোলটি ধরে রাখার জন্য সবাই রক্ষণকাজে নিয়োজিত হয়। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। ৭২ মিনিটে সমতা ফেরায় ঘানা। বাম দিক দিয়ে গড়া আক্রমণ ঠিকমতো প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয় ডিফেন্স এবং গোলমুখে বল পেয়ে ট্যাপ করে সমতা ফেরান আইয়ু। পর্তুগাল অবশ্য ৭৭ মিনিটে আবার লিড নিতে সক্ষম হয়। দারুন একটি আক্রমণ থেকে গোলটি করেন জোয়াও ফেলিক্স। এর দুই মিনিট পর আবারো গোল করে পর্তুগাল। মাঝ মাঠ থেকে ফেলিক্স বল কেড়ে নিয়ে সামনে দিলে রাফায়েল লিয়াও সেটি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে পরাস্ত করেন গোলরক্ষককে। ৩-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর পর্তুগাল খেলার গতি কমিয়ে দেয়। শেষ দিকে কোচ মাঠ থেকে তুলে নেন ফেলিক্স, রোনালদো এবং সিলভাকে। তারকাদের ইনজুরি থেকে রক্ষা এবং অন্যদের সুযোগ দেয়ার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেন কোচ। এ তিনজনকে তুলে নেয়ার পর পরই একটি গোল শোধ করে ঘানা। বুকারি করেন গোলটি। দুই দলের ব্যবধান মাত্র এক গোল হওয়ায় শেষ দিকে দারুন উত্তেজনা ফিরে আসে ম্যাচে। উভয় দলের খেলোয়াড়রা প্রতিপক্ষকে ফাউল করে খেলতে থাকে। রেফারি কঠোর হাতে ম্যাচ নিয়ন্ত্রন করেন। ইনজুরি টাইমেই তিনি হলুদ কার্ড দেখান তিনটি। ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে গোলের সুযোগ পায় ঘানা। পর্তুুগালের গোলরক্ষক কস্টা হাত দিয়ে সামনে বল রাখলে উইলিয়াম পেছন থেকে গিয়ে সেটি কেড়ে নেন। কিন্তু পোস্টে শট মারার আগে তিনি ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে রক্ষা পায় পর্তুগাল।