কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল
লিওনেল মেসি পেনাল্টি মিস করা সত্ত্বেও আর্জেন্টিনা সব আশঙ্কা দূর করে বিশ্বকাপ ফুটবলের নক আউট পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। বুধবার গ্রু পর্বের শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনা ২-০ গোলে পরাজিত করে পোল্যান্ডকে। এর ফলে ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার সুপার স্টার লিওনেল মেসি প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন। তবে দ্বিতীয়ার্ধে তারা দারুন খেলে দুটি গোল আদায় করে নেয়। গোল করেন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার এবং আলভারেজ।
পোল্যান্ডের সৌভাগ্য যে মেক্সিকোর সমান পয়েন্ট এবং গোল পার্থক্য নিয়েও তারা উঠেছে নক আউট পর্বে। সব পরিসংখ্যান সমান হওয়ায় পোল্যান্ড পরের রাউন্ডের টিকিট পেত কম কার্ড দেখায়। খেলার বাইলজে উল্লেখ ছিল পয়েন্ট, গোল পার্থক্য এবং হেড টু হেড রেকর্ড সমান হলে যে দলের ডিসিপ্লিনারি রেকর্ড ভাল তারা যাবে পরের রাউন্ডে। অবশ্য তার দরকার হয়নি, সৌদি আরব একটি গোল করায় পোল্যান্ড গোল পার্থক্যে মেক্সিকোকে টপকে উঠেছে শেষ ষোলতে। মেক্সিকো জয়ী হয় ২-১ গোলে।
আর্জেন্টিনার প্রাধান্য ছিল ম্যাচের শুরু থেকেই। পোল্যান্ডের খেলার কৌশলই ছিল রক্ষণাত্মক। আর্জেন্টাইন আক্রমন সামলে প্রতি আক্রমনে যাওয়া। প্রথমার্ধে তাদের এ কৌশল অর্ধেক সফল হয়েছে। নিজেরা কোন গোল করতে না পারলেও কোন গোল খায়নি। যদিও এ অর্ধেই (৩৭ মিনিটে) পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন লিওনেল মেসি। পেনাল্টি বক্সের মধ্যে গোলরক্ষক উইসেজ সজেসনি বল ধরতে লাফিয়ে উঠেন এবং হেডের চেষ্টা করেন মেসি। বল মেসির কাধে লেগে বাইরে যাওয়ার পর গোলরক্ষকের হাত মেসিকে স্পর্শ করে। তার পরেও রেফারি টাচ লাইনের পাশে থাকা মনিটরে রিপ্লে দেখে সবাইকে অবাক করে পেনাল্টির বাশি বাজান। ধারাভাষ্যকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম রেফারির এ সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে। তবে গোলরক্ষক সজেসনি দারুনভাবে রুখে দেন মেসির পেনাল্টি। এর পর প্রথমার্ধের বাকি সময় পোল্যান্ডের উপর চাপ বজায় রাখে আর্জেন্টিনা। কিন্তু পোল্যান্ডের রক্ষণভাগকে পরাস্ত করা সম্ভব হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলার দ্বিতীয় মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ম্যাক অ্যালিস্টার গোলমুখে বল পেয়ে ফ্লিক করে পরাস্ত করেন গোলরক্ষককে। দুই মিনিটের মধ্যেই পোল্যান্ড সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল। ফ্রি কিক থেকে গোলমুখে হেড নিয়েছিলেন কামিল গ্লিক, সেটি পোস্ট ঘেসে বাইরে যায়।
এর পর থেকে আবার আর্জেন্টিনা চেপে ধরে পোল্যান্ডকে। নিজেদের রক্ষণভাগ সামলাতেই ব্যস্ত থাকতে হয় রবার্ট লেভানদভস্কিদের। গোলটি বেশ আত্মবিশ্বাসী করে তোলে আর্জেন্টিনাকে। পোল্যান্ডের জন্য পরিস্থিতি খুবই জটিল হয়ে যায়। ম্যাচ ড্র করতে না পারলে তাদের বিদায় নেয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। কারণ ততক্ষণে অপর ম্যাচে মেক্সিকো দুই গোল করে ফেলেছে। পোল্যান্ড যদি আরো গোল খায়, কিংবা মেক্সিকো তিন গোলের বেশী করলে বাদ যাবে পোল্যান্ড।
আর্জেন্টিনা চাপ বজায় রাখার লক্ষ্যে ডি মারিয়া এবং অ্যাকুনাকে তুলে ট্যাগলিয়াফিকো এবং পারেদেসকে মাঠে নামায়। পরিবর্তন আনা হয় পোল্যান্ড দলেও। তবে তাতে খেলার গতিতে তেমন কোন পরিবর্তন আসেনি। আর্জেন্টিনা চাপ বজায় রেখে ৬৭ মিনিটে আদায় করে নেয় দ্বিতীয় গোল। পেনাল্টি বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে গোলটি করেন আলভারেজ। এ গোল আর্জেন্টিনার জয় নিশ্চিত করে ফেলে। বাকি থাকে দ্বিতীয় দল হিসেবে কারা জায়গা করে নেবে নক আউটে তা নির্ধারনের। ৮৫ মিনিটে রক্ষণভাগের ভুলে গোলের দারুন একটি সুযোগ পেয়েছিলেন লতারো মার্টিনেজ। কিন্তু তার নেয়া শট পোস্টের পাশ দিয়ে বাইরে যায়। শেষ দিকে পোল্যান্ডের খেলা দেখে মনে হয়েছে ম্যাচটি শেষ হলেই যেন তার হাফ ছেড়ে বাচে। হয়েছেও তাই। মেক্সিকো দুই গোলে জিতেছে জেনে আনন্দ করে পোল্যান্ডও।
কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল
বৃহস্পতিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২২
লিওনেল মেসি পেনাল্টি মিস করা সত্ত্বেও আর্জেন্টিনা সব আশঙ্কা দূর করে বিশ্বকাপ ফুটবলের নক আউট পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। বুধবার গ্রু পর্বের শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনা ২-০ গোলে পরাজিত করে পোল্যান্ডকে। এর ফলে ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার সুপার স্টার লিওনেল মেসি প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন। তবে দ্বিতীয়ার্ধে তারা দারুন খেলে দুটি গোল আদায় করে নেয়। গোল করেন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার এবং আলভারেজ।
পোল্যান্ডের সৌভাগ্য যে মেক্সিকোর সমান পয়েন্ট এবং গোল পার্থক্য নিয়েও তারা উঠেছে নক আউট পর্বে। সব পরিসংখ্যান সমান হওয়ায় পোল্যান্ড পরের রাউন্ডের টিকিট পেত কম কার্ড দেখায়। খেলার বাইলজে উল্লেখ ছিল পয়েন্ট, গোল পার্থক্য এবং হেড টু হেড রেকর্ড সমান হলে যে দলের ডিসিপ্লিনারি রেকর্ড ভাল তারা যাবে পরের রাউন্ডে। অবশ্য তার দরকার হয়নি, সৌদি আরব একটি গোল করায় পোল্যান্ড গোল পার্থক্যে মেক্সিকোকে টপকে উঠেছে শেষ ষোলতে। মেক্সিকো জয়ী হয় ২-১ গোলে।
আর্জেন্টিনার প্রাধান্য ছিল ম্যাচের শুরু থেকেই। পোল্যান্ডের খেলার কৌশলই ছিল রক্ষণাত্মক। আর্জেন্টাইন আক্রমন সামলে প্রতি আক্রমনে যাওয়া। প্রথমার্ধে তাদের এ কৌশল অর্ধেক সফল হয়েছে। নিজেরা কোন গোল করতে না পারলেও কোন গোল খায়নি। যদিও এ অর্ধেই (৩৭ মিনিটে) পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন লিওনেল মেসি। পেনাল্টি বক্সের মধ্যে গোলরক্ষক উইসেজ সজেসনি বল ধরতে লাফিয়ে উঠেন এবং হেডের চেষ্টা করেন মেসি। বল মেসির কাধে লেগে বাইরে যাওয়ার পর গোলরক্ষকের হাত মেসিকে স্পর্শ করে। তার পরেও রেফারি টাচ লাইনের পাশে থাকা মনিটরে রিপ্লে দেখে সবাইকে অবাক করে পেনাল্টির বাশি বাজান। ধারাভাষ্যকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম রেফারির এ সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে। তবে গোলরক্ষক সজেসনি দারুনভাবে রুখে দেন মেসির পেনাল্টি। এর পর প্রথমার্ধের বাকি সময় পোল্যান্ডের উপর চাপ বজায় রাখে আর্জেন্টিনা। কিন্তু পোল্যান্ডের রক্ষণভাগকে পরাস্ত করা সম্ভব হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলার দ্বিতীয় মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ম্যাক অ্যালিস্টার গোলমুখে বল পেয়ে ফ্লিক করে পরাস্ত করেন গোলরক্ষককে। দুই মিনিটের মধ্যেই পোল্যান্ড সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল। ফ্রি কিক থেকে গোলমুখে হেড নিয়েছিলেন কামিল গ্লিক, সেটি পোস্ট ঘেসে বাইরে যায়।
এর পর থেকে আবার আর্জেন্টিনা চেপে ধরে পোল্যান্ডকে। নিজেদের রক্ষণভাগ সামলাতেই ব্যস্ত থাকতে হয় রবার্ট লেভানদভস্কিদের। গোলটি বেশ আত্মবিশ্বাসী করে তোলে আর্জেন্টিনাকে। পোল্যান্ডের জন্য পরিস্থিতি খুবই জটিল হয়ে যায়। ম্যাচ ড্র করতে না পারলে তাদের বিদায় নেয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। কারণ ততক্ষণে অপর ম্যাচে মেক্সিকো দুই গোল করে ফেলেছে। পোল্যান্ড যদি আরো গোল খায়, কিংবা মেক্সিকো তিন গোলের বেশী করলে বাদ যাবে পোল্যান্ড।
আর্জেন্টিনা চাপ বজায় রাখার লক্ষ্যে ডি মারিয়া এবং অ্যাকুনাকে তুলে ট্যাগলিয়াফিকো এবং পারেদেসকে মাঠে নামায়। পরিবর্তন আনা হয় পোল্যান্ড দলেও। তবে তাতে খেলার গতিতে তেমন কোন পরিবর্তন আসেনি। আর্জেন্টিনা চাপ বজায় রেখে ৬৭ মিনিটে আদায় করে নেয় দ্বিতীয় গোল। পেনাল্টি বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে গোলটি করেন আলভারেজ। এ গোল আর্জেন্টিনার জয় নিশ্চিত করে ফেলে। বাকি থাকে দ্বিতীয় দল হিসেবে কারা জায়গা করে নেবে নক আউটে তা নির্ধারনের। ৮৫ মিনিটে রক্ষণভাগের ভুলে গোলের দারুন একটি সুযোগ পেয়েছিলেন লতারো মার্টিনেজ। কিন্তু তার নেয়া শট পোস্টের পাশ দিয়ে বাইরে যায়। শেষ দিকে পোল্যান্ডের খেলা দেখে মনে হয়েছে ম্যাচটি শেষ হলেই যেন তার হাফ ছেড়ে বাচে। হয়েছেও তাই। মেক্সিকো দুই গোলে জিতেছে জেনে আনন্দ করে পোল্যান্ডও।